ঢাকা ০৪:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫
সামিটের রাজস্ব ফাঁকি

বিটিআরসির সাবেক চেয়ারম্যানসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

  • আপডেট সময় : ০৮:৪১:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫
  • ৮ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগে বিটিআরসির সাবেক চেয়ারম্যান মো. মহিউদ্দিন আহমেদ ও সামিট কমিউনিকেশনস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ফরিদ খানসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সামিট কমিউনিকেশনস লিমিটেডের শেয়ার হস্তান্তরের মাধ্যমে সরকারের ১০ কোটি ২৪ লাখ ৫২ হাজার ৬৫২ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগে মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) এ মামলা হয়।
দুদকের ঢাকা-১ এর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি করেছেন কমিশনের সহকারী পরিচালক মো. নাছরুল্লাহ হোসাইন। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন। দুদক বর্তমানে সামিট গ্রুপ ও তাদের সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের মাধ্যমে মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে।
মামলার বাকি পাঁচ আসামি হলেন- বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সাবেক কমিশনার (আইন) মো. আমিনুল হক বাবু, সাবেক কমিশনার (স্পেকট্রাম) শেখ রিয়াজ আহমেদ, সাবেক কমিশনার (অর্থ, হিসাব ও রাজস্ব) মুশফিক মান্নান চৌধুরী, সাবেক কমিশনার (সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস) মো. দেলোয়ার হোসাইন এবং লেক্স কাউন্সিলের স্বত্বাধিকারী ও বিটিআরসির প্যানেল আইনজীবী খন্দকার রেজা-ই-রাকিব।
মামলার এজাহারে দুদক বলেছে, পারস্পরিক যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজে লাভবান হতে এবং অপরকে লাভবান করতে সামিট কমিউনিকেশনস লিমিটেডের শেয়ার হস্তান্তরের অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে সরকারের প্রাপ্য ১০ কোটি ২৪ লাখ ৫২ হাজার ৬৫২ টাকা রাজস্ব আদায় না করে আত্মসাতের চেষ্টা করা হয়।

এজাহারে বলা হয়েছে, গত বছরের ৯ এপ্রিল সামিট কমিউনিকেশনস লিমিটেড বিটিআরসির কাছে আবেদন করে ১৪ কোটি ২০ লাখ ৮৮ হাজার ১৩৬টি নতুন শেয়ার ইস্যু করার ইচ্ছা জানায়। এর মধ্যে ৯ কোটি ৪৪ লাখ ৮৮ হাজার ৯২১টি শেয়ার ইস্যু করা হয় সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক গ্লোবাল এনার্জিস হোল্ডিংস লিমিটেডের অনুকূলে। ৪ কোটি ৪ লাখ ৯৫ হাজার ১১৯টি শেয়ার ইস্যু হয় মরিশাসভিত্তিক সিকোইয়া ইনফ্রা টেক লিমিটেডের নামে। বাকি শেয়ারগুলো আগের শেয়ারহোল্ডার মো. আরিফ আল ইসলামের অনুকূলে ইস্যু হয়।

নতুন শেয়ার কাঠামো অনুযায়ী, সামিট কমিউনিকেশনস লিমিটেডের মূলধন প্রায় ৪ গুণ বৃদ্ধি পায়। আগে ৫ কোটি ৭ লাখ শেয়ার ছিল, যা নতুনভাবে ১৪ কোটি ২১ লাখ শেয়ার ইস্যু করে ১৯ কোটি ৮২ লাখ শেয়ারে উন্নীত হয়। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী, লাইসেন্সধারী কোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের শেয়ার হস্তান্তর বা মালিকানা পরিবর্তনের আগে সরকারের অনুমতি নিতে হয়। শেয়ার হস্তান্তর বা মালিকানা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে শেয়ার বিক্রিত মূল্যের ৫ দশমিক ৫ শতাংশ মূল্য পরিশোধ করা বাধ্যবাধকতাও রয়েছে আইনে। বিটিআরসি যখন সামিট কমিউনিকেশনস লিমিটেডকে শেয়ার হস্তান্তরের অনুমতি দেয়, তখন ওই মূল্য পরিশোধ করা হয়নি এবং লেক্স কাউন্সিলের মতামতের ভিত্তিতে অবৈধ সুবিধা দেওয়া হয়। এজাহারে আরো বলা হয়েছে, সামিট কমিউনিকেশনস লিমিটেড সরকারি অর্থ আত্মসাতের উদ্দেশ্যে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর অনুকূলে শেয়ার হস্তান্তর করেছে, অথচ শেয়ার হস্তান্তর মূল্য পরিশোধ করা হয়নি।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সামিটের রাজস্ব ফাঁকি

