ঢাকা ০৪:৪৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বিএনপি’র ৪৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী আজ

  • আপডেট সময় : ০১:১৯:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৫০ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’র ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ। দিবসটি উপলক্ষে আলোচনা সভা, শোভাযাত্রা, ক্রোড়পত্র প্রকাশসহ সপ্তাহব্যাপী নানা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলটি। দীর্ঘ দেড় যুগ পর অনুকূল পরিবেশে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন করছে বিএনপি।

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর প্রাণ ফিরে পায় দলটি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দীর্ঘ সাড়ে চার দশকেরও বেশি সময়ের রাজনৈতিক পথচলায় বিএনপি কখনো ক্ষমতায় থেকেছে, কখনো আন্দোলনে। বিগত দেড়যুগ রাজপথেই কেটেছে বিএনপি নেতাকর্মীদের। তারা ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের দাবিতে আন্দোলনে অবিচল ছিলেন। অবশেষে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশ নতুন এক রাজনৈতিক অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে। আওয়ামী লীগ রাজনীতির বাইরে চলে যাওয়ায় বিএনপি’র সামনে অবারিত সুযোগ এসেছে নিজেদের নতুন করে জনগণের সামনে উপস্থাপনের। চারবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকা বিএনপি এমন একটি সময়ে সাতচল্লিশে পা রাখছে, যখন দীর্ঘ দেড় যুগের ঘোর অমানিশা কাটিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতা হাতছানি দিচ্ছে।

তবে ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানোত্তর রাজনৈতিক বাস্তবতায় বিএনপি’র সামনে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জও তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য ধরে রেখে অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে একটি নিরপেক্ষ সংসদ নির্বাচন আদায় করাটাই মুখ্য চ্যালেঞ্জ। পাশাপাশি দীর্ঘদিনের মিত্র জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েন দলটিকে দ্বিধায় ফেলেছে। তরুণ ভোটারদের আস্থায় আনা এবং ‘জুলাই সনদ’র ঘোষণা ও কার্যকর করা অন্যতম চ্যালেঞ্জ।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পরবর্তী নানা ঘটনা প্রবাহের মধ্যদিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসেন তৎকালীন সেনাবাহিনী প্রধান মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান। এরপর ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর ঢাকার রমনা রেস্তরাঁয় এক সংবাদ সম্মেলনে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) প্রতিষ্ঠার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন। ১৯৮১ সালের ৩০ মে বিপথগামী সেনা সদস্যদের হাতে শহীদ হওয়ার আগ পর্যন্ত জিয়াউর রহমান রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিলেন। তবে প্রতিষ্ঠার পর নানা ঘাত-প্রতিঘাত সইতে হয়েছে বিএনপিকে। নানা ঘটনার মধ্যদিয়ে ১৯৮৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বিএনপি’র হাল ধরেন তারই সহধর্মিণী খালেদা জিয়া। এরপর বেগম খালেদা জিয়ার দৃঢ়চেতা, আপসহীন ও সুদূরপ্রসারী নেতৃত্বে বিএনপি এগিয়েছে দুর্দান্ত গতিতে। দোর্দণ্ড প্রতাপশালী স্বৈরশাসক মরহুম এরশাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে এক দশকের মাথায় ১৯৯১ সালে বিপুল সমর্থন নিয়ে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছিল বিএনপি। এরপর ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসে বিএনপি। এখন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি আরও সুসংগঠিত।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কর্মসূচি: ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপনে ছয় দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। কর্মসূচির মধ্যে রোববার আলোচনা সভা করেছে। আজ ১ সেপ্টেম্বর ভোরে ঢাকার কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশে দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, বেলা ১১টায় শেরেবাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন। এ ছাড়া এদিন সারা দেশে সব মহানগর ও জেলায় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও র‌্যালি হবে। ২ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টায় ঢাকায় নয়াপল্টনের সামনে থেকে বর্ণাঢ্য র‌্যালি হবে। ৩ সেপ্টেম্বর দেশের সব উপজেলা ও পৌর এলাকায় আলোচনা সভা ও র‌্যালি হবে। ৪ সেপ্টেম্বর সব মহানগর, জেলা-উপজেলায় বৃক্ষরোপণ, মৎস্য অবমুক্তকরণ, ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও ক্রীড়া অনুষ্ঠান হবে। ৫ সেপ্টেম্বর ঢাকায় একটি গোলটেবিল আলোচনা হবে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ ক্রোড়পত্র এবং বিএনপি’র পক্ষ থেকে পোস্টার প্রকাশ করা হয়েছে।

