নারী ও শিশু ডেস্ক: বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৩০ লাখ নবজাতকের জন্ম হয়। তাদের মধ্যে প্রায় ১৬ শতাংশই অপরিণত (প্রিম্যাচিউর) অবস্থায় জন্মগ্রহণ করে। এ হার বিশ্বে সর্বোচ্চ। তাই নবজাতকদের মৃত্যু কমাতে ও অপরিণত নবজাতক জন্ম প্রতিরোধে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়ার জন্য মতামত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। শহীদ ডা. মিল্টন হলে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিওন্যাটোলজি বিভাগ ও সেভ দ্য চিলড্রেন আয়োজিত সভায় এই তথ্য জানানো হয়।
সভায় মা ও অপরিণত নবজাতকদের জীবন রক্ষাকারী প্রকল্প সেভিং উইমেন অ্যান্ড প্রিমেচিউর বেবিজ বা সোয়াপের সমাপনী ও কন্টিজেন্সি প্ল্যানিং সংক্রান্ত আলোচনা হয়। এতে জানানো হয়, বাংলাদেশে মা ও নবজাতকদের স্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে কাজ করার ফলে নবজাতকের মৃত্যুহার হ্রাস পেলেও লক্ষ্যমাত্রা পূরণ অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। বিশেষ করে ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতি হাজার জীবিত জন্মে বর্তমানে নবজাতকের মৃত্যুহার ২০ থেকে ১২ জনে কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা। তবে এই প্রকল্পের কার্যক্রমসহ সামগ্রিক প্রচেষ্টায় নবজাতকের মৃত্যুহার ২০ জনে কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। নবজাতকের মৃত্যুর অন্যতম কারণ হলো অপরিণত নবজাতকের জন্ম।
সেভিং উইমেন অ্যান্ড প্রিমেচিউর বেবিজ প্রকল্পকে একটি মহৎ ও সফল প্রকল্প হিসেবে উল্লেখ করে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেন, ‘এই প্রকল্পের আওতায় ১ লাখ ৬৫ হাজার গর্ভবতী মা ও ৮৭ হাজার নবজাতককে সেবা দেওয়া হয়েছে। দেড় হাজার স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের উল্লেখযোগ্য অর্জন হলো ভায়ু বাবল সিপ্যাপ, ফ্যামিলি সেন্টারড কেয়ার, ক্যাঙ্গারু মাদার কেয়ার, নিওনেটালি লাইভ ইত্যাদিকে সফলভাবে প্রয়োগ করা, নবজাতকদের জীবন রক্ষায় ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া। আরও একটি লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো এই পদ্ধতিগুলোর ব্যয় অত্যন্ত কম, ক্ষেত্র বিশেষে ব্যয় নাই বললেই চলে; যা স্বাস্থ্য খাতে গবেষণার ক্ষেত্রেও একটি অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত।’ তিনি বলেন, ‘নবজাতকদের পরিবার কেন্দ্রিক চিকিৎসা (ফ্যামিলি সেন্টারড কেয়ার-এফসিসি) পদ্ধতি তাদের জীবন রক্ষায় বিরাট অবদান রাখছে। এই পদ্ধতিকে বিজ্ঞানস্মত উপায়ে বৃহৎ আকারে কাজে লাগাতে পারলে সমগ্র স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
সভায় অংশগ্রহণকারী সবাই সোয়াপ প্রকল্পের কার্যক্রম অব্যাহত রাখা এবং প্রকল্পের অর্জনমসূহকে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় ও স্বাস্থ্য শিক্ষায় অর্ন্তভুক্ত করার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