ঢাকা ০৮:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০১ অগাস্ট ২০২৫

বান্দরবান সীমান্তে এবার পড়ল মিয়ানমারের যুদ্ধবিমানের গোলা

  • আপডেট সময় : ০২:৫৪:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • ১১৭ বার পড়া হয়েছে

বান্দরবান প্রতিনিধি : মর্টার শেল ‘নিক্ষেপের’ পর এবার মিয়ানমারের দুটি যুদ্ধবিমান ও দুটি ফাইটিং হেলিকপ্টার বান্দরবানে বাংলাদেশের সীমানার ভেতরে গোলাবর্ষণ করেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্ত এলাকায় গতকাল শনিবার এসব যুদ্ধবিমান হানা দেয় বলে গণমাধ্যমকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বান্দরবানের পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম জানিয়েছেন।
এতে বলা হয়, “শনিবার সকাল ৯টা ২০ মিনিটের দিকে ঘুমধুম ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের রেজু আমতলীর বিজিবির বিওপির (সীমান্ত চৌকি) আওতাধীন সীমান্ত পিলার ৪০ ও ৪১ নম্বর মাঝামাঝি এলাকায় ঢুকে পড়ে এসব যুদ্ধ বিমান।”
এর আগে ২৮ আগস্ট দুপুরে ঘুমধুমের তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমার থেকে দুটি অবিস্ফোরিত মর্টার শেল এসে পড়ার পর দেশটির রাষ্ট্রদূতকে ডেকে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছিল ঢাকা। তার পাঁচ দিনের মাথায় মিয়ানমারের যুদ্ধবিমান বাংলাদেশের সীমানায় ঢুকে পড়ার তথ্য জানিয়ে এসপির বিবৃতিতে বলা হয়, “এ সময় যুদ্ধবিমান থেকে আনুমানিক আট-থেকে ১০টি গোলা এবং হেলিকপ্টার থেকে ৩০ থেকে ৩৫টি ফায়ার করতে দেখা গেছে। “যুদ্ধবিমান থেকে ফায়ার করা দুটি গোলা ৪০ নম্বর সীমান্ত পিলার ১২০ মিটার বরাবর বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এসে পড়ে।” বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “ঘুমধুম ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের তুমব্রু সীমান্ত পিলার ৩৪ ও ৩৫ নম্বর এলাকায় মিয়ারমানের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিজিপি) রাইট ক্যাম্প থেকে ভারী অস্ত্রের ফায়ার এখনও চলমান রয়েছে।” এ ছাড়া মুরিঙ্গাঝিরি ও রাইট ক্যাম্প থেকে থেমে থেমে মর্টার ফায়ারও অব্যাহত রয়েছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে এ বিষয়ে জানার জন্য কক্সবাজার বিজিবি-৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মেহেদী হোসাইন কবিরকে কয়েকবার ফোন করা হলে তিনি ধরেননি। বিজিবি পরিচালক (অপারেশন্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফয়জুর রহমান ঢাকায় বলেন, “বিষয়টি আমরা শুনেছি। প্রকৃত ঘটনা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমাদের তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে।”
সীমান্তে সতর্কতা : এই ঘটনায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঘটনার পরপরই সীমান্তে পুলিশের টহল ও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকর্তাদের ডেকে কড়া প্রতিবাদ জানাবে বলে জানিয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) এক কর্মকর্তা। শনিবার বিকালে সংবাদমাধ্যমকে এসব তথ্য জানিয়েছেন বান্দরবানের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও বিজিবির দায়িত্বশীল একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। বান্দরবান জেলা পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘সীমান্তে টহল বাড়ানোর পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারিও বৃদ্ধি করা হয়েছে। গত ১০/১২ দিন ধরে সীমান্ত ঘেঁষা এলাকায় মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গোলাগুলি হচ্ছে। এই ঘটনায় প্রথমদিকে তমব্রু এলাকার বাংলাদেশ সীমান্তের অংশে থাকা রোহিঙ্গা ও স্থানীয়রা আতঙ্কে থাকলেও বর্তমানে তাদের আতঙ্ক কিছুটা কেটেছে।’
এদিকে, বিষয়টি নিয়ে বিজিবির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন বান্দরবান জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি। তিনি বলেন, ‘গোলা পড়ার ঘটনায় বিজিবি সর্তক অবস্থানে আছে। এ ছাড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এলাকার চেয়ারম্যান-মেম্বারদের সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে। জেলা প্রশাসনসহ সবাই সতর্ক অবস্থানে আছে।’
বিজিবি সদর দফতরের পরিচালক (অপারেশন্স) লে. কর্নেল ফয়জুর রহমান বলেন, ‘আজকেও মিয়ানমার থেকে ছোড়া গোলা বাংলাদেশে অভ্যন্তরে এসে পড়েছে বলে শুনেছি। আমরা তথ্য সংগ্রহ করছি। ঘটনাটি সত্য প্রমাণিত হলে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে ডেকে প্রতিবাদ জানানো হবে। এর আগেও মর্টারশেল উড়ে আসার ঘটনায় আমরা কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছি। সীমান্তের লোকজন যাতে ভয়ে না থাকে সেজন্য বিজিবি কাজ করছে।’

