ঢাকা ০১:৪২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫

বিব্রত রেলমন্ত্রী, রেলে কারও রেফারেন্সে সুবিধা নিতে গেলে ব্যবস্থার নির্দেশ

  • আপডেট সময় : ০২:১৯:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ মে ২০২২
  • ৯১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : মন্ত্রীর ‘আত্মীয় পরিচয় দিয়ে’ বিনা টিকিটে ট্রেনে ভ্রমণের সময় জরিমানার ঘটনায় টিটিই শফিকুল ইসলামের বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ঘটনায় রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন নিজেও ‘বিব্রত’ বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিব্রত, আমি যেভাবে এখানে স্বচ্ছভাবে কাজ করার চেষ্টা করেছি, সেখানে এ ধরনের একটি ঘটনা… সেটা যেভাবেই ঘটুক না কেন, আমি অবশ্যই বিব্রত।’
গতকাল রোববার দুপুরে রেল ভবনে নুরুল ইসলাম সুজন সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই কথা বলেন। এদিকে রেলপথ মন্ত্রীর একান্ত সচিব, সহকারী একান্ত সচিব, ব্যক্তিগত কর্মকর্তাদের রেফারেন্সে ট্রেনে কিংবা প্রকল্পে কোনো ধরনের সুযোগ-সুবিধা দাবিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৫ মে) রাতে পাবনার ঈশ্বরদী রেল জংশন থেকে টিকিট ছাড়া ট্রেনে ওঠেন রেলমন্ত্রীর ‘আত্মীয় পরিচয়দানকারী’ তিন যাত্রী। জানা গেছে, টিকিট ছাড়া উঠলেও তারা রেলের এসি কেবিনে অবস্থান করছিলেন। এতে রেলের ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরীক্ষক (টিটিই) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার পরামর্শে জরিমানা করেন। পরে ওই তিন যাত্রী ঢাকায় ফিরে তাদের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে রেলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
সেই অভিযোগের ভিত্তিতে টিটিই শফিকুল ইসলামকে বৃহস্পতিবার রাতেই সাময়িক বরখাস্ত করে রেল কর্তৃপক্ষ। তবে পরে জানা যায়, ওই যাত্রীদের মধ্যে একজনের মা রেলমন্ত্রীর স্ত্রীর বড় বোন। তিনি (রেলমন্ত্রীর স্ত্রী) নিজেও ফোন করে ওই টিটিইর ব্যাপারে ফোন করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেন। এতে কোনও তদন্ত ছাড়াই তাকে বরখাস্ত করা হয়।
এ ঘটনায় দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হলে গতকাল রোববার টিটিইর বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বরখাস্তের আদেশ এখন কেন প্রত্যাহার করা হচ্ছে, এমন প্রশ্নে রেলমন্ত্রী বলেন, ‘কোনও যাত্রীর সঙ্গে খারাপ আচরণ করলে যে কেউ অভিযোগ করতে পারেন। যাত্রীর আত্মীয় হিসেবে তিনিও (মন্ত্রীর স্ত্রী) ফোন দিতে পারেন, তবে মন্ত্রীর স্ত্রী হিসেবে তিনি ফোন দিতে পারেন না। কারণ, তিনি তো আমাকেই বলতে পারেন। আমার স্ত্রীর যদি রেলওয়ে সম্পর্কে কোনও অভিযোগ থাকে তাহলে তার উচিত ছিল আমার সঙ্গে কথা বলা, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেটা সে করেনি। সেক্ষেত্রে কিছুটা ব্যত্যয় হয়েছে বলে আমার ধারণা। যে কারণে আমি মনে করি এই বরখাস্তের আদেশটি সঠিক হয়নি। তাই এটি প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী তার স্ত্রীর ফোনে অভিযোগ করার বিষয়টি স্বীকার করেন। তবে তার এই অভিযোগে টিটিকে বরখাস্ত করা হয়েছে কিনা তা তিনি নিশ্চিত নন বলে জানান। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কেন বরখাস্ত করা হলো, এটাই আমরা এখন তদন্ত করে দেখবো। কীভাবে বরখাস্ত করলো।’
তিনি বলেন, ‘যাত্রীরা যে অভিযোগ দিয়েছেন, তা তো এত তাড়াতাড়ি ডিসিও’র পাওয়ার কথা না। সিদ্ধান্ত নিয়েছেন একজন ডিসিও। এর ওপরে আরও কর্মকর্তা আছেন।’