বিটিআরসির সাবেক চেয়ারম্যানসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

আপডেট সময় : ০৮:৪১:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগে বিটিআরসির সাবেক চেয়ারম্যান মো. মহিউদ্দিন আহমেদ ও সামিট কমিউনিকেশনস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ফরিদ খানসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সামিট কমিউনিকেশনস লিমিটেডের শেয়ার হস্তান্তরের মাধ্যমে সরকারের ১০ কোটি ২৪ লাখ ৫২ হাজার ৬৫২ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগে মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) এ মামলা হয়।
দুদকের ঢাকা-১ এর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি করেছেন কমিশনের সহকারী পরিচালক মো. নাছরুল্লাহ হোসাইন। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন। দুদক বর্তমানে সামিট গ্রুপ ও তাদের সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের মাধ্যমে মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে।
মামলার বাকি পাঁচ আসামি হলেন- বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সাবেক কমিশনার (আইন) মো. আমিনুল হক বাবু, সাবেক কমিশনার (স্পেকট্রাম) শেখ রিয়াজ আহমেদ, সাবেক কমিশনার (অর্থ, হিসাব ও রাজস্ব) মুশফিক মান্নান চৌধুরী, সাবেক কমিশনার (সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস) মো. দেলোয়ার হোসাইন এবং লেক্স কাউন্সিলের স্বত্বাধিকারী ও বিটিআরসির প্যানেল আইনজীবী খন্দকার রেজা-ই-রাকিব।
মামলার এজাহারে দুদক বলেছে, পারস্পরিক যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজে লাভবান হতে এবং অপরকে লাভবান করতে সামিট কমিউনিকেশনস লিমিটেডের শেয়ার হস্তান্তরের অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে সরকারের প্রাপ্য ১০ কোটি ২৪ লাখ ৫২ হাজার ৬৫২ টাকা রাজস্ব আদায় না করে আত্মসাতের চেষ্টা করা হয়।

এজাহারে বলা হয়েছে, গত বছরের ৯ এপ্রিল সামিট কমিউনিকেশনস লিমিটেড বিটিআরসির কাছে আবেদন করে ১৪ কোটি ২০ লাখ ৮৮ হাজার ১৩৬টি নতুন শেয়ার ইস্যু করার ইচ্ছা জানায়। এর মধ্যে ৯ কোটি ৪৪ লাখ ৮৮ হাজার ৯২১টি শেয়ার ইস্যু করা হয় সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক গ্লোবাল এনার্জিস হোল্ডিংস লিমিটেডের অনুকূলে। ৪ কোটি ৪ লাখ ৯৫ হাজার ১১৯টি শেয়ার ইস্যু হয় মরিশাসভিত্তিক সিকোইয়া ইনফ্রা টেক লিমিটেডের নামে। বাকি শেয়ারগুলো আগের শেয়ারহোল্ডার মো. আরিফ আল ইসলামের অনুকূলে ইস্যু হয়।

নতুন শেয়ার কাঠামো অনুযায়ী, সামিট কমিউনিকেশনস লিমিটেডের মূলধন প্রায় ৪ গুণ বৃদ্ধি পায়। আগে ৫ কোটি ৭ লাখ শেয়ার ছিল, যা নতুনভাবে ১৪ কোটি ২১ লাখ শেয়ার ইস্যু করে ১৯ কোটি ৮২ লাখ শেয়ারে উন্নীত হয়। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী, লাইসেন্সধারী কোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের শেয়ার হস্তান্তর বা মালিকানা পরিবর্তনের আগে সরকারের অনুমতি নিতে হয়। শেয়ার হস্তান্তর বা মালিকানা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে শেয়ার বিক্রিত মূল্যের ৫ দশমিক ৫ শতাংশ মূল্য পরিশোধ করা বাধ্যবাধকতাও রয়েছে আইনে। বিটিআরসি যখন সামিট কমিউনিকেশনস লিমিটেডকে শেয়ার হস্তান্তরের অনুমতি দেয়, তখন ওই মূল্য পরিশোধ করা হয়নি এবং লেক্স কাউন্সিলের মতামতের ভিত্তিতে অবৈধ সুবিধা দেওয়া হয়। এজাহারে আরো বলা হয়েছে, সামিট কমিউনিকেশনস লিমিটেড সরকারি অর্থ আত্মসাতের উদ্দেশ্যে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর অনুকূলে শেয়ার হস্তান্তর করেছে, অথচ শেয়ার হস্তান্তর মূল্য পরিশোধ করা হয়নি।