ঢাকা ১০:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বাজারগুলোতে সয়াবিন তেলের সংকট

  • আপডেট সময় : ০৭:২২:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ৪ বার পড়া হয়েছে

ময়মনসিংহ সংবাদদাতা : ময়মনসিংহের বাজারগুলোতে সয়াবিন তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী তেল দিতে পারছেন না বিক্রেতারা। তারা বলছেন, কোম্পানির প্রতিনিধিরা চাহিদা অনুযায়ী তেল দিচ্ছেন না। তেল নিতে চাইলে সঙ্গে পোলাও চাল, হলুদ-মরিচের গুঁড়াসহ বিভিন্ন পণ্য কেনার শর্ত জুড়ে দেওয়া হচ্ছে।

তবুও পাওয়া যাচ্ছে না তেল। গতকাল বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে সরেজমিন শহরের মেছুয়া বাজারের বিভিন্ন দোকান ঘুরে জানা যায়, অন্তত দুই মাস ধরে চাহিদামতো তেল পাচ্ছেন না মুদিদোকানিরা। পোলাও চাল, হলুদ-মরিচের গুঁড়াসহ বিভিন্ন পণ্য কেনার শর্তে কিছু বোতলজাত সয়াবিন তেল দেওয়া হচ্ছে। এতে ক্রেতাদের চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। বিক্রেতারা জানান, বাজারে সয়াবিনের এক, দুই ও পাঁচ লিটারের বোতলের সরবরাহ একেবারেই কম। পরিবেশকদের কাছে বারবার তাগাদা দিয়েও তেল পাওয়া যাচ্ছে না।

ফলে কোনো দোকানেই পর্যাপ্ত সয়াবিন তেল নেই। অনেক ডিলার ও পাইকাররা সয়াবিন গুদামজাত করে রেখেছেন। তারা তেলের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে আসন্ন রমজানে মোটা অংকের টাকা পকেটে ভরতে চাচ্ছেন। ফিরোজ হোসেন নামের একজন দোকানদার বলেন, ‘বোতলজাত সয়াবিন তেলের সবগুলো কোম্পানির প্রতিনিধিরাই বলছেন, তেলের উৎপাদন কম। এ কারণে তারা চাহিদামতো তেল সরবরাহ করতে পারছেন না। তবে বিভিন্ন পণ্য কিনতে রাজি হলে তেল পাওয়া যাচ্ছে। তখন বোতলের গায়ে লেখা মূল্যের চেয়ে ২-৩ টাকা কম রেখে পাইকারিভাবে তেল বিক্রি করছেন।’ আজিজুল হক নামের আরেক দোকানদার বলেন, ‘শহরে বিভিন্ন কোম্পানির তেলের ডিলার রয়েছেন।

তাদের গোডাউনে প্রচুর পরিমাণে তেল মজুত করে রাখা হয়েছে। মনে হচ্ছে, রমজানের আগে তেলের দাম আরেক দফা বাড়াতে কোম্পানিগুলো সরবরাহ কমিয়েছে।’ দোকান থেকে দুই লিটার তেল কিনেছেন সিদ্দিকুর রহমান। সিদ্দিকুর বলেন, ‘তিনটি দোকানে গিয়ে একটিতে তেল পেয়েছি। বোতলের গায়ে লেখা মূল্য অনুযায়ী বিক্রি করা হচ্ছে। এক টাকাও কম নিচ্ছে না। বাধ্য হয়ে কিনতে হয়েছে।’ তেল কিনতে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মোখলেছুর রহমান। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘একেক বিক্রেতা একেক রকম দামে বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি করছেন। দোকানে তেলের জন্য গেলে জিজ্ঞেস করছেন কী কী পণ্য নেবেন। যদি বলি শুধু তেল নেবো, তখন অসাধু দোকানিরা বলছেন তেল নেই। অথচ দোকানে তেল ছিল।’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে রূপচাঁদা ব্র্যান্ডের একজন পরিবেশক বলেন, ‘কোম্পানি থেকে তেল কম আসছে। তাই বাজারে তেল কম পাওয়া যাচ্ছে। তবে তেল নিতে হলে বিভিন্ন পণ্য নিতে হবে এমন শর্ত কোন ব্র্যান্ডের পরিবেশকরা দিচ্ছেন আমার জানা নেই।’ জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ময়মনসিংহের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুস সালাম বলেন, মজুত করে কোনো পণ্যের সংকট তৈরি করা অপরাধ।

পাশাপাশি একটি পণ্যের সঙ্গে অন্য আরেকটি পণ্য কেনার শর্ত জুড়ে দেওয়াও ভোক্তা অধিকার আইনের লঙ্ঘন। বিষয়টি আমাদের প্রধান কার্যালয়ে লিখিতভাবে জানিয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে হাবীবা মীরা বলেন, ‘আমি ময়মনসিংহে নতুন এসেছি। বাজার পরিস্থিতি আমার জানা নেই। তবে বাজারে অভিযান চালানো হবে। বেচাকেনায় কোথাও কোনো অসঙ্গতি পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বাজারগুলোতে সয়াবিন তেলের সংকট

