ঢাকা ০৩:৩০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫

বিভ্রান্তির শঙ্কায় শ্রম বিল ফেরত পাঠালেন রাষ্ট্রপতি

  • আপডেট সময় : ০২:০৪:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৩
  • ৬৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : জাতীয় সংসদে পাস হওয়া ‘বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) বিল, ২০২৩’-এ সম্মতি না দিয়ে সংসদ সচিবালয়ে ফেরত পাঠিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। গত ২ নভেম্বর বিলটি পাস হয়। এরপর ৮ নভেম্বর বিলে সম্মতি জন্য পাঠালে একটি দফা পুনর্বিচেনার জন্যে ২০ নভেম্বর তা ফেরত পাঠান রাষ্ট্রপতি।
গতকাল মঙ্গলবার সংসদ সচিবালয়ের আইন শাখার যুগ্ম সচিব নাজমুল হক এ তথ্য জানিয়ে বলেন, “একাদশ সংসদের এখন অধিবেশন নেই। তাই বিলটি তামাদি হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে নতুন সংসদে বিলটি নতুন প্রক্রিয়ায় (মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদন, সংসদে উপস্থাপন, পাস) উত্থাপন করতে হবে।”
গত ২৯ অক্টোবর একাদশ সংসদের শেষ অধিবেশনে বাংলাদেশ শ্রম আইনের বেশ কয়েকটি ধারায় সংশোধন এনে ‘বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) বিল, ২০২৩’ সংসদে উত্থাপন হয়। পরে মাত্র তিন দিনের সময় দিয়ে সংসদে রিপোর্ট উপস্থাপনের জন্য বিলটি সংসদীয় কমিটিতে পাঠনো হয়। পরীক্ষা নিরীক্ষার পর ২ নভেম্বর বিলটি সংসদে পাস হয়। বিলটি পাসের পর আইনে পরিণত করার বাধ্যবাধকতার অংশ হিসেবে ৮ নভেম্বর তা রাষ্ট্রপতির সম্মতির জন্য পাঠানো হয়। কিন্তু সম্মতি না দিয়ে সংবিধানের ৮০ অনুচ্ছেদের (৩) দফা অনুযায়ী ২০ নভেম্বর তা সংসদে ফেরত দেন রাষ্ট্রপতি। ‘সংসদে গৃহীত বিল পুনর্বিচেনার জন্যে রাষ্ট্রপতির বার্তা’য় বলা হয়েছে- “এ বিলটি-বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) বিল, ২০০৩ গত ৮ নভেম্বর আমরা নিকট পেশ করা হয়। এই বিলের দফা-৪৫ বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে বলে প্রতীয়মান হয়। কাজেই এই দফা পুনর্বিবেচনা করা প্রয়োজন। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৮০(৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, বিলটি পুনর্বিবেচনার জন্য সংসদে ফেরত পাঠানো হলো।”
৮০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সংসদে গৃহীত বিল সম্মতির জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাতে হবে। তাতে রাষ্ট্রপতি ১৫ দিনের মধ্যে সম্মতি দেবেন। এ সময়ের মধ্যে সম্মতি না দিলে তা সম্মতি দিয়েছেন বলে গণ্য হবে। তবে রাষ্ট্রপতি মনে করলে ওই সময় শেষ হওয়ার আগে বিলের বিশেষ কোনো বিধান পুনর্বিবেচনা বা কোনো সংশোধনীর নির্দেশনা দিয়ে রাষ্ট্রপতির বার্তাসহ সংসদে ফেরত পাঠাতে পারেন। রাষ্ট্রপতি বিলটি ফেরত দিলে সংসদ বার্তাসহ তা পুনর্বিবেচনা করবে। সংসদ ওই বিলটি সংশোধনীসহ বা সংশোধনী ছাড়াই পুনরায় গ্রহণ করলে সম্মতির জন্য সেটা আবারও রাষ্ট্রপতির কাছে যাবে। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি সাত দিনের মধ্যে তাতে সম্মতি দেবেন। ওই সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপতি সম্মতি দিতে অসমর্থ্য হলে সময় অবসানের পর (৭ দিন) বিলে সম্মতি দিয়েছেন বলে গণ্য হবে। ২০০৬ সালের শ্রম আইনে দুটি উপধারায় বেআইনি শ্রমিক ধর্মঘট এবং মালিকপক্ষের বেআইনি লকআউটের ক্ষেত্রে যে শাস্তি ছিল, তার কিছুটা সংশোধন করার প্রস্তাব করা হয়। ওই আইনে কোনো শ্রমিক কোনো বেআইনি ধর্মঘট করলে ছয় মাস পর্যন্ত কারাদ-, অথবা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদ-, অথবা উভয় দ- দেওয়ার বিধান রয়েছে। কোনো মালিকও কোনো বেআইনি লকআউট করলে ঠিক একই শাস্তির মুখোমুখি হবেন বলে আইনি বিধান করা হয়। এবার আইনটির যে সংশোধনী প্রস্তাব সংসদে পাস হয়েছে, সেখানে শ্রমিকদের বেআইনি ধর্মঘটের ক্ষেত্রে জরিমানা ৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০ হাজার টাকা করা হয়। কিন্তু মালিকদের ক্ষেত্রে জরিমানা আগের মতই ৫ হাজার টাকা রাখা হয়েছে। সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেই বিলটি ফেরত পাঠিয়েছেন রাষ্ট্রপতি।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বজ্রপাতে একদিনে ১০ জনের মৃত্যু

