ঢাকা ১১:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫

বিদেশি বিনিয়োগ, সমৃদ্ধ অর্থনীতি ও আসন্ন বাজেট

  • আপডেট সময় : ০৫:৫১:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫
  • ৪ বার পড়া হয়েছে
  • ড. সুজিত কুমার দত্ত

আসন্ন বাজেট কেবল একটি আর্থিক দলিল নয়, এটি একটি জাতির ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনার সুস্পষ্ট চিত্র। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই বাজেট আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি এমন এক সময়ে প্রণীত হচ্ছে যখন আমরা উন্নয়নশীল দেশের কাতারে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার পথে দৃঢ় পদক্ষেপ ফেলেছি। এই অগ্রযাত্রাকে আরো বেগবান করতে বিদেশি বিনিয়োগের প্রবাহ বৃদ্ধি অপরিহার্য।
বাংলাদেশের অর্থনীতি কয়েক দশকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি লাভ করেছে। পোশাক শিল্প আমাদের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি লাভ করেছে। তবে, একটি টেকসই ও বহুমুখী অর্থনীতির জন্য আমাদের অবশ্যই বিদেশি বিনিয়োগের প্রবাহ বৃদ্ধি করতে হবে।

বিদেশি বিনিয়োগ কেবল নতুন নতুন শিল্প স্থাপন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে না বরং উন্নত প্রযুক্তি, ব্যবস্থাপনা দক্ষতা এবং আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সংযোগ স্থাপনেও সহায়ক ভূমিকা পালন করে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি, অবকাঠামো, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ এবং পর্যটনের মতো সম্ভাবনাময় খাতগুলোয় বিদেশি বিনিয়োগের বিপুল সুযোগ রয়েছে।

এই খাতগুলোয় বিনিয়োগের মাধ্যমে আমরা আমাদের উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারি, আমদানি নির্ভরতা কমাতে পারি এবং রপ্তানি বহুমুখীকরণের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারি। বাংলাদেশ অপার সম্ভাবনার দেশ। আমাদের রয়েছে তরুণ ও উদ্যমী কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী, উর্বর কৃষি জমি, নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং কৌশলগত ভৌগোলিক অবস্থান।

বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী হওয়ায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও আমাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা রয়েছে। এই সম্পদগুলো সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে আমরা কেবল বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণই করতে পারি না বরং টেকসই ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতেরও ভিত্তি স্থাপন করতে পারি। আসন্ন বাজেটে এমন কিছু নীতি ও প্রণোদনা অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন, যা এই সম্ভাবনাগুলো বাস্তবে রূপ দিতে সহায়ক হবে।

প্রথমত, বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার ক্ষেত্রে একটি স্থিতিশীল ও বিনিয়োগ-বান্ধব পরিবেশ তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি। বিনিয়োগকারীরা সাধারণত এমন দেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হন, যেখানে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বিদ্যমান, আইনি কাঠামো সুস্পষ্ট ও প্রয়োগযোগ্য, এবং ব্যবসা পরিচালনার প্রক্রিয়া সহজ।

আসন্ন বাজেটে কর কাঠামোকে যৌক্তিকীকরণ, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা হ্রাস এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য এক জানালা সেবা (One-Stop Service) নিশ্চিত করার সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা থাকা প্রয়োজন। দীর্ঘমেয়াদি কর অবকাশ (ঞধী ঐড়ষরফধু) এবং অন্যান্য আর্থিক প্রণোদনা প্রদানের মাধ্যমে উৎপাদনশীল খাত এবং প্রযুক্তিভিত্তিক শিল্পে বিদেশি বিনিয়োগ উৎসাহিত করা যেতে পারে।

বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (Special Economic Zones – SEZ) এবং রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলগুলোর (Export Processing Zones – EPZ) কার্যক্রম আরো গতিশীল ও আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ রাখা উচিত। তবে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক প্রণোদনা এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা।

একটি স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ এবং নিরাপদে তাদের পুঁজি বিনিয়োগের সাহস জোগায়। রাজনৈতিক অস্থিরতা, হরতাল, অবরোধ, সহিংসতা এবং নীতিগত অনিশ্চয়তা বিদেশি বিনিয়োগের প্রধান অন্তরায় হিসেবে কাজ করে।

