নিজস্ব প্রতিবেদক: শিক্ষা উপদেষ্টার দায়িত্ব ছাড়ার দিনে এমপিওভুক্ত (সরকার থেকে বেতন পান) বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য সুখবর জানালেন উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তিনি জানিয়েছেন শিক্ষক-কর্মচারীদের উৎসব ভাতা, বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতা এবং বিনোদন ভাতা বাড়ানো হচ্ছে। আগামী ঈদুল আজহা থেকে এই সুবিধা কার্যকর হবে। এছাড়াও ইবতেদায়ী শিক্ষকদের জন্যও সুখবর জানিয়ে গেলেন।
এত দিন শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। বুধবার (৫ মার্চ) শিক্ষা উপদেষ্টার দায়িত্ব পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও মানবাধিকারকর্মী চৌধুরী রফিকুল আবরার (সি আর আবরার)। এখন ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ শুধু পরিকল্পনা উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করবেন।
বুধবার বেলা ১১টার দিকে বঙ্গভবনে সি আর আবরারকে শপথ পড়ান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এরপর সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আসেন সি আর আবরার। এ সময় সদ্য সাবেক শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন। দুজনকেই শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সেখানেই শিক্ষার বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে কথা বলেন অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
বেসরকারি শিক্ষকদের বিষয়ে বলতে গিয়ে অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ১৫ থেকে ২০ বছরের বঞ্চনা ১-২ বছরের বাজেট দিয়ে মেটানো যায় না। এটা বোঝানো খুব কঠিন। আজকেই সরকারি বেতনের সমান করে দিতে হবে-এটা ন্যায্য দাবি বুঝলাম, কিন্তু এক বছরের বাজেট দিয়ে কী করে ১৫ বছরের বৈষম্য ঠিক করা যায়? কিন্তু শুরুটা করা দরকার। সেই শুরুটা তাঁরা করে দিয়ে যাচ্ছেন।
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘তাদের (এমপিওভুক্ত শিক্ষক) উৎসব ভাতা, বিনোদন ভাতা, বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা এ বছরের ঈদুল আজহা থেকে শুরু করে আগামী বছরের বাজেট থেকে অন্তত কিছু বাড়াতে পারব। এখানে আমি ঘোষণা দিচ্ছি না কত বাড়াব। আমি জানি এ বছর বাজেটের মধ্যে সেটুকু এবং আগামী বছরের বাজেটের মধ্যে সেটির বিধান রাখা হচ্ছে।’
বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের অবসর এবং কল্যাণ ভাতার জন্য একটি তহবিলের কিছুটা এ বছরই তৈরি করা হচ্ছে বলে জানান পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘এ বছরই কিছুটা তৈরি করা হয়েছে। আগামী বাজেটে আরো রাখা হবে। তবে পুরো তহবিলটি টেকসই করতে হলে ১–২ বাজেটে হবে না,৩-৪ বাজেটে আশা করি ভবিষ্যতে এটির সমাধান হয়ে যাবে।’
শেষদিনে ইবতেদায়ী শিক্ষকদের ফাইলে স্বাক্ষর করে গেলেন: দীর্ঘ ৪০ বছর পর ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকদের দাবি পূরণ হতে যাচ্ছে। ভাগ্য খুলছে প্রথম ধাপে ১ হাজার ৫১৯ ইবতেদায়ী মাদ্রাসার ৬ হাজারের বেশি শিক্ষকের। তাদের এমপিওভুক্তির প্রস্তাবের ফাইলে শেষদিন বুধবার স্বাক্ষর করে গেছেন বিদায়ী শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। ফলে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে তারা এমপিওভুক্ত হচ্ছেন।
বুধবার বিদায়ী বক্তব্যে বিষয়টির ইঙ্গিত দিয়ে গেছেন ওয়াহিদ উদ্দিনমাহমুদ নিজেই। তিনি বলেছেন, একই কারিকুলামে পড়াশুনা করিয়ে সরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের সঙ্গে ইবতেদায়ী শিক্ষকদের চরম বৈষম্য ছিল। সেই বৈষম্য নিরসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশে অনেক ইবতেদায়ী মাদ্রাসা আছে। এর মধ্যে অনেকগুলো অনানুষ্ঠানিক। কিন্তু অনেক প্রতিষ্ঠানের নথি (রেজিস্ট্রেশন) আছে। সরকারি প্রাথমিক স্কুলের মতো তারা বাংলা, ইংরেজি গণিত পড়াচ্ছে। অবকাঠোমো, শিক্ষক থাকার পরও তাদের এমপিওভুক্ত করা হয়নি। তাদেরকে এমপিওভুক্ত করা সম্ভব। সেই কাজ আমি করে দিয়েছি।