ঢাকা ০৫:৪৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিশ্বজুড়ে যেসব ‘হটস্পটে’ তাপমাত্রা বাড়ছে চরম মাত্রায়

  • আপডেট সময় : ০৩:৩৭:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪
  • ১ বার পড়া হয়েছে

প্রযুক্তি ডেস্ক : বিশ্বের বেশ কয়েকটি অঞ্চলকে ‘হটস্পট’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন গবেষকরা, যেখানে তাপপ্রবাহ অত্যাধুনিক বিভিন্ন জলবায়ু মডেলের অনুমানের চেয়েও বাড়ছে চরম মাত্রায়। বৈশ্বিক এসব অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব অংশ, চীনের মধ্য অংশ, জাপান, কোরিয়া, আরব উপদ্বীপ, দক্ষিণ আমেরিকার কিছু অংশ ও আর্কটিক অঞ্চল। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা বাড়ছে ইউরোপের উত্তর-পশ্চিম অংশে। গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘প্রসিডিংস অফ দ্য অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সস অফ দ্য ইউনাইটেড স্টেটস অফ আমেরিকা বা পিএনএএস’-এ।
বিশ্বের বেশিরভাগ এলাকায় বছরের উষ্ণতম দিনগুলো সাধারণত গ্রীষ্মের দিনের মতোই দ্রুত উষ্ণ হয়ে উঠছে, যা আমাদের জানান দিচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের এক প্রভাবশালী সংকেত, বলেছেন এ গবেষণার সহ-লেখক ও যুক্তরাষ্ট্রের ‘কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি’র পিএইচডি প্রার্থী স্যামুয়েল বার্তুসেক।

আমরা যেসব হটস্পটের কথা গবেষণায় উল্লেখ করেছি তাতে ওইসব অঞ্চলের উষ্ণতম বিভিন্ন দিন আরও বেশি দ্রুত উষ্ণ হয়ে উঠছে। আর এটা বিভিন্ন কারণেই হতে পারে। বিশ্বের কিছু জায়গায় নির্দিষ্ট হিটওয়েভ বা তাপপ্রবাহের কারণে আবহাওয়ার ধরনে পরিবর্তনের মতো নানা ঘটনা ঘটতে পারে। যেমন-ওইসব জায়গার মাটি শুকিয়ে যাওয়ার ফলে সেখানকার তাপমাত্রা আরও বেড়ে যেতে পারে। সামাজিক ও প্রাকৃতিক ব্যবস্থায় অনেক প্রভাব ফেলতে পারে এই চরম মাত্রার তাপমাত্রা বা তাপপ্রবাহের মতো ঘটনা। জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এসব ঘটনার তীব্রতা, ফ্রিকোয়েন্সি ও সময়কালও প্রতিনিয়ত বাড়ছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট কসমস। নজিরবিহীন বা রেকর্ড-ভাঙা তাপের এই চরম মাত্রা, বর্তমান জলবায়ু পরিস্থিতিতে তৈরি এক বিরল ঘটনা। আর এমন ঘটনা আরও ঘন ঘন হবে বলে ধারণা গবেষকদের। ২০২৩ সালে ইউরোপ, মধ্য রাশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মতো অঞ্চলে দেখা গেছে রেকর্ড ভাঙা তাপমাত্রা। তাপমাত্রার এই বাড়তি প্রবাহ সাধারণত মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে এবং কৃষি, গাছপালা ও বিভিন্ন অবকাঠামোর জন্য বিপর্যয়ের কারণও হতে পারে, বলেছেন এ গবেষণার প্রধান লেখক ও ‘ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর অ্যাপ্লাইড সিস্টেমস অ্যানালাইসিস বা আইআইএএসএ’-এর জ্বালানি, জলবায়ু ও পরিবেশ কর্মসূচি বিভাগের কাই কর্নহুবার।
এমন পরিস্থিতির জন্য আমরা একেবারে প্রস্তুত নই। পাশাপাশি এমন বৈশ্বিক পরিস্থিতির সঙ্গে আমরা দ্রুত মানিয়ে নিতে পারব- এমন নিশ্চয়তাও নেই। তাপমাত্রার বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি কীভাবে বিভিন্ন জলবায়ু মডেলের অনুমানের সঙ্গে মেলে তা মূল্যায়নের জন্য এ গবেষণায় গত ৬৫ বছরের তাপপ্রবাহের তথ্যের দিকে নজর দিয়েছেন গবেষকরা। গবেষণার বিভিন্ন অনুসন্ধানে এমন সব অঞ্চলকেও চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে বিভিন্ন মডেলের অনুমানের চেয়ে তাপমাত্রা তেমন আকারে বাড়েনি। এমন অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-মধ্য অংশ, কানাডার দক্ষিণ-মধ্যাঞ্চল, দক্ষিণ আমেরিকার ভেতরকার কিছু অংশ, সাইবেরিয়া, উত্তর আফ্রিকা ও উত্তর অস্ট্রেলিয়া। গবেষকরা জোর দিয়ে বলেছেন, গোটা বিশ্বের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়াকে স্থিতিশীল রাখার জন্য জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার থেকে দ্রুত আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।

