ঢাকা ০১:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫

বিয়ের আগেই যা জানা উচিত

  • আপডেট সময় : ১০:২৬:১৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৩
  • ১৩০ বার পড়া হয়েছে

লাইফস্টাইল ডেস্ক : বিয়ে জীবনের বড় একটি সিদ্ধান্ত। আর সিদ্ধান্তটি এমনই যেখানে নিজের পাশাপাশি জড়িয়ে থাকে অন্য একজন মানুষের ভবিষ্যতও। কাজেই বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সম্ভাব্য জীবনসঙ্গীর ভালো-মন্দের সম্পর্কে একটি স্বচ্ছ ধারণা থাকা আবশ্যক।
যদি পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় তবে বিয়ের আগে আলাপচারিতার সুযোগ কিছু কমই পাওয়া যায়। যারা সম্পর্ক করে বিয়ে করেন তাদেরও মাথায় রাখা প্রয়োজন যে, বিয়ের আগে ও পরের সম্পর্কের ব্যাকরণটা কিন্তু খানিকটা হলেও বদলে যায়। কোনো মানুষের সঙ্গে রোজ কয়েক ঘণ্টার আলাপ আর দিনের পর দিন একসঙ্গে কাটানোর মধ্যে অনেক পার্থক্য। কাজেই বিয়ের আগে একে অপরকে ভালোভাবে জানতে কিছু আলোচনা আবশ্যক। কোন কোন প্রশ্নগুলো সঙ্গীকে বিয়ের আগে করতে হবে?
১। বিবাহের সঙ্গে সঙ্গে সন্তান নিতে হবে, এই ধারণা বড্ড সেকেলে। কাজেই সন্তানধারণ নিয়ে হবু জীবনসঙ্গীর কী মতামত, তা আগে থেকেই জেনে নিন। অসম্মতি থাকলে আলোচনা করুন। যৌন সম্পর্কে জড়ানোর আগে সঙ্গী যৌনবাহিত রোগের পরীক্ষা করিয়ে নিতে চান কি-না, সেই বিষয়েও খোলাখুলি কথা বলুন। ২। বিয়ের আগে আলোচনা করুন সঙ্গীর অর্থনৈতিক দিক নিয়ে। এখন ছেলে-মেয়ে দু’জনেই সমানভাবে সংসার খরচের দায়িত্বভার বহন করে। দাম্পত্য জীবনে পরস্পরের অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকা অত্যন্ত প্রয়োজন।
৩। বিয়ে হওয়া মানেই কিন্তু যৌনতায় সম্মতির চিহ্ন নয়। কাজেই যৌনজীবন নিয়ে আগেভাগেই আলোচনা করা উচিত। যদি বিবাহের আগে যৌনতার অভিজ্ঞতা না থাকে, তা হলে তো এই আলোচনা অবশ্যই প্রয়োজন। সুস্থ যৌনজীবন সুস্থ দাম্পত্যের চাবিকাঠি, কাজেই এই বিষয় কথা বলতে গিয়ে সঙ্কোচবোধ করলে চলবে না।
৪। বিয়েতে দু’জন মানুষ ছাড়াও জড়িয়ে থাকে দু’টি পরিবার। দু’জনের পরিবারের সঙ্গে দু’জনের কেমন রসায়ন তা-ও আগে থেকে জেনে নেওয়া ভাল। নিজের পাশাপাশি পরিবারের কিছু চাহিদা থাকে সেই সম্পর্কে আগে থেকেই সঙ্গীকে ধারণা দিয়ে রাখুন।
৫। কীভাবে আপনি কর্মজীবন ও ব্যক্তিজীবনের ভারসাম্য বজায় রাখবেন সে বিষয় সঙ্গীর সঙ্গে আগেভাগেই আলোচনা করে নিন। অনেক সময়ে কর্মক্ষেত্রে অনেক বেশি সময় কাটাতে হয়, পারিবারিক জীবনে খুব বেশি সময় দেওয়া সম্ভব হয় না। আপনার ক্ষেত্রে এমনটা হলেও আগে থেকে খোলসা করে নিন। সঙ্গীর বিষয়টাও জেনে নিন।