তবে গত শনিবার রেলমন্ত্রী তাদের নিজেদের আত্মীয় বলে অস্বীকার করেছিলেন। রোববার আবারও বিষয়টি উঠে এলে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা যেভাবে অভিযোগটি শুনেছেন, আমিও সেভাবে পরে শুনেছি। আমিও আগাম কিছু জানতাম না, আমি নাকি (ওই ছেলেদের মাকে) বলেছি, দুঃখিত… আমার সঙ্গে কোনও কথাই হয়নি। আমি আগে জানতাম না, তারা আমার আত্মীয়। চেনার কথাও না। পরে আমি জেনেছি। তবে ওই ছেলেদের মায়ের সঙ্গে আমার ফোনে কোনও কথা হয়নি। এটা ডাহা মিথ্যা কথা বলেছে সে।’
তিনি বলেন, ‘৯ মাস হলো আমার বিয়ে হয়েছে। সে ঢাকাতেই থাকে। তার নানার বাড়ি, মামার বাড়ি হলো সেখানে। যারা এটা করেছে তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ সময় মন্ত্রী আরও বলেন, ‘মন্ত্রী, ডিজি ও সচিব ছাড়া আর কারও বিনা টিকিটে ভ্রমণের সুযোগ নেই। মন্ত্রীর ছেলে হোক, স্ত্রী হোক, রাজনৈতিক নেতা হোক, কারও বিনা টিকিটে ভ্রমণের সুযোগ নেই। কেউ প্লেনে উঠলেও সে যাত্রী, যখন তিনি রেলে উঠবেন তখনও তিনি যাত্রী।’
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘টিআইবি হঠাৎ করে এলো কোত্থেকে? টিআইবি কে? তাদের (বিবৃতি প্রদানে) আরও অপেক্ষা করা উচিত ছিল। তাদের দেখা উচিত ছিল এ ঘটনায় মন্ত্রীর কোনও সম্পৃক্ততা আছে কিনা।’
রেলের অবকাঠামো উন্নয়ন নিয়ে নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘আমাদের রেলের পূর্ণাঙ্গ একটি অবকাঠামো দরকার। রেল চালাতে গেলে রেল লাইন দরকার। কিন্তু আপনারা দেখেছেন আমাদের ডাবল লাইন টঙ্গী পর্যন্ত, এরপর চট্টগ্রামের দিকে কিছু আছে। এটা লাইন আমরা ইনহেরিট করেছি। ডাবল লাইন ছাড়া আমাদের স্মুথ ট্রেন চালানো সম্ভব না। খুলনা, রাজশাহী, কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড় সব ট্রেন আমাদের ঈশ্বরদীতে আসে, তারপর সেখানে থেকে বের হয়, বঙ্গবন্ধু ব্রিজে আমাদের একটি মাত্র লাইন, সেখানে আমাদের ১৫ কিলোমিটার গতিতে চালাতে হয়, ওজনের নির্দেশনা আছে। এসব কারণে আমাদের শিডিউল বিপর্যয়ের কথাটা আসে। কারণ, আমাদের সিঙ্গেল লাইন।’
তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমার বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি, পূর্বাঞ্চলে এই অভিযোগ এখন নেই, সব অভিযোগ পশ্চিমাঞ্চলে।’
নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘ঘটনাটি যেভাবে ঘটেছে সেটি অনভিপ্রেত, বিব্রত। মানুষও চায় যে আমাদের যে ত্রুটি, যারা সার্ভিস দেয় তাদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ রয়েছে। ঘটনাটি কাকতালীয়ভাবে ঘটেছে, সেজন্য প্রতিক্রিয়া হয়েছে। এর আগেও এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে তার বিরুদ্ধে এর আগেও অভিযোগ ছিল। রেলের স্টাফরা এমন কোন কার্যক্রম করবে না, যাতে রেলের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।’ সহজ ডটকম রেলের টিকিট বিক্রি কার্যক্রম পাওয়ার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘রেলের টিকিট বিক্রির জন্য ওপেন টেন্ডারের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি কাজ পেয়েছে। সাতটি প্রতিষ্ঠান টেন্ডারে অংশ নিয়েছিল, এরমধ্যে সর্বনি¤œ দরদাতা হিসেবে সহজ কাজটি পায়।’
