ঢাকা ০২:১৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫

বাচ্চাদের খেলাধুলার দিকে মনোযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী

  • আপডেট সময় : ০২:২৬:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ নভেম্বর ২০২২
  • ৯৫ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ডিজিটাল প্রযুক্তির আসক্তি কাটিয়ে শিশুদের শরীর চর্চা ও খেলাধুলায় বিশেষ নজর দিতে অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, “আজকাল বাচ্চারা-বিশেষ করে ঢাকার বাচ্চারা তো ফ্লাটে থেকে ফার্মের মুরগির মতো হয়ে যাচ্ছে। খেলাধুলায় যায়ই না। এটা হল বাস্তব কথা।
“আর এখন তো ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছি। ওই সারাক্ষণ হয় মোবাইল ফোন বা ট্যাব নিয়ে বসে থাকে।”
গতকাল বুধবার সকালে নিজ কার্যালয়ে ‘সাফ উইমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপ-২০২২’ এ অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলকে সংবর্ধনার অনুষ্ঠানে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শিশুদের যে শরীর চর্চা হচ্ছে না, সেদিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, “প্রত্যেকটা অভিভাবককে আমি অনুরোধ করব, অন্তত কিছুক্ষণ হলেও আপনারা আপনাদের বাচ্চাদের খেলাধুলার দিকে একটু নজর দেন। তাদেরকে নিয়ে যান, খেলেন।
“আমি এটা মনে করি যে আমাদের ছেলে মেয়েরা যতবেশি খেলাধুলার সাথে সম্পৃক্ত হতে পারবে, সংস্কৃতি চর্চার সাথে সম্পৃক্ত হতে পারবে, সাহিত্য চর্চা করবেৃ লেখাপড়ার পাশপাশি এগুলো একান্তভাবে দরকার। শারীরিক, মানসিক সব দিক থেকেই আমাদের তরুণদের একটা আলাদা মানসিকতা, দেশপ্রেম এটা গড়ে উঠবে।”
মাঠে খেলোয়াড়দের মুক্তিযুদ্ধের বিজয় গাঁথা স্মরণ করে জয়ের লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, “আমরা জাতির পিতার আহ্বানে সাড়া দিয়ে এদেশের মানুষ অস্ত্র তুলে নিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আমরা বিজয়ী জাতি। সবসময় এটা মাথায় রাখতে হবে। খেলার মাঠেও মাথায় রাখতে হবে যে যুদ্ধে জয় করেছি, খেলায়ও জয় করব।
“এই চিন্তা নিয়ে সবাইকে চলতে হবে। তাহলেই সাফল্য আসবে। কারণ মনোবল, আতœবিশ্বাস এটা একান্তভাবে দরকার আর সব সময় ট্রেনিংটা দরকার। প্রশিক্ষণ, এটাকে কোনোমতেই শিথিল করা যাবে না। যত বেশি ট্রেনিং হবে, তত বেশি খেলাধুলা উৎকর্ষতা পাবে।”
নারী ফুটবলারদের সাফল্যে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা সত্যিই খুব আনন্দিত যে আমাদেরৃ এখানে একটু না বলে পারি না, আমাদের ছেলেরাও যা পারে না, মেয়েরা তার থেকে বেশি পারে। শুনলে আবার ছেলেরা রাগ করবে। রাগ করার কিছু নেই। ছেলেদের প্রতিযোগিতাটা একটু বেশি। ওদের একটু বেশি হচ্ছে সেই জন্যই কিন্তুৃতাও আমি বলব যে আমাদের মেয়ে যথেষ্ট ভালো করছে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৮ সালের অক্টোবরে সাফ অনুর্ধ্ব ১৮ ফুটবল প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের মেয়েরা চ্যাম্পিয়ন হয়, ২০২১ সালে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল টেস্ট স্ট্যাটাস পায়। “নারী ক্রীড়া দল বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করে পাকিস্তানকে পরাজিত করেছে, ছেলেরা কিন্তু পারে নাই। মেয়েরা পেরেছে। ২০২১ সালে ডিসেম্বরে সাফ অনুর্ধ্ব ১৯ ফুটবল প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।”
খেলাধুলার সঙ্গে বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের সম্পৃক্ততার কথা তুলে ধরে জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা সব সময় এটা মনে করি যে, খেলাধুলা আমাদের অপরিহার্য। আমার আব্বা ঢাকা ওয়ান্ডার্স ক্লাবে খেলতেন আবার আমার ভাই কামাল সেও খেলত…সবাই বিভিন্ন টিমের সঙ্গে জড়িত ছিল।
“জয়ের মেয়ে সে কিন্তু ছোটবেলা থেকেই খুব ফুটবল খেলত। রেহনার ছেলে ববি তার ছেলে ফুটবল খেলে। ববি নিজেও খেলে, এখনও খেলে। কাজেই আমাদের পরিবারের সবার মধ্যে ফুটবল খেলার দিকে একটু ঝোঁকটা বেশি। দাদার থেকে বোধহয় আসছে।”
স্বাধীনতার পর খেলাধুলায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নানা উদ্যোগ ও পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সরকারের নানা পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন সরকারপ্রধান। অনুষ্ঠানে বিজয়ী বাংলাদেশি নারীদের খেলোয়াড়দের সংবর্ধনা ও আর্থিক সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়। যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মেজবাহ উদ্দিন ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পেশা বদলাচ্ছেন শিক্ষকরা