তারেক রহমানের বাণী: প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রোববার এক বাণীতে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, আমি বিএনপি’র ৪৭তম প্রষ্ঠিাবার্ষিকী উপলক্ষে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মী, শুভানুধ্যায়ী এবং দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও প্রাণঢালা অভিনন্দন জানাচ্ছি। জাতীয়তাবাদী আদর্শের সঙ্গে জনগণকে একত্রিত করার লক্ষ্যে মহান স্বাধীনতার ঘোষক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৭৮ সালের ১লা সেপ্টেম্বর বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন। আজকের দিনটি বাংলাদেশি মানুষদের জন্য আনন্দ, উদ্দীপনা ও প্রেরণার। দলটি বাংলাদেশি ভূখণ্ডের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা এবং শক্তিশালী সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা ও বহুদলীয় গণতন্ত্রকে স্থায়ী রূপ দেয়ার নীতিতে অঙ্গীকারবদ্ধ।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার অব্যবহিত পরেই ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্য একদলীয় বাকশালী ব্যবস্থা কায়েম করে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়। স্বাধীনতাত্তোর আওয়ামী দুঃশাসনে বিশৃঙ্খলা, সহিংসতা ও রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড সাধারণ বিষয় হয়ে ওঠে। যার অনিবার্য পরিণতি হয় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ, আর এই দুর্ভিক্ষে ১০ লাখ মানুষ মারা যায়। তৎকালীন আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী বাকশাল কায়েম করে স্বৈরশাসনকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের মাধ্যমে বিচার বিভাগ ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা খর্ব করে। শহীদ জিয়াউর রহমান ক্ষমতাসীন হয়ে পুনরায় বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রকে পুনরুজ্জীবিত করে জনগণের নাগরিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করেন।

তারেক রহমান বলেন, শহীদ জিয়ার সৃষ্টি বিএনপি বিগত ৪৭ বছরে কয়েকবার সুষ্ঠু নির্বাচনে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসীন হয়ে দেশ ও জনগণের সমৃদ্ধি এবং কল্যাণে ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেছে। আমি স্বাধীনতার মহান ঘোষক, সফল রাষ্ট্রনায়ক ও আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার শহীদ জিয়াউর রহমান বীর-উত্তমের প্রতি জানাচ্ছি গভীর শ্রদ্ধা।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বাণী: অপর এক বাণীতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজ থেকে ৪৭ বছর আগে দেশের এক চরম ক্রান্তিকালে মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা, বরেণ্য রাষ্ট্রনায়ক শহীদ জিয়াউর রহমান বীর-উত্তম এদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার এবং জাতীয় স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে সুরক্ষার অঙ্গীকার নিয়ে ১৯৭৮ সালের ১লা সেপ্টেম্বর বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন। শহীদ জিয়ার গণতন্ত্রের প্রতি আস্থা ছিল সুগভীর। আমি তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। দেশ ও জাতির চরম সংকটকালে দুঃশাসনের বাতাবরণের মধ্যে অসীম সাহসিকতার সঙ্গে জুলুম-নির্যাতন সহ্য করেও দুর্বার আন্দোলনে যিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন আমি সেই অদম্য সাহসের প্রতীক বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে জানাই আন্তরিক শ্রদ্ধা। তিনি বলেন, বিএনপি প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত যে সকল নেতাকর্মী আত্মদান করেছেন তাদের প্রতি জানাই আমার অকৃত্রিক শ্রদ্ধা, তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। এই শুভদিনে আমি দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ী এবং দেশের জনগণকে জানাচ্ছি অকৃত্রিম শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

