ঢাকা ১২:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫
গুম প্রতিরোধ দিবসে গোলটেবিল বৈঠকে আইন উপদেষ্টা

বিভিন্ন এজেন্সি থেকে জঙ্গি লিস্ট দিয়ে বলা হতো ছাড়া যাবে না

  • আপডেট সময় : ০৮:৩০:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ অগাস্ট ২০২৫
  • ৪৩ বার পড়া হয়েছে

শনিবার গুম প্রতিরোধ দিবসে গোল টেবিল বৈঠকে বক্তব্য রাখেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল -ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবদক: আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, সব সময় একজন মুক্তি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমার এখানে কত অ্যাম্বেসি আসে যে আমি আপনাদের বোঝাতে পারবো না। কেন উনি মুক্তি পেলো? সে তো জঙ্গি ছিল। আমাদের বিভিন্ন বাহিনীতে এজেন্সির পক্ষ থেকে জঙ্গি লিস্ট দেওয়া হতো, এদের ছাড়া যাবে না। সে জন্য আমরা রাজনৈতিক হয়রানি মামলাগুলো দ্রুত করে যাচ্ছি। সেটা যেন আটকে না থাকে। শনিবার (৩০ আগস্ট) রাজধানীর একটি হোটেলে গুম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে ‘জবাবদিহিতার পথে: গুমের শিকারদের স্মরণে দিন’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।

কমিশন অব ইনকোয়ারি অন এনফোর্সড ডিসঅ্যাপিয়ারেন্সস (সিআইইডি) এবং জাতিসংঘের হাইকমিশনার ফর হিউম্যান রাইটস (ওএইচসিএইচআর) যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। আলোচনা সভায় অতিথিদের মধ্যে ছিলেন গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলোুর রহমান খান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলি তাজুল ইসলাম, গুম কমিশনের সদস্য নাবিলা ইদ্রিস, ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ মানবাধিকারবিষয়ক উপদেষ্টা হুমা খান প্রমুখ।

ড. আসিফ নজরুল বলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রায় ১৯ হাজারের বেশি মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে। এখানে আমরা যখন মামলা প্রত্যাহার করতে গেলাম, আমাদের কাছে বিভিন্ন অংশীজনরা বললেন ‘সন্ত্রাসী এবং জঙ্গি মামলা’ হরেদরেভাবে যেন প্রত্যাহার না করি। তাদের আশঙ্কা হচ্ছে, ধরেন ১০০ জনকে ‘জঙ্গি’ হিসেবে তকমা দেওয়া হয়, তার মধ্যে দেখা জায় ৫ থেকে ১০ জন সত্যি জঙ্গি। আর বাকি ৯০ জনই আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট সরকারের মিথ্যাচারের জঙ্গি। তিনি বলেন, আমরা ভেবেছিলাম সন্ত্রাসবিরোধী আইন এবং হত্যাকাণ্ড মামলা পরে ধরবো, কিন্তু গুম কমিশন থেকে মামলার তালিকা দিলে যেদিন দেওয়া হবে সেদিন কাজ শুরু হবে। আমাদের লোক দিয়ে দেবো সেই মামলাগুলো প্রত্যাহার করার জন্য। এটা খুব কনফিডেন্টলি করতে হবে। একটা যদি ভুলে প্রত্যাহার করা হয়, তাহলে চাপ আসবে, বলবে – জঙ্গি ছেড়ে দিচ্ছি আমরা।

আসিফ নজরুল বলেন, আমরা গুম প্রতিরোধের খসড়া আইন খুব তাড়াতাড়ি করে করেছি, কারণ গুম প্রতিরোধ দিবস ছিল। আমরা সবাইকে নিয়ে বসবো আইনটি নিয়ে আলোচনা করতে। আমরা তারিখের দিকে তাকিয়ে করেছি, তবে এটা চূড়ান্ত আইন না। আমাদের নজীর আছে যে, ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন নীতিগত অনুমোদন পাওয়ার পর দেড় দুই মাস ধরে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা গুম কমিশনের ৯০ শতাংশ সুপারিশ রেখেছি। জাতিসংঘ থেকে যেসব প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে সেগুলোর কিছু জিনিস আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে রাখা সম্ভব না। তবে কিছু জিনিস বিবেচনার সুযোগ আছে। সেটা আমরা খুব দায়িত্বের সঙ্গে আলোচনা করবো, সেটা আমাদের জন্য খুব বড় চ্যালেঞ্জ।

আইন উপদেষ্টা বলেন, মানবাধিকার কমিশন, গুম কমিশন যদি সরকারকে প্রশ্ন করতে পারার মতো অবস্থা আমরা তৈরি করতে না পারি, সেটা রাজনৈতিক সরকারের পক্ষে সম্ভব হবে না। সেজন্য একটু তাড়াহুড়া করতে চাচ্ছি। তিনি বলেন, আমার ধারণা পৃথিবীতে ভালো লোকের চেয়ে খারাপ লোক বেশি। আর ভালো লোকের চেয়ে খারাপ লোক অনেক বেশি সংগঠিত। ভালো লোক যারা আছে তারা অনেকাংশে খারাপ লোক দ্বারা এতো বিভ্রান্ত! গত এক বছরের কত কিছু যে দেখলাম। জীবনটা এতো জটিল মনে হতো না। হাসিনা ছিল অনেক অত্যাচারিত ছিলাম, বুকের ভেতর ক্রন্দন ছিল, রাতে ঘুমাতে পারতাম না। কিন্তু মানুষ যে এতো জটিল এটা তখনও আমার এতো মনে হতো না।