আপডেট সময় : ০৭:২২:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ময়মনসিংহ সংবাদদাতা : ময়মনসিংহের বাজারগুলোতে সয়াবিন তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী তেল দিতে পারছেন না বিক্রেতারা। তারা বলছেন, কোম্পানির প্রতিনিধিরা চাহিদা অনুযায়ী তেল দিচ্ছেন না। তেল নিতে চাইলে সঙ্গে পোলাও চাল, হলুদ-মরিচের গুঁড়াসহ বিভিন্ন পণ্য কেনার শর্ত জুড়ে দেওয়া হচ্ছে।

তবুও পাওয়া যাচ্ছে না তেল। গতকাল বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে সরেজমিন শহরের মেছুয়া বাজারের বিভিন্ন দোকান ঘুরে জানা যায়, অন্তত দুই মাস ধরে চাহিদামতো তেল পাচ্ছেন না মুদিদোকানিরা। পোলাও চাল, হলুদ-মরিচের গুঁড়াসহ বিভিন্ন পণ্য কেনার শর্তে কিছু বোতলজাত সয়াবিন তেল দেওয়া হচ্ছে। এতে ক্রেতাদের চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। বিক্রেতারা জানান, বাজারে সয়াবিনের এক, দুই ও পাঁচ লিটারের বোতলের সরবরাহ একেবারেই কম। পরিবেশকদের কাছে বারবার তাগাদা দিয়েও তেল পাওয়া যাচ্ছে না।

ফলে কোনো দোকানেই পর্যাপ্ত সয়াবিন তেল নেই। অনেক ডিলার ও পাইকাররা সয়াবিন গুদামজাত করে রেখেছেন। তারা তেলের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে আসন্ন রমজানে মোটা অংকের টাকা পকেটে ভরতে চাচ্ছেন। ফিরোজ হোসেন নামের একজন দোকানদার বলেন, ‘বোতলজাত সয়াবিন তেলের সবগুলো কোম্পানির প্রতিনিধিরাই বলছেন, তেলের উৎপাদন কম। এ কারণে তারা চাহিদামতো তেল সরবরাহ করতে পারছেন না। তবে বিভিন্ন পণ্য কিনতে রাজি হলে তেল পাওয়া যাচ্ছে। তখন বোতলের গায়ে লেখা মূল্যের চেয়ে ২-৩ টাকা কম রেখে পাইকারিভাবে তেল বিক্রি করছেন।’ আজিজুল হক নামের আরেক দোকানদার বলেন, ‘শহরে বিভিন্ন কোম্পানির তেলের ডিলার রয়েছেন।

তাদের গোডাউনে প্রচুর পরিমাণে তেল মজুত করে রাখা হয়েছে। মনে হচ্ছে, রমজানের আগে তেলের দাম আরেক দফা বাড়াতে কোম্পানিগুলো সরবরাহ কমিয়েছে।’ দোকান থেকে দুই লিটার তেল কিনেছেন সিদ্দিকুর রহমান। সিদ্দিকুর বলেন, ‘তিনটি দোকানে গিয়ে একটিতে তেল পেয়েছি। বোতলের গায়ে লেখা মূল্য অনুযায়ী বিক্রি করা হচ্ছে। এক টাকাও কম নিচ্ছে না। বাধ্য হয়ে কিনতে হয়েছে।’ তেল কিনতে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মোখলেছুর রহমান। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘একেক বিক্রেতা একেক রকম দামে বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি করছেন। দোকানে তেলের জন্য গেলে জিজ্ঞেস করছেন কী কী পণ্য নেবেন। যদি বলি শুধু তেল নেবো, তখন অসাধু দোকানিরা বলছেন তেল নেই। অথচ দোকানে তেল ছিল।’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে রূপচাঁদা ব্র্যান্ডের একজন পরিবেশক বলেন, ‘কোম্পানি থেকে তেল কম আসছে। তাই বাজারে তেল কম পাওয়া যাচ্ছে। তবে তেল নিতে হলে বিভিন্ন পণ্য নিতে হবে এমন শর্ত কোন ব্র্যান্ডের পরিবেশকরা দিচ্ছেন আমার জানা নেই।’ জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ময়মনসিংহের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুস সালাম বলেন, মজুত করে কোনো পণ্যের সংকট তৈরি করা অপরাধ।

পাশাপাশি একটি পণ্যের সঙ্গে অন্য আরেকটি পণ্য কেনার শর্ত জুড়ে দেওয়াও ভোক্তা অধিকার আইনের লঙ্ঘন। বিষয়টি আমাদের প্রধান কার্যালয়ে লিখিতভাবে জানিয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে হাবীবা মীরা বলেন, ‘আমি ময়মনসিংহে নতুন এসেছি। বাজার পরিস্থিতি আমার জানা নেই। তবে বাজারে অভিযান চালানো হবে। বেচাকেনায় কোথাও কোনো অসঙ্গতি পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’