ঢাকা ০৭:৪২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫
পিবিআই-এর ইনভেস্টিগেশন

বিয়ামে এসি বিস্ফোরণ নয়, নথি পোড়াতে গিয়ে ২ জনের মৃত্যু

  • আপডেট সময় : ০৯:১৭:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫
  • ৯ বার পড়া হয়েছে

পিবিআই’র হেফাজতে গ্রেফতার দুই জন -ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ইস্কাটনে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (বিয়াম) ফাউন্ডেশনের একটি অফিস কক্ষে এসি বিস্ফোরণে অফিস সহায়ক ও গাড়িচালকের মৃত্যুর খবর আসে। ফায়ার সার্ভিসও জানায় এসি বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে তাদের।
তবে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড অপারেশন ইউনিট (এসআইঅ্যান্ডও) তিন মাস তদন্ত করে বের করে এসি বিস্ফোরণে নয়, এটি একটি হত্যাকাণ্ড। হত্যার উদ্দেশ্য ছিল না আসামিদের, পেট্রোল ঢেলে নথিপত্র পুড়িয়ে দেওয়ার সময় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে যায়। আগুন লাগিয়ে নথিপত্র পুড়িয়ে ফেলার কাজের জন্য চুক্তি হয় ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা।

আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সের (এআই) মাধ্যমে এ হত্যামামলার আসামি শনাক্ত ও পরে গ্রেফতার করে পিবিআই। গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলো– ঘটনার মাস্টারমাইন্ড বিয়ামের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম (৩৮) এবং তার ভাড়াটে সহযোগী মো. আশরাফুল ইসলাম (৩৬)। শুক্রবার (২৫ জুলাই) কুড়িগ্রাম ও ঢাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
সোমবার (২৮ জুলাই) রাজধানীর কল্যাণপুরে পিবিআই উত্তর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির বিশেষ পুলিশ সুপার আব্দুর রহমান। তিনি বলেন, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রাত ৩টা ২০ মিনিটের দিকে বিয়াম ভবনে ৫০৪ নম্বর কক্ষে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে ৫০৪ নম্বর কক্ষে রক্ষিত সমিতির দলিলপত্রাদি, নামজারি সংক্রান্তে কাগজপত্রাদি, ব্যাংক হিসাব, চেক বই, জমি ক্রয় সংক্রান্ত চারটি চুক্তিপত্র, ইলেকট্রিক সামগ্রী, আসবাবপত্র কক্ষের এসিসহ অন্যান্য মালামাল পুড়ে ভস্মীভূত, চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যায়।
আব্দুর রহমান বলেন, অফিস সহায়ক মো. আব্দুল মালেক ঘটনাস্থলেই মারা যান এবং সমিতির সেক্রেটারির গাড়িচালক মো. ফারুক গুরুতর আহত হলে তাকে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয় এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় বিসিএস (প্রশাসন) কল্যাণ বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক অবসরপ্রাপ্ত সচিব মো. মশিউর রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানায় মামলা করেন। তিনি বলেন, হাতিরঝিল থানা-পুলিশ দুই মাস মামলাটি তদন্ত করে। গত ৬ মে পিবিআই এসআইঅ্যান্ডও (উত্তর) মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে এবং এসআই মোহাম্মদ গোলাম মওলাকে তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ করা হয়।
পিবিআইয়ের বিশেষ টিম মামলার ঘটনার তারিখ ও সময় এবং সিসি ক্যামেরার ফুটেজে বিশ্লেষণে জানতে পারে ২৭ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে মাথায় মাস্কিং ক্যাপ, মুখে মাস্ক, হাতে হ্যান্ড গ্লাভস, পায়ে স্যান্ডেল পরা অবস্থায় ৩০-৩৫ বছর বয়সী এক সন্দেহভাজন যুবক বিয়াম ভবন মাঠের পশ্চিম দিক থেকে এসে সিঁড়ি দিয়ে পঞ্চম তলায় চলে যান এবং সিসি ক্যামেরা বন্ধ করে দেন।

তিনি আরো বলেন, পিবিআইয়ের টিম আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্সের মাধ্যমে আসামির ছবি শনাক্ত করে। তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পিবিআইয়ের একাধিক টিম আত্মগোপনে থাকা ঘটনার সঙ্গে জড়িত মো. আশরাফুল ইসলামকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আশরাফুল ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন এবং তার দেওয়া তথ্যমতে ঘটনার মাস্টারমাইন্ড বিয়ামের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলামকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

