ঢাকা ০৫:০৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
এশিয়া কাপ ক্রিকেট

বাংলাদেশের ব্যাটিং ব্যর্থতায় ফাইনালে উঠলো পাকিস্তান

  • আপডেট সময় : ০১:০১:৩৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ১৫ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

ক্রীড়া ডেস্ক: পুরো ম্যাচজুড়ে মনে হচ্ছিলো, অনায়াসেই পাকিস্তানকে হারিয়ে এশিয়া কাপের ফাইনালে পৌঁছে যাবে বাংলাদেশ। কিন্তু ব্যাটারদের নিদারুণ ব্যর্থতা, সুবর্ণ সুযোগ থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশকে ফাইনালে পৌঁছাতে দিলো না।

১৩৬ রানের লক্ষ্য পেরোলেই স্বপ্নের ফাইনাল। আরাধ্য শিরোপার হাতছানি। দুবাইয়ের উইকেটে পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণের সামনে কিছুটা চ্যালেঞ্জিং হলেও বলা যায় হাতের নাগালেই ছিল। দেখেশুনে খেললেই জয় সুনিশ্চিত। এমন ম্যাচে বাংলাদেশের ব্যাটাররা যেন দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিংয়ে কে কাকে ছাড়াবেন সে প্রতিযোগিতায় নামলেন।

পাকিস্তানের করা ১৩৫ রান তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশ থামলো ৯ উইকেট হারিয়ে ১২৪ রানে। টাইগারদের ১১ রানে হারিয়ে এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতের মুখোমুভি হলো পাকিস্তানই।

উইকেট হারানোর মিছিলে শেষ দিকে সবার ভরসা ছিল শামীমকে নিয়ে। অথচ শাহিন আফ্রিদির করা বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে হুসেইন তালাতকে ক্যাচিং প্র্যাকটিস করালেন এই ব্যাটার। এরপরই কার্যত সব আশা শেষ হয়ে যায়। যদিও শেষ ওভারে রিশাদ কিছুটা ঝলক দেখিয়েছেন। তবে সেটিও তার সতীর্থ ব্যাটারদের ব্যর্থতা ঢাকতে যথেষ্ট হলো না।

এ জয়ে ভারতের পর এবারের এশিয়া কাপের ফাইনালে পৌঁছে গেছে পাকিস্তান। এক আসরে তৃতীয়বারের মতো মুখোমুখি হবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই দল। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর হবে শিরোপার লড়াই।

ক্রিকেটে একটি কথা বেশ প্রচলিত। ক্যাচ মিস তো ম্যাচ মিস। বাংলাদেশ পাকিস্তানকে শুরুতে যেভাবে চেপে ধরেছিলো, শেষে সেভাবে চাপটা ধরে রাখতে পারেনি। অনেকগুলো ক্যাচ মিস হয়েছে। মিস করেছে রানআউট। এমনকি মিস ফিল্ডিংয়ের কারণে বাউন্ডারিও ঠেকাতে পারেনি কয়েকটা। যার ফলশ্রুতিতে, যেখানে পাকিস্তানের রান ১০০‘ও হচ্ছিল না, সেখানে তারা পৌঁছে গেলো ১৩৫ রানে।

দুবাইয়ের উইকেটে ১৩৫ রান খুব বেশি বড় ছিল না। অনায়াসেই জিততে পারতো বাংলাদেশ; কিন্তু বড় ম্যাচের চাপ নিতে হয়তো এই দলটা শিখতে পারেনি। অনভিজ্ঞ অধিনায়ক, তরুণ ব্যাটার- সব মিলিয়ে একটি বড় ইনিংস খেলে আসার মানসিকতা সম্পন্ন একজন ব্যাটারের খুব অভাব বোধ হয়েছে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে।

যে সাইফ হাসানকে মনে হচ্ছিল বেশ নির্ভরযোগ্য, চোখ বন্ধ করে তার ওপর আস্থা রাখা যায়, সেই সাইফ হাসান গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে এসে হতাশ করলেন। ১৫ বলে ১৮ রান করে আউট হয়ে গেলেন তিনি। অথচ, ভারতের মত দলের বিপক্ষে তিনি করেছিলেন ৬৯ রান।

পারভেজ হোসেন ইমনই দুর্দশার সূচনাটা করেছিলেন। ১৩৬ রান। লক্ষ্যটা খুব বেশি বড় না। একটু রয়ে-সয়ে খেলে উইকেটে সেট হওয়া প্রয়োজন ছিল তার; কিন্তু প্রথম ওভারেই অযাচিতভাবে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ আউট হলেন। সবচেয়ে বড় কথা, এশিয়া কাপের আগে পাওয়ার হিটিং কোচের অধীনে অনেক বড় বড় শট খেলা যে অনুশীলন হয়েছিল, তার ছিটেফোটাও দেখা যায়নি আরব আমিরাতের চলমান এশিয়া কাপের কোনো ম্যাচেই।

তাওহিদ হৃদয় বরাবরের মতোই হতাশ করলেন। ১০ বল খেলে তিনি আইট হলেন মাত্র ৫ রান করে। একে তো বল নষ্ট করলেন, তারওপর আউট হলেন মাত্র ৫ রান করে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একটি ইনিংস ছাড়া পুরো এশিয়া কাপেই তিনি ব্যর্থ। শেখ মেহেদীকে চারে নামিয়ে কোনো লাভই হলো না। ১০ বলে ১১ রান করে বিদায় নেন তিনি। একটি ছক্কা মেরেছিলেন তিনি।

