ঢাকা ১২:৩৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫

বাতাস থেকে পানি সংগ্রহের নতুন উপায় তৈরি

  • আপডেট সময় : ০৫:৫২:৫৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ৬৭ বার পড়া হয়েছে

প্রযুক্তি ডেস্ক: নতুন এক পলিমার দ্রবণ ব্যবহার করে আরও দক্ষতার সঙ্গে বাতাস থেকে পানি সংগ্রহের এক চতুর উপায় তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা। তাদের দাবি, এ পুরো প্রক্রিয়ার জন্য অনেক কম তাপের প্রয়োজন, ফলে এতে সাশ্রয় হবে বিদ্যুতের। জাপানের ‘ওসাকা মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি’র এই যুগান্তকারী উদ্ভাবনের ফলে শুষ্ক অঞ্চলে, দুর্যোগ কালে বা বিদ্যুৎ সংকট রয়েছে এমন স্থানে পানি সংগ্রহের বিষয়টি আরও সহজ হবে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট নোরিজ। গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘এসিএস ইএসঅ্যান্ডটি ওয়াটার’-এ। প্রচলিতভাবে আর্দ্র বাতাস থেকে পানি টেনে আনতে ও শীততাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় বাতাসের আর্দ্রতা কমাতে এরইমধ্যে ব্যবহার হচ্ছে পানি সংগ্রহের বিভিন্ন উপাদান, বিশেষ করে পলিমার। এক্ষেত্রে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ‘ডিসর্পশন’ বা শোষণ। কোনো উপাদান থেকে সংগৃহীত পানি ছেড়ে দেওয়ার একটি প্রক্রিয়া ‘ডিসর্পশন’, যাতে ওই উপাদানটিকে পুনরায় ব্যবহার করা যায়। সাধারণত ‘ডিসর্পশন’ প্রক্রিয়ায় পানিকে গরম করতে প্রায় ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার প্রয়োজন পড়ে। ফলে এ কাজে বিদ্যুতের প্রয়োজন বেশি। এ গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন ‘ওসাকা মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি’র স্নাতক শিক্ষার্থী দাইসুকে ইকেগাওয়া, সহকারী অধ্যাপক আরিসা ফুকাতসু, সহযোগী অধ্যাপক কেনজি ওকাদা ও অধ্যাপক মাসাহিদে তাকাহাশি’সহ গবেষকদের একটি দল। বাতাস থেকে পানি সংগ্রহের এমন এক উপায় তৈরি করেছেন গবেষকরা, যা কেবল ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাতেই কাজ করবে। ফলে সাশ্রয় হবে বিদ্যুতের। এজন্য পলিমার ব্যবহার করে বিশেষ এক ধরনের তরল আর্দ্রতা-শোষক তৈরি করেছে গবেষণা দলটি। গবেষকদের এ সাফল্যের পেছনের চাবিকাঠি হচ্ছে ‘র‌্যান্ডম বা এলোমেলো কোপলিমার’ ব্যবহারের বিষয়টি, যা ‘পলিথিলিন গ্লাইকোল’ ও ‘পলিপ্রোপিলিন গ্লাইকোল’ নামের দুটি ভিন্ন ধরণের অণুর মিশ্রণ। পানি শোষণে দুর্দান্ত কাজের ‘পলিথিন গ্লাইকোল’। অন্যদিকে ‘পলিপ্রোপিলিন গ্লাইকোল’ কিছুটা কম পরিমাণে পানি শোষণ করে। ফলে এ দুটি বিপরীতধর্মী উপাদান মিলে তৈরি হয়েছে এক ধরনের ‘পানি স্থানান্তর প্রক্রিয়া’, যা পানির বিভিন্ন ক্লাস্টারকে ভেঙে ফেলার মাধ্যমে কম তাপমাত্রায় পানি শোষণকে করে তুলেছে আরও সহজ। “শুষ্ক অঞ্চল বা কম বিদ্যুৎ রয়েছে এমন অঞ্চলের পাশাপাশি দুর্যোগ ও জরুরী প্রয়োজনের সময়ও পানি সরবরাহের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তুলতে পারে আমাদের এই নতুন প্রযুক্তি,” বলেছেন ড. ফুকাতসু। বিশ্বের অনেক স্থানেই বিশুদ্ধ পানির ঘাটতি রয়েছে, বিশেষ করে শুষ্ক অঞ্চলে। তাই বাতাস থেকে কাযকর উপায়ে পানি সংগ্রহের বিভিন্ন উপায় খুঁজে পাওয়ার মাধ্যমে ওইসব স্থানে পানির ঘাটতি ঠেকানো ও সেখানকার মানুষের জীবনযাপনকে সহজ করা যেতে পারে।

