অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : এবার ঈদ কাটবে বেশ গরমের মধ্যেই। আর সে বিষয়টি মাথায় রেখেই জুতার বাজারে পসরা সাজিয়েছে নতুন নতুন ডিজাইনগুলো। ক্রেতারাও খুঁজছে গরমে আরামদায়ক জুতা। রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটের নন-ব্র্যান্ড ও ব্র্যান্ডের জুতার দোকানগুলোতে ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। তবে নতুন নতুন ডিজাইন এলেও এখনো জুতার বেচাবিক্রি খুব একটা বাড়েনি বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তবে করোনার সময়ের গত দুই বছরের তুলনায় এ বছর বিক্রি ভালো হবে বলে আশা করছেন তারা। মানুষের রুচির পরিবর্তন ও মানের বিষয়ে সচেতন হওয়ায় এ বছর ব্র্যান্ডের জুতার চাহিদা বেড়েছে। তবে সার্বিকভাবে সারা বছর যে পরিমাণ জুতা বিক্রি হয়, তার বড় অংশই নন ব্র্যান্ডের। আর প্রতি বছর ২৫-৩০ শতাংশ জুতা বিক্রি হয় এ ঈদুল ফিতরে। তবে চলতি বছরে এখনো সে পরিমাণ বিক্রি হচ্ছে না বলে জানিয়ে ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, ভালো ব্যবসার আশায় এবার বড় প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। প্রচুর ডিজাইন এনেছি। তবে রোজার এক সপ্তাহের বেশি সময় পার হলেও ক্রেতা আনাগোনা খুব বেশি বাড়েনি। এমনকি বৈশাখেরও বিক্রি খুব একটা হচ্ছে না।
ব্র্যান্ডের জুতার ব্যবসায় শীর্ষস্থান দখল করে রেখেছে বাটা। এ ঈদে ছয়শটির বেশি ডিজাইনের জুতা এনেছে কোম্পানিটি। মালিবাগের বাটা শোরুমের ম্যানেজার নজরুল ইসলাম বলেন, সব ঈদেই নিত্যনতুন নকশার জুতা আসে বাজারে। এছাড়া প্রতিদিনই নতুন নতুন ডিজাইনের জুতা আসছে। সবমিলে ছয়শটির বেশি ডিজাইন এসেছে। তবে সে তুলনায় ক্রেতা আসছে কম। আমরা আরও ভালো বিক্রি আশা করেছিলাম। কারণ দীর্ঘ সময় পর করোনা সংক্রমণ কম নিয়ে ঈদ এসেছে। তিনি বলেন, নিজস্ব উৎপাদনের পাশাপাশি বাটা দেশের বাইরে থেকে নাইকি, অ্যাডিডাসসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের জুতা আমদানি করে। সেসব ব্র্যান্ডের জুতারও নতুন নতুন ডিজাইন এসেছে। এর মধ্যে হালকা জুতার ডিজাইন বেশি আনা হয়েছে। এদিকে, লোটো শোরুমের ইনচার্জ মেহেদি বলেন, আসলে ক্রেতারা জুতা কেনে সবার শেষে। এ কারণে জুতার বেচাবিক্রি শেষের দিকে বাড়ে। এখন ক্রেতারা শুরু দেখছে। তিনি বলেন, রোজার প্রথম শুক্রবার থেকেই ঈদের আমেজ শুরু হয়েছে। দিন যত যাবে ক্রেতা তত বাড়বে।
ব্যবসায়ীরা বলছে, ঈদে জামা-কাপড় কেনার শেষে জুতা কেনা বেশি হয়। এখন আবার মোবাইলসহ নানা ধরনের পণ্য কেনায় ঝোঁক বাড়ছে মানুষের। তাই ঈদ কেন্দ্রিক জুতার ব্যবসা খুব একটা বাড়ছে না। তারপরও সারা বছর যে পরিমাণ জুতা বিক্রি হয়, তার মধ্যে ৩০ শতাংশই ঈদের সময়ে বিক্রি হয়। কী ধরনের জুতার চাহিদা বেশি এমন প্রশ্নের জবাবে ওয়াকার শোরুমের ম্যানেজার জহুরুল ইসলাম বলেন, স্লিপার ও ফ্ল্যাট স্যান্ডেল বেশি বিক্রি হচ্ছে। কারণ গরম অনেক বেশি। সে বিষটি মাথায় রেখে সবাই জুতা পছন্দ করছে। এ বছর বে, ওরিয়ন, লেদারেক্স, জেনিস, ফরচুনা, জিলস, স্টেপ ভালো কালেকিশন নিয়ে এসেছে। এসবের বাইরেও গত দুই-তিন বছরে নতুন ব্র্যান্ড বাজারে এসেছে। কিছু ব্র্যান্ড এক বা একাধিক শোরুম দিয়ে যাত্রা শুরু করেছে। সেসব দোকানেও ঈদের বড় কালেকশন দেখা গেছে। এছাড়া ফুলবাড়িয়া জুতার মার্কেটে সবচেয়ে বড় নন-ব্র্যান্ডের জুতার কারবার শুরু হয়েছে। সেখানে প্রতিদিন শত শত কোটি টাকার পাইকারি জুতা রাজধানীসহ সারাদেশের বিভিন্ন মার্কেটে সরবরাহ করা হচ্ছে।
ফুলবাড়িয়ার ‘শখ’ জুতার দোকানের মালিক ফরিদুল হক সাগর বলেন, গত দুই বছর করোনার কারণে জুতা বিক্রি একবারেই হয়নি। স্কুল কলেজ খোলার পর থেকে কিছুটা শুরু হয়েছে। সেজন্য এবার ঈদে সবচেয়ে বেশি বিক্রির আশা করছি। রাজধানীর ফুলবাড়িয়া বিআরটিসি সুপার মার্কেট, ঢাকা ট্রেড সেন্টার, পলওয়েল মার্কেট ও বঙ্গবাজার হকার্স মার্কেটের পাইকারি বাজারে ভারত, চায়নাসহ বিভিন্ন দেশের জুতার রমরমা ব্যবসা শুরু হয়েছে। পাইকারি বিক্রি বেশি। আর বিভিন্ন দোকানের গুদামের প্রায় ৮০ শতাংশই চায়না ও ভারতীয় জুতা রয়েছে। এসব মার্কেটের ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদে তারা বিভিন্ন দেশের হালকা আরামদায়ক জুতা বেশি আমদানি করেছে। রোজা শুরুর পর থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে খুচরা বিক্রেতারা এসব জুতা কিনে নিজ গন্তব্যে যাচ্ছেন।
বাজারে জুতার নতুন নতুন কালেকশন, ভালো বিক্রির আশা ব্যবসায়ীদের
ট্যাগস :
বাজারে জুতার নতুন নতুন কালেকশন
জনপ্রিয় সংবাদ