ঢাকা ১২:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫

বিমানবন্দর উন্নয়নে দুর্নীতি, তারিক সিদ্দিকসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে ৪ মামলা

  • আপডেট সময় : ০৭:৪৮:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫
  • ২০ বার পড়া হয়েছে

বাম দিক থেকে তারিক আহমেদ সিদ্দিক, এম মফিদুর রহমান ও মহিবুল হক-সংগৃহীত ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির মাধ্যমে কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সামরিক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে চারটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সোমবার (২৭ জানুয়ারি) ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ এসব মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন। তিনি বলেন, ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির মাধ্যমে ৮১২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে রয়েছে আসামিদের বিরুদ্ধে।

দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মুহিবুল হক, সাবেক যুগ্ম সচিব জনেন্দ্রনাথ সরকার, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) সাবেক চেয়ারম্যান এম মফিদুর রহমান, সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুল মালেক, সুপারেনটেনডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. হাবিবুর রহমান, অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুবুল আলম, পরিচালক লুৎফুল্লাহ মাজেদ, কমিউনিকেশন-নেভিগেশন অ্যান্ড সার্ভিল্যান্স-এয়ার ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট শীর্ষক প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আফরোজা নাসরিন সুলতানা এবং সাবেক প্রকল্প পরিচালক (পরিকল্পনা) এ কে এম মনজুর আহমেদ পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণা, জালিয়াতি, অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিগত ১৫ বছরে দেশের বিভিন্ন বিমানবন্দরের উন্নয়ন কাজের নামে হাজার হাজার কোটি লুটপাট ও আত্মসাৎ করেছেন।

একটি মামলার এজাহারে বলা হয়, ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইন্সটেলেশন অব রাডার উইথ সিএনএস-এটিএম প্রকল্পের রাডার নির্মাণ কাজে অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডকে সম্পৃক্ত করা হয়। এ প্রকল্পে থ্যালেস এলএএস ফ্রান্স এসএএস নামে একটি কোম্পানির রাডার বসানোর কাজ চলমান রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুবুল আলম সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামরিক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। তারিক সিদ্দিকের ক্ষমতার প্রভাবে সাবেক সিনিয়র সচিব মো. মুহিবুল হক, সাবেক যুগ্ম সচিব জনেন্দ্রনাথ সরকারকে প্রভাবিত করে জি টু জি ভিত্তিতে ফ্রান্সের কোম্পানি থালেস এলএনস- এর সঙ্গে চুক্তি করে কার্যাদেশ প্রদান করেন। এ কোম্পানির সঙ্গে অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড কো-কন্ট্রাক্টের মাধ্যমে প্রকল্পের কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়। এক্ষেত্রে অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড স্থানীয় এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছে বলে তথ্য পাওয়া যায়। এ প্রকল্পের কাজে ৭৩০ কোটি টাকা বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় করা হয়। দুদকের অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, থালেস নামের কোম্পানিটি মূলত রাডার নির্মাণের কাজ করে থাকে। এই কোম্পানিটি কোনও সিভিল কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকে না। প্রকল্পটিতে কন্ট্রোল টাওয়ার বিল্ডিং নির্মাণের কাজে কোনও সুনির্দিষ্ট স্পেসিফিকেশন না থাকা সত্ত্বেও এ কাজে ১৫০ কোটি টাকা ব্যয় ধরার তথ্য পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে কৌশলে পিপিআর- ২০০৮সহ ক্রয় প্রক্রিয়ার বিধি-বিধান লঙ্ঘন করে উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বানের বদলে প্রতিদ্বন্দ্বিতাবিহীন জি টু জি দরপত্র প্রক্রিয়ায় কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, নিজেরা আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার হীন উদ্দেশ্যে ইলেক্ট্রিক অ্যান্ড মেকানিক্যাল কাজের সঙ্গে সিভিল কাজ একীভূত করে অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডকে এ কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হয়। এ প্রকল্প থেকেই ২০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে আসামিরা শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

