ঢাকা ০৭:৪২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫

বিদেশেও খ্যাতি পাচ্ছে গণ্ডগ্রামের নারীদের তৈরি দোলনা

  • আপডেট সময় : ০৮:৫৩:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫
  • ১৩ বার পড়া হয়েছে

নারী ও শিশু ডেস্ক: গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার নাগোরী ইউনিয়নের একটি ছোট্ট গ্রাম বিরতুল। গ্রামটি ছোট্ট হলেও দেশ-বিদেশে রয়েছে এর সুখ্যাতি। এই গ্রামের বেশির ভাগ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষির ওপর নির্ভরশীল হলেও এখানকার নারীরা প্রায় সবাই স্বাবলম্বী।

গ্রামের নারীরা এখন আর স্বামীর সংসারে বোঝা নন। কারণ তাদের হাতের ছোঁয়ায় বিরতুল গ্রামটিকে সবাই দোলনার গ্রাম হিসেবেই চেনে। বিরতুলের নারীরা প্রমাণ করে দিয়েছেন সুযোগ আর ইচ্ছাশক্তি থাকলে বদলে দেওয়া যায় যে কোনো গল্পের গতি।

বিরতুল গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে বালু নদী। নদীর পাশে কৃষি নির্ভর বিরতুল গ্রামটি সবুজ-শ্যামলে ভরপুর। এখানে শত শত পরিবার প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বাঁশের ফ্রেমে হাতে দোলনা তৈরি করে আসছে।
দোলনা তৈরিতে উপকরণ হিসেবে মূলত বাঁশ, রঙিন সুতা, প্লাস্টিক চেইন ব্যবহার করা হয়। তবে কালের পরিক্রমায় এখন আর বাঁশ ব্যবহার করা হয় না। এটি শহুরে সৌখিন মানুষদের কাছে অতিরিক্ত চাহিদা থাকার কারণে বাঁশের বদলে এখন ব্যবহার করা হয় লোহার রড।

শুধু বিরতুল গ্রামই না পার্শ্ববর্তী ধনুন, বাগদী, বিন্দান ও সেনপাড়া গ্রামের নারীরাও এই দোলনা শিল্পে জড়িত। পাঁচ গ্রামের প্রায় ৩শ পরিবারের নানা বয়সি সহস্রাধিক নারী দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, বিরতুল ও আশপাশের গ্রামের নারীদের তৈরি দোলনা রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন নামিদামি বিপণি বিতানসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা শহরে সরবরাহ হয়। কেউ কেউ আবার বিদেশেও রফতানি করছেন।

দোলনা তৈরির নারী কারিগররা জানান, বিরতুল গ্রামের নারীরা এক সময় পরিবার চালানোর জন্য পুরোপুরি স্বামীর ওপর নির্ভরশীল ছিলেন। কিন্তু এখন আর তাদের টাকার জন্য কারো কাছে হাত পাততে হয় না।
ওই গ্রামের উদ্যোক্তারা জানান, দোলনার দাম কমে গেছে;বেড়েছে কাঁচামালের দাম। অভাব রয়েছে সরকারি সহায়তা বা প্রশিক্ষণের। সহজ শর্তে ঋণের সুযোগ নেই বলে অনেকেই বড় পরিসরে কাজ করতে পারছেন না।
উপজেলার নাগরী ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক ফারজানা তাসলিম বলেন, ‘এরই মধ্যে বিরতুল গ্রামের দোলনা তৈরির উদ্যোক্তারা বিভিন্ন নামে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করেছেন।’

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তনিমা আফ্রাদ বলেন, ‘বিরতুল গ্রামের দোলনা শিল্পীদের উৎসাহিত করার জন্য উপজেলা প্রশাসন সব সময় তাদের সহযোগিতায় ছিল সামনের দিনগুলোতেও থাকবে।’

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বিদেশেও খ্যাতি পাচ্ছে গণ্ডগ্রামের নারীদের তৈরি দোলনা

আপডেট সময় : ০৮:৫৩:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫

নারী ও শিশু ডেস্ক: গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার নাগোরী ইউনিয়নের একটি ছোট্ট গ্রাম বিরতুল। গ্রামটি ছোট্ট হলেও দেশ-বিদেশে রয়েছে এর সুখ্যাতি। এই গ্রামের বেশির ভাগ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষির ওপর নির্ভরশীল হলেও এখানকার নারীরা প্রায় সবাই স্বাবলম্বী।

গ্রামের নারীরা এখন আর স্বামীর সংসারে বোঝা নন। কারণ তাদের হাতের ছোঁয়ায় বিরতুল গ্রামটিকে সবাই দোলনার গ্রাম হিসেবেই চেনে। বিরতুলের নারীরা প্রমাণ করে দিয়েছেন সুযোগ আর ইচ্ছাশক্তি থাকলে বদলে দেওয়া যায় যে কোনো গল্পের গতি।

বিরতুল গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে বালু নদী। নদীর পাশে কৃষি নির্ভর বিরতুল গ্রামটি সবুজ-শ্যামলে ভরপুর। এখানে শত শত পরিবার প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বাঁশের ফ্রেমে হাতে দোলনা তৈরি করে আসছে।
দোলনা তৈরিতে উপকরণ হিসেবে মূলত বাঁশ, রঙিন সুতা, প্লাস্টিক চেইন ব্যবহার করা হয়। তবে কালের পরিক্রমায় এখন আর বাঁশ ব্যবহার করা হয় না। এটি শহুরে সৌখিন মানুষদের কাছে অতিরিক্ত চাহিদা থাকার কারণে বাঁশের বদলে এখন ব্যবহার করা হয় লোহার রড।

শুধু বিরতুল গ্রামই না পার্শ্ববর্তী ধনুন, বাগদী, বিন্দান ও সেনপাড়া গ্রামের নারীরাও এই দোলনা শিল্পে জড়িত। পাঁচ গ্রামের প্রায় ৩শ পরিবারের নানা বয়সি সহস্রাধিক নারী দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, বিরতুল ও আশপাশের গ্রামের নারীদের তৈরি দোলনা রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন নামিদামি বিপণি বিতানসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা শহরে সরবরাহ হয়। কেউ কেউ আবার বিদেশেও রফতানি করছেন।

দোলনা তৈরির নারী কারিগররা জানান, বিরতুল গ্রামের নারীরা এক সময় পরিবার চালানোর জন্য পুরোপুরি স্বামীর ওপর নির্ভরশীল ছিলেন। কিন্তু এখন আর তাদের টাকার জন্য কারো কাছে হাত পাততে হয় না।
ওই গ্রামের উদ্যোক্তারা জানান, দোলনার দাম কমে গেছে;বেড়েছে কাঁচামালের দাম। অভাব রয়েছে সরকারি সহায়তা বা প্রশিক্ষণের। সহজ শর্তে ঋণের সুযোগ নেই বলে অনেকেই বড় পরিসরে কাজ করতে পারছেন না।
উপজেলার নাগরী ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক ফারজানা তাসলিম বলেন, ‘এরই মধ্যে বিরতুল গ্রামের দোলনা তৈরির উদ্যোক্তারা বিভিন্ন নামে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করেছেন।’

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তনিমা আফ্রাদ বলেন, ‘বিরতুল গ্রামের দোলনা শিল্পীদের উৎসাহিত করার জন্য উপজেলা প্রশাসন সব সময় তাদের সহযোগিতায় ছিল সামনের দিনগুলোতেও থাকবে।’

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