ঢাকা ০৭:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করলেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে.পি. শর্মা ওলি

  • আপডেট সময় : ০৩:৩৭:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৩০ বার পড়া হয়েছে

নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে.পি শর্মা -ছবি রয়টার্স

প্রত্যাশা ডেস্ক: নেপালে সহিংস দুর্নীতিবিরোধী বিক্ষোভে উত্তেজনা বাড়ায় পদত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী কে.পি. শর্মা ওলি। শত শত বিক্ষোভকারী তার দফতরে প্রবেশ করার পর, মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। নেপালের সচিবালয় থেকে এক বিবৃতিতে এ খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও নেপালের সংবাদমাধ্যমগুলো এ খবর জানিয়েছে।

টানা দুইদিনের বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে গেলেন তিনি কে.পি. শর্মা ওলি।

বিবিসি জানিয়েছে, নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি পদত্যাগ করেছেন বলে তার সচিবালয় এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে। কেপি শর্মা ওলি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, চলমান সংকটের সংবিধানসম্মত সমাধানের পথ সুগম করার জন্য তিনি পদত্যাগ করেছেন।

এর আগে মঙ্গলবার ভোর থেকে রাজধানী কাঠমান্ডুসহ সারা নেপালে বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। এ সময় উত্তেজিত জনতা একাধিক প্রভাবশালী নেতার বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। আক্রমণের শিকার হয় ওলি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবার বাসভবনও। রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যালয়ও লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়।

সিভিল সার্ভিস হাসপাতালের নির্বাহী পরিচালক মোহন রেগমি বিবিসিকে জানিয়েছেন, মঙ্গলবারের বিক্ষোভে অন্তত দুজন নিহত হয়েছেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন আরও ৯০ জন। এর আগে তরুণদের আন্দোলনে নিরাপত্তা বাহিনীর দমনপীড়নের পর দেশজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার পর সংকট নিরসনে সর্বদলীয় বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি।

পদত্যাগের আগে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ওলি জানান, বৈঠকটি সন্ধ্যা ৬টায় অনুষ্ঠিত হবে। তবে কোথায় বৈঠক বসবে তা উল্লেখ করা হয়নি। তিনি বলেছিলেন, এই সংকটের সমাধান একমাত্র আলোচনার মাধ্যমেই সম্ভব। তিনি আরও বলেন, রাজধানীসহ সারা দেশে সোমবারের বিক্ষোভ ও পরবর্তী ঘটনাগুলো আমাকে দুঃখিত করেছে। কোনো ধরনের সহিংসতা দেশের স্বার্থে ভালো নয়। শান্তিপূর্ণ ও আলোচনাভিত্তিক সমাধানই এখন প্রয়োজন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে সোমবার থেকে নেপালে বিক্ষোভ চলছে। কারফিউ উপেক্ষা করে মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনের মতো কাঠমান্ডুর বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ করছেন তরুণেরা। এ সময় জেন-জি বিক্ষোভকারীরা ক্ষমতাসীন জোটের শরিক নেপালি কংগ্রেস পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ মন্ত্রী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের বাড়িতে হামলা চালিয়েছেন। কয়েকটি বাড়িতে আগুনও ধরিয়ে দিয়েছেন।

বিক্ষোভের মুখে সরকার মঙ্গলবার ফেসবুক-ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও প্ল্যাটফর্মের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলেও বিক্ষোভকারীরা কারফিউর মধ্যে রাস্তায় নেমে আসেন।

রাজনীতিবিদদের সন্তানদের আড়ম্বরপূর্ণ জীবনযাপনকে কেন্দ্র করে ‘নেপো কিড’ ক্যাম্পেইন থেকে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। বিশেষ করে কাঠমান্ডুসহ বিভিন্ন জেলায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে। প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে চলে আন্দোলন।

এর মধ্যেই প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আগুন দেয়ার ঘটনাও ঘটে। পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে সেখানেও্র বিক্ষোভকারীরা আগুন দিয়েছেন বলে খবর পাওয়া যায়। পরে বন্ধ করে দেয়া হয় বিমান চলাচলও। এমন পরিস্থিতিতে নেপালের প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগের আহ্বান জানান স্থানীয় নেতারা এবং দেশটির সেনাপ্রধান। অবশেষে চাপের মুখে পদত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে গতকাল সোমবার পদত্যাগ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক।