মন্ত্রীর স্ত্রীর কথায় টিটিইকে বরখাস্ত সমীচীন নয়: হাছান মাহমুদ : বিনা টিকিটে ট্রেন ভ্রমণের কারণে রেলমন্ত্রীর আত্মীয়দের জরিমানার জেরে টিকিট পরীক্ষককে (টিটিই) বরখাস্তের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট রেল কর্মকর্তারই দায় দেখছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। গতকাল রোববার এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছেন, মন্ত্রীর স্ত্রীর কথায় রেলের টিটিইকে সাময়িক বরখাস্ত করা ‘সমীচীন’ হয়নি।
রেলে কারও রেফারেন্সে সুবিধা নিতে গেলে ব্যবস্থার নির্দেশ : রেলপথ মন্ত্রীর একান্ত সচিব, সহকারী একান্ত সচিব, ব্যক্তিগত কর্মকর্তাদের রেফারেন্সে ট্রেনে কিংবা প্রকল্পে কোনো ধরনের সুযোগ-সুবিধা দাবিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
গতকাল রোববার বিকালে রেলমন্ত্রীর একান্ত সচিব (যুগ্ম সচিব) মো. আতিকুর রহমান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। অফিস আদেশে বলা হয়, ‘সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে রেলমন্ত্রীর একান্ত সচিব, সহকারী একান্ত সচিব এবং ব্যক্তিগত কর্মকর্তাদের অগোচরে তাদের রেফারেন্সে আত্মীয়, পরিবারের সদস্য, বন্ধু-বান্ধব পরিচয়ে অনেকে বিভিন্ন রেলস্টেশনে টিকিট দাবিসহ ট্রেনে উঠে বিশেষ সুবিধা দাবি করছেন। এ ছাড়া অনেকে মন্ত্রীর একান্ত সচিব, সহকারী একান্ত সচিব এবং ব্যক্তিগত কর্মকর্তার নিকটাত্মীয় পরিচয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভিন্ন প্রকল্প পরিচালকের কাছে বিভিন্ন ধরনের অবৈধ সুযোগ-সুবিধার জন্য মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করছেন। ‘বিষয়টি মন্ত্রীকে অবহিত করা হলে তিনি তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেওয়ারা পাশাপাশি মোবাইল নম্বরগুলো আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে পাঠানো ও তাদের সঠিক পরিচয় জানার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।’
অফিস আদেশে আরও বলা হয়, এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য এবং দাপ্তরিক প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে কোনো কার্যক্রম গ্রহণ না করার জন্য অনুরোধ করা হয়।
চাকরিতে সন্তুষ্টি আছে, প্রথম দিনই ৭৮৪৩৬ টাকা রাজস্ব জমা দিই : তার কোনো মানসিক সমস্যা নেই, বরং চাকরিতে সন্তুষ্টি আছে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রীর বিনা টিকিটের আত্মীয়কে জরিমানা করে বরখাস্ত টিটিই শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, চাকরির প্রথম দিনই ৭৮ হাজার ৪৩৬ টাকা রাজস্ব জমা দিয়েছিলেন তিনি। রোববার দুপুরে পাকশি বিভাগীয় রেলওয়ে কার‌্যালয়ের চত্বরে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। বিনা টিকিটের ওই তিন যাত্রীর জরিমানার ঘটনায় তদন্ত কমিটির তলবে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে কার্যালয়ে যান শফিকুল। রেলমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দিয়ে বিনা টিকিটে এসি কোচে করে ঈশ্বর্দী থেকে ঢাকা রেলভ্রমণের সময় টিটিই শফিকুলের হাতে ধরা পড়েন তারা। এ সময় তিনি তাদের জরিমানাসহ টিকিট করে দিয়ে সুলভ শ্রেণিতে পাঠান। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে টিটিই শফিকুলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এ ঘটনায় দেশজুড়ে বিপুল সমালোচনার মুখে পাকশী রেল বিভাগের ডিসিও (বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা) নাসির উদ্দিন বলেন, শফিকুল ইসলাম মাদকাসক্ত ও বিকারগ্রস্ত। তিনি হীনমন্যতায় ভোগেন। যাত্রীর সঙ্গে খারাপ আচরণের কারণে তিনি বরখাস্ত হয়েছেন। ডিসিওর এই মন্তব্যের জবাব আজ দিয়েছেন শফিকুল ইসলাম। তিনি ডিসিওর মন্তব্য নাকচ করে দিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আমি মাদক সেবন দূরের কথা, বিড়ি-সিগারেটও খাই না।’