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বাতাস থেকে পানি সংগ্রহের নতুন উপায় তৈরি

আপডেট সময় : ০৫:৫২:৫৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪

প্রযুক্তি ডেস্ক: নতুন এক পলিমার দ্রবণ ব্যবহার করে আরও দক্ষতার সঙ্গে বাতাস থেকে পানি সংগ্রহের এক চতুর উপায় তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা। তাদের দাবি, এ পুরো প্রক্রিয়ার জন্য অনেক কম তাপের প্রয়োজন, ফলে এতে সাশ্রয় হবে বিদ্যুতের। জাপানের ‘ওসাকা মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি’র এই যুগান্তকারী উদ্ভাবনের ফলে শুষ্ক অঞ্চলে, দুর্যোগ কালে বা বিদ্যুৎ সংকট রয়েছে এমন স্থানে পানি সংগ্রহের বিষয়টি আরও সহজ হবে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট নোরিজ। গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘এসিএস ইএসঅ্যান্ডটি ওয়াটার’-এ। প্রচলিতভাবে আর্দ্র বাতাস থেকে পানি টেনে আনতে ও শীততাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় বাতাসের আর্দ্রতা কমাতে এরইমধ্যে ব্যবহার হচ্ছে পানি সংগ্রহের বিভিন্ন উপাদান, বিশেষ করে পলিমার। এক্ষেত্রে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ‘ডিসর্পশন’ বা শোষণ। কোনো উপাদান থেকে সংগৃহীত পানি ছেড়ে দেওয়ার একটি প্রক্রিয়া ‘ডিসর্পশন’, যাতে ওই উপাদানটিকে পুনরায় ব্যবহার করা যায়। সাধারণত ‘ডিসর্পশন’ প্রক্রিয়ায় পানিকে গরম করতে প্রায় ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার প্রয়োজন পড়ে। ফলে এ কাজে বিদ্যুতের প্রয়োজন বেশি। এ গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন ‘ওসাকা মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি’র স্নাতক শিক্ষার্থী দাইসুকে ইকেগাওয়া, সহকারী অধ্যাপক আরিসা ফুকাতসু, সহযোগী অধ্যাপক কেনজি ওকাদা ও অধ্যাপক মাসাহিদে তাকাহাশি’সহ গবেষকদের একটি দল। বাতাস থেকে পানি সংগ্রহের এমন এক উপায় তৈরি করেছেন গবেষকরা, যা কেবল ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাতেই কাজ করবে। ফলে সাশ্রয় হবে বিদ্যুতের। এজন্য পলিমার ব্যবহার করে বিশেষ এক ধরনের তরল আর্দ্রতা-শোষক তৈরি করেছে গবেষণা দলটি। গবেষকদের এ সাফল্যের পেছনের চাবিকাঠি হচ্ছে ‘র‌্যান্ডম বা এলোমেলো কোপলিমার’ ব্যবহারের বিষয়টি, যা ‘পলিথিলিন গ্লাইকোল’ ও ‘পলিপ্রোপিলিন গ্লাইকোল’ নামের দুটি ভিন্ন ধরণের অণুর মিশ্রণ। পানি শোষণে দুর্দান্ত কাজের ‘পলিথিন গ্লাইকোল’। অন্যদিকে ‘পলিপ্রোপিলিন গ্লাইকোল’ কিছুটা কম পরিমাণে পানি শোষণ করে। ফলে এ দুটি বিপরীতধর্মী উপাদান মিলে তৈরি হয়েছে এক ধরনের ‘পানি স্থানান্তর প্রক্রিয়া’, যা পানির বিভিন্ন ক্লাস্টারকে ভেঙে ফেলার মাধ্যমে কম তাপমাত্রায় পানি শোষণকে করে তুলেছে আরও সহজ। “শুষ্ক অঞ্চল বা কম বিদ্যুৎ রয়েছে এমন অঞ্চলের পাশাপাশি দুর্যোগ ও জরুরী প্রয়োজনের সময়ও পানি সরবরাহের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তুলতে পারে আমাদের এই নতুন প্রযুক্তি,” বলেছেন ড. ফুকাতসু। বিশ্বের অনেক স্থানেই বিশুদ্ধ পানির ঘাটতি রয়েছে, বিশেষ করে শুষ্ক অঞ্চলে। তাই বাতাস থেকে কাযকর উপায়ে পানি সংগ্রহের বিভিন্ন উপায় খুঁজে পাওয়ার মাধ্যমে ওইসব স্থানে পানির ঘাটতি ঠেকানো ও সেখানকার মানুষের জীবনযাপনকে সহজ করা যেতে পারে।

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