ঢাকা ০২:৫২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫

বাংলাদেশ ক্রিকেটের হতাশা ও দুঃস্বপ্নের বছর

  • আপডেট সময় : ১০:৪৪:৫৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২১
  • ৮৭ বার পড়া হয়েছে

ক্রীড়া প্রতিবেদক : হার, হার আর হার! ২০২১ সালে হারের বৃত্তে যেন ঘুরপাক খেয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেট। পরাজয়ের একেকটি গল্প বছর শেষে রূপ নিয়েছে ব্যর্থতার মহাকাব্যে। সাফল্য এসেছে কালেভদ্রে। সেগুলো চাপা পড়েছে ব্যর্থতার ভারে। হতাশা ও দুঃস্বপ্নের মতো কেটেছে এই দশকের প্রথম বছর। অপ্রাপ্তির বছরে কষ্ট বাড়িয়েছে মাঠের বাইরের ইস্যু। বিতর্কিত হয়েছে দেশের ক্রিকেটাঙ্গন। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট মনে রাখতে চাইবে না ২০২১ সাল। ঘটনাবহুল বছরের বিভিন্ন স্মৃতি ফিরিয়ে আনছে ক্রীড়া বিভাগ। পাওয়া না পাওয়ার হিসাবনিকাশ নিয়েই এই প্রতিবেদন।
সাকিবের ফেরার সিরিজ ও মায়ার্স ঝড় : বাংলাদেশের বছর শুরু হয় এক ঝড় দিয়ে- ‘কাইল মায়ার্স ঝড়’। চট্টগ্রামে বাংলাদেশকে অসাধারণ এক ডাবল সেঞ্চুরিতে এলোমেলো করে দেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের অভিষেক হওয়া ক্রিকেটার মায়ার্স। বার্বাডিয়ান মায়ার্সের ২১০ রানের ইনিংসে ৩৯৫ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করে ম্যাচ জেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শুধু চট্টগ্রাম টেস্ট নয়, ঢাকা টেস্টেও মুমিনুলের দলকে এলোমেলো করে দেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের তরুণ দলটি। অবশ্য সাদা পোশাকে লড়াইয়ের আগে বাংলাদেশ ওয়ানডেতে প্রত্যাশিত জয় পায়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাকিবের ফেরার সিরিজে ৩-০ ব্যবধানেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারায় বাংলাদেশ। ফিরেই সাকিব ম্যান অব দ্য সিরিজ। ১১৩ রান ও ৬ উইকেট নিয়ে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব ২২ গজে প্রমাণ করেন বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার। শেষ ওয়ানডেতে চোট পাওয়ার পর ঝুঁকি নিয়ে খেলেছিলেন চট্টগ্রাম টেস্ট। কিন্তু ঢাকা টেস্টে তাকে আর পাওয়া যায়নি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ শেষ হওয়ার আগেই গণমাধ্যমের শিরোনামে সাকিব আল হাসান। দলের হয়ে শ্রীলঙ্কা সফরে যেতে চান না। খেলতে চান আইপিএল। তার ব্যাখ্যা ছিল, ভারতে হবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এজন্য আইপিএলে খেলে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নিতে চান। দলের বর্তমান দুরবস্থায় সাকিবের নিবেদন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।
বিসিবি সভাপতির কথাও ছিল সোজাসাপ্টা, ‘জোর করে কাউকে খেলাবো না। খারাপ সময়ে দলকে সহযোগিতা করবে, আশ্বস্ত করবে যে জিতবেই… অথচ সেটা বাদ দিয়ে অন্য ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে খেলবে? যে সময়টায় তারা দেশের জন্য কিছু করবে সে সময়টায় যদি…।’
নিউ জিল্যান্ড ৬-০ বাংলাদেশ : ওয়ানডে সুপার লিগের তিন ওয়ানডে ও তিন টি-টোয়েন্টি খেলতে বাংলাদেশ মার্চে গিয়েছিল তাসমান পারের দেশ নিউ জিল্যান্ডে। কিন্তু ৬ ম্যাচেই বাংলাদেশের হতশ্রী পারফরম্যান্স। ফলাফল এবারো কোনো জয় নেই বাংলাদেশের ভাগ্যে। সেই সঙ্গে সুযোগ হাতছাড়া আক্ষেপে শেষ হয় হতাশার সফর। সফরে বাংলাদেশের একমাত্র প্রাপ্তি ছিল তাসকিন আহমেদের স্বরূপে ফেরা। তার বৈচিত্র্য, গতি, অ্যাকুরেসি, নিয়ন্ত্রণ- সব মিলিয়ে দারুণ সময় কাটে ডানহাতি পেসারের। নিজেকে খোলস থেকে বেরিয়ে এনে সেরাদের কাতারে যাওয়ার যে তীব্র ক্ষুধা লক্ষ করা গিয়েছিল, তা ছিল সত্যিই অসাধারণ।
প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তিতে শ্রীলঙ্কা সফর : কোয়ারেন্টাইন ও বায়ো-বাবলের জটিলতায় শ্রীলঙ্কার ডাম্বুলায় দুই টেস্ট খেলে বাংলাদেশ। প্রথমটা ড্র করলেও দ্বিতীয়টা হেরে যায়। দ্বিতীয় ম্যাচও বাংলাদেশ বাঁচাতে পারত। কিন্তু নিজেদের ভুলেই পারেনি। ডাম্বুলায় প্রথম টেস্ট ড্র করে বাংলাদেশ ৮ পয়েন্ট পায়। যা প্রথম টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের আসরে ছিল বাংলাদেশের একমাত্র প্রাপ্তি। এছাড়া শান্তর সেঞ্চুরি, দেশের বাইরে মুমিনুলের প্রথম শতক মিলিয়ে প্রথম টেস্ট দারুণ যায় বাংলাদেশের। রানে ভরা ম্যাচটা ড্র হয়। কিন্তু দ্বিতীয় টেস্টে শ্রীলঙ্কান অভিষিক্ত স্পিনার প্রবীণ জয়াবিক্রমার ঘূর্ণিতে এলোমেলো বাংলাদেশ।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বাংলাদেশ ক্রিকেটের হতাশা ও দুঃস্বপ্নের বছর