যখন কোনো দেশে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা বিরাজ করে, তখন বিনিয়োগকারীরা তাদের পুঁজি হারানোর ঝুঁকিতে ভোগে এবং নতুন বিনিয়োগ করা থেকে বিরত থাকে। এর ফলে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয় এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সংকুচিত হয়ে আসে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার গুরুত্ব আরো বেশি।

আমাদের একটি দীর্ঘ এবং সমৃদ্ধ রাজনৈতিক ইতিহাস রয়েছে, তবে মাঝে মাঝেই রাজনৈতিক অস্থিরতা দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করেছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগের পূর্বে এখানকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেন। ঘন ঘন রাজনৈতিক সংঘাত, আইনশৃঙ্খলার অবনতি এবং নীতিগত পরিবর্তন তাদের মধ্যে আস্থার অভাব তৈরি করে। ফলস্বরূপ, অনেক সম্ভাবনাময় বিনিয়োগ প্রস্তাব আলোর মুখ দেখার আগেই বাতিল হয়ে যায় অথবা স্থগিত হয়ে পড়ে।

দ্বিতীয়ত, আমাদের জাতীয় সম্পদগুলো কৌশলগতভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্র প্রসারিত করা সম্ভব। এক্ষেত্রে ‘নীল অর্থনীতি’ (Blue Economy) একটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় খাত। বঙ্গোপসাগরের বিশাল জলরাশিতে মৎস্য সম্পদ, খনিজ সম্পদ, নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ এবং সমুদ্র পরিবহনসহ অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্র বিদ্যমান।

বাজেটে সমুদ্র গবেষণা, সমুদ্র তীরবর্তী অবকাঠামো উন্নয়ন (বন্দর, মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র) এবং সমুদ্র সম্পদ আহরণের টেকসই প্রযুক্তির প্রসারে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া উচিত। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের এই সম্ভাবনাময় খাতে আকৃষ্ট করার জন্য সুস্পষ্ট নীতিমালা ও প্রণোদনা প্রদান করা প্রয়োজন। গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ এবং বিদ্যমান বন্দরগুলোর আধুনিকায়নের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য হাব হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান আরো সুদৃঢ় করা যেতে পারে, যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিদেশি বিনিয়োগের প্রবাহ বৃদ্ধি করবে।

তৃতীয়ত, বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হলো আমাদের বিশাল কর্মক্ষম জনশক্তি। তুলনামূলকভাবে কম মজুরি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি আকর্ষণীয় দিক হলেও, কেবল এর ওপর নির্ভর করে দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন সম্ভব নয়। আসন্ন বাজেটে দক্ষতা উন্নয়ন এবং কারিগরি শিক্ষার প্রসারে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট স্থাপন, শিল্প খাতের চাহিদার সাথে সঙ্গতি রেখে শিক্ষাক্রম প্রণয়ন এবং শ্রমিকদের অধিকার সুরক্ষার মাধ্যমে আমরা একটি দক্ষ ও দায়িত্বশীল কর্মীবাহিনী তৈরি করতে পারি। উন্নত কর্মপরিবেশ এবং ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করা গেলে, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আরো আগ্রহী হবেন।

চতুর্থত, আমাদের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং সমৃদ্ধ সংস্কৃতি বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করার অপার সম্ভাবনা রাখে। আসন্ন বাজেটে পর্যটন খাতের অবকাঠামো উন্নয়নে (যোগাযোগ ব্যবস্থা, হোটেল, রিসোর্ট), ঐতিহাসিক স্থানগুলোর সংরক্ষণ ও আধুনিকীকরণ এবং পর্যটন শিল্পের প্রচার ও প্রসারে পর্যাপ্ত বরাদ্দ রাখা উচিত।

বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য পর্যটন খাতে বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করা, যেমন ইকো-ট্যুরিজম, অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজম এবং সাংস্কৃতিক পর্যটনের বিকাশে উৎসাহিত করা যেতে পারে। ভিসা প্রক্রিয়া সহজীকরণ এবং পর্যটনবান্ধব নীতি প্রণয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য হিসেবে বিশ্ব মঞ্চে তুলে ধরা সম্ভব। আমাদের মনোরম আবহাওয়া এবং ভৌগোলিক বৈচিত্র্যও বিদেশি পর্যটকদের জন্য একটি বাড়তি আকর্ষণ।

