ঢাকা ০৩:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

বাংলাদেশ কখনোই শ্রীলঙ্কা হবে না: প্রধানমন্ত্রী

  • আপডেট সময় : ০৩:৩১:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ অগাস্ট ২০২২
  • ৭৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছেন, বাংলাদেশ তার উন্নয়নের ধারা থেকে কখনোই শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতিতে পতিত হবে না; বরং সব বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই এগিয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা কথা মনে রাখবেন (দলের নেতা–কর্মীদের) যে বাংলাদেশ কখনোই শ্রীলঙ্কা হবে না, হতে পারে না।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ সভা হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে কেউ কেউ শ্রীলঙ্কা বানাচ্ছে বাংলাদেশকে। আমি আপনাদের একটা কথা জানাতে চাই, যেহেতু আপনারা আমাদের নেতা-কর্মী, তাই আপনাদের এ কথাটা শুনতে ও জবাব দিতে হয়। আপনারা একটা কথা মনে রাখবেন, বাংলাদেশ কখনো শ্রীলঙ্কা হবে না, হতে পারে না।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশের যে পরিস্থিতি, তাতে শ্রীলঙ্কা হয়েই গিয়েছিল ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে বিএনপির শাসনামলে।’
কারণ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সে সময় পাঁচবার দেশ দুর্নীতি চ্যাম্পিয়ন হয়, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বিদ্যুৎ ও পানির জন্য হাহাকার, মানুষের কর্মসংস্থান নাই, তার ওপর জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা, সারা দেশে বোমা হামলা, সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়াকে হত্যাসহ বিভিন্ন জায়গায় গ্রেনেড হামলা। আর তখনই মানুষ আন্দোলনে রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়। কাজেই শ্রীলঙ্কার সেই অবস্থান থেকে তো বাংলাদেশকে উদ্ধার করে নিয়ে আসতে সমর্থ হয়েছি। কাজেই আজকের বাংলাদেশ কেন শ্রীলঙ্কা হবে?’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের যে অর্থনীতির গতিশীলতা, সেটা যেন অব্যাহত থাকে এবং অর্থনৈতিকভাবে আমাদের দেশটা যাতে এগিয়ে যেতে পারে, সে জন্য সুপরিকল্পিত পদক্ষেপ নিয়ে সরকার এগোচ্ছে।’
দেশের সার্বিক উন্নয়ন বিবেচনাতেই তাঁর সরকার উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে থাকে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিরাট অঙ্কের উন্নয়ন প্রকল্প, এটা নিলে পরে বিরাট অঙ্কের একটা কমিশন পাব, সে কথা চিন্তা করে শেখ হাসিনা কোনো প্রকল্প নেয় না।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মান্নাফীর সভাপতিত্বে আলোচনা সঞ্চালনা করেন ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, উত্তর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সাদেক খান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নুরুল আমিন রুহুল, উত্তর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ কাদের খান, মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শহীদ সেরনিয়াবাত প্রমুখ।
পরশ-তাপসকে মঞ্চে ডেকে নিয়ে কাঁদলেন শেখ হাসিনা : ‘পাঁচ বছরের পরশ, তিন বছরের তাপস। বাবা-মায়ের লাশ পড়ে আছে। দুটি বাচ্চা বাবা-মায়ের লাশের কাছে গিয়ে চিৎকার করছে। বাবা ওঠো, বাবা ওঠো..। মা ওঠো, মা ওঠো…। সেদিন কেউ সাড়া দেয়নি।’ এভাবেই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকের বুলেটে নিহত শেখ ফজলুল হক মনি ও তার স্ত্রী আরজু মনি হত্যাকা-ের স্মৃতিচারণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় শোক দিবস স্মরণে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত সভায় বক্তৃতাকালে তিনি এ স্মৃতিচারণ করেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে এখানে পরশ ও তাপস বসে আছে।’ তখন প্রধানমন্ত্রীর চোখ যায় পরশের দিকে। তাপস মঞ্চে থাকলেও পরশ ছিলেন না। তিনি নিচে প্রথম সারিতে বসেছিলেন। তখন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পরশ সামনে চুপ করে বসে আছে। পরশ আসো, আসো কাছে আসো। ওকে নিয়ে আসো..।’ পরশ আসলে তাপসও এগিয়ে গিয়ে ভাইকে জড়িয়ে ধরে কান্না করেন। দুই ভাই ও প্রধানমন্ত্রীর কান্নায় তখন ভারী হয়ে ওঠে পরিবেশ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবার তখন চোখে পানি। এসময় শেখ হাসিনা নিজেকে সামলে নিয়ে বলেন, ‘আজকে ওরা বড় হয়ে গেছে…।’ পরে মঞ্চে উঠে প্রধানমন্ত্রীর পা ছুয়ে সালাম করেন যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ পরশ। শেখ ফজলুল হক মনি ও আরজু মনি দম্পতির দুই সন্তান শেখ ফজলে শামস পরশ ও শেখ ফজলে নূর তাপস। পরশ বর্তমানে যুবলীগের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে। আর শেখ তাপস ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বাংলাদেশ কখনোই শ্রীলঙ্কা হবে না: প্রধানমন্ত্রী