 

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বিশ্বজুড়ে যেসব ‘হটস্পটে’ তাপমাত্রা বাড়ছে চরম মাত্রায়

আপডেট সময় : ০৩:৩৭:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪

প্রযুক্তি ডেস্ক : বিশ্বের বেশ কয়েকটি অঞ্চলকে ‘হটস্পট’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন গবেষকরা, যেখানে তাপপ্রবাহ অত্যাধুনিক বিভিন্ন জলবায়ু মডেলের অনুমানের চেয়েও বাড়ছে চরম মাত্রায়। বৈশ্বিক এসব অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব অংশ, চীনের মধ্য অংশ, জাপান, কোরিয়া, আরব উপদ্বীপ, দক্ষিণ আমেরিকার কিছু অংশ ও আর্কটিক অঞ্চল। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা বাড়ছে ইউরোপের উত্তর-পশ্চিম অংশে। গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘প্রসিডিংস অফ দ্য অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সস অফ দ্য ইউনাইটেড স্টেটস অফ আমেরিকা বা পিএনএএস’-এ।
বিশ্বের বেশিরভাগ এলাকায় বছরের উষ্ণতম দিনগুলো সাধারণত গ্রীষ্মের দিনের মতোই দ্রুত উষ্ণ হয়ে উঠছে, যা আমাদের জানান দিচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের এক প্রভাবশালী সংকেত, বলেছেন এ গবেষণার সহ-লেখক ও যুক্তরাষ্ট্রের ‘কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি’র পিএইচডি প্রার্থী স্যামুয়েল বার্তুসেক।

আমরা যেসব হটস্পটের কথা গবেষণায় উল্লেখ করেছি তাতে ওইসব অঞ্চলের উষ্ণতম বিভিন্ন দিন আরও বেশি দ্রুত উষ্ণ হয়ে উঠছে। আর এটা বিভিন্ন কারণেই হতে পারে। বিশ্বের কিছু জায়গায় নির্দিষ্ট হিটওয়েভ বা তাপপ্রবাহের কারণে আবহাওয়ার ধরনে পরিবর্তনের মতো নানা ঘটনা ঘটতে পারে। যেমন-ওইসব জায়গার মাটি শুকিয়ে যাওয়ার ফলে সেখানকার তাপমাত্রা আরও বেড়ে যেতে পারে। সামাজিক ও প্রাকৃতিক ব্যবস্থায় অনেক প্রভাব ফেলতে পারে এই চরম মাত্রার তাপমাত্রা বা তাপপ্রবাহের মতো ঘটনা। জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এসব ঘটনার তীব্রতা, ফ্রিকোয়েন্সি ও সময়কালও প্রতিনিয়ত বাড়ছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট কসমস। নজিরবিহীন বা রেকর্ড-ভাঙা তাপের এই চরম মাত্রা, বর্তমান জলবায়ু পরিস্থিতিতে তৈরি এক বিরল ঘটনা। আর এমন ঘটনা আরও ঘন ঘন হবে বলে ধারণা গবেষকদের। ২০২৩ সালে ইউরোপ, মধ্য রাশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মতো অঞ্চলে দেখা গেছে রেকর্ড ভাঙা তাপমাত্রা। তাপমাত্রার এই বাড়তি প্রবাহ সাধারণত মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে এবং কৃষি, গাছপালা ও বিভিন্ন অবকাঠামোর জন্য বিপর্যয়ের কারণও হতে পারে, বলেছেন এ গবেষণার প্রধান লেখক ও ‘ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর অ্যাপ্লাইড সিস্টেমস অ্যানালাইসিস বা আইআইএএসএ’-এর জ্বালানি, জলবায়ু ও পরিবেশ কর্মসূচি বিভাগের কাই কর্নহুবার।
এমন পরিস্থিতির জন্য আমরা একেবারে প্রস্তুত নই। পাশাপাশি এমন বৈশ্বিক পরিস্থিতির সঙ্গে আমরা দ্রুত মানিয়ে নিতে পারব- এমন নিশ্চয়তাও নেই। তাপমাত্রার বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি কীভাবে বিভিন্ন জলবায়ু মডেলের অনুমানের সঙ্গে মেলে তা মূল্যায়নের জন্য এ গবেষণায় গত ৬৫ বছরের তাপপ্রবাহের তথ্যের দিকে নজর দিয়েছেন গবেষকরা। গবেষণার বিভিন্ন অনুসন্ধানে এমন সব অঞ্চলকেও চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে বিভিন্ন মডেলের অনুমানের চেয়ে তাপমাত্রা তেমন আকারে বাড়েনি। এমন অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-মধ্য অংশ, কানাডার দক্ষিণ-মধ্যাঞ্চল, দক্ষিণ আমেরিকার ভেতরকার কিছু অংশ, সাইবেরিয়া, উত্তর আফ্রিকা ও উত্তর অস্ট্রেলিয়া। গবেষকরা জোর দিয়ে বলেছেন, গোটা বিশ্বের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়াকে স্থিতিশীল রাখার জন্য জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার থেকে দ্রুত আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।