চাকরিতে তার সন্তুষ্টি আছে উল্লেখ করে টিটিই শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘চাকরির প্রথম দিনই ৭৮ হাজার ৪৩৬ টাকা রাজস্ব জমা দিয়েছিলাম। আমার সহকর্মীরা জানেন, আমি মানসিক বিকারগ্রস্ত কি না! আমি যদি মাদকাসক্ত হতাম তাহলে এত দিন সুনামের সঙ্গে চাকরি করতে পারতাম না।’
বিনা টিকিটের ওই তিন যাত্রীকে লাথি মেরে ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার হুমকির অভিযোগ সম্পর্কে শফিকুল দাবি করেন, এ ধরনের কোনো কথা হয়নি। তাদের মধ্যে ভদ্র ভাষায় কথা হয়েছে। ওই তিন যাত্রী মন্ত্রীর লোক- এ কথা সহকারী বাণিজ্যিক কর্মকর্তা এসিও (উত্তর) নুরুল আলম তাকে জানিয়েছিলেন বলে জানান শফিকুল। তার সঙ্গে পরামর্শ করেই তিনি তাদের টিকিট কাটতে বলেন।
বরখাস্ত হওয়ার বিষয়ে টিটিই শফিকুল বলেন, ট্রেন ঢাকায় পৌঁছানোর আগে রাতেই তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। মোবাইল ফোনের বার্তায় তার বরখাস্তের কথা জানতে পারেন তিনি। এদিকে দেশজুড়ে বিপুল সমালোচনার মুখে টিটিই শফিকুল ইসলামের সাময়িক বরখাস্ত আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন রোববার সাংবাদিকদের এ কথা জানান। ওদিকে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে কর্মকর্তা (ডিআরএম) শাহীদুল ইসলাম তার অফিস কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, রেলমন্ত্রীর তিন আত্মীয়কে জরিমানা করে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া টিটিই শফিকুল ইসলামকে দায়িত্বে পুনর্বহাল করা হয়েছে। একই সঙ্গে চলবে তদন্তকাজ।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

এক নারীকে দুই ভাই বিয়ে করে বললেন- আমরা গর্বিত

বিব্রত রেলমন্ত্রী, রেলে কারও রেফারেন্সে সুবিধা নিতে গেলে ব্যবস্থার নির্দেশ

আপডেট সময় : ০২:১৯:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ মে ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : মন্ত্রীর ‘আত্মীয় পরিচয় দিয়ে’ বিনা টিকিটে ট্রেনে ভ্রমণের সময় জরিমানার ঘটনায় টিটিই শফিকুল ইসলামের বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ঘটনায় রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন নিজেও ‘বিব্রত’ বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিব্রত, আমি যেভাবে এখানে স্বচ্ছভাবে কাজ করার চেষ্টা করেছি, সেখানে এ ধরনের একটি ঘটনা… সেটা যেভাবেই ঘটুক না কেন, আমি অবশ্যই বিব্রত।’
গতকাল রোববার দুপুরে রেল ভবনে নুরুল ইসলাম সুজন সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই কথা বলেন। এদিকে রেলপথ মন্ত্রীর একান্ত সচিব, সহকারী একান্ত সচিব, ব্যক্তিগত কর্মকর্তাদের রেফারেন্সে ট্রেনে কিংবা প্রকল্পে কোনো ধরনের সুযোগ-সুবিধা দাবিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৫ মে) রাতে পাবনার ঈশ্বরদী রেল জংশন থেকে টিকিট ছাড়া ট্রেনে ওঠেন রেলমন্ত্রীর ‘আত্মীয় পরিচয়দানকারী’ তিন যাত্রী। জানা গেছে, টিকিট ছাড়া উঠলেও তারা রেলের এসি কেবিনে অবস্থান করছিলেন। এতে রেলের ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরীক্ষক (টিটিই) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার পরামর্শে জরিমানা করেন। পরে ওই তিন যাত্রী ঢাকায় ফিরে তাদের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে রেলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
