ঢাকা ০৪:০৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫

বাহুবলে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ উপার্জনক্ষম ব্যক্তিদের হারিয়ে দিশেহারা পরিবার

  • আপডেট সময় : ০৬:২০:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারী ২০২৫
  • ৩৮ বার পড়া হয়েছে

চাঁদপুর সংবাদদাতা : হবিগঞ্জের বাহুবলে আকিজ ভেঞ্চারের কারখানায় সিলিন্ডার বিস্ফোরণে নিহত ৩ শ্রমিকের বাড়িতে চলছে মাতম। সম্পর্কে তারা একে অপরের আত্মীয়। স্বজন হারানোর শোকে কাতর পুরো পরিবার। নিহতরা হলেন চাঁদপুর সদর উপজেলার মৈশাদী ইউনিয়নের মো. ইব্রাহীম, তার ভাগনে মো. মিজান ও ফরিদগঞ্জ বালিথুবা ইউনিয়নের মো. মাহফুজ। আকিজ ভেঞ্চারের ওই কারখানায় প্রায় ৩০ বছরের ওপরে শ্রমিকের কাজ করতেন মো. ইব্রাহিম। বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করেছিলেন, স্বপ্ন ছিল শেষ বয়সে অবসর সময় পার করবেন সেখানে। স্বপ্ন অধরা রেখে তিনি পাড়ি জমিয়েছেন পরপারে। কারখানার সিলিন্ডার বিস্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে নিহত হন তিনি। শুধু তিনি নন, এ ঘটনায় নিহত হয়েছেন তার আরও দুই নিকট আত্মীয়। এ ছাড়াও আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন তার বড় ছেলে মোহাম্মদ আল আমিন। সংসারের চাহিদা মেটাতে এদের সবাইকে কাজে নিয়েছিলেন তিনি। আকিজ ভেঞ্জারের সিলিন্ডার বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর উপার্জনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। স্বজনদের মৃত্যু সংবাদে বাকরুদ্ধ তারা।

কোম্পানি এবং সরকারের কাছে সহায়তার দাবি তাদের। বুধবার (১ জানুয়ারি) দুপুরে নিহত ইব্রাহিম খানের স্ত্রী রুবি বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘পরিবারটা যার মাধ্যমে চলতো, তিনি এখন নেই। আমার সংসার দেখার মতো আর কেউ নেই। আমার ছেলেদের একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দিলে সংসারটা চলবে।’ নিহতের ভাতিজা কাউছার হোসেন বলেন, ‘একই পরিবারের তিন জন মারা গেছেন। দুজন আহত হয়ে চিকিৎসাধীন। একজন সিলেট ওসমানি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও আরেকজন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তারাই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছিলেন। ইব্রাহিম কাকা দুই বছর ধরে একটি ভবনের কাজ ধরেছেন। দুই মাস আগেও এনজিও থেকে তিন লাখ টাকা ঋণ নেন। এখন তার এক ছেলে গুরুতর আহত। কোম্পানি ও সরকার যদি সহায়তা না করে, তাহলে সবার সংসারগুলোর পরিস্থিতি করুণ হয়ে যাবে।’ চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাখাওয়াত জামিল সৈকত বলেন, ‘আমরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিবারগুলোর খোঁজখবর নেওয়ার চেষ্টা করছি।

আমাদের পক্ষ থেকে পরিবারগুলোকে যতটুকু সম্ভবত সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়া হবে।’ উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) হবিগঞ্জের বাহুবলে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে প্রকৌশলীসহ চার জন নিহত হন। এদিন সকাল ৯টায় উপজেলার ডুবাঐ বাজারে আকিজ বেভারেজ কোম্পানিতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন প্রকৌশলী রিয়াজ উদ্দিন, শ্রমিক মাহফুজ মিয়া, মিজান গাজী ও ইব্রাহিম।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বাহুবলে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ উপার্জনক্ষম ব্যক্তিদের হারিয়ে দিশেহারা পরিবার

আপডেট সময় : ০৬:২০:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারী ২০২৫

চাঁদপুর সংবাদদাতা : হবিগঞ্জের বাহুবলে আকিজ ভেঞ্চারের কারখানায় সিলিন্ডার বিস্ফোরণে নিহত ৩ শ্রমিকের বাড়িতে চলছে মাতম। সম্পর্কে তারা একে অপরের আত্মীয়। স্বজন হারানোর শোকে কাতর পুরো পরিবার। নিহতরা হলেন চাঁদপুর সদর উপজেলার মৈশাদী ইউনিয়নের মো. ইব্রাহীম, তার ভাগনে মো. মিজান ও ফরিদগঞ্জ বালিথুবা ইউনিয়নের মো. মাহফুজ। আকিজ ভেঞ্চারের ওই কারখানায় প্রায় ৩০ বছরের ওপরে শ্রমিকের কাজ করতেন মো. ইব্রাহিম। বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করেছিলেন, স্বপ্ন ছিল শেষ বয়সে অবসর সময় পার করবেন সেখানে। স্বপ্ন অধরা রেখে তিনি পাড়ি জমিয়েছেন পরপারে। কারখানার সিলিন্ডার বিস্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে নিহত হন তিনি। শুধু তিনি নন, এ ঘটনায় নিহত হয়েছেন তার আরও দুই নিকট আত্মীয়। এ ছাড়াও আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন তার বড় ছেলে মোহাম্মদ আল আমিন। সংসারের চাহিদা মেটাতে এদের সবাইকে কাজে নিয়েছিলেন তিনি। আকিজ ভেঞ্জারের সিলিন্ডার বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর উপার্জনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। স্বজনদের মৃত্যু সংবাদে বাকরুদ্ধ তারা।

কোম্পানি এবং সরকারের কাছে সহায়তার দাবি তাদের। বুধবার (১ জানুয়ারি) দুপুরে নিহত ইব্রাহিম খানের স্ত্রী রুবি বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘পরিবারটা যার মাধ্যমে চলতো, তিনি এখন নেই। আমার সংসার দেখার মতো আর কেউ নেই। আমার ছেলেদের একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দিলে সংসারটা চলবে।’ নিহতের ভাতিজা কাউছার হোসেন বলেন, ‘একই পরিবারের তিন জন মারা গেছেন। দুজন আহত হয়ে চিকিৎসাধীন। একজন সিলেট ওসমানি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও আরেকজন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তারাই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছিলেন। ইব্রাহিম কাকা দুই বছর ধরে একটি ভবনের কাজ ধরেছেন। দুই মাস আগেও এনজিও থেকে তিন লাখ টাকা ঋণ নেন। এখন তার এক ছেলে গুরুতর আহত। কোম্পানি ও সরকার যদি সহায়তা না করে, তাহলে সবার সংসারগুলোর পরিস্থিতি করুণ হয়ে যাবে।’ চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাখাওয়াত জামিল সৈকত বলেন, ‘আমরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিবারগুলোর খোঁজখবর নেওয়ার চেষ্টা করছি।

আমাদের পক্ষ থেকে পরিবারগুলোকে যতটুকু সম্ভবত সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়া হবে।’ উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) হবিগঞ্জের বাহুবলে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে প্রকৌশলীসহ চার জন নিহত হন। এদিন সকাল ৯টায় উপজেলার ডুবাঐ বাজারে আকিজ বেভারেজ কোম্পানিতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন প্রকৌশলী রিয়াজ উদ্দিন, শ্রমিক মাহফুজ মিয়া, মিজান গাজী ও ইব্রাহিম।