আপডেট সময় : ০৩:৩১:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ অগাস্ট ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছেন, বাংলাদেশ তার উন্নয়নের ধারা থেকে কখনোই শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতিতে পতিত হবে না; বরং সব বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই এগিয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা কথা মনে রাখবেন (দলের নেতা–কর্মীদের) যে বাংলাদেশ কখনোই শ্রীলঙ্কা হবে না, হতে পারে না।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ সভা হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে কেউ কেউ শ্রীলঙ্কা বানাচ্ছে বাংলাদেশকে। আমি আপনাদের একটা কথা জানাতে চাই, যেহেতু আপনারা আমাদের নেতা-কর্মী, তাই আপনাদের এ কথাটা শুনতে ও জবাব দিতে হয়। আপনারা একটা কথা মনে রাখবেন, বাংলাদেশ কখনো শ্রীলঙ্কা হবে না, হতে পারে না।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশের যে পরিস্থিতি, তাতে শ্রীলঙ্কা হয়েই গিয়েছিল ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে বিএনপির শাসনামলে।’
কারণ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সে সময় পাঁচবার দেশ দুর্নীতি চ্যাম্পিয়ন হয়, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বিদ্যুৎ ও পানির জন্য হাহাকার, মানুষের কর্মসংস্থান নাই, তার ওপর জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা, সারা দেশে বোমা হামলা, সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়াকে হত্যাসহ বিভিন্ন জায়গায় গ্রেনেড হামলা। আর তখনই মানুষ আন্দোলনে রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়। কাজেই শ্রীলঙ্কার সেই অবস্থান থেকে তো বাংলাদেশকে উদ্ধার করে নিয়ে আসতে সমর্থ হয়েছি। কাজেই আজকের বাংলাদেশ কেন শ্রীলঙ্কা হবে?’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের যে অর্থনীতির গতিশীলতা, সেটা যেন অব্যাহত থাকে এবং অর্থনৈতিকভাবে আমাদের দেশটা যাতে এগিয়ে যেতে পারে, সে জন্য সুপরিকল্পিত পদক্ষেপ নিয়ে সরকার এগোচ্ছে।’
দেশের সার্বিক উন্নয়ন বিবেচনাতেই তাঁর সরকার উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে থাকে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিরাট অঙ্কের উন্নয়ন প্রকল্প, এটা নিলে পরে বিরাট অঙ্কের একটা কমিশন পাব, সে কথা চিন্তা করে শেখ হাসিনা কোনো প্রকল্প নেয় না।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মান্নাফীর সভাপতিত্বে আলোচনা সঞ্চালনা করেন ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, উত্তর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সাদেক খান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নুরুল আমিন রুহুল, উত্তর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ কাদের খান, মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শহীদ সেরনিয়াবাত প্রমুখ।
পরশ-তাপসকে মঞ্চে ডেকে নিয়ে কাঁদলেন শেখ হাসিনা : ‘পাঁচ বছরের পরশ, তিন বছরের তাপস। বাবা-মায়ের লাশ পড়ে আছে। দুটি বাচ্চা বাবা-মায়ের লাশের কাছে গিয়ে চিৎকার করছে। বাবা ওঠো, বাবা ওঠো..। মা ওঠো, মা ওঠো…। সেদিন কেউ সাড়া দেয়নি।’ এভাবেই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকের বুলেটে নিহত শেখ ফজলুল হক মনি ও তার স্ত্রী আরজু মনি হত্যাকা-ের স্মৃতিচারণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় শোক দিবস স্মরণে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত সভায় বক্তৃতাকালে তিনি এ স্মৃতিচারণ করেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে এখানে পরশ ও তাপস বসে আছে।’ তখন প্রধানমন্ত্রীর চোখ যায় পরশের দিকে। তাপস মঞ্চে থাকলেও পরশ ছিলেন না। তিনি নিচে প্রথম সারিতে বসেছিলেন। তখন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পরশ সামনে চুপ করে বসে আছে। পরশ আসো, আসো কাছে আসো। ওকে নিয়ে আসো..।’ পরশ আসলে তাপসও এগিয়ে গিয়ে ভাইকে জড়িয়ে ধরে কান্না করেন। দুই ভাই ও প্রধানমন্ত্রীর কান্নায় তখন ভারী হয়ে ওঠে পরিবেশ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবার তখন চোখে পানি। এসময় শেখ হাসিনা নিজেকে সামলে নিয়ে বলেন, ‘আজকে ওরা বড় হয়ে গেছে…।’ পরে মঞ্চে উঠে প্রধানমন্ত্রীর পা ছুয়ে সালাম করেন যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ পরশ। শেখ ফজলুল হক মনি ও আরজু মনি দম্পতির দুই সন্তান শেখ ফজলে শামস পরশ ও শেখ ফজলে নূর তাপস। পরশ বর্তমানে যুবলীগের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে। আর শেখ তাপস ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র।