ঢাকা ০৯:৫৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫

বাণিজ্য মেলা তৃতীয় দিনে নির্মাণও চলছে, দর্শনার্থীও আসছে

  • আপডেট সময় : ০১:১১:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জানুয়ারী ২০২২
  • ৮৭ বার পড়া হয়েছে

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : পূর্বাচলে বাণিজ্য মেলার নতুন ঠিকানায় চারটি ফটকের একটি দিয়ে এগোলেই বিস্তৃত আঙ্গিনা। এর ঠিক মাঝখানে পানির লেক, ভাসছে কয়েকটি জাতীয় ফুল শাপলা। সুদৃশ্য এ প্রাঙ্গণ পেরিয়ে স্থায়ী প্রদর্শনী কেন্দ্রে ঢোকার মূল ফটকে দাঁড়ালে ডানে-বামে চোখ আটকাবে দুটি বিশাল আকৃতির স্থাপনায়। এ পথে যে কোনও দিকে একটু পা বাড়ালেই বাইরের সৌন্দর্য হারিয়ে যাবে; কানে বাজবে হাতুড়ির ঠোকাঠুকি, কাঠ কাটা আর নানা ধরনের নির্মাণ যন্ত্রের শব্দ। দেশের সবচেয়ে বড় এ বিক্রয় আয়োজন শুরুর তিন দিন পরও মেলা প্রাঙ্গণ সেজে ওঠেনি। নির্মাণ কাজের হিজিবিজি অবস্থার কারণে অনেক স্টলের নামও জানা যায়নি। এদিন আগারগাঁও থেকে প্রথমবারের মতো পূর্বাচল উপশহরের চার নম্বর সেক্টরের ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে’ পাড়ি জমানো ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় নির্মাণ কাজের এমন অবস্থা ছাপিয়েও দেখা মিলেছে বেশ কিছু ক্রেতা দর্শকদের। যারা স্টল সাজিয়ে পণ্য তুলতে পেরেছেন তারা বিক্রিও করছেন টুকিটাকি। মেলার অধিকাংশ স্টল প্রস্তুত না হওয়ায় দর্শনার্থীদের অনেকেই অসন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন। জানতে চাইলে মেলার আয়োজক কর্তৃপক্ষ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপবি) উপসচিব মো. ইফতেখার উদ্দিন আহমেদ বলেন, “করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে গত বছর মেলা অনুষ্ঠিত হয়নি। তাই ব্যবসায়ীরা এবছরও মেলা হবে কিনা তা নিয়ে দোদুল্যমান ছিলেন। “তারা অনেক পরে বুকিং ও টাকা জমা দিয়েছেন। এ কারণে সময় কম পাওয়ায় অনেকে স্টলের নির্মাণ কাজ শেষ করতে পারেননি।” দুয়েক দিনের মধ্যেই সব স্টল সেজে উঠবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
তিনি জানান, ইপিবির নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এক্সিবিশন সেন্টারের ভেতরে প্রায় ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে স্টল ও প্যাভিলিয়ন নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু ব্যবসায়ীরা সেটা পছন্দ না করায় সেটা ভেঙ্গে নতুন করে স্টল নির্মাণ করছে। নির্মাণ কাজ এখনও চলমান থাকার বিষয়ে বেশির ভাগ স্টলের প্রতিনিধিরা কিছু বলতে চাননি। দুয়েক দিনের মধ্যেই কাজ শেষের কথা বলেছেন তারা। কাশ্মিরের মীর ব্রাদার্স কোম্পানির