ঢাকা ০৩:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫

বিদ্যুৎ নিয়ে সরকারের মাতামাতি ছিল ফাঁকা বুলি: গয়েশ্বর

  • আপডেট সময় : ০১:২৫:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ জুলাই ২০২২
  • ৯৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে চলমান বিদ্যুৎ সংকট নিয়ে সরকারের সমালোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘বিদ্যুৎ নিয়ে কয়েক মাস আগে সরকারের অনেক মাতামাতি শুনলেও মূলত তা ছিল ফাঁকা বুলি। তাই বলতে হয়, এই সরকারের উন্নতি ঘরে ঘরে মোমবাতি।’
গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে এক স্মরণসভায় এসব কথা বলেন গয়েশ্বর। স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রয়াত সভাপতি শফিউল বারী বাবুর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই স্মরণসভার আয়োজন করেছে স্বেচ্ছাসেবক দল।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘রাতের আঁধারে ভোট চুরি করে হওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন- তার বাড়ি ঘেরাও করতে গেলে তিনি চা দিয়ে আপ্যায়ন করাবেন, জনগণের চায়ের জন্য যতটুকু পানি প্রয়োজন ততটুকু মজুদ আছে তো? নাই। চায়ের দাওয়াতের জন্য নয়, জনতা গণভবন ঘেরাও করবে আপনার জিনিসপত্র গুছিয়ে গাড়িতে তুলে দিতে। দেশবাসী আপনাকে বিদায় জানাতে যেতে পারে।’
সরকারের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘এখন বিদ্যুৎ যায় না মাঝে মাঝে আসে। বিদ্যুৎ বলে আমি জীবিত আছি এখনো মরি নাই। এই আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নতি শেষ পর্যন্ত ঘরে ঘরে মোমবাতি। এই সরকার ঘরে ঘরে জনগণের হাতে হারিকেন ধরিয়ে দিয়েছে।’
গয়েশ্বর বলেন, ‘গতকাল ওবায়দুল কাদের বলেছেন- খালেদা জিয়াকে টুস করে ফেলে দেওয়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য একান্তই হিউমার, মশকরা- অর্থাৎ শেখ হাসিনা ঠাট্টা করতেও জানেন। ঠাট্টা খালেদা জিয়ার সঙ্গে করেন, কিন্তু জাতির সঙ্গে যেটা মশকরা শুরু করেছেন ১৪ বছর ধরে হিসাব একদিন না একদিন জনগণের কাছে দিতেই হবে।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) তীব্র সমালোচনা করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন, এটা কি ঠাট্টা মশকরা করার জায়গা? সকালে এক কথা বিকালে আরেক কথা বলে সাবেক নির্বাচন কমিশনার নূরুল হুদাকে ইতিমধ্যে হার মানিয়ে দিয়েছেন। যার কাজ সে করবে, নির্বাচন কমিশন এত কথা বলে কেন?’
গয়েশ্বের বলেন, ‘কে নির্বাচনে আসবে, কে আসবে না তাতে কিছু আসে যায় না। এত দায়িত্ব আপনাদের (নির্বাচন কমিশন) দেয় নাই। আপনি কে এই কথা বলার। রাজনৈতিক সমস্যার মীমাংসা হবে রাজনৈতিকভাবে, সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন- সরকার চিন্তা করবে কিভাবে তারা জনগণের সঙ্গে মীমাংসা করবে। কিভাবে জনগণের পথ ফেরত দিবে সেই বিষয়। এই কাজ ঠুঁটো জগন্নাথ নির্বাচন কমিশনের নয়।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘আমি আশা করব নো টক। শেখ হাসিনা যেদিন থাকবে না, তখন কি আপনাদেরও তাড়াতে হবে? কোন দিক দিয়ে পালাবেন? যতদিন দায়িত্বে আছেন চুপচাপ বসে থাকেন, বেতন ভাতা খান। নির্বাচন রাজনীতি ও রাজনৈতিক দল, গণতন্ত্র নিয়ে ছবক দেওয়ার অধিকার সাংবিধানিক এই পদে বসে আপনাকে দিতে কেউ দেয় নাই। আশা করি বাংলা কথাটা বুঝতে আপনার কষ্ট হবে না।’
‘আমরা যা করব রাজপথে ফয়সালা করব, যা বলেছি হাসিনাকেই ক্ষমতায় রেখে নির্বাচনে যাব না। হাসিনাকে রেখে নয়, ক্ষমতা থেকে ফেলেই নির্বাচন করব।’ বলেন গয়েশ্বর।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বিদ্যুৎ নাই, তাহলে বিদ্যুৎ উৎপাদনের নামে টাকা গেল কোথায়? বিদ্যুতের জন্য যে টাকা ব্যাংক থেকে ঋণ করা হয়েছে, লুট করা হয়েছে, এর দায়ভার তো জনগণকে পরিশোধ করতে হবে। প্রশ্ন হচ্ছে বিদ্যুৎ পাবো না, তাহলে আমরা সেই ঋণ পরিশোধ করবো কেন? যেসব কোম্পানিকে কুইক রেন্টাল বেসিসে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য নিয়োগ দিয়েছেন তাদের ব্যাংক থেকে কত টাকা ঋণ দিয়েছেন, তাদের কত বিদ্যুৎ উৎপাদন করার কথা ছিল, কতটুকু তারা করতে পেরেছেন, কতটুকু সরকারের কাছে হস্তান্তর করেছেন— তার শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে হবে। জনগণের সেই হিসাব চাওয়ার অধিকার আছে।’
জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, ঢাকা মহানগর বিএনপি নেতা হাবিবুর রশিদ হাবিবসহ প্রমুখ।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

আবু সাঈদের নৃশংস হত্যাকাণ্ডে গণঅভ্যুত্থানের সূচনা

বিদ্যুৎ নিয়ে সরকারের মাতামাতি ছিল ফাঁকা বুলি: গয়েশ্বর

আপডেট সময় : ০১:২৫:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ জুলাই ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে চলমান বিদ্যুৎ সংকট নিয়ে সরকারের সমালোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘বিদ্যুৎ নিয়ে কয়েক মাস আগে সরকারের অনেক মাতামাতি শুনলেও মূলত তা ছিল ফাঁকা বুলি। তাই বলতে হয়, এই সরকারের উন্নতি ঘরে ঘরে মোমবাতি।’
গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে এক স্মরণসভায় এসব কথা বলেন গয়েশ্বর। স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রয়াত সভাপতি শফিউল বারী বাবুর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই স্মরণসভার আয়োজন করেছে স্বেচ্ছাসেবক দল।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘রাতের আঁধারে ভোট চুরি করে হওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন- তার বাড়ি ঘেরাও করতে গেলে তিনি চা দিয়ে আপ্যায়ন করাবেন, জনগণের চায়ের জন্য যতটুকু পানি প্রয়োজন ততটুকু মজুদ আছে তো? নাই। চায়ের দাওয়াতের জন্য নয়, জনতা গণভবন ঘেরাও করবে আপনার জিনিসপত্র গুছিয়ে গাড়িতে তুলে দিতে। দেশবাসী আপনাকে বিদায় জানাতে যেতে পারে।’
সরকারের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘এখন বিদ্যুৎ যায় না মাঝে মাঝে আসে। বিদ্যুৎ বলে আমি জীবিত আছি এখনো মরি নাই। এই আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নতি শেষ পর্যন্ত ঘরে ঘরে মোমবাতি। এই সরকার ঘরে ঘরে জনগণের হাতে হারিকেন ধরিয়ে দিয়েছে।’
গয়েশ্বর বলেন, ‘গতকাল ওবায়দুল কাদের বলেছেন- খালেদা জিয়াকে টুস করে ফেলে দেওয়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য একান্তই হিউমার, মশকরা- অর্থাৎ শেখ হাসিনা ঠাট্টা করতেও জানেন। ঠাট্টা খালেদা জিয়ার সঙ্গে করেন, কিন্তু জাতির সঙ্গে যেটা মশকরা শুরু করেছেন ১৪ বছর ধরে হিসাব একদিন না একদিন জনগণের কাছে দিতেই হবে।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) তীব্র সমালোচনা করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন, এটা কি ঠাট্টা মশকরা করার জায়গা? সকালে এক কথা বিকালে আরেক কথা বলে সাবেক নির্বাচন কমিশনার নূরুল হুদাকে ইতিমধ্যে হার মানিয়ে দিয়েছেন। যার কাজ সে করবে, নির্বাচন কমিশন এত কথা বলে কেন?’
গয়েশ্বের বলেন, ‘কে নির্বাচনে আসবে, কে আসবে না তাতে কিছু আসে যায় না। এত দায়িত্ব আপনাদের (নির্বাচন কমিশন) দেয় নাই। আপনি কে এই কথা বলার। রাজনৈতিক সমস্যার মীমাংসা হবে রাজনৈতিকভাবে, সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন- সরকার চিন্তা করবে কিভাবে তারা জনগণের সঙ্গে মীমাংসা করবে। কিভাবে জনগণের পথ ফেরত দিবে সেই বিষয়। এই কাজ ঠুঁটো জগন্নাথ নির্বাচন কমিশনের নয়।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘আমি আশা করব নো টক। শেখ হাসিনা যেদিন থাকবে না, তখন কি আপনাদেরও তাড়াতে হবে? কোন দিক দিয়ে পালাবেন? যতদিন দায়িত্বে আছেন চুপচাপ বসে থাকেন, বেতন ভাতা খান। নির্বাচন রাজনীতি ও রাজনৈতিক দল, গণতন্ত্র নিয়ে ছবক দেওয়ার অধিকার সাংবিধানিক এই পদে বসে আপনাকে দিতে কেউ দেয় নাই। আশা করি বাংলা কথাটা বুঝতে আপনার কষ্ট হবে না।’
‘আমরা যা করব রাজপথে ফয়সালা করব, যা বলেছি হাসিনাকেই ক্ষমতায় রেখে নির্বাচনে যাব না। হাসিনাকে রেখে নয়, ক্ষমতা থেকে ফেলেই নির্বাচন করব।’ বলেন গয়েশ্বর।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বিদ্যুৎ নাই, তাহলে বিদ্যুৎ উৎপাদনের নামে টাকা গেল কোথায়? বিদ্যুতের জন্য যে টাকা ব্যাংক থেকে ঋণ করা হয়েছে, লুট করা হয়েছে, এর দায়ভার তো জনগণকে পরিশোধ করতে হবে। প্রশ্ন হচ্ছে বিদ্যুৎ পাবো না, তাহলে আমরা সেই ঋণ পরিশোধ করবো কেন? যেসব কোম্পানিকে কুইক রেন্টাল বেসিসে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য নিয়োগ দিয়েছেন তাদের ব্যাংক থেকে কত টাকা ঋণ দিয়েছেন, তাদের কত বিদ্যুৎ উৎপাদন করার কথা ছিল, কতটুকু তারা করতে পেরেছেন, কতটুকু সরকারের কাছে হস্তান্তর করেছেন— তার শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে হবে। জনগণের সেই হিসাব চাওয়ার অধিকার আছে।’
জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, ঢাকা মহানগর বিএনপি নেতা হাবিবুর রশিদ হাবিবসহ প্রমুখ।