প্রত্যাশা ডেস্ক: বিশ্ব প্রথমবারের মতো এমন একটি পূর্ণাঙ্গ বছর পার করল, যার গড় তাপমাত্রা শিল্প–পূর্ব সময়ের গড় তাপমাত্রার চেয়ে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি ছিল। তাপমাত্রা নথিভুক্ত করার পর থেকে ২০২৪ সালটি ছিল বিশ্বের সবচেয়ে উষ্ণতম বছর। আজ শুক্রবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিসের (সিথ্রিএস) বিজ্ঞানীরা এমনটাই মত দিয়েছেন।
সিথ্রিএস বলেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়ে এমন এক পর্যায়ে পৌঁছাচ্ছে, যা আধুনিক যুগের মানুষ আগে কখনো অনুভব করেনি।
সিথ্রিএসের পরিচালক কার্লো বুওনটেম্পো বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘প্রবণতাটি অবিশ্বাস্য রকমের।’ বিশ্বে যখন থেকে তাপমাত্রার তথ্য নথিভুক্ত করা হচ্ছে, তখন থেকে এ পর্যন্ত প্রাপ্ত হিসাব অনুসারে, ২০২৪ সালের প্রতিটি মাস কীভাবে সবচেয়ে উষ্ণ বা দ্বিতীয় উষ্ণতম ছিল, তা বর্ণনা করেছেন বুওনটেম্পো।
সিথ্রিএস বলছে, ১৮৫০ থেকে ১৯০০ সালে, অর্থাৎ শিল্প–পূর্ব যুগে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা যা ছিল, তার তুলনায় ২০২৪ সালের গড় তাপমাত্রা ১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। শিল্প–পূর্ব যুগের যে সময়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, সে সময় পর্যন্ত মানুষ বড় আকারে কার্বন নিঃসরণকারী জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার শুরু করেনি।
এযাবৎকালে তাপমাত্রার রেকর্ড অনুযায়ী, ২০২৪ সালটি ছিল সবচেয়ে উষ্ণ। এ ছাড়া গত ১০ বছরের মধ্যে প্রতিটি বছরই বিশ্বের সর্বোচ্চ ১০ উষ্ণতম বছরের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে।
২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশগুলো বিশ্বের গড় তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি বাড়তে না দিতে প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছিল। বিশ্বকে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ভয়াবহ দুর্যোগ থেকে বাঁচাতে এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তারা।
তবে ২০২৪ সালে গড় তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি বেড়ে যাওয়ার কারণে যে চুক্তির লক্ষ্য ভন্ডুল হয়ে গেছে, তা নয়। ওই চুক্তির আওতায় দীর্ঘ মেয়াদে গড় তাপমাত্রার হিসাবকে বিবেচনায় নেওয়া হবে।
বুওনটেম্পো এতে নিরাশ হতে রাজি নন। তিনি বলেন, ‘এতে সব শেষ হয়ে গেছে বলা যাবে না। এখনো এই প্রবণতায় পরিবর্তন আনার ক্ষমতা আমাদের আছে।’