ক্রীড়া ডেস্ক: চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে যে ক্রিকেট খেলছে পাকিস্তান, তাতে ভীষণ বিরক্ত শাহিদ আফ্রিদি। গ্রুপ পর্বেই টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়া দলটিকে স্রেফ ধুয়ে দিয়েছেন দেশটির সাবেক অধিনায়ক। প্রশ্ন তুলেছেন বাবর আজম, মোহাম্মদ রিজওয়ানদের খেলার ধরন ও মানসিকতা নিয়ে। আফ্রিদির মতে, আশি-নব্বই দশকের ক্রিকেট খেলছে তার উত্তরসূরিরা।
এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আয়োজক পাকিস্তান।
ভারত প্রতিবেশী দেশে যেতে না চাওয়ায় টুর্নামেন্টটি হচ্ছে হাইব্রিড মডেলে, পাকিস্তান ও দুবাইয়ে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের মূল ভেন্যু দুবাইয়ের কন্ডিশনও বেশ পরিচিত পাকিস্তানের। কিন্তু কোনো জায়গায়ই নিজেদের মেলে ধরতে পারেনি তারা। করাচিতে আসরের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তান মুখোমুখি হয় নিউ জিল্যান্ডের। সেখানে কিউইদের ৩২০ রান তাড়ায় তারা গুটিয়ে যায় স্রেফ ২৬০ রানে। ৬০ রানের পরাজয় দিয়ে শুরু হয়ে তাদের বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট। পরের ম্যাচটি ছিল বাঁচা-মরার, প্রতিপক্ষ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত। দুবাইয়ে এবার আগে ব্যাটিং করে স্রেফ ২২৮ রান করতে পারে রিজওয়ানের দল। ৬ উইকেট হাতে রেখে ২১ বল আগেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় রোহিত শার্মার দল। বিদায়ের মঞ্চ নিজেরাই তৈরি করে রাখা পাকিস্তান তাকিয়ে ছিল বাংলাদেশ-নিউ জিল্যান্ডের ম্যাচে। রাওয়ালপিন্ডিতে সোমবার বাংলাদেশকে ৫ উইকেটে হারিয়ে সেমি-ফাইনালে ওঠে কিউইরা। শেষ চারে খেলা নিশ্চিত হয়ে যায় ভারতেরও। আর তাতে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই পরের ধাপে যাওয়ার ক্ষীণ সম্ভাবনাটুকুও শেষ হয়ে যায় পাকিস্তান ও বাংলাদেশের। টুর্নামেন্টে দুই ম্যাচ খেলে একটিতেও তিনশ করতে না পারা পাকিস্তানের কড়া সমালোচনা করেন আফ্রিদি। সাবেক তারকা অলরাউন্ডার বলেন, আধুনিক ক্রিকেটের মানসিকতার ধারেকাছেও নেই পাকিস্তান।
“২০২৫ সালে পাকিস্তান আশি ও নব্বইয়ের দশকের মতো ক্রিকেট খেলছে, যেখানে অন্য দলগুলো আক্রমণাত্মক ও আধুনিক ক্রিকেটের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে ভালোভাবেই এগিয়ে গেছে।” ওই দুই ম্যাচে পাকিস্তানকে ডুবিয়েছে অতিরিক্ত ডট বল খেলা। ভারতের বিপক্ষে ১৫২টি বলে কোনো রান করতে পারেনি পাকিস্তান। যেখানে প্রথম ৬ ওভারের মধ্যে ২৮ বলই ছিল ডট! আর নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে নিষ্ফলা ছিল ১৬২টি ডেলিভারি। উত্তরসূরিদের এমন ব্যাটিং নিয়েও কথা বলতে ছাড়েননি আফ্রিদি, “অনেক বেশি ডট বল খেলার অসুস্থ মনোভাবও আমাদের খেলার ক্ষতি করছে।” এখনকার মারকাটারি ক্রিকেটের সঙ্গে মানিয়ে নিতে মানসিকতায় বদলের প্রয়োজন দেখছেন আফ্রিদি। তার মতে, পাকিস্তান ক্রিকেটের পুরো সিস্টেমকেই ঢেলে সাজাতে হবে। “আধুনিক ক্রিকেটের সঙ্গে পাকিস্তানের খেলোয়াড়দের মানসিকতার মিল নেই। আমাদের সিস্টেমের পুরোপুরি সংস্কার দরকার, যাতে আমরা আক্রমণাত্মক মানসিকতার ক্রিকেটার তৈরি করতে পারি।” আগামী বৃহস্পতিবার গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের মুখোমুখি হবে পাকিস্তান।