প্রত্যাশা ডেস্ক : বিচ্ছেদের মামলায় সাবেক স্ত্রী প্রিন্সেস হায়া বিনতে আল-হুসেইনের ‘আজীবন নিরাপত্তার’ জন্য দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল-মাকতুমকে ৫৫ কোটি ৪০ লাখ পাউন্ড দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ব্রিটিশ আদালত।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার লন্ডনের হাই কোর্ট সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রধানমন্ত্রী দুবাইয়ের ধনকুবের শেখ মোহাম্মদকে সাবেক স্ত্রী ও দুই সন্তানের জন্য ওই রেকর্ড পরিমাণ অর্থ দেওয়ার আদেশ দেয়।
বিচ্ছেদের ফলে প্রিন্সেস যে সম্পদ হারিয়েছেন তার ‘ক্ষতিপূরণ’ চেয়ে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে বিচারক ফিলিপ মুর তার রায়ে বলেছেন, “নিরাপত্তা ছাড়া তিনি নিজের জন্য কোনো বিশেষ কিছু চাইছেন না।”
বিন রশিদকে তিন মাসের মধ্যে ২৫ কোটি ১৫ লাখ পাউন্ড দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এই অর্থ দিয়ে যুক্তরাজ্যে প্রিন্সেস হায়ার বাসভবনের রক্ষণাবেক্ষণের খরচ মেটানো হবে। দেহরক্ষীর সঙ্গে সম্পর্কের জেরে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কার মধ্যে প্রিন্সেস হায়া ২০১৯ সালের এপ্রিলে পালিয়ে যুক্তরাজ্যে চলে যান। এক মাস পর বিয়ে বিচ্ছেদের আবেদন করেন শেখ মোহাম্মদের ছয় স্ত্রীর কনিষ্ঠতম হায়া। ৪৭ বছর বয়সী প্রিন্সেস হায়া জর্ডানের সাবেক বাদশা হুসেইনের মেয়ে এবং বর্তমান বাদশাহ আব্দুল্লাহর সৎবোন।
আদালত ৭২ বছর বয়সী শেখ মোহাম্মদকে তাদের ১৪ বছর বয়সী কন্যা জালিলা এবং নয় বছরের ছেলে জায়েদের শিক্ষা খরচ বাবদ ৩০ লাখ পাউন্ড এবং বকেয়া পাওনা হিসেবে ৯৬ লাখ পাউন্ড দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এছাড়া সন্তানদের ভরণ-পোষণ এবং প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে ওঠার পর তাদের নিরাপত্তার জন্য আরও এক কোটি ১২ লাখ পাউন্ড দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দুবাইয়ের শাসককে। মামলায় প্রিন্সেস হায়া ১৪০ কোটি পাউন্ড দাবি করেছিলেন। দীর্ঘ সাত ঘণ্টার শুনানিতে তিনি বলেন, এই অর্থের বড় অংশ বিচ্ছেদ প্রক্রিয়ায় খরচ হয়ে যাবে, যা নিজের এবং সন্তানদের ওপর শেখ মোহাম্মদের নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্তি দেবে। আদালতে তিনি বলেন, “আমি সত্যিই মুক্তি চাই এবং আমি তাদেরও মুক্ত করতে চাই।”
তবে রায়ের পর তার আইনজীবী তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদের একজন মুখপাত্র বলেন, “তিনি সবসময় তার সন্তানদের ভরণ-পোষণ নিশ্চিত করেছেন এবং গণমাধ্যমকে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার বিষয়ে শ্রদ্ধাশীল থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।”
প্রিন্সেস হায়ার অভিযোগ, যুক্তরাজ্যে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে তাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। সে কারণে সন্তানদের অপহৃত হওয়ার ভয়ে নিরাপত্তার জন্য মোটা অঙ্কের অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে তাকে। এ বছর হাই কোর্টের দেওয়া এক রায়ে বলা হয়, শেখ মোহাম্মদ বেআইনিভাবে প্রিন্সেস হায়া, তার দেহরক্ষী এবং তার আইনজীবীদের মোবাইল ফোন হ্যাক করিয়েছিলেন। বিচ্ছেদের রায়ে বিচারক ফিলিপ মুর আগের ওই রায়ের সূত্র ধরে বলেন, প্রিন্সেস এবং তার দুই সন্তান সুনির্দিষ্টভাবে নিরাপত্তা ঝুঁকিতে রয়েছে। যুক্তরাজ্যে তাদের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
বিচ্ছেদের মামলায় ৫৫ কোটি পাউন্ড জিতলেন প্রিন্সেস হায়া
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