ঢাকা ১১:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫

বাসে লাঞ্ছনার শিকার তরুণীর প্রতিবাদ সাহসী দৃষ্টান্ত

  • আপডেট সময় : ০৫:৪১:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
  • ১০ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

নারী ও শিশু ডেস্ক: সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, এক তরুণী বাসের এক ব্যক্তির সঙ্গে হাতাহাতিতে লিপ্ত। বাসের সামনের আসনে বসা এক ব্যক্তির কোনো একটি মন্তব্য নিয়ে এক তরুণী ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েন। তিনি তেড়ে যান লোকটির দিকে। ওই সময় লোকটি আসন ছেড়ে উঠে তরুণীকে চড় মারেন। একপর্যায়ে দুজন জুতা খুলে দুজনের দিকে তুলে ধরেন। সে সময় ওই ব্যক্তি তরুণীকে আঘাত করেন এবং ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। ওই ব্যক্তি এরপর বারবার তরুণীর গায়ে ধাক্কা মারেন ও আঘাত করার চেষ্টা করেন। ওই সময় তরুণী চিৎকার করে বলছিলেন, ‘তুই আমার পোশাক তুলে কেন কথা বলবি?’ সেদিনের ওই ঘটনাটি ঘটেছিল রাজধানীর বসিলায়। পরে জানা গেছে তরুণীকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া ওই ব্যক্তি বাসটির কন্ডাক্টর।

সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয়, তরুণী মেয়েটিকে হেনস্তার ঘটনা কয়েক মিনিট স্থায়ী হয়। অথচ কেউ আঘাত করা ব্যক্তিটিকে থামানোর চেষ্টা করেননি, প্রতিবাদ করেননি। একদম চুপ ছিলেন যাত্রীরা। জুতা হাতে একাই বাস কন্ডাক্টরের সঙ্গে লড়ে যাচ্ছিলেন ওই তরুণী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে জানিয়েছেন, প্রতিবাদ না করায় গণপরিবহনে হরহামেশাই নারীরা শারীরিক লাঞ্ছনা ও যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। অনেকে ওই তরুণীর সাহসী প্রতিবাদের কারণে তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

ওই ঘটনা নতুন নয়, হরহামেশাই এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। বাসে গাদাগাদি করে যাত্রী তোলার পরে দেখা যায় অনেক পুরুষ যাত্রীকেও হয়রানি করা হয়। বাস কন্ডাক্টরের সঙ্গে ভাড়া নিয়ে বচসার ঘটনাটিও প্রতিনিয়ত হয়ে থাকে। অন্যায়ের প্রতিবাদ হয় না। এ কারণে কন্ডাক্টরা সেই তরুণীকে হেনস্তা করার সাহস পেয়েছে। হেনস্তার শিকার সেই মেয়েটি জানিয়েছেন কন্ডাক্টর তাকে লক্ষ্য করে বলেছিলেন, ‘এসব নষ্ট মাইয়াদের জন্য বাসের পরিবেশ নষ্ট হয়ে যায়। যা যা বাস থেকে নেমে যা, নষ্ট মাইয়াছেলে।’ বাস কন্ডাক্টরের এই মন্তব্য শোনার পর মেয়েটি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন এবং ফলে এই পরিস্তিতির সৃষ্টি হয়। পরে মেয়েটির অভিযোগের প্রেক্ষিতে রমজান পরিবহন নামের বাসের হেনস্তাকারী সেই কন্ডাক্টর নিজাম উদ্দিনকে (৪৫) গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। বিষয়টি কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে ওই তরুণীকে।

ওই ঘটনা পর একটি প্রশ্ন সবার মনে প্রতীয়মান হয় যে, একজন বাস কন্ডাক্টর কীভাবে একজন তরুণী যাত্রীকে হেনস্তার সাহস পায়। তবে সেই তরুণী সবার সামনে একটা উদাহরণ সৃষ্টি করেছে যে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রতিবাদ করতে হবে। নাহলে এই যাত্রী হেনস্তা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে না। অপরাধী বাস কন্ডাক্টরের গ্রেফতার করা হয়েছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত হলে যাত্রী হয়রানির প্রবণতা কমবে বলে মনে করেন যাত্রীরা।