অপর একটি এজাহারেও তারেক সিদ্দিকসহ ১০ জনকে আসামি করা হয়। সেই এজাহারে বলা হয়, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ (থার্ড টার্মিনাল) প্রকল্পের কার্যাদেশ দেওয়া হয় এভিয়েশন ঢাকা কনসোর্টিয়াম (এডিসি) নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে। ওই কাজের সঙ্গেও অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড সম্পৃক্ত বলে তথ্য পাওয়া যায়। বিধি লঙ্ঘন করে ওই প্রকল্পের ১৩ হাজার কোটি টাকার প্রাক্কলন প্রকল্পের অর্থের পরিমাণ বাড়িয়ে ২১ হাজার কোটি টাকার কার্যাদেশ দেওয়া হয়। এ প্রকল্প থেকে তারা ২৫০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে তথ্য পেয়েছে দুদক।

অপরদিকে, সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ কাজে স্থানীয় এজেন্ট হিসেবে বেআইনি সুবিধা নিয়ে ও দিয়ে অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড কো-কন্ট্রাকটর হয়ে কার্যাদেশ পেয়ে তা বাস্তবায়নে নিয়োজিত থাকে। অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড দেশের বিমানবন্দরগুলোর কোনও প্রকল্পে সরাসরি, আবার কোনও প্রকল্পে বিদেশি কোম্পানির লোকাল এজেন্ট হয়ে কাজ করেছে। আইন ও চুক্তি লঙ্ঘন করে পরস্পর যোগসাজশে প্রকল্পগুলোর সামগ্রিক কাজে অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডকে সম্পৃক্ত করা হয়। প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার এ প্রকল্পের কাজে ২১২ কোটি টাকা অগ্রিম গ্রহণ করে তা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এ মামলায় ১১ জনকে আসামি করা হয়েছে।

কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল নির্মাণ ও রানওয়ে নির্মাণ সংক্রান্ত প্রকল্পে এক হাজার ৫০০ কোটি টাকার অনিয়ম হয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। এক্ষেত্রে চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন করপোরেশন (সিসিইসিসি) নামে একটি চীনা কোম্পানিকে প্রকল্পের কার্যাদেশ দেওয়ার ক্ষেত্রে তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ আসামিরা পরস্পর সহযোগিতা করেন। আসামিরা এ প্রকল্প থেকে অন্তত ১৫০ কোটি টাকা লুটপাটের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বিমানবন্দর উন্নয়নে দুর্নীতি, তারিক সিদ্দিকসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে ৪ মামলা

আপডেট সময় : ০৭:৪৮:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির মাধ্যমে কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সামরিক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে চারটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সোমবার (২৭ জানুয়ারি) ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ এসব মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন। তিনি বলেন, ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির মাধ্যমে ৮১২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে রয়েছে আসামিদের বিরুদ্ধে।

দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মুহিবুল হক, সাবেক যুগ্ম সচিব জনেন্দ্রনাথ সরকার, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) সাবেক চেয়ারম্যান এম মফিদুর রহমান, সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুল মালেক, সুপারেনটেনডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. হাবিবুর রহমান, অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুবুল আলম, পরিচালক লুৎফুল্লাহ মাজেদ, কমিউনিকেশন-নেভিগেশন অ্যান্ড সার্ভিল্যান্স-এয়ার ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট শীর্ষক প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আফরোজা নাসরিন সুলতানা এবং সাবেক প্রকল্প পরিচালক (পরিকল্পনা) এ কে এম মনজুর আহমেদ পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণা, জালিয়াতি, অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিগত ১৫ বছরে দেশের বিভিন্ন বিমানবন্দরের উন্নয়ন কাজের নামে হাজার হাজার কোটি লুটপাট ও আত্মসাৎ করেছেন।