সানা/আপ্র/০৯/০৯/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করলেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে.পি. শর্মা ওলি

আপডেট সময় : ০৩:৩৭:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: নেপালে সহিংস দুর্নীতিবিরোধী বিক্ষোভে উত্তেজনা বাড়ায় পদত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী কে.পি. শর্মা ওলি। শত শত বিক্ষোভকারী তার দফতরে প্রবেশ করার পর, মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। নেপালের সচিবালয় থেকে এক বিবৃতিতে এ খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও নেপালের সংবাদমাধ্যমগুলো এ খবর জানিয়েছে।

টানা দুইদিনের বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে গেলেন তিনি কে.পি. শর্মা ওলি।

বিবিসি জানিয়েছে, নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি পদত্যাগ করেছেন বলে তার সচিবালয় এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে। কেপি শর্মা ওলি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, চলমান সংকটের সংবিধানসম্মত সমাধানের পথ সুগম করার জন্য তিনি পদত্যাগ করেছেন।

এর আগে মঙ্গলবার ভোর থেকে রাজধানী কাঠমান্ডুসহ সারা নেপালে বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। এ সময় উত্তেজিত জনতা একাধিক প্রভাবশালী নেতার বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। আক্রমণের শিকার হয় ওলি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবার বাসভবনও। রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যালয়ও লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়।

সিভিল সার্ভিস হাসপাতালের নির্বাহী পরিচালক মোহন রেগমি বিবিসিকে জানিয়েছেন, মঙ্গলবারের বিক্ষোভে অন্তত দুজন নিহত হয়েছেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন আরও ৯০ জন। এর আগে তরুণদের আন্দোলনে নিরাপত্তা বাহিনীর দমনপীড়নের পর দেশজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার পর সংকট নিরসনে সর্বদলীয় বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি।

পদত্যাগের আগে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ওলি জানান, বৈঠকটি সন্ধ্যা ৬টায় অনুষ্ঠিত হবে। তবে কোথায় বৈঠক বসবে তা উল্লেখ করা হয়নি। তিনি বলেছিলেন, এই সংকটের সমাধান একমাত্র আলোচনার মাধ্যমেই সম্ভব। তিনি আরও বলেন, রাজধানীসহ সারা দেশে সোমবারের বিক্ষোভ ও পরবর্তী ঘটনাগুলো আমাকে দুঃখিত করেছে। কোনো ধরনের সহিংসতা দেশের স্বার্থে ভালো নয়। শান্তিপূর্ণ ও আলোচনাভিত্তিক সমাধানই এখন প্রয়োজন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে সোমবার থেকে নেপালে বিক্ষোভ চলছে। কারফিউ উপেক্ষা করে মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনের মতো কাঠমান্ডুর বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ করছেন তরুণেরা। এ সময় জেন-জি বিক্ষোভকারীরা ক্ষমতাসীন জোটের শরিক নেপালি কংগ্রেস পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ মন্ত্রী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের বাড়িতে হামলা চালিয়েছেন। কয়েকটি বাড়িতে আগুনও ধরিয়ে দিয়েছেন।

বিক্ষোভের মুখে সরকার মঙ্গলবার ফেসবুক-ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও প্ল্যাটফর্মের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলেও বিক্ষোভকারীরা কারফিউর মধ্যে রাস্তায় নেমে আসেন।

রাজনীতিবিদদের সন্তানদের আড়ম্বরপূর্ণ জীবনযাপনকে কেন্দ্র করে ‘নেপো কিড’ ক্যাম্পেইন থেকে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। বিশেষ করে কাঠমান্ডুসহ বিভিন্ন জেলায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে। প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে চলে আন্দোলন।

এর মধ্যেই প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আগুন দেয়ার ঘটনাও ঘটে। পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে সেখানেও্র বিক্ষোভকারীরা আগুন দিয়েছেন বলে খবর পাওয়া যায়। পরে বন্ধ করে দেয়া হয় বিমান চলাচলও। এমন পরিস্থিতিতে নেপালের প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগের আহ্বান জানান স্থানীয় নেতারা এবং দেশটির সেনাপ্রধান। অবশেষে চাপের মুখে পদত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে গতকাল সোমবার পদত্যাগ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক।

সানা/আপ্র/০৯/০৯/২০২৫