বিভ্রান্তির শঙ্কায় শ্রম বিল ফেরত পাঠালেন রাষ্ট্রপতি

আপডেট সময় : ০২:০৪:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : জাতীয় সংসদে পাস হওয়া ‘বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) বিল, ২০২৩’-এ সম্মতি না দিয়ে সংসদ সচিবালয়ে ফেরত পাঠিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। গত ২ নভেম্বর বিলটি পাস হয়। এরপর ৮ নভেম্বর বিলে সম্মতি জন্য পাঠালে একটি দফা পুনর্বিচেনার জন্যে ২০ নভেম্বর তা ফেরত পাঠান রাষ্ট্রপতি।
গতকাল মঙ্গলবার সংসদ সচিবালয়ের আইন শাখার যুগ্ম সচিব নাজমুল হক এ তথ্য জানিয়ে বলেন, “একাদশ সংসদের এখন অধিবেশন নেই। তাই বিলটি তামাদি হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে নতুন সংসদে বিলটি নতুন প্রক্রিয়ায় (মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদন, সংসদে উপস্থাপন, পাস) উত্থাপন করতে হবে।”
গত ২৯ অক্টোবর একাদশ সংসদের শেষ অধিবেশনে বাংলাদেশ শ্রম আইনের বেশ কয়েকটি ধারায় সংশোধন এনে ‘বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) বিল, ২০২৩’ সংসদে উত্থাপন হয়। পরে মাত্র তিন দিনের সময় দিয়ে সংসদে রিপোর্ট উপস্থাপনের জন্য বিলটি সংসদীয় কমিটিতে পাঠনো হয়। পরীক্ষা নিরীক্ষার পর ২ নভেম্বর বিলটি সংসদে পাস হয়। বিলটি পাসের পর আইনে পরিণত করার বাধ্যবাধকতার অংশ হিসেবে ৮ নভেম্বর তা রাষ্ট্রপতির সম্মতির জন্য পাঠানো হয়। কিন্তু সম্মতি না দিয়ে সংবিধানের ৮০ অনুচ্ছেদের (৩) দফা অনুযায়ী ২০ নভেম্বর তা সংসদে ফেরত দেন রাষ্ট্রপতি। ‘সংসদে গৃহীত বিল পুনর্বিচেনার জন্যে রাষ্ট্রপতির বার্তা’য় বলা হয়েছে- “এ বিলটি-বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) বিল, ২০০৩ গত ৮ নভেম্বর আমরা নিকট পেশ করা হয়। এই বিলের দফা-৪৫ বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে বলে প্রতীয়মান হয়। কাজেই এই দফা পুনর্বিবেচনা করা প্রয়োজন। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৮০(৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, বিলটি পুনর্বিবেচনার জন্য সংসদে ফেরত পাঠানো হলো।”
৮০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সংসদে গৃহীত বিল সম্মতির জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাতে হবে। তাতে রাষ্ট্রপতি ১৫ দিনের মধ্যে সম্মতি দেবেন। এ সময়ের মধ্যে সম্মতি না দিলে তা সম্মতি দিয়েছেন বলে গণ্য হবে। তবে রাষ্ট্রপতি মনে করলে ওই সময় শেষ হওয়ার আগে বিলের বিশেষ কোনো বিধান পুনর্বিবেচনা বা কোনো সংশোধনীর নির্দেশনা দিয়ে রাষ্ট্রপতির বার্তাসহ সংসদে ফেরত পাঠাতে পারেন। রাষ্ট্রপতি বিলটি ফেরত দিলে সংসদ বার্তাসহ তা পুনর্বিবেচনা করবে। সংসদ ওই বিলটি সংশোধনীসহ বা সংশোধনী ছাড়াই পুনরায় গ্রহণ করলে সম্মতির জন্য সেটা আবারও রাষ্ট্রপতির কাছে যাবে। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি সাত দিনের মধ্যে তাতে সম্মতি দেবেন। ওই সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপতি সম্মতি দিতে অসমর্থ্য হলে সময় অবসানের পর (৭ দিন) বিলে সম্মতি দিয়েছেন বলে গণ্য হবে। ২০০৬ সালের শ্রম আইনে দুটি উপধারায় বেআইনি শ্রমিক ধর্মঘট এবং মালিকপক্ষের বেআইনি লকআউটের ক্ষেত্রে যে শাস্তি ছিল, তার কিছুটা সংশোধন করার প্রস্তাব করা হয়। ওই আইনে কোনো শ্রমিক কোনো বেআইনি ধর্মঘট করলে ছয় মাস পর্যন্ত কারাদ-, অথবা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদ-, অথবা উভয় দ- দেওয়ার বিধান রয়েছে। কোনো মালিকও কোনো বেআইনি লকআউট করলে ঠিক একই শাস্তির মুখোমুখি হবেন বলে আইনি বিধান করা হয়। এবার আইনটির যে সংশোধনী প্রস্তাব সংসদে পাস হয়েছে, সেখানে শ্রমিকদের বেআইনি ধর্মঘটের ক্ষেত্রে জরিমানা ৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০ হাজার টাকা করা হয়। কিন্তু মালিকদের ক্ষেত্রে জরিমানা আগের মতই ৫ হাজার টাকা রাখা হয়েছে। সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেই বিলটি ফেরত পাঠিয়েছেন রাষ্ট্রপতি।