পঞ্চমত, বাংলাদেশের কৌশলগত ভৌগোলিক অবস্থান বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বঙ্গোপসাগর এশিয়া এবং অন্যান্য অঞ্চলের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক পথ। আসন্ন বাজেটে এই ভৌগোলিক সুবিধা কাজে লাগানোর জন্য যোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়নে (সড়ক, রেলপথ, নৌপথ) বিশেষ মনোযোগ দেওয়া উচিত।

আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য রুটগুলোর সাথে বাংলাদেশের সংযোগ স্থাপন বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য লজিস্টিক সুবিধা তৈরি করবে। গভীর সমুদ্র বন্দরের মতো বৃহৎ প্রকল্পগুলোর দ্রুত বাস্তবায়ন এবং অন্যান্য স্থলবন্দরগুলোর আধুনিকীকরণ এই ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

ষষ্ঠত, বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ‘সহজ ব্যবসার পরিবেশ’ একটি অত্যাবশ্যকীয় উপাদান। বিশ্ব ব্যাংকের ডুয়িং বিজনেস সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান এখনো সন্তোষজনক নয়। আসন্ন বাজেটে ব্যবসা শুরু করা, লাইসেন্স ও অনুমতি পাওয়া, সম্পত্তি নিবন্ধন, ঋণ সুবিধা, কর পরিশোধ এবং দেউলিয়াত্ব নিষ্পত্তির প্রক্রিয়াকে সহজ ও দ্রুত করার জন্য সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের ঘোষণা থাকা প্রয়োজন। প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সরকারি সেবাগুলো আরো সহজলভ্য ও স্বচ্ছ করে তোলা যেতে পারে। বিনিয়োগকারীদের সাথে নিয়মিত সংলাপ এবং তাদের সমস্যা সমাধানের জন্য একটি কার্যকর প্ল্যাটফর্ম তৈরি করাও জরুরি।

সপ্তমত, পরিবেশ সুরক্ষার বিষয়টি বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের ক্ষেত্রে ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। অনেক আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারী এখন পরিবেশবান্ধব এবং টেকসই বিনিয়োগের ওপর জোর দেন। আসন্ন বাজেটে পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ, নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ ব্যবহার এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলার জন্য সুস্পষ্ট নীতি ও প্রণোদনা থাকা উচিত। পরিবেশবান্ধব শিল্প স্থাপন এবং সবুজ প্রযুক্তির প্রসারে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করার জন্য বিশেষ আর্থিক সুবিধা প্রদান করা যেতে পারে।

অন্যদিকে, সুশাসন এবং স্বচ্ছতা বিদেশি বিনিয়োগের অন্যতম পূর্বশর্ত। দুর্নীতি দমন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর দক্ষতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য আসন্ন বাজেটে কার্যকর পদক্ষেপের ঘোষণা থাকা প্রয়োজন। একটি স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত পরিবেশ বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি করবে এবং দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের জন্য উৎসাহিত করবে।

পরিশেষে বলা যায়, আসন্ন বাজেট বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্ভাবনাকে আরো এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে, যদি আমরা বিদেশি বিনিয়োগ প্রবাহ বৃদ্ধির জন্য একটি সমন্বিত ও কৌশলগত পদ্ধতি গ্রহণ করতে পারি। আমাদের জাতীয় সম্পদ, কৌশলগত অবস্থান এবং অন্যান্য সুবিধাগুলো সঠিকভাবে কাজে লাগানোর জন্য দূরদর্শী নীতি প্রণয়ন এবং তার কার্যকর বাস্তবায়ন অপরিহার্য।

বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি আকর্ষণীয় ও স্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করা, দক্ষতা উন্নয়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন, পর্যটন শিল্পের বিকাশ এবং সুশাসন নিশ্চিত করার মাধ্যমে আমরা কেবল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিই অর্জন করতে পারব না বরং একটি সমৃদ্ধ ও উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্নও পূরণ করতে সক্ষম হব। আসুন, আমরা সবাই মিলে একটি স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে এগিয়ে আসি, যেখানে বিদেশি বিনিয়োগ দেশের উন্নয়নের অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করবে।
লেখক: অধ্যাপক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বিদেশি বিনিয়োগ, সমৃদ্ধ অর্থনীতি ও আসন্ন বাজেট

