আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহের পাওনা অর্থ নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য আন্তর্জাতিক সালিশি প্রক্রিয়া বেছে নিয়েছে ভারতের বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান আদানি পাওয়ার। সোমবার (৩ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে আদানি পাওয়ার জানিয়েছে, ভারতীয় ব্যবসায়ী গৌতম আদানির নেতৃত্বাধীন এই প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) বকেয়া অর্থ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। এখন তারা সেই বিরোধ মিটিয়ে ফেলতে আন্তর্জাতিক সালিশি প্রক্রিয়া যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
বিবৃতিতে আদানি গ্রুপের এক মুখপাত্র বলেন, নির্দিষ্ট কিছু ব্যয়ের হিসাব নির্ণয় এবং বিল প্রদর্শনের ক্ষেত্রে মতপার্থক্য রয়েছে। তাই উভয় পক্ষই বিরোধ নিষ্পত্তির এই প্রক্রিয়া চালু করতে সম্মত হয়েছে। এতে দ্রুত, মসৃণ ও পারস্পরিকভাবে লাভজনক সমাধানের ব্যাপারে উভয় পক্ষই আত্মবিশ্বাসী।
তবে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফওজুল কবীর খান রয়টার্সকে বলেছেন, আলোচনা এখনো চলছে। আলোচনা শেষ হওয়ার পর প্রয়োজন হলে আমরা আন্তর্জাতিক সালিশির দিকে এগোবো।
২০১৭ সালে আদানি পাওয়ারের ঝাড়খণ্ডের গড্ডায় অবস্থিত কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয়ে ২৫ বছর মেয়াদী একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়।
আদানি পাওয়ার গড্ডায় অবস্থিত কয়লাচালিত ১,৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে, যা বাংলাদেশের মোট বিদ্যুতের প্রায় এক-দশমাংশ চাহিদা পূরণ করে।
গত ডিসেম্বরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে রয়টার্স বলেছিল, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ করেছে। কোম্পানিটি ভারতের সরকারের কাছ থেকে পাওয়া কর-সুবিধার ছাড় বাংলাদেশকে না দেওয়ায় এই অভিযোগ করা হয়।
২০২৪ সালের ৩০ জুন শেষ হওয়া অর্থবছরে বাংলাদেশ আদানিকে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের জন্য ১৪.৮৭ টাকা শুল্ক পরিশোধ করেছে, যা অন্য ভারতীয় কোম্পানির সরবরাহকৃত বিদ্যুতের গড় ৯.৫৭ টাকার চেয়ে বেশি।
গত সপ্তাহে আদানি পাওয়ার বলেছিল, বাংলাদেশের কাছ থেকে পাওনা অর্থের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে এসেছে। গত মে মাসে আদানি পাওয়ারের বকেয়ার পরিমাণ প্রায় ৯০০ মিলিয়ন ডলারে নেমে আসে; যা চলতি বছরের শুরুতে প্রায় ২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছিল। বর্তমানে বাংলাদেশের কাছে আদানির বকেয়ার পরিমাণ প্রায় ১৫ দিনের শুল্কের সমান।
বিবৃতিতে কোম্পানিটি আরো বলেছে, আদানি পাওয়ার বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশে নির্ভরযোগ্য, সাশ্রয়ী ও উচ্চমানের বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখবে।
এসি/আপ্র/০৫/১১/২০২৫



