সেই অভিযোগের ভিত্তিতে টিটিই শফিকুল ইসলামকে বৃহস্পতিবার রাতেই সাময়িক বরখাস্ত করে রেল কর্তৃপক্ষ। তবে পরে জানা যায়, ওই যাত্রীদের মধ্যে একজনের মা রেলমন্ত্রীর স্ত্রীর বড় বোন। তিনি (রেলমন্ত্রীর স্ত্রী) নিজেও ফোন করে ওই টিটিইর ব্যাপারে ফোন করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেন। এতে কোনও তদন্ত ছাড়াই তাকে বরখাস্ত করা হয়।
এ ঘটনায় দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হলে গতকাল রোববার টিটিইর বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বরখাস্তের আদেশ এখন কেন প্রত্যাহার করা হচ্ছে, এমন প্রশ্নে রেলমন্ত্রী বলেন, ‘কোনও যাত্রীর সঙ্গে খারাপ আচরণ করলে যে কেউ অভিযোগ করতে পারেন। যাত্রীর আত্মীয় হিসেবে তিনিও (মন্ত্রীর স্ত্রী) ফোন দিতে পারেন, তবে মন্ত্রীর স্ত্রী হিসেবে তিনি ফোন দিতে পারেন না। কারণ, তিনি তো আমাকেই বলতে পারেন। আমার স্ত্রীর যদি রেলওয়ে সম্পর্কে কোনও অভিযোগ থাকে তাহলে তার উচিত ছিল আমার সঙ্গে কথা বলা, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেটা সে করেনি। সেক্ষেত্রে কিছুটা ব্যত্যয় হয়েছে বলে আমার ধারণা। যে কারণে আমি মনে করি এই বরখাস্তের আদেশটি সঠিক হয়নি। তাই এটি প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী তার স্ত্রীর ফোনে অভিযোগ করার বিষয়টি স্বীকার করেন। তবে তার এই অভিযোগে টিটিকে বরখাস্ত করা হয়েছে কিনা তা তিনি নিশ্চিত নন বলে জানান। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কেন বরখাস্ত করা হলো, এটাই আমরা এখন তদন্ত করে দেখবো। কীভাবে বরখাস্ত করলো।’
তিনি বলেন, ‘যাত্রীরা যে অভিযোগ দিয়েছেন, তা তো এত তাড়াতাড়ি ডিসিও’র পাওয়ার কথা না। সিদ্ধান্ত নিয়েছেন একজন ডিসিও। এর ওপরে আরও কর্মকর্তা আছেন।’
তবে গত শনিবার রেলমন্ত্রী তাদের নিজেদের আত্মীয় বলে অস্বীকার করেছিলেন। রোববার আবারও বিষয়টি উঠে এলে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা যেভাবে অভিযোগটি শুনেছেন, আমিও সেভাবে পরে শুনেছি। আমিও আগাম কিছু জানতাম না, আমি নাকি (ওই ছেলেদের মাকে) বলেছি, দুঃখিত… আমার সঙ্গে কোনও কথাই হয়নি। আমি আগে জানতাম না, তারা আমার আত্মীয়। চেনার কথাও না। পরে আমি জেনেছি। তবে ওই ছেলেদের মায়ের সঙ্গে আমার ফোনে কোনও কথা হয়নি। এটা ডাহা মিথ্যা কথা বলেছে সে।’
তিনি বলেন, ‘৯ মাস হলো আমার বিয়ে হয়েছে। সে ঢাকাতেই থাকে। তার নানার বাড়ি, মামার বাড়ি হলো সেখানে। যারা এটা করেছে তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ সময় মন্ত্রী আরও বলেন, ‘মন্ত্রী, ডিজি ও সচিব ছাড়া আর কারও বিনা টিকিটে ভ্রমণের সুযোগ নেই। মন্ত্রীর ছেলে হোক, স্ত্রী হোক, রাজনৈতিক নেতা হোক, কারও বিনা টিকিটে ভ্রমণের সুযোগ নেই। কেউ প্লেনে উঠলেও সে যাত্রী, যখন তিনি রেলে উঠবেন তখনও তিনি যাত্রী।’
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘টিআইবি হঠাৎ করে এলো কোত্থেকে? টিআইবি কে? তাদের (বিবৃতি প্রদানে) আরও অপেক্ষা করা উচিত ছিল। তাদের দেখা উচিত ছিল এ ঘটনায় মন্ত্রীর কোনও সম্পৃক্ততা আছে কিনা।’
