ঢাকা ০৮:২৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৬ অগাস্ট ২০২৫

বিশ্বকবির প্রত্যাশা পূরণে ভূমিকা রেখেছেন বঙ্গবন্ধু: ঢাবি উপাচার্য

  • আপডেট সময় : ০১:০৯:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ মে ২০২২
  • ১০৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : মানবতার সংকট উত্তরণে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রত্যাশা পূরণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ‘ভূমিকা রেখেছেন’ বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান।
তার কথায়, “মানবতার সংকট নিরসনের রবীন্দ্রনাথের প্রাচ্যের প্রতি যে প্রত্যাশা ছিল, তা পূরণে বঙ্গবন্ধু ভূমিকা রেখেছিলেন- তাতে কোনো সন্দেহ নেই।”
বিশ্বকবির ১৬১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন উপাচার্য।
অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, “রবীন্দ্রনাথের প্রতি গভীর অনুরাগী ছিলেন বঙ্গবন্ধু। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর চিন্তার মিল রয়েছে। সে কারণে আজ এই দুই মহামানবের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি। কেননা সকল মহামানবের চিন্তা এক জায়গায় পুঞ্জীভূত হয়, সকল উদার চিন্তা এক জায়গায় গিয়ে মেশে, সকল উদার চিন্তাই শ্বাশত।”
বিশ্বকবির প্রতি বঙ্গবন্ধুর অনুরাগের কথা বলতে গিয়ে উপাচার্য বলেন, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনায় বাংলার গণমানুষ সম্মিলিতভাবে একটি কঠিন সংকটকে কাটিয়ে যে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্ম দিতে সক্ষম হয়েছে, এটি বঙ্গবন্ধুর কাছে একটি পরম তৃপ্তির বিষয়।
“রবীন্দ্রনাথকে ধারণ করেন বলেই বঙ্গবন্ধু তখন বলেছিলেন, কবিগুরু তুমি দেখো, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি বাঙালি কিন্তু মানুষ হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের অন্য প্রসঙ্গে কথাগুলো বললেও সেদিন বঙ্গবন্ধুর এই কথা দ্বারা রবীন্দ্রনাথের প্রতি তার অনুরাগের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।”
‘রবীন্দ্রনাথ ও মানবতার সংকট’ শীর্ষক প্রতিপাদ্যের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী। তিনি বলেন, “মানবতার সংকট থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের সহায় রবীন্দ্রনাথ। এ কারণে ১৫০ বছর পরও রবীন্দ্রনাথ প্রাসঙ্গিক। রবীন্দ্রনাথ তার জীবনদশায় দুটি বিশ্বযুদ্ধ প্রত্যক্ষ করেছেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরু হওয়ার পর তার জীবনাবসান ঘটে। মৃত্যুর আগে সমৃদ্ধ, প্রাজ্ঞ, স্থিত রবীন্দ্রনাথ এই ভয়াবহ আগামীকে প্রত্যক্ষ করেছেন বর্তমানের পটে দাঁড়িয়ে। তিনি দেখেছেন, পশ্চিমা বিশ্ব কিভাবে বিজ্ঞানকে ব্যক্তি স্বার্থে, গোষ্ঠি স্বার্থে, রাজনৈতিক স্বার্থে, জাতিগত সংকীর্ণতা থেকে ব্যবহার করেছে।
“স্বার্থান্বেষী মানুষ যখন একে অপরের প্রতিপক্ষ হয়ে মানবতার সংকটকে একটা বিপর্যয়ের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিল, তখন রবীন্দ্রনাথ এই যুদ্ধের বিরুদ্ধে একেবারে সরাসরি সোচ্চার হয়ে ওঠেননি, কিন্তু মনোজাগতিক যে পরিবর্তন, সে পরিবর্তন তার সাহিত্যে তিনি তা রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।”
পরিবেশ বিপর্যয়কে মানবতার একটি বড় সংকট হিসেবে বর্ণনা করে ভীষ্মদেব বলেন, “এই সংকট আস্তে আস্তে বড় সংকটে পরিণত হচ্ছে। আমাদের রবীন্দ্রনাথের কাছে এই যুগেও আশ্রয় প্রার্থণা করতে হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকারের সঞ্চালনায় এ আয়োজনে বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে সঙ্গীত ও নৃত্যকলা বিভাগ।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বিশ্বকবির প্রত্যাশা পূরণে ভূমিকা রেখেছেন বঙ্গবন্ধু: ঢাবি উপাচার্য

