নিজস্ব প্রতিবেদক : নতুন বছরে জাতীয় পার্টিতে ‘একের পর এক চমক’র ঘোষণা দিয়েছেন দলটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এইচ এরশাদের সাবেক স্ত্রী বিদিশা, যিনি নিজেকে দলটি ‘পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার’ নেত্রী বলে দাবি করছেন।
জাতীয় পার্টির ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল শনিবার এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে তাতে সন্তান এরিক এরশাদকে নিয়ে অংশ নেন বিদিশা। তিনি বলেন, “আর মাত্র কয়েক মাস পরেই এরিকের বয়স ২১ হবে। অপেক্ষা করুন। চমকের পর চমক আসবে সামনে।
“ভুলে গেলে চলবে না, এরশাদ সাহেব সেনা পরিবারের একজন সদস্য ছিলেন। তিনি ছিলেন সেনাবাহিনীর প্রধান। এরিক আজ একা না। এরিকের সাথে সেনাবাহিনীর চৌকস অফিসার এবং এরশাদকে যারা ভালোবাসে, তারা আছে।”
সামরিক শাসক এরশাদের মৃত্যুর পর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে এখন রয়েছেন তার ভাই জি এম কাদের। তিনি সংসদেও বিরোধীদলীয় উপনেতা। সংসদে বিরোধীদলীয় নেতার দায়িত্বে রয়েছেন এরশাদের প্রথম স্ত্রী রওশন এরশাদ। তিনি জাতীয় পার্টিতে প্রধান পৃষ্ঠপোষকের পদে রয়েছেন। দুই দশক আগে এরশাদের সঙ্গে বিয়ের পর বিদিশা জাতীয় পার্টিতে পদ পেলেও এরশাদের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর দল থেকে বিযুক্ত করা হয় তাকে। এরশাদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে গত জুলাই মাসে আবার জাতীয় পার্টি নিয়ে সক্রিয় হওয়ার ঘোষণা দেন বিদিশা; যদিও তার এই তৎপরতার সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই বলে জি এম কাদেরের দাবি।
বিদিশা বলেন, “আপনারা জানেন রওশন এরশাদ খুব অসুস্থ। তিনি ব্যাংককে আছেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে এরই মধ্যে জাতীয় পার্টির যে চেয়ারম্যান আছেন, তিনি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর পোস্টার থেকে রওশন এরশাদের ছবি মুছে ফেলেছেন। এই অমানবিক কাজটা আসলে তাকেই মানায়। “সাদ, এরিক- এরাই হবে আগামী দিনের লাঙ্গলের ধারক ও বাহক। পিতার চেয়ারে শুধু ছেলেদেরই শোভা পায়। একমাত্র ছেলেরাই পারে বাবার মান রক্ষা করতে, অন্য কেউ নয়।” রওশন এরশাদের ছেলে রাহগীর আল মাহি সাদকে (সাদ এরশাদ) বর্তমানে রংপুরে তার বাবার আসনে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত জাতীয় পার্টির নেতাদের উদ্দেশে বিদিশা বলেন, “আজ আমি একা না, এইটা ভাবলে আমার কাজের গতি বেড়ে যায়। আপনাদের সাহসেই আমার আজকের এই দুর্গম পথচলা। আমি কথা দিচ্ছি, আপনাদের উপদেশ মেনেই আমি সামনের পথ পাড়ি দেব।
“আমি বলতে চাই, তারা সাবধান হয়ে যান, যারা দলের পদ-পদবী বিক্রি করে বিদেশে গাড়ি বাড়ি করছেন। আপনাদের প্রত্যেকের আমলনামা আমাদের কাছে আছে। সময়মতো জাতিকে আমরা সেটি দেখাব।”
দল ‘পুনর্গঠন’ নিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের ৩০টি জেলায় ইতোমধ্যেই জেলা কমিটি গঠন হয়ে গেছে। ৬৪ জেলার কমিটি গঠন হলেই আমরা ঢাকায় বৃহত্তর কর্মসূচি দেব। আর সেই কর্মসূচির হাত ধরেই নেতা নির্বাচিত হবে। কিন্তু পার্টি আগের মতোই থাকবে। আমরা কারও জন্য থেমে থাকবে না। আমি এখনও কাউকে বহিষ্কার করিনি। আমার দরজা সবার জন্য খোলা।” ছেলে এরিককে নিয়ে দল ‘পুনর্গঠনের কাজে’ সারাদেশে যাবেন বলেও জানান বিদিশা।
অনুষ্ঠানে সভাপতির আসনে থাকা এরিক বলেন, “আজ আমার বাবা নেই, কিন্তু আপনারা আছেন। আপনাদের হাত ধরেই আমি আমার লক্ষ্যে পৌঁছাব, আপনাদের কাছ থেকে আমি এতটুকুই চাই।” অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টির উল্লেখযোগ্য কোনো নেতাকে দেখা যায়নি।
উপস্থিত ছিলেন সিকদার আনিসুর রহমান, ওয়াদুদ দিদার, শাহজাহান সিরাজ, হাবিবুর রহমান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য শিবলী রহমান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, জাতীয় ইসলামী মহাজোটের আলতাফ হোসেন, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান শেখ মুস্তাফিজুর রহমান।
বিদিশা বললেন, জাতীয় পার্টিতে চমকের পর চমক আসছে
ট্যাগস :
বিদিশা বললেন
জনপ্রিয় সংবাদ