একটি মামলার এজাহারে বলা হয়, ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইন্সটেলেশন অব রাডার উইথ সিএনএস-এটিএম প্রকল্পের রাডার নির্মাণ কাজে অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডকে সম্পৃক্ত করা হয়। এ প্রকল্পে থ্যালেস এলএএস ফ্রান্স এসএএস নামে একটি কোম্পানির রাডার বসানোর কাজ চলমান রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুবুল আলম সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামরিক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। তারিক সিদ্দিকের ক্ষমতার প্রভাবে সাবেক সিনিয়র সচিব মো. মুহিবুল হক, সাবেক যুগ্ম সচিব জনেন্দ্রনাথ সরকারকে প্রভাবিত করে জি টু জি ভিত্তিতে ফ্রান্সের কোম্পানি থালেস এলএনস- এর সঙ্গে চুক্তি করে কার্যাদেশ প্রদান করেন। এ কোম্পানির সঙ্গে অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড কো-কন্ট্রাক্টের মাধ্যমে প্রকল্পের কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়। এক্ষেত্রে অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড স্থানীয় এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছে বলে তথ্য পাওয়া যায়। এ প্রকল্পের কাজে ৭৩০ কোটি টাকা বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় করা হয়। দুদকের অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, থালেস নামের কোম্পানিটি মূলত রাডার নির্মাণের কাজ করে থাকে। এই কোম্পানিটি কোনও সিভিল কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকে না। প্রকল্পটিতে কন্ট্রোল টাওয়ার বিল্ডিং নির্মাণের কাজে কোনও সুনির্দিষ্ট স্পেসিফিকেশন না থাকা সত্ত্বেও এ কাজে ১৫০ কোটি টাকা ব্যয় ধরার তথ্য পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে কৌশলে পিপিআর- ২০০৮সহ ক্রয় প্রক্রিয়ার বিধি-বিধান লঙ্ঘন করে উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বানের বদলে প্রতিদ্বন্দ্বিতাবিহীন জি টু জি দরপত্র প্রক্রিয়ায় কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, নিজেরা আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার হীন উদ্দেশ্যে ইলেক্ট্রিক অ্যান্ড মেকানিক্যাল কাজের সঙ্গে সিভিল কাজ একীভূত করে অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডকে এ কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হয়। এ প্রকল্প থেকেই ২০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে আসামিরা শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

অপর একটি এজাহারেও তারেক সিদ্দিকসহ ১০ জনকে আসামি করা হয়। সেই এজাহারে বলা হয়, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ (থার্ড টার্মিনাল) প্রকল্পের কার্যাদেশ দেওয়া হয় এভিয়েশন ঢাকা কনসোর্টিয়াম (এডিসি) নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে। ওই কাজের সঙ্গেও অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড সম্পৃক্ত বলে তথ্য পাওয়া যায়। বিধি লঙ্ঘন করে ওই প্রকল্পের ১৩ হাজার কোটি টাকার প্রাক্কলন প্রকল্পের অর্থের পরিমাণ বাড়িয়ে ২১ হাজার কোটি টাকার কার্যাদেশ দেওয়া হয়। এ প্রকল্প থেকে তারা ২৫০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে তথ্য পেয়েছে দুদক।

অপরদিকে, সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ কাজে স্থানীয় এজেন্ট হিসেবে বেআইনি সুবিধা নিয়ে ও দিয়ে অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড কো-কন্ট্রাকটর হয়ে কার্যাদেশ পেয়ে তা বাস্তবায়নে নিয়োজিত থাকে। অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড দেশের বিমানবন্দরগুলোর কোনও প্রকল্পে সরাসরি, আবার কোনও প্রকল্পে বিদেশি কোম্পানির লোকাল এজেন্ট হয়ে কাজ করেছে। আইন ও চুক্তি লঙ্ঘন করে পরস্পর যোগসাজশে প্রকল্পগুলোর সামগ্রিক কাজে অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডকে সম্পৃক্ত করা হয়। প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার এ প্রকল্পের কাজে ২১২ কোটি টাকা অগ্রিম গ্রহণ করে তা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এ মামলায় ১১ জনকে আসামি করা হয়েছে।

কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল নির্মাণ ও রানওয়ে নির্মাণ সংক্রান্ত প্রকল্পে এক হাজার ৫০০ কোটি টাকার অনিয়ম হয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। এক্ষেত্রে চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন করপোরেশন (সিসিইসিসি) নামে একটি চীনা কোম্পানিকে প্রকল্পের কার্যাদেশ দেওয়ার ক্ষেত্রে তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ আসামিরা পরস্পর সহযোগিতা করেন। আসামিরা এ প্রকল্প থেকে অন্তত ১৫০ কোটি টাকা লুটপাটের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন।