কিশোরগঞ্জ সংবাদদাতা : কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী ‘চ্যাপা শুঁটকি’ দেশ ছাড়িয়ে বিদেশের বাজারে যাচ্ছে। যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের বাঙালি অধ্যুষিত এলাকায় চ্যাপার ব্যবসা করছেন অনেকে। প্রতি হাটবারে ৩-৪ কোটি টাকার চ্যাপা বিক্রি হয় এ বাজারে। ব্যবসায়ী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, জেলার সবচেয়ে বড় হাটের নাম ‘বড় বাজার’। সপ্তাহে দুদিন শুঁটকির হাট বসে। বুধ ও বৃহস্পতিবার বসা এ হাটে প্রতিদিন ৩-৪ কোটি টাকার শুঁটকি বিক্রি হয়। বছরে শতকোটি টাকার বাণিজ্য হয় চ্যাপা শুঁটকির। জেলার নিকলী, ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম ছাড়াও পাশের সিলেট এবং সুনামগঞ্জ থেকে শুঁটকি আসে এ বাজারে। চ্যাপা তৈরির মূল উপাদান পুঁটি মাছ। হাওর অধ্যুষিত কিশোরগঞ্জে বর্ষার পানি নেমে গেলে প্রচুর পরিমাণ পুঁটি মাছ ধরা পড়ে। এসব পুঁটি মাছের নাড়িভুঁড়ি ফেলে রোদে শুকিয়ে শুঁটকি তৈরি করা হয়। বড় বাজারের দয়াল ভাণ্ডারের ম্যানেজার হারুন অর রশীদ জানান, কার্তিক মাস থেকে চৈত্র মাস পর্যন্ত চলে চ্যাপা শুঁটকির মৌসুম।
ছয়মাসে কয়েক কোটি টাকার ব্যবসা হয়। দেশের বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা এখান থেকে শুঁটকি নিয়ে যান। সুনামগঞ্জ হাওর থেকে মাছ সংগ্রহ করে বড় বাজারের শুঁটকির আড়তে নিয়ে আসেন আব্দুর রাজ্জাক। তিনি জানান, এ বাজারে স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যবসা করতে পারছেন। তাই এখানেই শুঁটকি নিয়ে আসেন। লোকনাথ ভাণ্ডার মালিক সুকুমার বর্মণ বলেন, বড় বাজার কেবল শুঁটকির হাটের জন্য বিখ্যাত নয়। এটি শতবর্ষী ঐতিহ্যের প্রতীক। এটি বাঙালির খাদ্য সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।
বড় বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বলেন, বড় বাজারের শুঁটকি হাট শুধু ব্যবসার স্থান নয় এটি একটি ঐতিহ্য। বাজারের অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলে আরও অনেক ব্যবসায়ী আসতেন। কিশোরগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম জানান, মৎস্য অধিদপ্তর শুঁটকি শিল্পকে আরও এগিয়ে নিতে কাজ করছে। মাছ উৎপাদনসহ বিভিন্ন পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।