আপডেট সময় : ০৫:৫১:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫
  • ড. সুজিত কুমার দত্ত

আসন্ন বাজেট কেবল একটি আর্থিক দলিল নয়, এটি একটি জাতির ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনার সুস্পষ্ট চিত্র। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই বাজেট আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি এমন এক সময়ে প্রণীত হচ্ছে যখন আমরা উন্নয়নশীল দেশের কাতারে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার পথে দৃঢ় পদক্ষেপ ফেলেছি। এই অগ্রযাত্রাকে আরো বেগবান করতে বিদেশি বিনিয়োগের প্রবাহ বৃদ্ধি অপরিহার্য।
বাংলাদেশের অর্থনীতি কয়েক দশকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি লাভ করেছে। পোশাক শিল্প আমাদের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি লাভ করেছে। তবে, একটি টেকসই ও বহুমুখী অর্থনীতির জন্য আমাদের অবশ্যই বিদেশি বিনিয়োগের প্রবাহ বৃদ্ধি করতে হবে।

বিদেশি বিনিয়োগ কেবল নতুন নতুন শিল্প স্থাপন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে না বরং উন্নত প্রযুক্তি, ব্যবস্থাপনা দক্ষতা এবং আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সংযোগ স্থাপনেও সহায়ক ভূমিকা পালন করে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি, অবকাঠামো, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ এবং পর্যটনের মতো সম্ভাবনাময় খাতগুলোয় বিদেশি বিনিয়োগের বিপুল সুযোগ রয়েছে।

এই খাতগুলোয় বিনিয়োগের মাধ্যমে আমরা আমাদের উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারি, আমদানি নির্ভরতা কমাতে পারি এবং রপ্তানি বহুমুখীকরণের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারি। বাংলাদেশ অপার সম্ভাবনার দেশ। আমাদের রয়েছে তরুণ ও উদ্যমী কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী, উর্বর কৃষি জমি, নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং কৌশলগত ভৌগোলিক অবস্থান।

বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী হওয়ায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও আমাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা রয়েছে। এই সম্পদগুলো সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে আমরা কেবল বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণই করতে পারি না বরং টেকসই ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতেরও ভিত্তি স্থাপন করতে পারি। আসন্ন বাজেটে এমন কিছু নীতি ও প্রণোদনা অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন, যা এই সম্ভাবনাগুলো বাস্তবে রূপ দিতে সহায়ক হবে।

প্রথমত, বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার ক্ষেত্রে একটি স্থিতিশীল ও বিনিয়োগ-বান্ধব পরিবেশ তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি। বিনিয়োগকারীরা সাধারণত এমন দেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হন, যেখানে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বিদ্যমান, আইনি কাঠামো সুস্পষ্ট ও প্রয়োগযোগ্য, এবং ব্যবসা পরিচালনার প্রক্রিয়া সহজ।

আসন্ন বাজেটে কর কাঠামোকে যৌক্তিকীকরণ, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা হ্রাস এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য এক জানালা সেবা (One-Stop Service) নিশ্চিত করার সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা থাকা প্রয়োজন। দীর্ঘমেয়াদি কর অবকাশ (ঞধী ঐড়ষরফধু) এবং অন্যান্য আর্থিক প্রণোদনা প্রদানের মাধ্যমে উৎপাদনশীল খাত এবং প্রযুক্তিভিত্তিক শিল্পে বিদেশি বিনিয়োগ উৎসাহিত করা যেতে পারে।

বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (Special Economic Zones – SEZ) এবং রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলগুলোর (Export Processing Zones – EPZ) কার্যক্রম আরো গতিশীল ও আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ রাখা উচিত। তবে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক প্রণোদনা এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা।

একটি স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ এবং নিরাপদে তাদের পুঁজি বিনিয়োগের সাহস জোগায়। রাজনৈতিক অস্থিরতা, হরতাল, অবরোধ, সহিংসতা এবং নীতিগত অনিশ্চয়তা বিদেশি বিনিয়োগের প্রধান অন্তরায় হিসেবে কাজ করে।