প্রতিনিধি জাহিদ হোসেন জানান, ইপিবি থেকে স্টল বুঝিয়ে দিতে দেরি হয়েছে এ অবস্থা। মেলা ঘুরে দেখা গেছে, নির্মাণাধীন দুয়েকটি স্টল চেনা গেলেও অধিকাংশ স্টলের নামই টানানো হয়নি। নতুন প্রদর্শনী কেন্দ্রের অভ্যন্তরে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হলেও প্যাভিলিয়ন করার অনুমতি দেয়নি ইপিবি। এ কারণে বাইরের প্রাঙ্গণের দক্ষিণ পাশের খোলা জায়গায় দিল্লি এ্যালুমিনিয়াম, ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড ও গাজী গ্রুপসহ বেশ কয়েকটি দেশি কোম্পানি প্যাভিলিয়ন নির্মাণ করছে।
জানতে চাইলে গাজী গ্রুপের বিপনন বিভাগের উপ ব্যবস্থাপক এবিএম এনায়েত উল্লাহ সরকার বলেন, “আসলে আমরা প্রথমে কিছুটা দ্বিধায় ছিলাম। পরে কাজ শুরুর পর নকশা চূড়ান্ত করতে একটু বেশি সময় লেগে যায়। কাজ প্রায় শেষ।“ এরমধ্যেই ওয়ালটন, প্রাণ, আরএফএল, বেক্সিফেব্রিক্স, যমুনা ইল্ক্ট্রেনিক্স, দিল্লি এ্যালুমিনিয়াম, বেঙ্গল গ্রুপসহ আরও বেশ কিছু কোম্পানি নিজেদের গুছিয়ে নিয়েছে। ওয়ালটন প্যাভেলিয়নের ইনচার্জ প্রকৌশলী মো. বাদল ইসলাম জানান, “আমরা প্রথমে খুব বেশি আশাবাদী ছিলাম না। তারপরও ঢাকা থেকে কিছুটা দুরে হওয়ায় মেলাটি কেমন জমবে তা নিয়েও কিছুটা সংশয়ে ছিলাম। “তবে মেলা শুরু হওয়ার পর এখন সেই সংশয় দূর হয়ে গেছে। দর্শক ক্রেতা ভালই আসছে। প্রথম দুই দিনেই আমাদের স্টলে প্রায় ৮ হাজার ক্রেতা দর্শনার্থী পরিদর্শন করেছে।”
এদিকে মেলায় আগত বিভিন্ন শ্রেণীর দর্শনার্থীর সঙ্গে কথা বলে দেখা গেছে তাদের বেশির ভাগই এসেছেন নারায়নগঞ্জ, নরসিংদী এবং পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে। তবে ঢাকা থেকেও কিছু দর্শনার্থী মেলায় যাচ্ছেন। আশরাফুল ইসলাম বিমান বন্দর এলাকার কাওলা থেকে স্বপরিবারে মেলায় এসেছেন। তিনি বলেন, শুনেছি বিশ্বমানের বাণিজ্য মেলার অবকঠামো হচ্ছে। তাই দেখতে এলাম। “দেখে আসলেই ভালো লাগছে। আগের মেলার মতো ধুলাবালি অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ এখানে নেই। সবকিছু পরিপাটি এবং সাজানো।“ মেলায় টঙ্গী মিরের বাজারের ‘ডিজাইন বাই রুবিনা’ নামের একটি উদ্যোগ নিয়ে এসেছেন রুবিনা আক্তার। তরুণ এ উদ্যোক্তা বলেন, “এর আগে বাণিজ্য মেলায় তিন বার অংশ নিয়েছিলাম। এবারের মেলায় কিছুটা হলেও বিদেশি দর্শনার্থী দেখছি। তিন দিনের মধ্যেই বেশ কয়েকজন চীনা ব্যবসায়ী স্টল পরিদর্শন করে আমার পণ্য নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।” প্রদর্শনী কেন্দ্রটিকে যথাযথভাবে পরিচালনার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা থাকলেও মেলায় বিদেশি ক্রেতা আরও আসবে।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

