ঢাকা ১১:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৬ অগাস্ট ২০২৫

বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশের দাবিতে ৭ কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

  • আপডেট সময় : ০১:১৫:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ অগাস্ট ২০২৫
  • ১৫ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর সাতটি সরকারি কলেজকে নিয়ে প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশ দ্রুত জারির দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (৬ আগস্ট) সকাল থেকে এ দাবি নিয়ে ঢাকা কলেজে জড়ো হতে থাকেন তারা। পরে বেলা ১১টার দিকে ঢাকা কলেজের মূল ফটক থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ নামে রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম চললেও অধ্যাদেশ এখনো জারি না হওয়ায় ক্ষোভ জানিয়ে এ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।

জানা গেছে, সকাল ১০টার পর থেকে ঢাকা কলেজের প্রধান ফটকে জড়ো হন ১৮০ থেকে ২০০ জন শিক্ষার্থী। বেলা ১১টা নাগাদ মিছিলটি শুরু হয় কলেজের ভেতর থেকে। মিছিলটি সায়েন্সল্যাব মোড় ঘুরে নীলক্ষেত হয়ে ইডেন মহিলা কলেজের সামনের সড়কে কিছু সময় অবস্থান করে। পরে আবার নীলক্ষেত হয়ে ঢাকা কলেজের মূল ফটকে এসে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কর্মসূচি শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অধ্যাদেশ প্রকাশের দাবিতে এই কর্মসূচির প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল কয়েকদিন ধরেই। ক্যাম্পাসে পোস্টারিং, ব্যানার লাগানোসহ চলছিল প্রচারাভিযান। শিক্ষার্থীরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে ‘সাত কলেজ’ নামে যে কাঠামোর অধীনে পড়াশোনা করেছেন তা তাদের জন্য অবমাননাকর অভিজ্ঞতা ছিল। ‘অধিভুক্তি’ শব্দটি বৈষম্যমূলক এবং আত্মপরিচয়হীনতার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে তারা মনে করেন।

আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ও সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর টিমের ফোকাল পারসন আব্দুর রহমান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আমরা বারবার বলেছি, শিক্ষা সিন্ডিকেটের কোনো ষড়যন্ত্র আমরা মানব না। স্বতন্ত্র পরিচয়ের দাবিতে বহুদিন ধরেই আমরা আন্দোলন করছি। এবার সময় এসেছে সেই লড়াইয়ের ফসল ঘরে তোলার।

তিনি আরো বলেন, সরকার যখন অধ্যাদেশ প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে, তখন তা নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বাস্তবায়ন করতে হবে। শিক্ষার্থীদের ওপর আর কোনো অনিশ্চয়তা চাপিয়ে দেওয়া চলবে না।

অন্যদিকে, আন্দোলনকারীরা শঙ্কা প্রকাশ করে জানান, অধ্যাদেশ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াটি পাঁচটি ধাপে সম্পন্ন হবে। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) খসড়া তৈরি করবে, যা যাবে আইন মন্ত্রণালয়ে। সেখান থেকে সংশোধন হয়ে আবার ইউজিসিতে ফিরে এসে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে উপদেষ্টা পরিষদে পাঠানো হবে। সবশেষে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিয়ে তা গেজেট আকারে প্রকাশ পাবে। শিক্ষার্থীদের আশঙ্কা, এই দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় সময়ক্ষেপণ হতে পারে– বিশেষ করে আইন মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ধাপে।

আন্দোলনকারীরা মনে করেন, এখনো আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দৃশ্যমান না হলেও ধীরগতির প্রশাসনিক কাঠামোর কারণে অধ্যাদেশ কার্যকর হতে বিলম্ব হতে পারে। তাই যৌক্তিক সময়সীমার মধ্যেই অধ্যাদেশ প্রকাশের দাবি জানিয়ে তারা রাজপথে নেমেছেন।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২৬ মার্চ রাজধানীর সাত সরকারি কলেজকে পৃথক করে নতুন একটি বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের ঘোষণা দেয় সরকার। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন প্রস্তাবিত নাম নির্ধারণ করে ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’। কলেজগুলো হলো– ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, মিরপুর বাংলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ।