সফল দাম্পত্যের জন্য জরুরি বিষয়সমূহ: নিউ ইয়র্কের অন্যতম খ্যাতনামা একজন বিবাহবিচ্ছেদ আইনজীবী এলিয়ট পোল্যান্ড। এ পেশায় তার অভিজ্ঞতা ৫০ বছরের বেশি। দীর্ঘ অভিজ্ঞতার কারণে তিনি জানেন যে, কিভাবে সম্পর্ক এগিয়ে যায় কিংবা ভেঙে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের নিউজ পোর্টাল ইনসাইডারকে এই আইনজীবী তার অভিজ্ঞতার আলোকে জানিয়েছেন, দাম্পত্য সম্পর্ক অটুটু রাখার জন্য কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে।
শ্বশুর-শাশুড়ি ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সীমানা নির্দিষ্ট করা: পোল্যান্ড বলেন, পরিবারের সদস্যদের অর্ন্তদৃষ্টি একজন ব্যক্তি সম্পর্কে কিছু বুঝতে উপযোগী হতে পারে, যা তার সঙ্গীর চোখে ধরা পড়ে না। তবে এখানে এটা নিশ্চিত করাটা গুরুত্বপূর্ণ যে, এটাকে যেন তার বেশি দূরে না নিয়ে যেতে পারে। তিনি বলেন, আমার কাছে এমন অনেক মক্কেল আসেন এবং তারা অভিযোগ করেন যে তাদের শ্বশুর-শাশুড়ি তাদের বিবাহিত জীবনকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। দম্পতিকেই চূড়ান্তভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয় যে, তাদের পরিবারের সদস্যদের সীমানা কতটুকু হওয়া উচিত। পোল্যান্ড আরো বলেন, ‘এক্ষেত্রে কোনো ম্যাজিক সূত্র আমার জানা নাই। কেননা প্রতিটি পরিস্থিতি আলাদা।’
স্নেহময় শারীরিক সম্পর্ক বজায় রাখা: এই বিষয়টি বিবাহিত দম্পতির জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, অবশ্যই শারীরিক সম্পর্ক অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ। এমনকি প্রবীণ দম্পতির ক্ষেত্রে যেখানে এই বিষয়টি কম গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়ে, সেখানেও গাঢ় আলিঙ্গন সম্পর্ক অটুট রাখার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এমন জীবনসঙ্গী বেছে নিন, যার সঙ্গে আপনার অনেক বেশি সাধারণ মিল রয়েছে: পোল্যান্ড বলেন, যদিও বিপরীত লিঙ্গ আপনার প্রতি খুব আগ্রহী কিন্তু আমি মনে করি কিছু সাধারণ মিল থাকা প্রয়োজন, যা পরবর্তীতে সম্পর্ক বজায় রাখতে সাহায্য করবে। সাধারণ মিল বা সাদৃশ্যগুলো যদি না থাকে, তা হলে অমিলগুলো নিয়ে তর্ক-বিতর্ক হবার সম্ভাবনা থাকে। অনেক সময় তা সম্পর্কে ইতি টানতে বাধ্য করে। তাই এমন একজনকে জীবনসঙ্গী করুন যার সঙ্গে আপনার বিশ্বাস, মূল্যবোধ মিলে যায়। যা আপনার সম্পর্ককে একটি শক্ত ভিত্তি দেবে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বিয়ের আগেই যা জানা উচিত