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

গুম প্রতিরোধ দিবসে গোলটেবিল বৈঠকে আইন উপদেষ্টা

বিভিন্ন এজেন্সি থেকে জঙ্গি লিস্ট দিয়ে বলা হতো ছাড়া যাবে না

আপডেট সময় : ০৮:৩০:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ অগাস্ট ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবদক: আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, সব সময় একজন মুক্তি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমার এখানে কত অ্যাম্বেসি আসে যে আমি আপনাদের বোঝাতে পারবো না। কেন উনি মুক্তি পেলো? সে তো জঙ্গি ছিল। আমাদের বিভিন্ন বাহিনীতে এজেন্সির পক্ষ থেকে জঙ্গি লিস্ট দেওয়া হতো, এদের ছাড়া যাবে না। সে জন্য আমরা রাজনৈতিক হয়রানি মামলাগুলো দ্রুত করে যাচ্ছি। সেটা যেন আটকে না থাকে। শনিবার (৩০ আগস্ট) রাজধানীর একটি হোটেলে গুম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে ‘জবাবদিহিতার পথে: গুমের শিকারদের স্মরণে দিন’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।

কমিশন অব ইনকোয়ারি অন এনফোর্সড ডিসঅ্যাপিয়ারেন্সস (সিআইইডি) এবং জাতিসংঘের হাইকমিশনার ফর হিউম্যান রাইটস (ওএইচসিএইচআর) যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। আলোচনা সভায় অতিথিদের মধ্যে ছিলেন গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলোুর রহমান খান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলি তাজুল ইসলাম, গুম কমিশনের সদস্য নাবিলা ইদ্রিস, ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ মানবাধিকারবিষয়ক উপদেষ্টা হুমা খান প্রমুখ।

ড. আসিফ নজরুল বলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রায় ১৯ হাজারের বেশি মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে। এখানে আমরা যখন মামলা প্রত্যাহার করতে গেলাম, আমাদের কাছে বিভিন্ন অংশীজনরা বললেন ‘সন্ত্রাসী এবং জঙ্গি মামলা’ হরেদরেভাবে যেন প্রত্যাহার না করি। তাদের আশঙ্কা হচ্ছে, ধরেন ১০০ জনকে ‘জঙ্গি’ হিসেবে তকমা দেওয়া হয়, তার মধ্যে দেখা জায় ৫ থেকে ১০ জন সত্যি জঙ্গি। আর বাকি ৯০ জনই আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট সরকারের মিথ্যাচারের জঙ্গি। তিনি বলেন, আমরা ভেবেছিলাম সন্ত্রাসবিরোধী আইন এবং হত্যাকাণ্ড মামলা পরে ধরবো, কিন্তু গুম কমিশন থেকে মামলার তালিকা দিলে যেদিন দেওয়া হবে সেদিন কাজ শুরু হবে। আমাদের লোক দিয়ে দেবো সেই মামলাগুলো প্রত্যাহার করার জন্য। এটা খুব কনফিডেন্টলি করতে হবে। একটা যদি ভুলে প্রত্যাহার করা হয়, তাহলে চাপ আসবে, বলবে – জঙ্গি ছেড়ে দিচ্ছি আমরা।

আসিফ নজরুল বলেন, আমরা গুম প্রতিরোধের খসড়া আইন খুব তাড়াতাড়ি করে করেছি, কারণ গুম প্রতিরোধ দিবস ছিল। আমরা সবাইকে নিয়ে বসবো আইনটি নিয়ে আলোচনা করতে। আমরা তারিখের দিকে তাকিয়ে করেছি, তবে এটা চূড়ান্ত আইন না। আমাদের নজীর আছে যে, ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন নীতিগত অনুমোদন পাওয়ার পর দেড় দুই মাস ধরে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা গুম কমিশনের ৯০ শতাংশ সুপারিশ রেখেছি। জাতিসংঘ থেকে যেসব প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে সেগুলোর কিছু জিনিস আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে রাখা সম্ভব না। তবে কিছু জিনিস বিবেচনার সুযোগ আছে। সেটা আমরা খুব দায়িত্বের সঙ্গে আলোচনা করবো, সেটা আমাদের জন্য খুব বড় চ্যালেঞ্জ।

আইন উপদেষ্টা বলেন, মানবাধিকার কমিশন, গুম কমিশন যদি সরকারকে প্রশ্ন করতে পারার মতো অবস্থা আমরা তৈরি করতে না পারি, সেটা রাজনৈতিক সরকারের পক্ষে সম্ভব হবে না। সেজন্য একটু তাড়াহুড়া করতে চাচ্ছি। তিনি বলেন, আমার ধারণা পৃথিবীতে ভালো লোকের চেয়ে খারাপ লোক বেশি। আর ভালো লোকের চেয়ে খারাপ লোক অনেক বেশি সংগঠিত। ভালো লোক যারা আছে তারা অনেকাংশে খারাপ লোক দ্বারা এতো বিভ্রান্ত! গত এক বছরের কত কিছু যে দেখলাম। জীবনটা এতো জটিল মনে হতো না। হাসিনা ছিল অনেক অত্যাচারিত ছিলাম, বুকের ভেতর ক্রন্দন ছিল, রাতে ঘুমাতে পারতাম না। কিন্তু মানুষ যে এতো জটিল এটা তখনও আমার এতো মনে হতো না।

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