ঢাকা ১২:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বিশ্ব বাণিজ্যে শঙ্কাতেও দেশে খুলছে সম্ভাবনার দুয়ার

  • আপডেট সময় : ০৬:১৭:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ৯ বার পড়া হয়েছে

বিদেশের খবর ডেস্ক: সম্প্রতি বড় অর্থনীতির দেশগুলোর শুল্ক লড়াই বিশ্ব বাণিজ্যে শঙ্কা তৈরি করলেও বাংলাদেশের জন্য সম্ভাবনার দুয়ার খুলেছে। তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্যের রপ্তানিতে চাহিদা বাড়তে পারে। কম শুল্ক সুবিধায় চীন ও মেক্সিকোর পণ্যের তুলনায় বাংলাদেশের পণ্য পশ্চিমা বাজারে সাশ্রয়ী হবে। ফলে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, কানাডাসহ বিভিন্ন দেশের প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) বৃদ্ধি পেতে পারে।

তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, সঠিক কৌশল গ্রহণ না করলে এই সুযোগ হাতছাড়া হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র-কানাডার মধ্যে শুল্ক বৃদ্ধি নিয়ে পাল্টা পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে কানাডা, যা মেক্সিকো ও চীনও অনুসরণ করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে বিশ্ববাণিজ্য কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তবে তৈরি পোশাকের মতো মৌলিক চাহিদার পণ্যের ব্যবহারে বড় ধরনের প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা কম।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেনের মতে, বড় দেশগুলোর শুল্ক লড়াই বাংলাদেশের রপ্তানি এবং এফডিআইয়ের ক্ষেত্রে বড় সুবিধা তৈরি করবে এতে কোনো সন্দেহ নেই।

অন্যদিকে বিপদের কথা হচ্ছে, বিশ্ব অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হলে ইউরোপেও রপ্তানি কমতে পারে। তেলসমৃদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যে অভিবাসন বাধাগ্রস্ত হবে। রেমিট্যান্স প্রবাহ কমতে পারে। তিনি বলেন, চীন ও মেক্সিকো থেকে অনেকেই বিনিয়োগ স্থানান্তর করবেন। তবে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিধিবিধানের যে আবর্জনা আছে, তা মুক্ত করতে না পারলে সুযোগ কাজে লাগানো যাবে না। পাঁচটি এসইজেডকে উপযুক্ত করা এবং এক ছাদের নিচে সব সেবা নিশ্চিত করা গেলে সেই সম্ভাবনা কাজে লাগানোর সুযোগ রয়েছে। ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ভালো সম্পর্ক। এ রকম অনেক দেশই বিনিয়োগ সুবিধা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত।

বস্ত্র খাতের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিটিএমএর পরিচালক এবং লিটিল গ্রুপের চেয়ারম্যান খোরশেদ আলমের মতে, কম শুল্ক সুবিধায় বাংলাদেশি পণ্য ওই দেশগুলোতে দামে সাশ্রয়ী হবে। এ ছাড়া সরাসরি রপ্তানি উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ানোর সুযোগ ছাড়াও প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) আসবে বাংলাদেশে। যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানিতে বাংলাদেশের পণ্যে গড়ে সাড়ে ১৫ শতাংশ শুল্কারোপ রয়েছে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানিতে কম হারের এ শুল্ক সুবিধা নিতে চীন ও মেক্সিকোর উদ্যোক্তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াবেন।

ইপিবির হালনাগাদ প্রতিবেদনে জানা গেছে, ২০২৪ সালে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে ৭২০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে, যা মোট রপ্তানির প্রায় ১৯ শতাংশ। একসময় যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের ৯৭ শতাংশ পণ্য শুল্কমুক্ত সুবিধা (জিএসপি) পেত, তবে তৈরি পোশাক এর আওতায় ছিল না।
২০১৩ সালে রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর জিএসপি স্থগিত করে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর বাংলাদেশ কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা উন্নয়নে ব্যাপক বিনিয়োগ করে এবং এখন নিরাপদ কর্মপরিবেশের রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত। উদ্যোক্তারা মনে করেন, এতে চীনা বিনিয়োগ বাংলাদেশে আরও সহজ হবে।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ঢাকায় কাউন্টার থেকে চলবে ২১ কোম্পানির গোলাপী বাস