রেলের অবকাঠামো উন্নয়ন নিয়ে নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘আমাদের রেলের পূর্ণাঙ্গ একটি অবকাঠামো দরকার। রেল চালাতে গেলে রেল লাইন দরকার। কিন্তু আপনারা দেখেছেন আমাদের ডাবল লাইন টঙ্গী পর্যন্ত, এরপর চট্টগ্রামের দিকে কিছু আছে। এটা লাইন আমরা ইনহেরিট করেছি। ডাবল লাইন ছাড়া আমাদের স্মুথ ট্রেন চালানো সম্ভব না। খুলনা, রাজশাহী, কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড় সব ট্রেন আমাদের ঈশ্বরদীতে আসে, তারপর সেখানে থেকে বের হয়, বঙ্গবন্ধু ব্রিজে আমাদের একটি মাত্র লাইন, সেখানে আমাদের ১৫ কিলোমিটার গতিতে চালাতে হয়, ওজনের নির্দেশনা আছে। এসব কারণে আমাদের শিডিউল বিপর্যয়ের কথাটা আসে। কারণ, আমাদের সিঙ্গেল লাইন।’
তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমার বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি, পূর্বাঞ্চলে এই অভিযোগ এখন নেই, সব অভিযোগ পশ্চিমাঞ্চলে।’
নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘ঘটনাটি যেভাবে ঘটেছে সেটি অনভিপ্রেত, বিব্রত। মানুষও চায় যে আমাদের যে ত্রুটি, যারা সার্ভিস দেয় তাদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ রয়েছে। ঘটনাটি কাকতালীয়ভাবে ঘটেছে, সেজন্য প্রতিক্রিয়া হয়েছে। এর আগেও এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে তার বিরুদ্ধে এর আগেও অভিযোগ ছিল। রেলের স্টাফরা এমন কোন কার্যক্রম করবে না, যাতে রেলের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।’ সহজ ডটকম রেলের টিকিট বিক্রি কার্যক্রম পাওয়ার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘রেলের টিকিট বিক্রির জন্য ওপেন টেন্ডারের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি কাজ পেয়েছে। সাতটি প্রতিষ্ঠান টেন্ডারে অংশ নিয়েছিল, এরমধ্যে সর্বনি¤œ দরদাতা হিসেবে সহজ কাজটি পায়।’
মন্ত্রীর স্ত্রীর কথায় টিটিইকে বরখাস্ত সমীচীন নয়: হাছান মাহমুদ : বিনা টিকিটে ট্রেন ভ্রমণের কারণে রেলমন্ত্রীর আত্মীয়দের জরিমানার জেরে টিকিট পরীক্ষককে (টিটিই) বরখাস্তের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট রেল কর্মকর্তারই দায় দেখছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। গতকাল রোববার এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছেন, মন্ত্রীর স্ত্রীর কথায় রেলের টিটিইকে সাময়িক বরখাস্ত করা ‘সমীচীন’ হয়নি।
রেলে কারও রেফারেন্সে সুবিধা নিতে গেলে ব্যবস্থার নির্দেশ : রেলপথ মন্ত্রীর একান্ত সচিব, সহকারী একান্ত সচিব, ব্যক্তিগত কর্মকর্তাদের রেফারেন্সে ট্রেনে কিংবা প্রকল্পে কোনো ধরনের সুযোগ-সুবিধা দাবিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
গতকাল রোববার বিকালে রেলমন্ত্রীর একান্ত সচিব (যুগ্ম সচিব) মো. আতিকুর রহমান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। অফিস আদেশে বলা হয়, ‘সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে রেলমন্ত্রীর একান্ত সচিব, সহকারী একান্ত সচিব এবং ব্যক্তিগত কর্মকর্তাদের অগোচরে তাদের রেফারেন্সে আত্মীয়, পরিবারের সদস্য, বন্ধু-বান্ধব পরিচয়ে অনেকে বিভিন্ন রেলস্টেশনে টিকিট দাবিসহ ট্রেনে উঠে বিশেষ সুবিধা দাবি করছেন। এ ছাড়া অনেকে মন্ত্রীর একান্ত সচিব, সহকারী একান্ত সচিব এবং ব্যক্তিগত কর্মকর্তার নিকটাত্মীয় পরিচয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভিন্ন প্রকল্প পরিচালকের কাছে বিভিন্ন ধরনের অবৈধ সুযোগ-সুবিধার জন্য মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করছেন। ‘বিষয়টি মন্ত্রীকে অবহিত করা হলে তিনি তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেওয়ারা পাশাপাশি মোবাইল নম্বরগুলো আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে পাঠানো ও তাদের সঠিক পরিচয় জানার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।’