যখন কোনো দেশে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা বিরাজ করে, তখন বিনিয়োগকারীরা তাদের পুঁজি হারানোর ঝুঁকিতে ভোগে এবং নতুন বিনিয়োগ করা থেকে বিরত থাকে। এর ফলে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয় এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সংকুচিত হয়ে আসে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার গুরুত্ব আরো বেশি।

আমাদের একটি দীর্ঘ এবং সমৃদ্ধ রাজনৈতিক ইতিহাস রয়েছে, তবে মাঝে মাঝেই রাজনৈতিক অস্থিরতা দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করেছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগের পূর্বে এখানকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেন। ঘন ঘন রাজনৈতিক সংঘাত, আইনশৃঙ্খলার অবনতি এবং নীতিগত পরিবর্তন তাদের মধ্যে আস্থার অভাব তৈরি করে। ফলস্বরূপ, অনেক সম্ভাবনাময় বিনিয়োগ প্রস্তাব আলোর মুখ দেখার আগেই বাতিল হয়ে যায় অথবা স্থগিত হয়ে পড়ে।

দ্বিতীয়ত, আমাদের জাতীয় সম্পদগুলো কৌশলগতভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্র প্রসারিত করা সম্ভব। এক্ষেত্রে ‘নীল অর্থনীতি’ (Blue Economy) একটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় খাত। বঙ্গোপসাগরের বিশাল জলরাশিতে মৎস্য সম্পদ, খনিজ সম্পদ, নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ এবং সমুদ্র পরিবহনসহ অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্র বিদ্যমান।

বাজেটে সমুদ্র গবেষণা, সমুদ্র তীরবর্তী অবকাঠামো উন্নয়ন (বন্দর, মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র) এবং সমুদ্র সম্পদ আহরণের টেকসই প্রযুক্তির প্রসারে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া উচিত। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের এই সম্ভাবনাময় খাতে আকৃষ্ট করার জন্য সুস্পষ্ট নীতিমালা ও প্রণোদনা প্রদান করা প্রয়োজন। গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ এবং বিদ্যমান বন্দরগুলোর আধুনিকায়নের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য হাব হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান আরো সুদৃঢ় করা যেতে পারে, যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিদেশি বিনিয়োগের প্রবাহ বৃদ্ধি করবে।

তৃতীয়ত, বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হলো আমাদের বিশাল কর্মক্ষম জনশক্তি। তুলনামূলকভাবে কম মজুরি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি আকর্ষণীয় দিক হলেও, কেবল এর ওপর নির্ভর করে দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন সম্ভব নয়। আসন্ন বাজেটে দক্ষতা উন্নয়ন এবং কারিগরি শিক্ষার প্রসারে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট স্থাপন, শিল্প খাতের চাহিদার সাথে সঙ্গতি রেখে শিক্ষাক্রম প্রণয়ন এবং শ্রমিকদের অধিকার সুরক্ষার মাধ্যমে আমরা একটি দক্ষ ও দায়িত্বশীল কর্মীবাহিনী তৈরি করতে পারি। উন্নত কর্মপরিবেশ এবং ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করা গেলে, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আরো আগ্রহী হবেন।

চতুর্থত, আমাদের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং সমৃদ্ধ সংস্কৃতি বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করার অপার সম্ভাবনা রাখে। আসন্ন বাজেটে পর্যটন খাতের অবকাঠামো উন্নয়নে (যোগাযোগ ব্যবস্থা, হোটেল, রিসোর্ট), ঐতিহাসিক স্থানগুলোর সংরক্ষণ ও আধুনিকীকরণ এবং পর্যটন শিল্পের প্রচার ও প্রসারে পর্যাপ্ত বরাদ্দ রাখা উচিত।

বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য পর্যটন খাতে বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করা, যেমন ইকো-ট্যুরিজম, অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজম এবং সাংস্কৃতিক পর্যটনের বিকাশে উৎসাহিত করা যেতে পারে। ভিসা প্রক্রিয়া সহজীকরণ এবং পর্যটনবান্ধব নীতি প্রণয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য হিসেবে বিশ্ব মঞ্চে তুলে ধরা সম্ভব। আমাদের মনোরম আবহাওয়া এবং ভৌগোলিক বৈচিত্র্যও বিদেশি পর্যটকদের জন্য একটি বাড়তি আকর্ষণ।