পিবিআই’র এই কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আশরাফুল পিবিআইকে জানান, জাহিদুল ইসলাম তার পূর্ব পরিচিত এবং এলাকার ভাই। জাহিদুল ইসলাম তাকে গত বছর ঢাকায় এনে মগবাজার থ্রি-স্টার হোটেলে একটানা ৫-৬ মাস রাখেন। জাহিদুল ইসলামের সূত্র ধরে আশরাফুল প্রায়ই বিয়াম প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করতেন এবং ওই অফিসের কাজে কয়েকজনের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি হয়। সমিতির মূল নথিপত্র স্থায়ীভাবে ধ্বংসের লক্ষ্যে জাহিদুল ইসলাম, আশরাফুল, বিয়ামের অফিস সহায়ক আবদুল মালেক ও গাড়িচালক ফারুক মিলে পরিকল্পনা করেন। কাজ শেষে তাদের ১০-১২ লাখ টাকা দেওয়ার মৌখিক চুক্তি হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী একদিন জাহিদ কিছু টাকা দিয়ে আশরাফুলকে বিয়ামের পঞ্চম তলার সিসি ক্যামেরা বন্ধ করতে বলেন।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, ঘটনার দিন আশরাফুল মাথায় মাস্কিং ক্যাপ, মুখে মাস্ক এবং হ্যান্ড গ্লাভস পরে বিয়াম ভবনের পঞ্চম তলায় উঠে ক্যামেরা বন্ধ করে দেন। এরপর পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মালেক ও ফারুক চতুর্থ তলার ৫০৪ নম্বর কক্ষে প্রবেশ করেন। তখন আশরাফুল দরজার পাশে সিঁড়ির কোনায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। ৫০৪ নম্বর কক্ষে প্রবেশ করে মালেক বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন।

তিনি বলেন, আশরাফুল পঞ্চম তলা থেকে তৃতীয় তলা নামতেই বিকট বিস্ফোরণের শব্দ হয়। ঘটনাস্থলেই মালেক মারা যান। জাহিদ গাড়ি নিয়ে আশরাফুলের সহযোগিতায় গুরুতর আহত অবস্থায় ফারুককে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করান। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফারুক মারা গেলে জাহিদ আশরাফুলকে ঢাকা ছেড়ে অন্য কোথাও গা-ঢাকা দিতে বলেন। পরদিন রংপুর চলে যান আশরাফুল। এই কাজে আশরাফুলকে ১০-১২ লাখ টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও জাহিদ এখন পর্যন্ত ৬-৭ লাখ টাকা দেন।

জাহিদুল ইসলাম ও মো. আশরাফুলকে আদালতে সোপর্দ করা হলে তারা ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন বলেও জানান পিবিআই’র এই কর্মকর্তা।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

পিবিআই-এর ইনভেস্টিগেশন

বিয়ামে এসি বিস্ফোরণ নয়, নথি পোড়াতে গিয়ে ২ জনের মৃত্যু

আপডেট সময় : ০৯:১৭:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ইস্কাটনে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (বিয়াম) ফাউন্ডেশনের একটি অফিস কক্ষে এসি বিস্ফোরণে অফিস সহায়ক ও গাড়িচালকের মৃত্যুর খবর আসে। ফায়ার সার্ভিসও জানায় এসি বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে তাদের।
তবে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড অপারেশন ইউনিট (এসআইঅ্যান্ডও) তিন মাস তদন্ত করে বের করে এসি বিস্ফোরণে নয়, এটি একটি হত্যাকাণ্ড। হত্যার উদ্দেশ্য ছিল না আসামিদের, পেট্রোল ঢেলে নথিপত্র পুড়িয়ে দেওয়ার সময় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে যায়। আগুন লাগিয়ে নথিপত্র পুড়িয়ে ফেলার কাজের জন্য চুক্তি হয় ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা।

আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সের (এআই) মাধ্যমে এ হত্যামামলার আসামি শনাক্ত ও পরে গ্রেফতার করে পিবিআই। গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলো– ঘটনার মাস্টারমাইন্ড বিয়ামের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম (৩৮) এবং তার ভাড়াটে সহযোগী মো. আশরাফুল ইসলাম (৩৬)। শুক্রবার (২৫ জুলাই) কুড়িগ্রাম ও ঢাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
সোমবার (২৮ জুলাই) রাজধানীর কল্যাণপুরে পিবিআই উত্তর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির বিশেষ পুলিশ সুপার আব্দুর রহমান। তিনি বলেন, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রাত ৩টা ২০ মিনিটের দিকে বিয়াম ভবনে ৫০৪ নম্বর কক্ষে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে ৫০৪ নম্বর কক্ষে রক্ষিত সমিতির দলিলপত্রাদি, নামজারি সংক্রান্তে কাগজপত্রাদি, ব্যাংক হিসাব, চেক বই, জমি ক্রয় সংক্রান্ত চারটি চুক্তিপত্র, ইলেকট্রিক সামগ্রী, আসবাবপত্র কক্ষের এসিসহ অন্যান্য মালামাল পুড়ে ভস্মীভূত, চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যায়।
আব্দুর রহমান বলেন, অফিস সহায়ক মো. আব্দুল মালেক ঘটনাস্থলেই মারা যান এবং সমিতির সেক্রেটারির গাড়িচালক মো. ফারুক গুরুতর আহত হলে তাকে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয় এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় বিসিএস (প্রশাসন) কল্যাণ বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক অবসরপ্রাপ্ত সচিব মো. মশিউর রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানায় মামলা করেন। তিনি বলেন, হাতিরঝিল থানা-পুলিশ দুই মাস মামলাটি তদন্ত করে। গত ৬ মে পিবিআই এসআইঅ্যান্ডও (উত্তর) মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে এবং এসআই মোহাম্মদ গোলাম মওলাকে তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ করা হয়।
পিবিআইয়ের বিশেষ টিম মামলার ঘটনার তারিখ ও সময় এবং সিসি ক্যামেরার ফুটেজে বিশ্লেষণে জানতে পারে ২৭ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে মাথায় মাস্কিং ক্যাপ, মুখে মাস্ক, হাতে হ্যান্ড গ্লাভস, পায়ে স্যান্ডেল পরা অবস্থায় ৩০-৩৫ বছর বয়সী এক সন্দেহভাজন যুবক বিয়াম ভবন মাঠের পশ্চিম দিক থেকে এসে সিঁড়ি দিয়ে পঞ্চম তলায় চলে যান এবং সিসি ক্যামেরা বন্ধ করে দেন।

তিনি আরো বলেন, পিবিআইয়ের টিম আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্সের মাধ্যমে আসামির ছবি শনাক্ত করে। তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পিবিআইয়ের একাধিক টিম আত্মগোপনে থাকা ঘটনার সঙ্গে জড়িত মো. আশরাফুল ইসলামকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আশরাফুল ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন এবং তার দেওয়া তথ্যমতে ঘটনার মাস্টারমাইন্ড বিয়ামের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলামকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

পিবিআই’র এই কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আশরাফুল পিবিআইকে জানান, জাহিদুল ইসলাম তার পূর্ব পরিচিত এবং এলাকার ভাই। জাহিদুল ইসলাম তাকে গত বছর ঢাকায় এনে মগবাজার থ্রি-স্টার হোটেলে একটানা ৫-৬ মাস রাখেন। জাহিদুল ইসলামের সূত্র ধরে আশরাফুল প্রায়ই বিয়াম প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করতেন এবং ওই অফিসের কাজে কয়েকজনের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি হয়। সমিতির মূল নথিপত্র স্থায়ীভাবে ধ্বংসের লক্ষ্যে জাহিদুল ইসলাম, আশরাফুল, বিয়ামের অফিস সহায়ক আবদুল মালেক ও গাড়িচালক ফারুক মিলে পরিকল্পনা করেন। কাজ শেষে তাদের ১০-১২ লাখ টাকা দেওয়ার মৌখিক চুক্তি হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী একদিন জাহিদ কিছু টাকা দিয়ে আশরাফুলকে বিয়ামের পঞ্চম তলার সিসি ক্যামেরা বন্ধ করতে বলেন।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, ঘটনার দিন আশরাফুল মাথায় মাস্কিং ক্যাপ, মুখে মাস্ক এবং হ্যান্ড গ্লাভস পরে বিয়াম ভবনের পঞ্চম তলায় উঠে ক্যামেরা বন্ধ করে দেন। এরপর পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মালেক ও ফারুক চতুর্থ তলার ৫০৪ নম্বর কক্ষে প্রবেশ করেন। তখন আশরাফুল দরজার পাশে সিঁড়ির কোনায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। ৫০৪ নম্বর কক্ষে প্রবেশ করে মালেক বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন।

তিনি বলেন, আশরাফুল পঞ্চম তলা থেকে তৃতীয় তলা নামতেই বিকট বিস্ফোরণের শব্দ হয়। ঘটনাস্থলেই মালেক মারা যান। জাহিদ গাড়ি নিয়ে আশরাফুলের সহযোগিতায় গুরুতর আহত অবস্থায় ফারুককে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করান। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফারুক মারা গেলে জাহিদ আশরাফুলকে ঢাকা ছেড়ে অন্য কোথাও গা-ঢাকা দিতে বলেন। পরদিন রংপুর চলে যান আশরাফুল। এই কাজে আশরাফুলকে ১০-১২ লাখ টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও জাহিদ এখন পর্যন্ত ৬-৭ লাখ টাকা দেন।

জাহিদুল ইসলাম ও মো. আশরাফুলকে আদালতে সোপর্দ করা হলে তারা ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন বলেও জানান পিবিআই’র এই কর্মকর্তা।