সানা/আপ্র/০১/০৯/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বিএনপি’র ৪৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী আজ

আপডেট সময় : ০১:১৯:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’র ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ। দিবসটি উপলক্ষে আলোচনা সভা, শোভাযাত্রা, ক্রোড়পত্র প্রকাশসহ সপ্তাহব্যাপী নানা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলটি। দীর্ঘ দেড় যুগ পর অনুকূল পরিবেশে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন করছে বিএনপি।

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর প্রাণ ফিরে পায় দলটি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দীর্ঘ সাড়ে চার দশকেরও বেশি সময়ের রাজনৈতিক পথচলায় বিএনপি কখনো ক্ষমতায় থেকেছে, কখনো আন্দোলনে। বিগত দেড়যুগ রাজপথেই কেটেছে বিএনপি নেতাকর্মীদের। তারা ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের দাবিতে আন্দোলনে অবিচল ছিলেন। অবশেষে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশ নতুন এক রাজনৈতিক অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে। আওয়ামী লীগ রাজনীতির বাইরে চলে যাওয়ায় বিএনপি’র সামনে অবারিত সুযোগ এসেছে নিজেদের নতুন করে জনগণের সামনে উপস্থাপনের। চারবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকা বিএনপি এমন একটি সময়ে সাতচল্লিশে পা রাখছে, যখন দীর্ঘ দেড় যুগের ঘোর অমানিশা কাটিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতা হাতছানি দিচ্ছে।

তবে ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানোত্তর রাজনৈতিক বাস্তবতায় বিএনপি’র সামনে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জও তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য ধরে রেখে অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে একটি নিরপেক্ষ সংসদ নির্বাচন আদায় করাটাই মুখ্য চ্যালেঞ্জ। পাশাপাশি দীর্ঘদিনের মিত্র জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েন দলটিকে দ্বিধায় ফেলেছে। তরুণ ভোটারদের আস্থায় আনা এবং ‘জুলাই সনদ’র ঘোষণা ও কার্যকর করা অন্যতম চ্যালেঞ্জ।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পরবর্তী নানা ঘটনা প্রবাহের মধ্যদিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসেন তৎকালীন সেনাবাহিনী প্রধান মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান। এরপর ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর ঢাকার রমনা রেস্তরাঁয় এক সংবাদ সম্মেলনে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) প্রতিষ্ঠার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন। ১৯৮১ সালের ৩০ মে বিপথগামী সেনা সদস্যদের হাতে শহীদ হওয়ার আগ পর্যন্ত জিয়াউর রহমান রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিলেন। তবে প্রতিষ্ঠার পর নানা ঘাত-প্রতিঘাত সইতে হয়েছে বিএনপিকে। নানা ঘটনার মধ্যদিয়ে ১৯৮৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বিএনপি’র হাল ধরেন তারই সহধর্মিণী খালেদা জিয়া। এরপর বেগম খালেদা জিয়ার দৃঢ়চেতা, আপসহীন ও সুদূরপ্রসারী নেতৃত্বে বিএনপি এগিয়েছে দুর্দান্ত গতিতে। দোর্দণ্ড প্রতাপশালী স্বৈরশাসক মরহুম এরশাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে এক দশকের মাথায় ১৯৯১ সালে বিপুল সমর্থন নিয়ে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছিল বিএনপি। এরপর ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসে বিএনপি। এখন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি আরও সুসংগঠিত।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কর্মসূচি: ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপনে ছয় দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। কর্মসূচির মধ্যে রোববার আলোচনা সভা করেছে। আজ ১ সেপ্টেম্বর ভোরে ঢাকার কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশে দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, বেলা ১১টায় শেরেবাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন। এ ছাড়া এদিন সারা দেশে সব মহানগর ও জেলায় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও র‌্যালি হবে। ২ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টায় ঢাকায় নয়াপল্টনের সামনে থেকে বর্ণাঢ্য র‌্যালি হবে। ৩ সেপ্টেম্বর দেশের সব উপজেলা ও পৌর এলাকায় আলোচনা সভা ও র‌্যালি হবে। ৪ সেপ্টেম্বর সব মহানগর, জেলা-উপজেলায় বৃক্ষরোপণ, মৎস্য অবমুক্তকরণ, ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও ক্রীড়া অনুষ্ঠান হবে। ৫ সেপ্টেম্বর ঢাকায় একটি গোলটেবিল আলোচনা হবে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ ক্রোড়পত্র এবং বিএনপি’র পক্ষ থেকে পোস্টার প্রকাশ করা হয়েছে।

