ঢাকা ০৩:৫৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫

বাস ছিনতাইয়ের পর যাত্রী তুলে ডাকাতি করতো তারা

  • আপডেট সময় : ০২:৫৭:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২২
  • ৯৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রথমে তারা বাস ভাড়া নিত, এরপর চালক ও হেল্পারকে জিম্মির পর নিজেরাই বাস চালিয়ে টার্গেট করে যাত্রী তুলত; পরে অস্ত্রের মুখে যাত্রীদের হাত-পা ও চোখ বেঁধে সর্বস্ব লুটে নিত তারা।
গত রোববার এমনই এক ডাকাত দলের আট সদস্যকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
গতকাল সোমবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হাফিজ আক্তার বলেন, “চক্রটি সাভার, টাঙ্গাইল ও গাজীপুরের বিভিন্ন জায়গায় একইভাবে ডাকাতি করত।” তাদের নামে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলাও রয়েছে বলে জানান তিনি। গত ২০ জানুয়ারি রাতে ঢাকার আব্দুল্লাহপুর থেকে বাসে টাঙ্গাইলে যাওয়ার পথে ডাকাতের কবলে পড়েছিলেন টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মো. শফিকুল ইসলাম।
আব্দুল্লাহপুর থেকে বাসে ওঠার পর যাত্রীবেশী সংঘবদ্ধ ডাকাতরা তাকে আটকে রেখে সাত-আট ঘণ্টা পর যাত্রাবাড়ির কাছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড এলাকায় বাস ফেলে রেখে গিয়েছিল বলে তিনি জানিয়েছিলেন।
ওই ঘটনার পর অভিযানে নেমে গত রোববার ঢাকা ও আশপাশের এলাকা থেকে মো. নাইমুর রহমান নাইম, মো. আবু জাফর বিপ্লব, মো. সজিব মিয়া, মো. জহুরুল ইসলাম, মো. আলামিন, দিলীপ ওরফে সোহেল, মো. আলামিন ও শাহনেওয়াজ ভূইয়া আজাদ নামের আট ডাকাতকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা কর্মকর্তা হাফিজ বলেন, চিকিৎসক শফিকুল তার বন্ধুকে নিয়ে আব্দুল্লাহপুর পেট্রোল পাম্পের সামনে থেকে টাঙ্গাইলের উদ্দেশে আর কে আর পরিবহন নামের বাসে উঠেন।
“বাসে উঠার সঙ্গে সঙ্গেই ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাদের দুই হাত ও চোখ বেঁধে বাসের পেছনে নিয়ে যায়। এরপর তাদের কাছে থাকা নগদ ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা, মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টে থাকা ৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এছাড়া দুটি এটিএম কার্ড ও পিন নম্বর নিয়ে আরও ১ লাখ ৬০ হাজার টাকাসহ মোবাইল ফোন ও অন্যান্য জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়।”
ডাকাতরা প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় বাসে যাত্রী তুলে এভাবে ডাকাতি করে বলে জানান তিনি।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ডাকাতরা ঘটনার সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে বলে তিনি। গ্রেপ্তারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে তিনি বলেন, তারা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আর কে আর পরিবহনের বাসটি ভাড়া নেওয়ার কথা বলে সাভারের গেন্ডা এলাকায় নিয়ে যায়। সেখান থেকে তারা প্রথমে বাসের ড্রাইভার ও হেলপারকে জিম্মি করে নিজেরাই বাসটি চালিয়ে ঢাকা মহানগর এলাকার বিভিন্ন সড়কে ঘুরতে থাকে এবং টার্গেট করে যাত্রী উঠায়। “পরে যাত্রীদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে হাত-মুখ বেঁধে তাদের কাছ থেকে থাকা নগদ টাকা, মোবাইল ও মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিয়ে সকালের দিকে বিভিন্ন নির্জন জায়গায় নামিয়ে দেয়।”
গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে দেশি অস্ত্র, ১০টি মোবাইল ফোন, দুটি খেলনা পিস্তল ও নগদ ৯ হাজার ৮০০ টাকা জব্দ করা হয়েছে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা হাফিজ আক্তার। তাদের বিরুদ্ধে রোববার রাতে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি ডাকাতির মামলা করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বাস ছিনতাইয়ের পর যাত্রী তুলে ডাকাতি করতো তারা

