প্রত্যাশা ডেস্ক: চীনের গুয়াংডং প্রদেশের বাসিন্দা লংয়ের (ছদ্মনাম) কোনো সন্তান নেই। স্ত্রী মারা যাওয়ার পর এক দশক ধরে একাই থাকেন। একদিন বৃষ্টিতে রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া চারটি বিড়ালকে নিজের বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছিলেন। এখন শুধু একটিই বেঁচে আছে। সিয়ামি জাতের সেই বিড়ালের নাম সিয়ানবা। বয়সের কারণে লং এখন তাঁর মৃত্যুর পর বিড়ালটির যত্নে একজন বিশ্বস্ত অভিভাবক খুঁজছেন, যাঁকে তিনি নিজের সম্পত্তির উত্তরাধিকারী করবেন।
স্থানীয় একটি টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, সঠিক ব্যক্তি পেলে নিজের ফ্ল্যাট ও জমানো সব অর্থ দিয়ে দেবেন লং। শর্ত একটাই, সিয়ানবার যত্নে কোনো ত্রুটি করা যাবে না। তবে এখন পর্যন্ত উপযুক্ত কাউকে খুঁজে পাননি তিনি।
৮২ বছর বয়সী লংয়ের বিড়ালের জন্য উত্তরাধিকারী খোঁজার বিষয়টি চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনলাইনে অনেকেই বিষয়টি নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। একজন লিখেছেন, ‘যদি কেউ এ প্রস্তাবে রাজি না হয়, তাহলে বুঝতে হবে, তারা (চীনের মানুষেরা) হয়তো বিড়াল ভালোবাসে না, নয়তো শর্তগুলো কঠিন।’ বিড়ালটি দত্তক নেওয়ার শর্তগুলো প্রকাশ করা হয়নি।
ভবিষ্যতে লংয়ের আত্মীয়রা সম্পত্তির দাবিতে আইনি লড়াইয়ে নামতে পারেন বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ। চীনের ২০২১ সালে কার্যকর হওয়া দেওয়ানি আইন (সিভিল কোড) অনুযায়ী, যে কেউ ইচ্ছাপত্র করে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা রাষ্ট্রকে উত্তরাধিকারী করতে পারবেন।
অনেকে আবার সম্পত্তি ছাড়াই লংয়ের বিড়াল দত্তক নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এক নারী মন্তব্য করেছেন, ‘আমি বিড়ালটিকে নিতে রাজি, টাকার দরকার নেই।’
এই নারী লেখেন, ‘আমি নিজেও ভেবেছি, আমার মৃত্যু হলে বিড়ালটি কে দেখবে? যদি কাউকে বিশ্বাস না করা যায়, তাহলে উত্তরাধিকারীর জন্য অর্থ রেখে যাওয়া যেতে পারে, যাতে বিড়ালটা বোঝা না হয়ে ওঠে।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে ভুয়া বিড়ালপ্রিয় মানুষের বিষয়েও সতর্ক করেছেন। তাঁদের মতে, এমন অনেকে আছেন, যাঁরা কেবল অর্থের লোভে দত্তক নিতে চাইতে পারেন, পরে প্রাণীটির সঙ্গে হয়তো খারাপ ব্যবহার করবেন।
চীনে এখন পর্যন্ত পোষা প্রাণীর প্রতি নির্যাতন ঠেকাতে নির্দিষ্ট আইন নেই। কিন্তু গত কয়েক বছরে দেশটির পোষা প্রাণী বাজার দ্রুত বেড়েছে।
২০২৫ সালের চায়না পেট ইন্ডাস্ট্রি হোয়াইট পেপার অনুযায়ী, ২০২৪ সালে চীনে বিড়াল ও কুকুরের সংখ্যা ছিল ১২ কোটি ৪০ লাখ, যা ২০২৩ সালের চেয়ে ২ দশমিক ১ শতাংশ বেশি। বাজারের পরিমাণ ৩০০ বিলিয়ন ইউয়ান বা প্রায় ৪ হাজার ২০০ কোটি মার্কিন ডলার। সৌজন্যে: প্রআ অনলাইন।