এসি/

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশের দাবিতে ৭ কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

আপডেট সময় : ০১:১৫:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ অগাস্ট ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর সাতটি সরকারি কলেজকে নিয়ে প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশ দ্রুত জারির দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (৬ আগস্ট) সকাল থেকে এ দাবি নিয়ে ঢাকা কলেজে জড়ো হতে থাকেন তারা। পরে বেলা ১১টার দিকে ঢাকা কলেজের মূল ফটক থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ নামে রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম চললেও অধ্যাদেশ এখনো জারি না হওয়ায় ক্ষোভ জানিয়ে এ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।

জানা গেছে, সকাল ১০টার পর থেকে ঢাকা কলেজের প্রধান ফটকে জড়ো হন ১৮০ থেকে ২০০ জন শিক্ষার্থী। বেলা ১১টা নাগাদ মিছিলটি শুরু হয় কলেজের ভেতর থেকে। মিছিলটি সায়েন্সল্যাব মোড় ঘুরে নীলক্ষেত হয়ে ইডেন মহিলা কলেজের সামনের সড়কে কিছু সময় অবস্থান করে। পরে আবার নীলক্ষেত হয়ে ঢাকা কলেজের মূল ফটকে এসে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কর্মসূচি শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অধ্যাদেশ প্রকাশের দাবিতে এই কর্মসূচির প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল কয়েকদিন ধরেই। ক্যাম্পাসে পোস্টারিং, ব্যানার লাগানোসহ চলছিল প্রচারাভিযান। শিক্ষার্থীরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে ‘সাত কলেজ’ নামে যে কাঠামোর অধীনে পড়াশোনা করেছেন তা তাদের জন্য অবমাননাকর অভিজ্ঞতা ছিল। ‘অধিভুক্তি’ শব্দটি বৈষম্যমূলক এবং আত্মপরিচয়হীনতার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে তারা মনে করেন।

আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ও সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর টিমের ফোকাল পারসন আব্দুর রহমান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আমরা বারবার বলেছি, শিক্ষা সিন্ডিকেটের কোনো ষড়যন্ত্র আমরা মানব না। স্বতন্ত্র পরিচয়ের দাবিতে বহুদিন ধরেই আমরা আন্দোলন করছি। এবার সময় এসেছে সেই লড়াইয়ের ফসল ঘরে তোলার।

তিনি আরো বলেন, সরকার যখন অধ্যাদেশ প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে, তখন তা নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বাস্তবায়ন করতে হবে। শিক্ষার্থীদের ওপর আর কোনো অনিশ্চয়তা চাপিয়ে দেওয়া চলবে না।

অন্যদিকে, আন্দোলনকারীরা শঙ্কা প্রকাশ করে জানান, অধ্যাদেশ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াটি পাঁচটি ধাপে সম্পন্ন হবে। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) খসড়া তৈরি করবে, যা যাবে আইন মন্ত্রণালয়ে। সেখান থেকে সংশোধন হয়ে আবার ইউজিসিতে ফিরে এসে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে উপদেষ্টা পরিষদে পাঠানো হবে। সবশেষে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিয়ে তা গেজেট আকারে প্রকাশ পাবে। শিক্ষার্থীদের আশঙ্কা, এই দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় সময়ক্ষেপণ হতে পারে– বিশেষ করে আইন মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ধাপে।

আন্দোলনকারীরা মনে করেন, এখনো আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দৃশ্যমান না হলেও ধীরগতির প্রশাসনিক কাঠামোর কারণে অধ্যাদেশ কার্যকর হতে বিলম্ব হতে পারে। তাই যৌক্তিক সময়সীমার মধ্যেই অধ্যাদেশ প্রকাশের দাবি জানিয়ে তারা রাজপথে নেমেছেন।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২৬ মার্চ রাজধানীর সাত সরকারি কলেজকে পৃথক করে নতুন একটি বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের ঘোষণা দেয় সরকার। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন প্রস্তাবিত নাম নির্ধারণ করে ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’। কলেজগুলো হলো– ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, মিরপুর বাংলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ।

এসি/