প্রত্যাশা ডেস্ক : এই দিনে মিত্রবাহিনীর বিমানবাহিনী ঢাকার আকাশ পুরোপুরি দখল করে নেয়। বাংলাদেশ নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গন উত্তপ্তহয়ে পড়ে। আর জাতিসংঘে বাংলাদেশকে নিয়ে তৈরি হয় বিতর্ক। এদিকে বাংলাদেশকে নিয়ে মার্কিন সরকারের বিশেষ উদ্যোগে জাতিসংঘে নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশন বসে। এতে যুদ্ধ বিরতির জন্য মার্কিন প্রতিনিধি সিনিয়র বুশের চেষ্টায় সোভিয়েত প্রতিনিধি কমরেড মালিক ‘ভেটো’ প্রয়োগ করেন।
‘ভেটো’ প্রয়োগের পূর্বে কমরেড মালিক বলেন, ‘পাকস্তানি সামরিক জান্তার নিষ্ঠুর কার্যকলাপের ফলেই পূর্ব বাংলার বর্তমান পরিস্থিতি উদ্ভব হয়ছে।
মূলত বাংলাদেশ নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মূল লড়াইটা ছিল দুই পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মাঝে। সোভিয়েত ইউনিয়ন ছিল বাংলাদেশের পক্ষে আর যুক্তরাষ্ট্র ছিল পাকিস্তানের পক্ষে। আর বাংলাদেশ সম্পর্কে পরিষদে তৃতীয় প্রস্তাবটি পেশ করে বেলজিয়াম, ইতালি ও জাপান।
এদিকে জাতিসংঘে চীনের প্রতিনিধিরা বলেন, ‘কোনো শর্ত ছাড়াই পাকিস্তান থেকে ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক অঙ্গনে এ উত্তপ্ত অবস্থাতে যাতে মুক্তিযোদ্ধারা মনোবল হারিয়ে না ফেলেন, সে জন্য মুক্তিবাহিনীর সেনাপতি জেনারেল ওসমানী জাতির উদ্দেশে বেতারে ভাষণ দেন।’
সারাবাংলার সঙ্গে আলাপচারিতায় সে সময়ের স্মৃতি তুলে ধরেন বীর মুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত লেফট্যানেন্ট কর্নেল কাজী সাজ্জাদ আলী জহির বীরপ্রতীক। তিনি বলেন, ‘সার্বিক পরিস্থিতিতে নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী, স্থলবাহিনী, মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনীর সমন্বিত ও সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে যুদ্ধে বিজয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলাম। ৫ ডিসেম্বর। কিন্তু তখনো রাস্তা অনেক দূর ছিল। আন্তজার্তিক মহলে তখন অনেকগুলো বিষয় চলছিল। পাকিস্তানকে সমর্থন করছিল আমেরিকা, চীন, মধ্যপ্রাচ্যের কিছু দেশ, ইউরোপের কিছু দেশ। তারা জাতিসংঘের কাছে যুদ্ধবিরতির সুপারিশ করেছিল। কিন্তু পরিস্থিতি তখনো অনুকূলে ছিল না। তখন আমাদের মুজিবনগর সরকার ৮ নম্বর থিয়েটার রোড থেকে কূটনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছিল বিভিন্ন দেশে। যারা তখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছিলেন, তারাও কাজ করেছেন বিশ্ব বিবেক জাগ্রত করতে।’
‘আমরা দেখেছি, বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন অঞ্চলে নিজেদের স্বীকৃতি পেতে সুপারিশ করা হচ্ছিল। তখন শোনা যাচ্ছিল যে কিছু দেশ হয়তো আমাদের স্বীকৃতি দেবে। আমরা আশা করছিলাম আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেলে আমাদের মনোবল বেড়ে যাবে, প্রভাব বেড়ে যাবে। সে কাজে ভারত আমাদের অনেক সহযোগিতা করেছিল। ভারত ও ভুটান আমাদের স্বীকৃতি দিলো। আন্তজার্তিক মহলে আমাদের একটি সঠিক পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হলো। এর ফলে মুক্তিযুদ্ধ আরও ত্বরান্বিত হলো।’
বাংলাদেশ নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হয়ে পড়ে
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