ক্রীড়া ডেস্ক: খরগোশ ও কচ্ছপের গল্পটি প্রায় সবারই জানা। গল্পটির কাহিনী এই যে, এক খরগোশ একটি কচ্ছপের ধীর গতি নিয়ে হাসাহাসি করছিল। কচ্ছপ এতে ক্ষুব্ধ হয় এবং খরগোশকে একটি দৌড় প্রতিযোগীতায় চ্যালেঞ্জ করে। প্রথমে তাচ্ছিল্য করলেও একসময় খরগোশ দৌড় প্রতিযোগীতায় অংশ নিতে রাজী হয়। দৌড় শুরু হয়। খরগোশ খুব দ্রুত দৌড়াতে পারে। সে কিছুদূর গিয়ে একটা গাছের ছায়ায় ঘুমিয়ে পড়ে আলস্যে। সে ভাবে কচ্ছপ এত দূর আসতে আসতে সে একটা ঘুম দিয়ে ফেলতে পারে।
এদিকে কচ্ছপ আসে। সে দেখতে পায় খরগোশ ঘুমিয়ে আছে। খরগোশকে রেখে কচ্ছপ দৌড়ে শেষ সীমানা ছুঁয়ে ফেলে। খরগোশ ঘুম থেকে উঠে দৌড়াতে দৌড়াতে এসে দেখে কচ্ছপ বিজয়ীর মেডেল নিচ্ছে। হঠাৎ এমন গল্প বলার কারণ নিশ্চয়ই আছে? ভারতের সাবেক ক্রিকেটার রবিচন্দ্রন অশ্বিন সেই গল্পকেই মনে করালেন। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির উদ্বোধনী ম্যাচে পাকিস্তানের ক্রিকেটার বাবর আজমের ব্যাটিং দেখে তার গল্পটি মনে পড়ে। অশ্বিনের গল্পের চরিত্রে বাবর ছিলেন খরগোশের ভূমিকায়। আর কচ্ছপের ভূমিকায় সালমান আগা। নিউ জিল্যান্ডের দেওয়া ৩২০ রানের টার্গেটে ব্যাটিং করতে নেমে বাবর অতি মাত্রায় ধীর গতির ব্যাটিং করেন। তাতে চাপ বেড়ে যায় পাকিস্তানের লক্ষ্য তাড়ায়। ক্রিজে এসে সালমান আগা পাল্টা আক্রমণে চাপ কমিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু আসকিং রান রেট অনেক বেশি হওয়ায় তাকে ঝুঁকি নিয়ে খেলতে হয়। তাতে বেশিদূর যায়নি তার ইনিংস।
একই উইকেটে, একই ম্যাচ পরিস্থিতিতে দুই ক্রিকেটারের বিপরীতমুখী ব্যাটিং অ্যাপ্রোচে হাস্যরস তৈরি হয়েছে। অশ্বিন তো রীতিমত খোঁচাই দিলেন বাবরকে। ‘‘চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাবরের ৫০ রানের সফর এবং সালমান আলী আগার ব্যাটিং, “দ্য টর্টোয়েজ অ্যান্ড র্যাবিট স্টোরি”- এর চিত্রায়ন করা উচিত। আশা করি ৫০-এর যাত্রা খুব শিগগিরিই আসবে।” ওয়ানডে ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন বাবর। ঘরের মাঠে তার ব্যাটিং প্রদর্শনী দেখার অপেক্ষায় ছিলেন ক্রিকেটপ্রেমিরা। কিন্তু মন্থর ব্যাটিংয়ে বাবর প্রবল সমালোচনায় বিদ্ধ। ৯০ বলে ৬ চার ও ১ ছক্কায় ৬৪ রান করে আউট হন বাবর। যেখানে ৫১ বলই ডট খেলেছেন। ব্যাটিংয়ের শুরুতে পাওয়ার প্লে’তে ২৭ বল খেলে মাত্র ১২ রান তুলেছিলেন। পরের ২০ রান তুলতে তার খেলতে হয় আরো ২৭ বল। বৃত্তের সুবিধা কাজে লাগাতে না পারায় তার ওপর চাপ বেড়েছিল। সেই চাপ সামলে নিতে পারেননি পরেও। মাত্রাতিরিক্ত ডট বল খেলছিলেন।
থিতু হওয়ার পরও রান বের করতে পারছিলেন না স্পিনারদের বিপক্ষেও। চিরচেনা কন্ডিশনে এমন ব্যাটিংয়ে মুখ থুবড়ে পরে পাকিস্তানের ব্যাটিং। শুধু বাবর নন, টপ ও মিডল অর্ডারে প্রায় প্রত্েযকেই একই ব্যাটিং করেছেন। ওপেনিংয়ে সৌদ সাকিল ১৯ বলে ৬ রান করেন। ফিলিপসের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হওয়ার আগে রিজওয়ান করেন ১৪ বলে ৩ রান। চোট নিয়ে ব্যাটিং করা ফখর পারেননি মান রাখতে। ৪১ বলে করেন ২৪ রান। স্রোতের বিপরীতে যাওয়া সালমানের ব্যাট থেকে আসে ২৮ বলে ৪২ রান।