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

বাসে লাঞ্ছনার শিকার তরুণীর প্রতিবাদ সাহসী দৃষ্টান্ত

আপডেট সময় : ০৫:৪১:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫

নারী ও শিশু ডেস্ক: সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, এক তরুণী বাসের এক ব্যক্তির সঙ্গে হাতাহাতিতে লিপ্ত। বাসের সামনের আসনে বসা এক ব্যক্তির কোনো একটি মন্তব্য নিয়ে এক তরুণী ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েন। তিনি তেড়ে যান লোকটির দিকে। ওই সময় লোকটি আসন ছেড়ে উঠে তরুণীকে চড় মারেন। একপর্যায়ে দুজন জুতা খুলে দুজনের দিকে তুলে ধরেন। সে সময় ওই ব্যক্তি তরুণীকে আঘাত করেন এবং ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। ওই ব্যক্তি এরপর বারবার তরুণীর গায়ে ধাক্কা মারেন ও আঘাত করার চেষ্টা করেন। ওই সময় তরুণী চিৎকার করে বলছিলেন, ‘তুই আমার পোশাক তুলে কেন কথা বলবি?’ সেদিনের ওই ঘটনাটি ঘটেছিল রাজধানীর বসিলায়। পরে জানা গেছে তরুণীকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া ওই ব্যক্তি বাসটির কন্ডাক্টর।

সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয়, তরুণী মেয়েটিকে হেনস্তার ঘটনা কয়েক মিনিট স্থায়ী হয়। অথচ কেউ আঘাত করা ব্যক্তিটিকে থামানোর চেষ্টা করেননি, প্রতিবাদ করেননি। একদম চুপ ছিলেন যাত্রীরা। জুতা হাতে একাই বাস কন্ডাক্টরের সঙ্গে লড়ে যাচ্ছিলেন ওই তরুণী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে জানিয়েছেন, প্রতিবাদ না করায় গণপরিবহনে হরহামেশাই নারীরা শারীরিক লাঞ্ছনা ও যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। অনেকে ওই তরুণীর সাহসী প্রতিবাদের কারণে তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

ওই ঘটনা নতুন নয়, হরহামেশাই এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। বাসে গাদাগাদি করে যাত্রী তোলার পরে দেখা যায় অনেক পুরুষ যাত্রীকেও হয়রানি করা হয়। বাস কন্ডাক্টরের সঙ্গে ভাড়া নিয়ে বচসার ঘটনাটিও প্রতিনিয়ত হয়ে থাকে। অন্যায়ের প্রতিবাদ হয় না। এ কারণে কন্ডাক্টরা সেই তরুণীকে হেনস্তা করার সাহস পেয়েছে। হেনস্তার শিকার সেই মেয়েটি জানিয়েছেন কন্ডাক্টর তাকে লক্ষ্য করে বলেছিলেন, ‘এসব নষ্ট মাইয়াদের জন্য বাসের পরিবেশ নষ্ট হয়ে যায়। যা যা বাস থেকে নেমে যা, নষ্ট মাইয়াছেলে।’ বাস কন্ডাক্টরের এই মন্তব্য শোনার পর মেয়েটি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন এবং ফলে এই পরিস্তিতির সৃষ্টি হয়। পরে মেয়েটির অভিযোগের প্রেক্ষিতে রমজান পরিবহন নামের বাসের হেনস্তাকারী সেই কন্ডাক্টর নিজাম উদ্দিনকে (৪৫) গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। বিষয়টি কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে ওই তরুণীকে।

ওই ঘটনা পর একটি প্রশ্ন সবার মনে প্রতীয়মান হয় যে, একজন বাস কন্ডাক্টর কীভাবে একজন তরুণী যাত্রীকে হেনস্তার সাহস পায়। তবে সেই তরুণী সবার সামনে একটা উদাহরণ সৃষ্টি করেছে যে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রতিবাদ করতে হবে। নাহলে এই যাত্রী হেনস্তা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে না। অপরাধী বাস কন্ডাক্টরের গ্রেফতার করা হয়েছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত হলে যাত্রী হয়রানির প্রবণতা কমবে বলে মনে করেন যাত্রীরা।

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