ঢাকা ০৬:২২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫

বিদায় নিচ্ছে করোনা স্বস্তিদায়ক : স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

  • আপডেট সময় : ০২:৩৫:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ মার্চ ২০২২
  • ৮৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমার ধারায় দেশে একদিনে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা নেমে এসেছে দুই বছরের মধ্যে সর্বনি¤œ পর্যায়ে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল রোববার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সাত হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা করে ৪৩ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এই সময়ে নতুন করে কারও মৃত্যু হয়নি। মহামারীর শুরুর দিকে, ২০২০ সালের ৬ এপ্রিল ৪১ জন রোগী শনা্ক্েতর কথা জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরপর আর কখনও দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা এর নিচে নামেনি।
গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে শূন্য দশমিক ৫৪ শতাংশ। এই হার মহামারীর পুরো সময়ের মধ্যে সর্বনি¤œ। নতুন রোগীদের নিয়ে মহামারীর মধ্যে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ১৯ লাখ ৫১ হাজার ২৮২ জন হয়েছে। নতুন কারও মৃত্যুর খবর না আসায় মহামারীতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ২৯ হাজার ১১৮ জনই আছে। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত নতুন রোগীদের মধ্যে ৩৩ জনই ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা। আর তাদের মধ্যে ২৬ জনই ঢাকা জেলার। সরকারি হিসাবে গত এক দিনে সেরে উঠেছেন আরও ৬৭৩ জন। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত ১৮ লাখ ৭৭ হাজার ৮০৪ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে গত বছরের ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ২০২০ সালের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ৫ আগস্ট ও ১০ অগাস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।
গতবছরের শেষে দেশে সংক্রমণের হার কমে এলেও অতি সংক্রামক ওমিক্রন ধরনের দাপটে জানুয়ারির শেষ দিকে দৈনিক সংক্রমণ ১৬ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছিল, সংক্রমণের হার পৌঁছেছিল রেকর্ড ৩৩ শতাংশে। ফেব্রুয়ারি থেকে দৈনিক শনাক্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যা আবার কমতে শুরু করে। গত বৃহস্পতিবার থেকে টানা তিন দিন দেশে করোনাভাইরাসে কারও মৃত্যু হয়নি। মহামারীর মধ্যে সার্বিক শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ১৫ শতাংশ। আর মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৯ শতাংশ বিশ্বে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছে ৬১ লাখ ২১ হাজারের বেশি মানুষ। বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত ছাড়িয়েছে ৪৮ কোটি এক লাখের বেশি।
‘স্বস্তিদায়ক’ থেকে এবার ‘অত্যন্ত স্বস্তিদায়ক’ : দেশে করোনা পরিস্থিতি ‘অত্যন্ত স্বস্তিদায়ক’ অবস্থায় আছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। তবে আত্মতুষ্টিতে ভুগলে চলবে না এবং মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি অবশ্যই মেনে চলতে হবে। সেইসঙ্গে যারা এখনও টিকা নেননি, তাদেরকে টিকা নিতেও আহ্বান জানিয়েছে অধিদফতর। গতকাল রোববার স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে এ কথা জানান অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম। এর আগে গত ২ মার্চ ডা. নাজমুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, করোনায় শনাক্তের হার তিন-চার শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। আর এ অবস্থাকে করোনার স্বাভাবিক ও স্বস্তিদায়ক পরিস্থিতি বলা যায় বাংলাদেশের জন্য। অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম আরও বলেন, গত চার সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে দেশ এক ধরনের স্বস্তিকর পরিস্থিতিরি মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। পুরো বিশ্বেই করোনা পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে। বাংলাদেশও ব্যতিক্রম নয়। দেশের গত দুই সপ্তাহের সংক্রমণ পরিস্থিতির দিকে তাকালে দেখা যাবে সংক্রমণের গ্রাফ অব্যাহতভাবেই নিম্মমুখী এবং ২৬ মার্চ সর্বশেষ শনাক্তের হার এক শতাংশের নিচেই রয়েছে। তবে এ জায়গায় আসলে আত্মতুষ্টির খুব বেশি সুযোগ নেই, আমরা মনে করি যতদিন না শতকরা হার শূন্যে নেমে না আসবে এবং শতভাগ টিকাদান শেষ না হবে, ততদিন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বিদায় নিচ্ছে করোনা স্বস্তিদায়ক : স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