পঞ্চমত, বাংলাদেশের কৌশলগত ভৌগোলিক অবস্থান বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বঙ্গোপসাগর এশিয়া এবং অন্যান্য অঞ্চলের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক পথ। আসন্ন বাজেটে এই ভৌগোলিক সুবিধা কাজে লাগানোর জন্য যোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়নে (সড়ক, রেলপথ, নৌপথ) বিশেষ মনোযোগ দেওয়া উচিত।

আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য রুটগুলোর সাথে বাংলাদেশের সংযোগ স্থাপন বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য লজিস্টিক সুবিধা তৈরি করবে। গভীর সমুদ্র বন্দরের মতো বৃহৎ প্রকল্পগুলোর দ্রুত বাস্তবায়ন এবং অন্যান্য স্থলবন্দরগুলোর আধুনিকীকরণ এই ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

ষষ্ঠত, বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ‘সহজ ব্যবসার পরিবেশ’ একটি অত্যাবশ্যকীয় উপাদান। বিশ্ব ব্যাংকের ডুয়িং বিজনেস সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান এখনো সন্তোষজনক নয়। আসন্ন বাজেটে ব্যবসা শুরু করা, লাইসেন্স ও অনুমতি পাওয়া, সম্পত্তি নিবন্ধন, ঋণ সুবিধা, কর পরিশোধ এবং দেউলিয়াত্ব নিষ্পত্তির প্রক্রিয়াকে সহজ ও দ্রুত করার জন্য সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের ঘোষণা থাকা প্রয়োজন। প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সরকারি সেবাগুলো আরো সহজলভ্য ও স্বচ্ছ করে তোলা যেতে পারে। বিনিয়োগকারীদের সাথে নিয়মিত সংলাপ এবং তাদের সমস্যা সমাধানের জন্য একটি কার্যকর প্ল্যাটফর্ম তৈরি করাও জরুরি।

সপ্তমত, পরিবেশ সুরক্ষার বিষয়টি বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের ক্ষেত্রে ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। অনেক আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারী এখন পরিবেশবান্ধব এবং টেকসই বিনিয়োগের ওপর জোর দেন। আসন্ন বাজেটে পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ, নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ ব্যবহার এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলার জন্য সুস্পষ্ট নীতি ও প্রণোদনা থাকা উচিত। পরিবেশবান্ধব শিল্প স্থাপন এবং সবুজ প্রযুক্তির প্রসারে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করার জন্য বিশেষ আর্থিক সুবিধা প্রদান করা যেতে পারে।

অন্যদিকে, সুশাসন এবং স্বচ্ছতা বিদেশি বিনিয়োগের অন্যতম পূর্বশর্ত। দুর্নীতি দমন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর দক্ষতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য আসন্ন বাজেটে কার্যকর পদক্ষেপের ঘোষণা থাকা প্রয়োজন। একটি স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত পরিবেশ বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি করবে এবং দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের জন্য উৎসাহিত করবে।

পরিশেষে বলা যায়, আসন্ন বাজেট বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্ভাবনাকে আরো এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে, যদি আমরা বিদেশি বিনিয়োগ প্রবাহ বৃদ্ধির জন্য একটি সমন্বিত ও কৌশলগত পদ্ধতি গ্রহণ করতে পারি। আমাদের জাতীয় সম্পদ, কৌশলগত অবস্থান এবং অন্যান্য সুবিধাগুলো সঠিকভাবে কাজে লাগানোর জন্য দূরদর্শী নীতি প্রণয়ন এবং তার কার্যকর বাস্তবায়ন অপরিহার্য।

বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি আকর্ষণীয় ও স্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করা, দক্ষতা উন্নয়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন, পর্যটন শিল্পের বিকাশ এবং সুশাসন নিশ্চিত করার মাধ্যমে আমরা কেবল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিই অর্জন করতে পারব না বরং একটি সমৃদ্ধ ও উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্নও পূরণ করতে সক্ষম হব। আসুন, আমরা সবাই মিলে একটি স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে এগিয়ে আসি, যেখানে বিদেশি বিনিয়োগ দেশের উন্নয়নের অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করবে।
লেখক: অধ্যাপক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।