চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : সীতাকু-ের বিএম কন্টেইনার ডিপোতে আগুন লাগার পর বিস্ফোরণের ঘটনায় ঢাকা ও চট্টগ্রামে চিকিৎসাধীন আরও দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।
গতকাল রোববার দুপুরে চট্টগ্রামের বেসরকারি পার্কভিউ হাসপাতালে ডিপো কর্মী নুরুল কাদেরের (২২) মৃত্যু হয়। নুরুল কাদের (২২) চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার এ কে এম ফাইজুর রহমান চৌধুরীর ছেলে। পার্কভিউ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এ টি এম রেজাউল করিম জানান, দুর্ঘটনার পর দগ্ধ নুরুল প্রথমে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। পরে সেখান থেকে তাকে এ হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই রোববার দুপুর দেড়টার দিকে তার মৃত্যু হয়। এর আগে রোববার ভোর ৩টায় ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফায়ার ফাইটার গাউসুল আজ মের মৃত্যু হয়।
ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা শাহজাদী সুলতানা বলেন, এ নিয়ে ফায়ার সার্ভিসের মোট ১০ সদস্যের মৃত্যু হলো। ডিপো থেকে উদ্ধার করা যেসব পোড়া লাশ শনাক্ত করা যায়নি, তাদের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের আরও তিনজন রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত ৪ জুন রাতে সীতাকু-ের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামে বেসরকারি ওই কন্টেইনার ডিপোতে আগুন লাগার পর একের পর এক বিস্ফোরণে তা ছড়িয়ে পড়ে। ডিপোতে থাকা রাসায়নিকের কারণে ছড়িয়ে পড়া ওই আগুন ৮৬ ঘণ্টা পর বিভিন্ন বাহিনীর চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আসে। ভয়াবহ ওই অগ্নিকা- ও বিস্ফোরণে প্রথমে ৪১ জনের মরদেহ উদ্ধার করে বিভিন্ন সংস্থা। ৭ জুন দুর্ঘটনাস্থল থেকে আরও দুইজনের দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়। পরদিন সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় একজন। সেদিন সন্ধ্যায় ডিপোর ভেতরে আরও দুইজনের দেহাবশেষ পাওয়া যায়।
সবমিলিয়ে ডিপোর আগুন ও বিস্ফোরণের ঘটনায় মোট ৪৪ জনের মৃত্যু হলো। এর বাইরে উদ্ধার হওয়া চার দেহাবশেষের পরিচয় জানতে অপেক্ষা করতে ডিএনএ পরীক্ষার পর ফল পাওয়া পর্যন্ত। হতাহতের বেশিরভাগই ফায়ার সার্ভিস কর্মী, ডিপোর শ্রমিক-কর্মচারী, কন্টেইনারবাহী গাড়ির চালক-সহকারী ও শ্রমিক। আহত ও দগ্ধ অনেকে এখনও চট্টগ্রাম ও ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদের কারও কারও অবস্থা আশঙ্কাজনক। স্মার্ট গ্রুপের মালিকানাধীন বিএম কন্টেইনার ডিপোর পরিচালক চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ মুজিবুর রহমান। তিনি স্মার্ট গ্রুপের আরেক কোম্পানি আল রাজী কেমিকেল কমপ্লেক্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। ওই কারখানায় উৎপাদিত হাইড্রোজেন পার অক্সাইড রপ্তানির জন্য বিএম ডিপোতে রাখা ছিল। রাসায়নিকের কারণেই অগ্নিকা- ভয়াবহ মাত্রা পায় বলে ফায়ার সার্ভিসের ধারণা।
বিএম ডিপোতে দগ্ধ আর দুইজনের মৃত্যু
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