আপডেট সময় : ০১:০৯:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ মে ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : মানবতার সংকট উত্তরণে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রত্যাশা পূরণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ‘ভূমিকা রেখেছেন’ বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান।
তার কথায়, “মানবতার সংকট নিরসনের রবীন্দ্রনাথের প্রাচ্যের প্রতি যে প্রত্যাশা ছিল, তা পূরণে বঙ্গবন্ধু ভূমিকা রেখেছিলেন- তাতে কোনো সন্দেহ নেই।”
বিশ্বকবির ১৬১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন উপাচার্য।
অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, “রবীন্দ্রনাথের প্রতি গভীর অনুরাগী ছিলেন বঙ্গবন্ধু। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর চিন্তার মিল রয়েছে। সে কারণে আজ এই দুই মহামানবের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি। কেননা সকল মহামানবের চিন্তা এক জায়গায় পুঞ্জীভূত হয়, সকল উদার চিন্তা এক জায়গায় গিয়ে মেশে, সকল উদার চিন্তাই শ্বাশত।”
বিশ্বকবির প্রতি বঙ্গবন্ধুর অনুরাগের কথা বলতে গিয়ে উপাচার্য বলেন, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনায় বাংলার গণমানুষ সম্মিলিতভাবে একটি কঠিন সংকটকে কাটিয়ে যে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্ম দিতে সক্ষম হয়েছে, এটি বঙ্গবন্ধুর কাছে একটি পরম তৃপ্তির বিষয়।
“রবীন্দ্রনাথকে ধারণ করেন বলেই বঙ্গবন্ধু তখন বলেছিলেন, কবিগুরু তুমি দেখো, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি বাঙালি কিন্তু মানুষ হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের অন্য প্রসঙ্গে কথাগুলো বললেও সেদিন বঙ্গবন্ধুর এই কথা দ্বারা রবীন্দ্রনাথের প্রতি তার অনুরাগের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।”
‘রবীন্দ্রনাথ ও মানবতার সংকট’ শীর্ষক প্রতিপাদ্যের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী। তিনি বলেন, “মানবতার সংকট থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের সহায় রবীন্দ্রনাথ। এ কারণে ১৫০ বছর পরও রবীন্দ্রনাথ প্রাসঙ্গিক। রবীন্দ্রনাথ তার জীবনদশায় দুটি বিশ্বযুদ্ধ প্রত্যক্ষ করেছেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরু হওয়ার পর তার জীবনাবসান ঘটে। মৃত্যুর আগে সমৃদ্ধ, প্রাজ্ঞ, স্থিত রবীন্দ্রনাথ এই ভয়াবহ আগামীকে প্রত্যক্ষ করেছেন বর্তমানের পটে দাঁড়িয়ে। তিনি দেখেছেন, পশ্চিমা বিশ্ব কিভাবে বিজ্ঞানকে ব্যক্তি স্বার্থে, গোষ্ঠি স্বার্থে, রাজনৈতিক স্বার্থে, জাতিগত সংকীর্ণতা থেকে ব্যবহার করেছে।
“স্বার্থান্বেষী মানুষ যখন একে অপরের প্রতিপক্ষ হয়ে মানবতার সংকটকে একটা বিপর্যয়ের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিল, তখন রবীন্দ্রনাথ এই যুদ্ধের বিরুদ্ধে একেবারে সরাসরি সোচ্চার হয়ে ওঠেননি, কিন্তু মনোজাগতিক যে পরিবর্তন, সে পরিবর্তন তার সাহিত্যে তিনি তা রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।”
পরিবেশ বিপর্যয়কে মানবতার একটি বড় সংকট হিসেবে বর্ণনা করে ভীষ্মদেব বলেন, “এই সংকট আস্তে আস্তে বড় সংকটে পরিণত হচ্ছে। আমাদের রবীন্দ্রনাথের কাছে এই যুগেও আশ্রয় প্রার্থণা করতে হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকারের সঞ্চালনায় এ আয়োজনে বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে সঙ্গীত ও নৃত্যকলা বিভাগ।