তারেক রহমানের বাণী: প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রোববার এক বাণীতে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, আমি বিএনপি’র ৪৭তম প্রষ্ঠিাবার্ষিকী উপলক্ষে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মী, শুভানুধ্যায়ী এবং দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও প্রাণঢালা অভিনন্দন জানাচ্ছি। জাতীয়তাবাদী আদর্শের সঙ্গে জনগণকে একত্রিত করার লক্ষ্যে মহান স্বাধীনতার ঘোষক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৭৮ সালের ১লা সেপ্টেম্বর বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন। আজকের দিনটি বাংলাদেশি মানুষদের জন্য আনন্দ, উদ্দীপনা ও প্রেরণার। দলটি বাংলাদেশি ভূখণ্ডের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা এবং শক্তিশালী সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা ও বহুদলীয় গণতন্ত্রকে স্থায়ী রূপ দেয়ার নীতিতে অঙ্গীকারবদ্ধ।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার অব্যবহিত পরেই ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্য একদলীয় বাকশালী ব্যবস্থা কায়েম করে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়। স্বাধীনতাত্তোর আওয়ামী দুঃশাসনে বিশৃঙ্খলা, সহিংসতা ও রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড সাধারণ বিষয় হয়ে ওঠে। যার অনিবার্য পরিণতি হয় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ, আর এই দুর্ভিক্ষে ১০ লাখ মানুষ মারা যায়। তৎকালীন আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী বাকশাল কায়েম করে স্বৈরশাসনকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের মাধ্যমে বিচার বিভাগ ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা খর্ব করে। শহীদ জিয়াউর রহমান ক্ষমতাসীন হয়ে পুনরায় বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রকে পুনরুজ্জীবিত করে জনগণের নাগরিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করেন।

তারেক রহমান বলেন, শহীদ জিয়ার সৃষ্টি বিএনপি বিগত ৪৭ বছরে কয়েকবার সুষ্ঠু নির্বাচনে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসীন হয়ে দেশ ও জনগণের সমৃদ্ধি এবং কল্যাণে ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেছে। আমি স্বাধীনতার মহান ঘোষক, সফল রাষ্ট্রনায়ক ও আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার শহীদ জিয়াউর রহমান বীর-উত্তমের প্রতি জানাচ্ছি গভীর শ্রদ্ধা।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বাণী: অপর এক বাণীতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজ থেকে ৪৭ বছর আগে দেশের এক চরম ক্রান্তিকালে মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা, বরেণ্য রাষ্ট্রনায়ক শহীদ জিয়াউর রহমান বীর-উত্তম এদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার এবং জাতীয় স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে সুরক্ষার অঙ্গীকার নিয়ে ১৯৭৮ সালের ১লা সেপ্টেম্বর বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন। শহীদ জিয়ার গণতন্ত্রের প্রতি আস্থা ছিল সুগভীর। আমি তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। দেশ ও জাতির চরম সংকটকালে দুঃশাসনের বাতাবরণের মধ্যে অসীম সাহসিকতার সঙ্গে জুলুম-নির্যাতন সহ্য করেও দুর্বার আন্দোলনে যিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন আমি সেই অদম্য সাহসের প্রতীক বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে জানাই আন্তরিক শ্রদ্ধা। তিনি বলেন, বিএনপি প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত যে সকল নেতাকর্মী আত্মদান করেছেন তাদের প্রতি জানাই আমার অকৃত্রিক শ্রদ্ধা, তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। এই শুভদিনে আমি দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ী এবং দেশের জনগণকে জানাচ্ছি অকৃত্রিম শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

সানা/আপ্র/০১/০৯/২০২৫