অফিস আদেশে আরও বলা হয়, এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য এবং দাপ্তরিক প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে কোনো কার্যক্রম গ্রহণ না করার জন্য অনুরোধ করা হয়।
চাকরিতে সন্তুষ্টি আছে, প্রথম দিনই ৭৮৪৩৬ টাকা রাজস্ব জমা দিই : তার কোনো মানসিক সমস্যা নেই, বরং চাকরিতে সন্তুষ্টি আছে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রীর বিনা টিকিটের আত্মীয়কে জরিমানা করে বরখাস্ত টিটিই শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, চাকরির প্রথম দিনই ৭৮ হাজার ৪৩৬ টাকা রাজস্ব জমা দিয়েছিলেন তিনি। রোববার দুপুরে পাকশি বিভাগীয় রেলওয়ে কার‌্যালয়ের চত্বরে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। বিনা টিকিটের ওই তিন যাত্রীর জরিমানার ঘটনায় তদন্ত কমিটির তলবে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে কার্যালয়ে যান শফিকুল। রেলমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দিয়ে বিনা টিকিটে এসি কোচে করে ঈশ্বর্দী থেকে ঢাকা রেলভ্রমণের সময় টিটিই শফিকুলের হাতে ধরা পড়েন তারা। এ সময় তিনি তাদের জরিমানাসহ টিকিট করে দিয়ে সুলভ শ্রেণিতে পাঠান। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে টিটিই শফিকুলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এ ঘটনায় দেশজুড়ে বিপুল সমালোচনার মুখে পাকশী রেল বিভাগের ডিসিও (বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা) নাসির উদ্দিন বলেন, শফিকুল ইসলাম মাদকাসক্ত ও বিকারগ্রস্ত। তিনি হীনমন্যতায় ভোগেন। যাত্রীর সঙ্গে খারাপ আচরণের কারণে তিনি বরখাস্ত হয়েছেন। ডিসিওর এই মন্তব্যের জবাব আজ দিয়েছেন শফিকুল ইসলাম। তিনি ডিসিওর মন্তব্য নাকচ করে দিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আমি মাদক সেবন দূরের কথা, বিড়ি-সিগারেটও খাই না।’
চাকরিতে তার সন্তুষ্টি আছে উল্লেখ করে টিটিই শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘চাকরির প্রথম দিনই ৭৮ হাজার ৪৩৬ টাকা রাজস্ব জমা দিয়েছিলাম। আমার সহকর্মীরা জানেন, আমি মানসিক বিকারগ্রস্ত কি না! আমি যদি মাদকাসক্ত হতাম তাহলে এত দিন সুনামের সঙ্গে চাকরি করতে পারতাম না।’
বিনা টিকিটের ওই তিন যাত্রীকে লাথি মেরে ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার হুমকির অভিযোগ সম্পর্কে শফিকুল দাবি করেন, এ ধরনের কোনো কথা হয়নি। তাদের মধ্যে ভদ্র ভাষায় কথা হয়েছে। ওই তিন যাত্রী মন্ত্রীর লোক- এ কথা সহকারী বাণিজ্যিক কর্মকর্তা এসিও (উত্তর) নুরুল আলম তাকে জানিয়েছিলেন বলে জানান শফিকুল। তার সঙ্গে পরামর্শ করেই তিনি তাদের টিকিট কাটতে বলেন।
বরখাস্ত হওয়ার বিষয়ে টিটিই শফিকুল বলেন, ট্রেন ঢাকায় পৌঁছানোর আগে রাতেই তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। মোবাইল ফোনের বার্তায় তার বরখাস্তের কথা জানতে পারেন তিনি। এদিকে দেশজুড়ে বিপুল সমালোচনার মুখে টিটিই শফিকুল ইসলামের সাময়িক বরখাস্ত আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন রোববার সাংবাদিকদের এ কথা জানান। ওদিকে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে কর্মকর্তা (ডিআরএম) শাহীদুল ইসলাম তার অফিস কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, রেলমন্ত্রীর তিন আত্মীয়কে জরিমানা করে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া টিটিই শফিকুল ইসলামকে দায়িত্বে পুনর্বহাল করা হয়েছে। একই সঙ্গে চলবে তদন্তকাজ।