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বান্দরবান সীমান্তে এবার পড়ল মিয়ানমারের যুদ্ধবিমানের গোলা

আপডেট সময় : ০২:৫৪:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২২

বান্দরবান প্রতিনিধি : মর্টার শেল ‘নিক্ষেপের’ পর এবার মিয়ানমারের দুটি যুদ্ধবিমান ও দুটি ফাইটিং হেলিকপ্টার বান্দরবানে বাংলাদেশের সীমানার ভেতরে গোলাবর্ষণ করেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্ত এলাকায় গতকাল শনিবার এসব যুদ্ধবিমান হানা দেয় বলে গণমাধ্যমকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বান্দরবানের পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম জানিয়েছেন।
এতে বলা হয়, “শনিবার সকাল ৯টা ২০ মিনিটের দিকে ঘুমধুম ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের রেজু আমতলীর বিজিবির বিওপির (সীমান্ত চৌকি) আওতাধীন সীমান্ত পিলার ৪০ ও ৪১ নম্বর মাঝামাঝি এলাকায় ঢুকে পড়ে এসব যুদ্ধ বিমান।”
এর আগে ২৮ আগস্ট দুপুরে ঘুমধুমের তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমার থেকে দুটি অবিস্ফোরিত মর্টার শেল এসে পড়ার পর দেশটির রাষ্ট্রদূতকে ডেকে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছিল ঢাকা। তার পাঁচ দিনের মাথায় মিয়ানমারের যুদ্ধবিমান বাংলাদেশের সীমানায় ঢুকে পড়ার তথ্য জানিয়ে এসপির বিবৃতিতে বলা হয়, “এ সময় যুদ্ধবিমান থেকে আনুমানিক আট-থেকে ১০টি গোলা এবং হেলিকপ্টার থেকে ৩০ থেকে ৩৫টি ফায়ার করতে দেখা গেছে। “যুদ্ধবিমান থেকে ফায়ার করা দুটি গোলা ৪০ নম্বর সীমান্ত পিলার ১২০ মিটার বরাবর বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এসে পড়ে।” বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “ঘুমধুম ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের তুমব্রু সীমান্ত পিলার ৩৪ ও ৩৫ নম্বর এলাকায় মিয়ারমানের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিজিপি) রাইট ক্যাম্প থেকে ভারী অস্ত্রের ফায়ার এখনও চলমান রয়েছে।” এ ছাড়া মুরিঙ্গাঝিরি ও রাইট ক্যাম্প থেকে থেমে থেমে মর্টার ফায়ারও অব্যাহত রয়েছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে এ বিষয়ে জানার জন্য কক্সবাজার বিজিবি-৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মেহেদী হোসাইন কবিরকে কয়েকবার ফোন করা হলে তিনি ধরেননি। বিজিবি পরিচালক (অপারেশন্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফয়জুর রহমান ঢাকায় বলেন, “বিষয়টি আমরা শুনেছি। প্রকৃত ঘটনা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমাদের তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে।”
সীমান্তে সতর্কতা : এই ঘটনায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঘটনার পরপরই সীমান্তে পুলিশের টহল ও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকর্তাদের ডেকে কড়া প্রতিবাদ জানাবে বলে জানিয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) এক কর্মকর্তা। শনিবার বিকালে সংবাদমাধ্যমকে এসব তথ্য জানিয়েছেন বান্দরবানের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও বিজিবির দায়িত্বশীল একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। বান্দরবান জেলা পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘সীমান্তে টহল বাড়ানোর পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারিও বৃদ্ধি করা হয়েছে। গত ১০/১২ দিন ধরে সীমান্ত ঘেঁষা এলাকায় মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গোলাগুলি হচ্ছে। এই ঘটনায় প্রথমদিকে তমব্রু এলাকার বাংলাদেশ সীমান্তের অংশে থাকা রোহিঙ্গা ও স্থানীয়রা আতঙ্কে থাকলেও বর্তমানে তাদের আতঙ্ক কিছুটা কেটেছে।’
এদিকে, বিষয়টি নিয়ে বিজিবির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন বান্দরবান জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি। তিনি বলেন, ‘গোলা পড়ার ঘটনায় বিজিবি সর্তক অবস্থানে আছে। এ ছাড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এলাকার চেয়ারম্যান-মেম্বারদের সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে। জেলা প্রশাসনসহ সবাই সতর্ক অবস্থানে আছে।’
বিজিবি সদর দফতরের পরিচালক (অপারেশন্স) লে. কর্নেল ফয়জুর রহমান বলেন, ‘আজকেও মিয়ানমার থেকে ছোড়া গোলা বাংলাদেশে অভ্যন্তরে এসে পড়েছে বলে শুনেছি। আমরা তথ্য সংগ্রহ করছি। ঘটনাটি সত্য প্রমাণিত হলে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে ডেকে প্রতিবাদ জানানো হবে। এর আগেও মর্টারশেল উড়ে আসার ঘটনায় আমরা কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছি। সীমান্তের লোকজন যাতে ভয়ে না থাকে সেজন্য বিজিবি কাজ করছে।’