আপডেট সময় : ১০:৪৪:৫৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২১

ক্রীড়া প্রতিবেদক : হার, হার আর হার! ২০২১ সালে হারের বৃত্তে যেন ঘুরপাক খেয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেট। পরাজয়ের একেকটি গল্প বছর শেষে রূপ নিয়েছে ব্যর্থতার মহাকাব্যে। সাফল্য এসেছে কালেভদ্রে। সেগুলো চাপা পড়েছে ব্যর্থতার ভারে। হতাশা ও দুঃস্বপ্নের মতো কেটেছে এই দশকের প্রথম বছর। অপ্রাপ্তির বছরে কষ্ট বাড়িয়েছে মাঠের বাইরের ইস্যু। বিতর্কিত হয়েছে দেশের ক্রিকেটাঙ্গন। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট মনে রাখতে চাইবে না ২০২১ সাল। ঘটনাবহুল বছরের বিভিন্ন স্মৃতি ফিরিয়ে আনছে ক্রীড়া বিভাগ। পাওয়া না পাওয়ার হিসাবনিকাশ নিয়েই এই প্রতিবেদন।
সাকিবের ফেরার সিরিজ ও মায়ার্স ঝড় : বাংলাদেশের বছর শুরু হয় এক ঝড় দিয়ে- ‘কাইল মায়ার্স ঝড়’। চট্টগ্রামে বাংলাদেশকে অসাধারণ এক ডাবল সেঞ্চুরিতে এলোমেলো করে দেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের অভিষেক হওয়া ক্রিকেটার মায়ার্স। বার্বাডিয়ান মায়ার্সের ২১০ রানের ইনিংসে ৩৯৫ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করে ম্যাচ জেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শুধু চট্টগ্রাম টেস্ট নয়, ঢাকা টেস্টেও মুমিনুলের দলকে এলোমেলো করে দেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের তরুণ দলটি। অবশ্য সাদা পোশাকে লড়াইয়ের আগে বাংলাদেশ ওয়ানডেতে প্রত্যাশিত জয় পায়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাকিবের ফেরার সিরিজে ৩-০ ব্যবধানেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারায় বাংলাদেশ। ফিরেই সাকিব ম্যান অব দ্য সিরিজ। ১১৩ রান ও ৬ উইকেট নিয়ে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব ২২ গজে প্রমাণ করেন বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার। শেষ ওয়ানডেতে চোট পাওয়ার পর ঝুঁকি নিয়ে খেলেছিলেন চট্টগ্রাম টেস্ট। কিন্তু ঢাকা টেস্টে তাকে আর পাওয়া যায়নি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ শেষ হওয়ার আগেই গণমাধ্যমের শিরোনামে সাকিব আল হাসান। দলের হয়ে শ্রীলঙ্কা সফরে যেতে চান না। খেলতে চান আইপিএল। তার ব্যাখ্যা ছিল, ভারতে হবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এজন্য আইপিএলে খেলে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নিতে চান। দলের বর্তমান দুরবস্থায় সাকিবের নিবেদন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।
বিসিবি সভাপতির কথাও ছিল সোজাসাপ্টা, ‘জোর করে কাউকে খেলাবো না। খারাপ সময়ে দলকে সহযোগিতা করবে, আশ্বস্ত করবে যে জিতবেই… অথচ সেটা বাদ দিয়ে অন্য ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে খেলবে? যে সময়টায় তারা দেশের জন্য কিছু করবে সে সময়টায় যদি…।’
নিউ জিল্যান্ড ৬-০ বাংলাদেশ : ওয়ানডে সুপার লিগের তিন ওয়ানডে ও তিন টি-টোয়েন্টি খেলতে বাংলাদেশ মার্চে গিয়েছিল তাসমান পারের দেশ নিউ জিল্যান্ডে। কিন্তু ৬ ম্যাচেই বাংলাদেশের হতশ্রী পারফরম্যান্স। ফলাফল এবারো কোনো জয় নেই বাংলাদেশের ভাগ্যে। সেই সঙ্গে সুযোগ হাতছাড়া আক্ষেপে শেষ হয় হতাশার সফর। সফরে বাংলাদেশের একমাত্র প্রাপ্তি ছিল তাসকিন আহমেদের স্বরূপে ফেরা। তার বৈচিত্র্য, গতি, অ্যাকুরেসি, নিয়ন্ত্রণ- সব মিলিয়ে দারুণ সময় কাটে ডানহাতি পেসারের। নিজেকে খোলস থেকে বেরিয়ে এনে সেরাদের কাতারে যাওয়ার যে তীব্র ক্ষুধা লক্ষ করা গিয়েছিল, তা ছিল সত্যিই অসাধারণ।
প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তিতে শ্রীলঙ্কা সফর : কোয়ারেন্টাইন ও বায়ো-বাবলের জটিলতায় শ্রীলঙ্কার ডাম্বুলায় দুই টেস্ট খেলে বাংলাদেশ। প্রথমটা ড্র করলেও দ্বিতীয়টা হেরে যায়। দ্বিতীয় ম্যাচও বাংলাদেশ বাঁচাতে পারত। কিন্তু নিজেদের ভুলেই পারেনি। ডাম্বুলায় প্রথম টেস্ট ড্র করে বাংলাদেশ ৮ পয়েন্ট পায়। যা প্রথম টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের আসরে ছিল বাংলাদেশের একমাত্র প্রাপ্তি। এছাড়া শান্তর সেঞ্চুরি, দেশের বাইরে মুমিনুলের প্রথম শতক মিলিয়ে প্রথম টেস্ট দারুণ যায় বাংলাদেশের। রানে ভরা ম্যাচটা ড্র হয়। কিন্তু দ্বিতীয় টেস্টে শ্রীলঙ্কান অভিষিক্ত স্পিনার প্রবীণ জয়াবিক্রমার ঘূর্ণিতে এলোমেলো বাংলাদেশ।