নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি গণতন্ত্রের নামে নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র করেছে। ওদের ভোট চুরি জনগণ মেনে নেয়নি। ১৯৯৬ সালে ভোট চুরির অপরাধে নাকে খত দিয়ে বিদায় নিতে বাধ্য হয় খালেদা জিয়া। তারা এখন গণতন্ত্রের নামে আন্দোলন করছে, অথচ গণতন্ত্রর ‘গ’ ও জানে না।
গতকাল রোববার (১৪ জানুয়ারি) গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা ও মতবিনিময় সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালের পর থেকে নির্বাচনে আসতে ভয় পায় বিএনপি। আপনাদের (দেশবাসী) ধন্যবাদ জানাই… সমস্ত ষড়যন্ত্র আপনারা ধূলিসাৎ করে দিয়েছেন। মানুষ তাদের ডাকে সাড়া দেয়নি। নির্বাচন ঘিরে অনেক বাধা-বিপত্তি, চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র ছিল। তবে সব ষড়যন্ত্র ভেদ করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণের জয় হয়েছে, এ জয় গণতন্ত্রের জয়। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, তেলা মাথায় আমরা তেল দেইনি। আমাদের উন্নয়নকাজ একেবারে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছেছে। প্রত্যেকের জন্য কাজ করেছি, যাতে সবার জীবন উন্নত হয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ভোটের অধিকার ফিরে পায় মানুষ। শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাসের অতিমারি, এরপর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ… জিনিসের দাম বেড়েছে। আবার নতুন করে হামলা শুরু হয়েছে। যে কারণে হয়তো সামনে আরও দুর্দিন আসতে পারে। আমাদের মাটি উর্বর, আমাদের মানুষ আছে। এক ইঞ্চি জমি যেন অনাবাদি না থাকে এবং জমি চাষ করা থেকে শুরু করে হাঁস-মুরগি-গরু-ছাগল পালন করতে হবে। এ সময় সব ষড়যন্ত্রকে পেছনে ফেলে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক সরকার ছাড়া দেশের উন্নয়ন হয় না, এটা প্রমাণিত। উন্নয়ন টেকসই করতে হবে। ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেই এগিয়ে যেতে হবে। আগামীতেও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে।
যারা জ্বালাও-পোড়াও করেছে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না: নির্বাচনের আগে যারা জ্বালাও-পোড়াও করেছে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এসব ঘটনায় যারা হুকুম দিয়েছে, খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রোববার (১৪ জানুয়ারি) গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত শুভেচ্ছা ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বলেন, এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ, সবার হাতে মোবাইল ফোন, সব জায়গায় সিসি ক্যামেরা আছে। যারা এই কাজগুলো (জ্বালাও-পোড়াও) করছে তাদের খুঁজে বের করা হবে। ইতোমধ্যে অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যারা জ্বালাও-পোড়াওয়ের জন্য হুকুম দিয়েছে, তাদেরও আমরা গ্রেপ্তার করছি। আর যেন কেউ এ ধরনের জঘন্য কাজ করতে না পারে, এটাই আমরা চাই। তিনি বলেন, আমাদের সামনে অনেক কাজ, আমরা যে কাজগুলো করে ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করেছি, এটাকে আমাদের টেকসই করতে হবে। এটাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু আপনারা জানেন, ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত কখনো শেষ হয় না, কাজেই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই, শক্ত একটি ঘাঁটি আছে বলেই যেকোনো ষড়যন্ত্র আমি মোকাবিলা করতে পারি। আপনারা আমার শক্তি। টুঙ্গিপাড়া, কোটালীপাড়ার মানুষই আমার বড় শক্তি, বাংলাদেশের জনগণ আমার শক্তি। আগামীতেও বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে। রাস্তাঘাট, পুল, ব্রিজ, এখন যেগুলো বাকি আছে আমরা সেগুলো করব। গ্রামের মানুষ শহরের সব নাগরিক সুবিধা পাবে। আমার গ্রাম আমার শহর, সেভাবে প্রত্যেকটা গ্রাম গড়ে তুলব। যাতে কোনো মানুষের কষ্ট না হয়। শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বব্যাপী খাদ্যের দাম বেড়েছে, বাংলাদেশেও জিনিসের দাম বেড়েছে। আমাদের দেশের মানুষের খাবারের যাতে অভাব না হয়, সেই ব্যবস্থা আমাদের নিজেদের করতে হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমাদের মানুষ কাজ করলে এ দেশকে কেউ পেছনে টানতে পারবে না। যারা কখনো এ দেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন করতে দিতে চায়নি, যারা জাতির পিতাকে হত্যা করেছে, যারা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পাকিস্তানের হানাদার বাহিনীর দোসর ছিল, তারা বাংলাদেশের কখনো উন্নতি চায় না। সব ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
বিএনপি গণতন্ত্রের নামে নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র করেছে: প্রধানমন্ত্রী
জনপ্রিয় সংবাদ