আপডেট সময় : ০২:৫৭:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রথমে তারা বাস ভাড়া নিত, এরপর চালক ও হেল্পারকে জিম্মির পর নিজেরাই বাস চালিয়ে টার্গেট করে যাত্রী তুলত; পরে অস্ত্রের মুখে যাত্রীদের হাত-পা ও চোখ বেঁধে সর্বস্ব লুটে নিত তারা।
গত রোববার এমনই এক ডাকাত দলের আট সদস্যকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
গতকাল সোমবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হাফিজ আক্তার বলেন, “চক্রটি সাভার, টাঙ্গাইল ও গাজীপুরের বিভিন্ন জায়গায় একইভাবে ডাকাতি করত।” তাদের নামে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলাও রয়েছে বলে জানান তিনি। গত ২০ জানুয়ারি রাতে ঢাকার আব্দুল্লাহপুর থেকে বাসে টাঙ্গাইলে যাওয়ার পথে ডাকাতের কবলে পড়েছিলেন টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মো. শফিকুল ইসলাম।
আব্দুল্লাহপুর থেকে বাসে ওঠার পর যাত্রীবেশী সংঘবদ্ধ ডাকাতরা তাকে আটকে রেখে সাত-আট ঘণ্টা পর যাত্রাবাড়ির কাছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড এলাকায় বাস ফেলে রেখে গিয়েছিল বলে তিনি জানিয়েছিলেন।
ওই ঘটনার পর অভিযানে নেমে গত রোববার ঢাকা ও আশপাশের এলাকা থেকে মো. নাইমুর রহমান নাইম, মো. আবু জাফর বিপ্লব, মো. সজিব মিয়া, মো. জহুরুল ইসলাম, মো. আলামিন, দিলীপ ওরফে সোহেল, মো. আলামিন ও শাহনেওয়াজ ভূইয়া আজাদ নামের আট ডাকাতকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা কর্মকর্তা হাফিজ বলেন, চিকিৎসক শফিকুল তার বন্ধুকে নিয়ে আব্দুল্লাহপুর পেট্রোল পাম্পের সামনে থেকে টাঙ্গাইলের উদ্দেশে আর কে আর পরিবহন নামের বাসে উঠেন।
“বাসে উঠার সঙ্গে সঙ্গেই ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাদের দুই হাত ও চোখ বেঁধে বাসের পেছনে নিয়ে যায়। এরপর তাদের কাছে থাকা নগদ ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা, মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টে থাকা ৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এছাড়া দুটি এটিএম কার্ড ও পিন নম্বর নিয়ে আরও ১ লাখ ৬০ হাজার টাকাসহ মোবাইল ফোন ও অন্যান্য জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়।”
ডাকাতরা প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় বাসে যাত্রী তুলে এভাবে ডাকাতি করে বলে জানান তিনি।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ডাকাতরা ঘটনার সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে বলে তিনি। গ্রেপ্তারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে তিনি বলেন, তারা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আর কে আর পরিবহনের বাসটি ভাড়া নেওয়ার কথা বলে সাভারের গেন্ডা এলাকায় নিয়ে যায়। সেখান থেকে তারা প্রথমে বাসের ড্রাইভার ও হেলপারকে জিম্মি করে নিজেরাই বাসটি চালিয়ে ঢাকা মহানগর এলাকার বিভিন্ন সড়কে ঘুরতে থাকে এবং টার্গেট করে যাত্রী উঠায়। “পরে যাত্রীদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে হাত-মুখ বেঁধে তাদের কাছ থেকে থাকা নগদ টাকা, মোবাইল ও মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিয়ে সকালের দিকে বিভিন্ন নির্জন জায়গায় নামিয়ে দেয়।”
গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে দেশি অস্ত্র, ১০টি মোবাইল ফোন, দুটি খেলনা পিস্তল ও নগদ ৯ হাজার ৮০০ টাকা জব্দ করা হয়েছে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা হাফিজ আক্তার। তাদের বিরুদ্ধে রোববার রাতে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি ডাকাতির মামলা করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।