নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারের স্থগিত তালিকা পর্যালোচনা করা হচ্ছে। তালিকায় নাম থাকা কারও বিষয়ে গণহত্যা ও জনবিরোধী রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেলে পুরস্কার বাতিল করা হবে।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) সচিবালয়ের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম। এ সময় সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এবং মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. মফিদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
গত বৃহস্পতিবার বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, ২০২৪ যাঁরা পাচ্ছেন, তাঁদের তালিকা ঘোষণা করে বাংলা একাডেমি। তালিকায় পুরস্কারের জন্য কবিতায় মাসুদ খান, কথাসাহিত্যে সেলিম মোরশেদ, নাটক ও নাট্যসাহিত্যে শুভাশিস সিনহা, প্রবন্ধ-গদ্যে সলিমুল্লাহ খান, শিশুসাহিত্যে ফারুক নওয়াজ, অনুবাদে জি এইচ হাবীব, গবেষণায় মুহম্মদ শাহজাহান মিয়া, বিজ্ঞানে রেজাউর রহমান, মুক্তিযুদ্ধে মোহাম্মদ হান্নান এবং ফোকলোরে সৈয়দ জামিল আহমেদের নাম উল্লেখ করা হয়।
তবে এই তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের কারও কারও বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। একদিকে এবার কোনো নারীকে মনোনীত না করায় সমালোচনা হচ্ছিল। অন্যদিকে, মনোনীত একাধিক ব্যক্তির বিগত সরকারের আমলে ভূমিকা নিয়েও আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছিল। এ রকম পরিস্থিতিতে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ঘোষণার দুই দিনের মাথায় গতকাল শনিবার স্থগিত করা হয়েছে। এ নিয়েও আবার আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
এ রকম পরিস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। সংবাদ সম্মেলনে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম বলেন, সম্প্রতি পুরস্কার ঘোষণার পর নানা পক্ষ থেকে নানা ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। পুরো ব্যাপারটি আমলে নেওয়া হয়েছে। ঘোষিত তালিকাটি ইতিমধ্যে সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। তালিকাটি পর্যালোচনা (রিভিউ) করা হচ্ছে। যে অভিযোগ সামনে এসেছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে, অনুসন্ধান করা হচ্ছে। তিনি বলেন, প্রধানত গত (জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে) গণহত্যা ও জনবিরোধী রাজনীতির সঙ্গে যদি কারও সরাসরি সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া যায়, যদি এ ধরনের সরাসরি সাক্ষ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে নিশ্চয়ই (পুরস্কার) বাতিল করা হবে। তার পরিবর্তে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সেটা যে কমিটি কাজ করছে, সেই কমিটি দেখবে।
এক প্রশ্নের জবাবে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক বলেন, ‘প্রথম কথা হলো, এটা আমাদের ভুল হয়েছে। দ্বিতীয়ত, ঐতিহাসিকভাবে বাংলা একাডেমির পুরস্কার প্রদানের ব্যবস্থার মধ্যেই তাড়াহুড়ো আছে। এটি অসংখ্য কারণে করা হয়েছে। এটা এক দিনে হয়নি। দশকের পর দশক ধরে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। তার অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই এভাবে করা হয়েছে।’ বাংলা একাডেমির বিষয়ে খুব শিগগির একটি সংস্কার কমিটি গঠন করা হবে বলে জানান মহাপরিচালক।