বিশ্ব বাণিজ্যে শঙ্কাতেও দেশে খুলছে সম্ভাবনার দুয়ার

আপডেট সময় : ০৬:১৭:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বিদেশের খবর ডেস্ক: সম্প্রতি বড় অর্থনীতির দেশগুলোর শুল্ক লড়াই বিশ্ব বাণিজ্যে শঙ্কা তৈরি করলেও বাংলাদেশের জন্য সম্ভাবনার দুয়ার খুলেছে। তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্যের রপ্তানিতে চাহিদা বাড়তে পারে। কম শুল্ক সুবিধায় চীন ও মেক্সিকোর পণ্যের তুলনায় বাংলাদেশের পণ্য পশ্চিমা বাজারে সাশ্রয়ী হবে। ফলে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, কানাডাসহ বিভিন্ন দেশের প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) বৃদ্ধি পেতে পারে।

তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, সঠিক কৌশল গ্রহণ না করলে এই সুযোগ হাতছাড়া হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র-কানাডার মধ্যে শুল্ক বৃদ্ধি নিয়ে পাল্টা পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে কানাডা, যা মেক্সিকো ও চীনও অনুসরণ করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে বিশ্ববাণিজ্য কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তবে তৈরি পোশাকের মতো মৌলিক চাহিদার পণ্যের ব্যবহারে বড় ধরনের প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা কম।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেনের মতে, বড় দেশগুলোর শুল্ক লড়াই বাংলাদেশের রপ্তানি এবং এফডিআইয়ের ক্ষেত্রে বড় সুবিধা তৈরি করবে এতে কোনো সন্দেহ নেই।

অন্যদিকে বিপদের কথা হচ্ছে, বিশ্ব অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হলে ইউরোপেও রপ্তানি কমতে পারে। তেলসমৃদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যে অভিবাসন বাধাগ্রস্ত হবে। রেমিট্যান্স প্রবাহ কমতে পারে। তিনি বলেন, চীন ও মেক্সিকো থেকে অনেকেই বিনিয়োগ স্থানান্তর করবেন। তবে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিধিবিধানের যে আবর্জনা আছে, তা মুক্ত করতে না পারলে সুযোগ কাজে লাগানো যাবে না। পাঁচটি এসইজেডকে উপযুক্ত করা এবং এক ছাদের নিচে সব সেবা নিশ্চিত করা গেলে সেই সম্ভাবনা কাজে লাগানোর সুযোগ রয়েছে। ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ভালো সম্পর্ক। এ রকম অনেক দেশই বিনিয়োগ সুবিধা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত।

বস্ত্র খাতের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিটিএমএর পরিচালক এবং লিটিল গ্রুপের চেয়ারম্যান খোরশেদ আলমের মতে, কম শুল্ক সুবিধায় বাংলাদেশি পণ্য ওই দেশগুলোতে দামে সাশ্রয়ী হবে। এ ছাড়া সরাসরি রপ্তানি উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ানোর সুযোগ ছাড়াও প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) আসবে বাংলাদেশে। যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানিতে বাংলাদেশের পণ্যে গড়ে সাড়ে ১৫ শতাংশ শুল্কারোপ রয়েছে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানিতে কম হারের এ শুল্ক সুবিধা নিতে চীন ও মেক্সিকোর উদ্যোক্তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াবেন।

ইপিবির হালনাগাদ প্রতিবেদনে জানা গেছে, ২০২৪ সালে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে ৭২০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে, যা মোট রপ্তানির প্রায় ১৯ শতাংশ। একসময় যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের ৯৭ শতাংশ পণ্য শুল্কমুক্ত সুবিধা (জিএসপি) পেত, তবে তৈরি পোশাক এর আওতায় ছিল না।
২০১৩ সালে রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর জিএসপি স্থগিত করে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর বাংলাদেশ কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা উন্নয়নে ব্যাপক বিনিয়োগ করে এবং এখন নিরাপদ কর্মপরিবেশের রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত। উদ্যোক্তারা মনে করেন, এতে চীনা বিনিয়োগ বাংলাদেশে আরও সহজ হবে।