আপডেট সময় : ০২:৩৫:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ মার্চ ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমার ধারায় দেশে একদিনে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা নেমে এসেছে দুই বছরের মধ্যে সর্বনি¤œ পর্যায়ে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল রোববার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সাত হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা করে ৪৩ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এই সময়ে নতুন করে কারও মৃত্যু হয়নি। মহামারীর শুরুর দিকে, ২০২০ সালের ৬ এপ্রিল ৪১ জন রোগী শনা্ক্েতর কথা জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরপর আর কখনও দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা এর নিচে নামেনি।
গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে শূন্য দশমিক ৫৪ শতাংশ। এই হার মহামারীর পুরো সময়ের মধ্যে সর্বনি¤œ। নতুন রোগীদের নিয়ে মহামারীর মধ্যে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ১৯ লাখ ৫১ হাজার ২৮২ জন হয়েছে। নতুন কারও মৃত্যুর খবর না আসায় মহামারীতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ২৯ হাজার ১১৮ জনই আছে। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত নতুন রোগীদের মধ্যে ৩৩ জনই ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা। আর তাদের মধ্যে ২৬ জনই ঢাকা জেলার। সরকারি হিসাবে গত এক দিনে সেরে উঠেছেন আরও ৬৭৩ জন। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত ১৮ লাখ ৭৭ হাজার ৮০৪ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে গত বছরের ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ২০২০ সালের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ৫ আগস্ট ও ১০ অগাস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।
গতবছরের শেষে দেশে সংক্রমণের হার কমে এলেও অতি সংক্রামক ওমিক্রন ধরনের দাপটে জানুয়ারির শেষ দিকে দৈনিক সংক্রমণ ১৬ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছিল, সংক্রমণের হার পৌঁছেছিল রেকর্ড ৩৩ শতাংশে। ফেব্রুয়ারি থেকে দৈনিক শনাক্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যা আবার কমতে শুরু করে। গত বৃহস্পতিবার থেকে টানা তিন দিন দেশে করোনাভাইরাসে কারও মৃত্যু হয়নি। মহামারীর মধ্যে সার্বিক শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ১৫ শতাংশ। আর মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৯ শতাংশ বিশ্বে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছে ৬১ লাখ ২১ হাজারের বেশি মানুষ। বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত ছাড়িয়েছে ৪৮ কোটি এক লাখের বেশি।
‘স্বস্তিদায়ক’ থেকে এবার ‘অত্যন্ত স্বস্তিদায়ক’ : দেশে করোনা পরিস্থিতি ‘অত্যন্ত স্বস্তিদায়ক’ অবস্থায় আছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। তবে আত্মতুষ্টিতে ভুগলে চলবে না এবং মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি অবশ্যই মেনে চলতে হবে। সেইসঙ্গে যারা এখনও টিকা নেননি, তাদেরকে টিকা নিতেও আহ্বান জানিয়েছে অধিদফতর। গতকাল রোববার স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে এ কথা জানান অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম। এর আগে গত ২ মার্চ ডা. নাজমুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, করোনায় শনাক্তের হার তিন-চার শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। আর এ অবস্থাকে করোনার স্বাভাবিক ও স্বস্তিদায়ক পরিস্থিতি বলা যায় বাংলাদেশের জন্য। অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম আরও বলেন, গত চার সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে দেশ এক ধরনের স্বস্তিকর পরিস্থিতিরি মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। পুরো বিশ্বেই করোনা পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে। বাংলাদেশও ব্যতিক্রম নয়। দেশের গত দুই সপ্তাহের সংক্রমণ পরিস্থিতির দিকে তাকালে দেখা যাবে সংক্রমণের গ্রাফ অব্যাহতভাবেই নিম্মমুখী এবং ২৬ মার্চ সর্বশেষ শনাক্তের হার এক শতাংশের নিচেই রয়েছে। তবে এ জায়গায় আসলে আত্মতুষ্টির খুব বেশি সুযোগ নেই, আমরা মনে করি যতদিন না শতকরা হার শূন্যে নেমে না আসবে এবং শতভাগ টিকাদান শেষ না হবে, ততদিন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।