বাচ্চাদের খেলাধুলার দিকে মনোযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী

আপডেট সময় : ০২:২৬:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ নভেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : ডিজিটাল প্রযুক্তির আসক্তি কাটিয়ে শিশুদের শরীর চর্চা ও খেলাধুলায় বিশেষ নজর দিতে অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, “আজকাল বাচ্চারা-বিশেষ করে ঢাকার বাচ্চারা তো ফ্লাটে থেকে ফার্মের মুরগির মতো হয়ে যাচ্ছে। খেলাধুলায় যায়ই না। এটা হল বাস্তব কথা।
“আর এখন তো ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছি। ওই সারাক্ষণ হয় মোবাইল ফোন বা ট্যাব নিয়ে বসে থাকে।”
গতকাল বুধবার সকালে নিজ কার্যালয়ে ‘সাফ উইমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপ-২০২২’ এ অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলকে সংবর্ধনার অনুষ্ঠানে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শিশুদের যে শরীর চর্চা হচ্ছে না, সেদিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, “প্রত্যেকটা অভিভাবককে আমি অনুরোধ করব, অন্তত কিছুক্ষণ হলেও আপনারা আপনাদের বাচ্চাদের খেলাধুলার দিকে একটু নজর দেন। তাদেরকে নিয়ে যান, খেলেন।
“আমি এটা মনে করি যে আমাদের ছেলে মেয়েরা যতবেশি খেলাধুলার সাথে সম্পৃক্ত হতে পারবে, সংস্কৃতি চর্চার সাথে সম্পৃক্ত হতে পারবে, সাহিত্য চর্চা করবেৃ লেখাপড়ার পাশপাশি এগুলো একান্তভাবে দরকার। শারীরিক, মানসিক সব দিক থেকেই আমাদের তরুণদের একটা আলাদা মানসিকতা, দেশপ্রেম এটা গড়ে উঠবে।”
মাঠে খেলোয়াড়দের মুক্তিযুদ্ধের বিজয় গাঁথা স্মরণ করে জয়ের লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, “আমরা জাতির পিতার আহ্বানে সাড়া দিয়ে এদেশের মানুষ অস্ত্র তুলে নিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আমরা বিজয়ী জাতি। সবসময় এটা মাথায় রাখতে হবে। খেলার মাঠেও মাথায় রাখতে হবে যে যুদ্ধে জয় করেছি, খেলায়ও জয় করব।
“এই চিন্তা নিয়ে সবাইকে চলতে হবে। তাহলেই সাফল্য আসবে। কারণ মনোবল, আতœবিশ্বাস এটা একান্তভাবে দরকার আর সব সময় ট্রেনিংটা দরকার। প্রশিক্ষণ, এটাকে কোনোমতেই শিথিল করা যাবে না। যত বেশি ট্রেনিং হবে, তত বেশি খেলাধুলা উৎকর্ষতা পাবে।”
নারী ফুটবলারদের সাফল্যে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা সত্যিই খুব আনন্দিত যে আমাদেরৃ এখানে একটু না বলে পারি না, আমাদের ছেলেরাও যা পারে না, মেয়েরা তার থেকে বেশি পারে। শুনলে আবার ছেলেরা রাগ করবে। রাগ করার কিছু নেই। ছেলেদের প্রতিযোগিতাটা একটু বেশি। ওদের একটু বেশি হচ্ছে সেই জন্যই কিন্তুৃতাও আমি বলব যে আমাদের মেয়ে যথেষ্ট ভালো করছে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৮ সালের অক্টোবরে সাফ অনুর্ধ্ব ১৮ ফুটবল প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের মেয়েরা চ্যাম্পিয়ন হয়, ২০২১ সালে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল টেস্ট স্ট্যাটাস পায়। “নারী ক্রীড়া দল বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করে পাকিস্তানকে পরাজিত করেছে, ছেলেরা কিন্তু পারে নাই। মেয়েরা পেরেছে। ২০২১ সালে ডিসেম্বরে সাফ অনুর্ধ্ব ১৯ ফুটবল প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।”
খেলাধুলার সঙ্গে বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের সম্পৃক্ততার কথা তুলে ধরে জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা সব সময় এটা মনে করি যে, খেলাধুলা আমাদের অপরিহার্য। আমার আব্বা ঢাকা ওয়ান্ডার্স ক্লাবে খেলতেন আবার আমার ভাই কামাল সেও খেলত…সবাই বিভিন্ন টিমের সঙ্গে জড়িত ছিল।
“জয়ের মেয়ে সে কিন্তু ছোটবেলা থেকেই খুব ফুটবল খেলত। রেহনার ছেলে ববি তার ছেলে ফুটবল খেলে। ববি নিজেও খেলে, এখনও খেলে। কাজেই আমাদের পরিবারের সবার মধ্যে ফুটবল খেলার দিকে একটু ঝোঁকটা বেশি। দাদার থেকে বোধহয় আসছে।”
স্বাধীনতার পর খেলাধুলায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নানা উদ্যোগ ও পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সরকারের নানা পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন সরকারপ্রধান। অনুষ্ঠানে বিজয়ী বাংলাদেশি নারীদের খেলোয়াড়দের সংবর্ধনা ও আর্থিক সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়। যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মেজবাহ উদ্দিন ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।