গভীর সংস্কার না করলে স্বৈরাচার ফিরে আসবে

বাণিজ্য মেলা তৃতীয় দিনে নির্মাণও চলছে, দর্শনার্থীও আসছে

আপডেট সময় : ০১:১১:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জানুয়ারী ২০২২

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : পূর্বাচলে বাণিজ্য মেলার নতুন ঠিকানায় চারটি ফটকের একটি দিয়ে এগোলেই বিস্তৃত আঙ্গিনা। এর ঠিক মাঝখানে পানির লেক, ভাসছে কয়েকটি জাতীয় ফুল শাপলা। সুদৃশ্য এ প্রাঙ্গণ পেরিয়ে স্থায়ী প্রদর্শনী কেন্দ্রে ঢোকার মূল ফটকে দাঁড়ালে ডানে-বামে চোখ আটকাবে দুটি বিশাল আকৃতির স্থাপনায়। এ পথে যে কোনও দিকে একটু পা বাড়ালেই বাইরের সৌন্দর্য হারিয়ে যাবে; কানে বাজবে হাতুড়ির ঠোকাঠুকি, কাঠ কাটা আর নানা ধরনের নির্মাণ যন্ত্রের শব্দ। দেশের সবচেয়ে বড় এ বিক্রয় আয়োজন শুরুর তিন দিন পরও মেলা প্রাঙ্গণ সেজে ওঠেনি। নির্মাণ কাজের হিজিবিজি অবস্থার কারণে অনেক স্টলের নামও জানা যায়নি। এদিন আগারগাঁও থেকে প্রথমবারের মতো পূর্বাচল উপশহরের চার নম্বর সেক্টরের ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে’ পাড়ি জমানো ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় নির্মাণ কাজের এমন অবস্থা ছাপিয়েও দেখা মিলেছে বেশ কিছু ক্রেতা দর্শকদের। যারা স্টল সাজিয়ে পণ্য তুলতে পেরেছেন তারা বিক্রিও করছেন টুকিটাকি। মেলার অধিকাংশ স্টল প্রস্তুত না হওয়ায় দর্শনার্থীদের অনেকেই অসন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন। জানতে চাইলে মেলার আয়োজক কর্তৃপক্ষ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপবি) উপসচিব মো. ইফতেখার উদ্দিন আহমেদ বলেন, “করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে গত বছর মেলা অনুষ্ঠিত হয়নি। তাই ব্যবসায়ীরা এবছরও মেলা হবে কিনা তা নিয়ে দোদুল্যমান ছিলেন। “তারা অনেক পরে বুকিং ও টাকা জমা দিয়েছেন। এ কারণে সময় কম পাওয়ায় অনেকে স্টলের নির্মাণ কাজ শেষ করতে পারেননি।” দুয়েক দিনের মধ্যেই সব স্টল সেজে উঠবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
তিনি জানান, ইপিবির নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এক্সিবিশন সেন্টারের ভেতরে প্রায় ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে স্টল ও প্যাভিলিয়ন নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু ব্যবসায়ীরা সেটা পছন্দ না করায় সেটা ভেঙ্গে নতুন করে স্টল নির্মাণ করছে। নির্মাণ কাজ এখনও চলমান থাকার বিষয়ে বেশির ভাগ স্টলের প্রতিনিধিরা কিছু বলতে চাননি। দুয়েক দিনের মধ্যেই কাজ শেষের কথা বলেছেন তারা। কাশ্মিরের মীর ব্রাদার্স কোম্পানির প্রতিনিধি জাহিদ হোসেন জানান, ইপিবি থেকে স্টল বুঝিয়ে দিতে দেরি হয়েছে এ অবস্থা। মেলা ঘুরে দেখা গেছে, নির্মাণাধীন দুয়েকটি স্টল চেনা গেলেও অধিকাংশ স্টলের নামই টানানো হয়নি। নতুন প্রদর্শনী কেন্দ্রের অভ্যন্তরে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হলেও প্যাভিলিয়ন করার অনুমতি দেয়নি ইপিবি। এ কারণে বাইরের প্রাঙ্গণের দক্ষিণ পাশের খোলা জায়গায় দিল্লি এ্যালুমিনিয়াম, ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড ও গাজী গ্রুপসহ বেশ কয়েকটি দেশি কোম্পানি প্যাভিলিয়ন নির্মাণ করছে।
জানতে চাইলে গাজী গ্রুপের বিপনন বিভাগের উপ ব্যবস্থাপক এবিএম এনায়েত উল্লাহ সরকার বলেন, “আসলে আমরা প্রথমে কিছুটা দ্বিধায় ছিলাম। পরে কাজ শুরুর পর নকশা চূড়ান্ত করতে একটু বেশি সময় লেগে যায়। কাজ প্রায় শেষ।“ এরমধ্যেই ওয়ালটন, প্রাণ, আরএফএল, বেক্সিফেব্রিক্স, যমুনা ইল্ক্ট্রেনিক্স, দিল্লি এ্যালুমিনিয়াম, বেঙ্গল গ্রুপসহ আরও বেশ কিছু কোম্পানি নিজেদের গুছিয়ে নিয়েছে। ওয়ালটন প্যাভেলিয়নের ইনচার্জ প্রকৌশলী মো. বাদল ইসলাম জানান, “আমরা প্রথমে খুব বেশি আশাবাদী ছিলাম না। তারপরও ঢাকা থেকে কিছুটা দুরে হওয়ায় মেলাটি কেমন জমবে তা নিয়েও কিছুটা সংশয়ে ছিলাম। “তবে মেলা শুরু হওয়ার পর এখন সেই সংশয় দূর হয়ে গেছে। দর্শক ক্রেতা ভালই আসছে। প্রথম দুই দিনেই আমাদের স্টলে প্রায় ৮ হাজার ক্রেতা দর্শনার্থী পরিদর্শন করেছে।”
এদিকে মেলায় আগত বিভিন্ন শ্রেণীর দর্শনার্থীর সঙ্গে কথা বলে দেখা গেছে তাদের বেশির ভাগই এসেছেন নারায়নগঞ্জ, নরসিংদী এবং পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে। তবে ঢাকা থেকেও কিছু দর্শনার্থী মেলায় যাচ্ছেন। আশরাফুল ইসলাম বিমান বন্দর এলাকার কাওলা থেকে স্বপরিবারে মেলায় এসেছেন। তিনি বলেন, শুনেছি বিশ্বমানের বাণিজ্য মেলার অবকঠামো হচ্ছে। তাই দেখতে এলাম। “দেখে আসলেই ভালো লাগছে। আগের মেলার মতো ধুলাবালি অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ এখানে নেই। সবকিছু পরিপাটি এবং সাজানো।“ মেলায় টঙ্গী মিরের বাজারের ‘ডিজাইন বাই রুবিনা’ নামের একটি উদ্যোগ নিয়ে এসেছেন রুবিনা আক্তার। তরুণ এ উদ্যোক্তা বলেন, “এর আগে বাণিজ্য মেলায় তিন বার অংশ নিয়েছিলাম। এবারের মেলায় কিছুটা হলেও বিদেশি দর্শনার্থী দেখছি। তিন দিনের মধ্যেই বেশ কয়েকজন চীনা ব্যবসায়ী স্টল পরিদর্শন করে আমার পণ্য নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।” প্রদর্শনী কেন্দ্রটিকে যথাযথভাবে পরিচালনার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা থাকলেও মেলায় বিদেশি ক্রেতা আরও আসবে।