আপডেট সময় : ১০:২৬:১৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৩

লাইফস্টাইল ডেস্ক : বিয়ে জীবনের বড় একটি সিদ্ধান্ত। আর সিদ্ধান্তটি এমনই যেখানে নিজের পাশাপাশি জড়িয়ে থাকে অন্য একজন মানুষের ভবিষ্যতও। কাজেই বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সম্ভাব্য জীবনসঙ্গীর ভালো-মন্দের সম্পর্কে একটি স্বচ্ছ ধারণা থাকা আবশ্যক।
যদি পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় তবে বিয়ের আগে আলাপচারিতার সুযোগ কিছু কমই পাওয়া যায়। যারা সম্পর্ক করে বিয়ে করেন তাদেরও মাথায় রাখা প্রয়োজন যে, বিয়ের আগে ও পরের সম্পর্কের ব্যাকরণটা কিন্তু খানিকটা হলেও বদলে যায়। কোনো মানুষের সঙ্গে রোজ কয়েক ঘণ্টার আলাপ আর দিনের পর দিন একসঙ্গে কাটানোর মধ্যে অনেক পার্থক্য। কাজেই বিয়ের আগে একে অপরকে ভালোভাবে জানতে কিছু আলোচনা আবশ্যক। কোন কোন প্রশ্নগুলো সঙ্গীকে বিয়ের আগে করতে হবে?
১। বিবাহের সঙ্গে সঙ্গে সন্তান নিতে হবে, এই ধারণা বড্ড সেকেলে। কাজেই সন্তানধারণ নিয়ে হবু জীবনসঙ্গীর কী মতামত, তা আগে থেকেই জেনে নিন। অসম্মতি থাকলে আলোচনা করুন। যৌন সম্পর্কে জড়ানোর আগে সঙ্গী যৌনবাহিত রোগের পরীক্ষা করিয়ে নিতে চান কি-না, সেই বিষয়েও খোলাখুলি কথা বলুন। ২। বিয়ের আগে আলোচনা করুন সঙ্গীর অর্থনৈতিক দিক নিয়ে। এখন ছেলে-মেয়ে দু’জনেই সমানভাবে সংসার খরচের দায়িত্বভার বহন করে। দাম্পত্য জীবনে পরস্পরের অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকা অত্যন্ত প্রয়োজন।
৩। বিয়ে হওয়া মানেই কিন্তু যৌনতায় সম্মতির চিহ্ন নয়। কাজেই যৌনজীবন নিয়ে আগেভাগেই আলোচনা করা উচিত। যদি বিবাহের আগে যৌনতার অভিজ্ঞতা না থাকে, তা হলে তো এই আলোচনা অবশ্যই প্রয়োজন। সুস্থ যৌনজীবন সুস্থ দাম্পত্যের চাবিকাঠি, কাজেই এই বিষয় কথা বলতে গিয়ে সঙ্কোচবোধ করলে চলবে না।
৪। বিয়েতে দু’জন মানুষ ছাড়াও জড়িয়ে থাকে দু’টি পরিবার। দু’জনের পরিবারের সঙ্গে দু’জনের কেমন রসায়ন তা-ও আগে থেকে জেনে নেওয়া ভাল। নিজের পাশাপাশি পরিবারের কিছু চাহিদা থাকে সেই সম্পর্কে আগে থেকেই সঙ্গীকে ধারণা দিয়ে রাখুন।
৫। কীভাবে আপনি কর্মজীবন ও ব্যক্তিজীবনের ভারসাম্য বজায় রাখবেন সে বিষয় সঙ্গীর সঙ্গে আগেভাগেই আলোচনা করে নিন। অনেক সময়ে কর্মক্ষেত্রে অনেক বেশি সময় কাটাতে হয়, পারিবারিক জীবনে খুব বেশি সময় দেওয়া সম্ভব হয় না। আপনার ক্ষেত্রে এমনটা হলেও আগে থেকে খোলসা করে নিন। সঙ্গীর বিষয়টাও জেনে নিন।
সফল দাম্পত্যের জন্য জরুরি বিষয়সমূহ: নিউ ইয়র্কের অন্যতম খ্যাতনামা একজন বিবাহবিচ্ছেদ আইনজীবী এলিয়ট পোল্যান্ড। এ পেশায় তার অভিজ্ঞতা ৫০ বছরের বেশি। দীর্ঘ অভিজ্ঞতার কারণে তিনি জানেন যে, কিভাবে সম্পর্ক এগিয়ে যায় কিংবা ভেঙে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের নিউজ পোর্টাল ইনসাইডারকে এই আইনজীবী তার অভিজ্ঞতার আলোকে জানিয়েছেন, দাম্পত্য সম্পর্ক অটুটু রাখার জন্য কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে।
শ্বশুর-শাশুড়ি ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সীমানা নির্দিষ্ট করা: পোল্যান্ড বলেন, পরিবারের সদস্যদের অর্ন্তদৃষ্টি একজন ব্যক্তি সম্পর্কে কিছু বুঝতে উপযোগী হতে পারে, যা তার সঙ্গীর চোখে ধরা পড়ে না। তবে এখানে এটা নিশ্চিত করাটা গুরুত্বপূর্ণ যে, এটাকে যেন তার বেশি দূরে না নিয়ে যেতে পারে। তিনি বলেন, আমার কাছে এমন অনেক মক্কেল আসেন এবং তারা অভিযোগ করেন যে তাদের শ্বশুর-শাশুড়ি তাদের বিবাহিত জীবনকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। দম্পতিকেই চূড়ান্তভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয় যে, তাদের পরিবারের সদস্যদের সীমানা কতটুকু হওয়া উচিত। পোল্যান্ড আরো বলেন, ‘এক্ষেত্রে কোনো ম্যাজিক সূত্র আমার জানা নাই। কেননা প্রতিটি পরিস্থিতি আলাদা।’
স্নেহময় শারীরিক সম্পর্ক বজায় রাখা: এই বিষয়টি বিবাহিত দম্পতির জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, অবশ্যই শারীরিক সম্পর্ক অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ। এমনকি প্রবীণ দম্পতির ক্ষেত্রে যেখানে এই বিষয়টি কম গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়ে, সেখানেও গাঢ় আলিঙ্গন সম্পর্ক অটুট রাখার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এমন জীবনসঙ্গী বেছে নিন, যার সঙ্গে আপনার অনেক বেশি সাধারণ মিল রয়েছে: পোল্যান্ড বলেন, যদিও বিপরীত লিঙ্গ আপনার প্রতি খুব আগ্রহী কিন্তু আমি মনে করি কিছু সাধারণ মিল থাকা প্রয়োজন, যা পরবর্তীতে সম্পর্ক বজায় রাখতে সাহায্য করবে। সাধারণ মিল বা সাদৃশ্যগুলো যদি না থাকে, তা হলে অমিলগুলো নিয়ে তর্ক-বিতর্ক হবার সম্ভাবনা থাকে। অনেক সময় তা সম্পর্কে ইতি টানতে বাধ্য করে। তাই এমন একজনকে জীবনসঙ্গী করুন যার সঙ্গে আপনার বিশ্বাস, মূল্যবোধ মিলে যায়। যা আপনার সম্পর্ককে একটি শক্ত ভিত্তি দেবে।