সবচেয়ে বেশি হতাশ করলেন নুরুল হাসান সোহান। এমনিতেই সুযোগ পান না। যেটুকু পান, কাজে লাগিয়ে নিজের অবস্থান পোক্ত করবেন, তা করেন না। ২১ বল খেলে ১৬ রান করলেন তিনি। ছক্কা মারতে গিয়ে যে বলে আউট হলেন, শট খেলার পর সোহান নিজেই সন্দিহান ছিলেন বলটা বাউন্ডারি অব্দি যাবে কি না।

শামীম পাটোয়ারীর সামনে সুযোগ ছিল ম্যাচ জিতিয়ে নায়ক হওয়ার। কিন্তু শাহিন শাহ আফ্রিাদির বলে ৩০ রান করে আউট হন তিনি। শামীমই সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। তানজিম সাকিব ১১ বলে করেন ১০ রান। তবে শেষ মুহূর্তে রিশাদ ২টি বাউন্ডারি ও ১টি ছক্কা এবং মোস্তাফিজ ১টি বাউন্ডারি মেরে ম্যাচ জমিয়ে দেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনো লাভ হয়নি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর———–

পাকিস্তান: ১৩৫/৮, ২০ ওভার (মোহাম্মদ হারিস ৩১, মোহাম্মদ নওয়াজ ২৫; তাসকিন ৩/২৮, রিশাদ ২/১৮)।

বাংলাদেশ: ১২৪/৯, ২০ ওভার (শামীম পাটোয়ারী ৩০, সাইফ ১৮, রিশাদ ১৬*; শাহিন আফ্রিদি ৩/১৭, হারিস ৩/৩৩)।

ফল: পাকিস্তান ১১ রানে জয়ী। ম্যাচ সেরা: শাহিন আফ্রিদি।

সানা/আপ্র/২৬/০৯/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

এশিয়া কাপ ক্রিকেট

বাংলাদেশের ব্যাটিং ব্যর্থতায় ফাইনালে উঠলো পাকিস্তান

আপডেট সময় : ০১:০১:৩৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ক্রীড়া ডেস্ক: পুরো ম্যাচজুড়ে মনে হচ্ছিলো, অনায়াসেই পাকিস্তানকে হারিয়ে এশিয়া কাপের ফাইনালে পৌঁছে যাবে বাংলাদেশ। কিন্তু ব্যাটারদের নিদারুণ ব্যর্থতা, সুবর্ণ সুযোগ থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশকে ফাইনালে পৌঁছাতে দিলো না।

১৩৬ রানের লক্ষ্য পেরোলেই স্বপ্নের ফাইনাল। আরাধ্য শিরোপার হাতছানি। দুবাইয়ের উইকেটে পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণের সামনে কিছুটা চ্যালেঞ্জিং হলেও বলা যায় হাতের নাগালেই ছিল। দেখেশুনে খেললেই জয় সুনিশ্চিত। এমন ম্যাচে বাংলাদেশের ব্যাটাররা যেন দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিংয়ে কে কাকে ছাড়াবেন সে প্রতিযোগিতায় নামলেন।

পাকিস্তানের করা ১৩৫ রান তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশ থামলো ৯ উইকেট হারিয়ে ১২৪ রানে। টাইগারদের ১১ রানে হারিয়ে এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতের মুখোমুভি হলো পাকিস্তানই।

উইকেট হারানোর মিছিলে শেষ দিকে সবার ভরসা ছিল শামীমকে নিয়ে। অথচ শাহিন আফ্রিদির করা বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে হুসেইন তালাতকে ক্যাচিং প্র্যাকটিস করালেন এই ব্যাটার। এরপরই কার্যত সব আশা শেষ হয়ে যায়। যদিও শেষ ওভারে রিশাদ কিছুটা ঝলক দেখিয়েছেন। তবে সেটিও তার সতীর্থ ব্যাটারদের ব্যর্থতা ঢাকতে যথেষ্ট হলো না।

এ জয়ে ভারতের পর এবারের এশিয়া কাপের ফাইনালে পৌঁছে গেছে পাকিস্তান। এক আসরে তৃতীয়বারের মতো মুখোমুখি হবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই দল। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর হবে শিরোপার লড়াই।

ক্রিকেটে একটি কথা বেশ প্রচলিত। ক্যাচ মিস তো ম্যাচ মিস। বাংলাদেশ পাকিস্তানকে শুরুতে যেভাবে চেপে ধরেছিলো, শেষে সেভাবে চাপটা ধরে রাখতে পারেনি। অনেকগুলো ক্যাচ মিস হয়েছে। মিস করেছে রানআউট। এমনকি মিস ফিল্ডিংয়ের কারণে বাউন্ডারিও ঠেকাতে পারেনি কয়েকটা। যার ফলশ্রুতিতে, যেখানে পাকিস্তানের রান ১০০‘ও হচ্ছিল না, সেখানে তারা পৌঁছে গেলো ১৩৫ রানে।

দুবাইয়ের উইকেটে ১৩৫ রান খুব বেশি বড় ছিল না। অনায়াসেই জিততে পারতো বাংলাদেশ; কিন্তু বড় ম্যাচের চাপ নিতে হয়তো এই দলটা শিখতে পারেনি। অনভিজ্ঞ অধিনায়ক, তরুণ ব্যাটার- সব মিলিয়ে একটি বড় ইনিংস খেলে আসার মানসিকতা সম্পন্ন একজন ব্যাটারের খুব অভাব বোধ হয়েছে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে।

যে সাইফ হাসানকে মনে হচ্ছিল বেশ নির্ভরযোগ্য, চোখ বন্ধ করে তার ওপর আস্থা রাখা যায়, সেই সাইফ হাসান গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে এসে হতাশ করলেন। ১৫ বলে ১৮ রান করে আউট হয়ে গেলেন তিনি। অথচ, ভারতের মত দলের বিপক্ষে তিনি করেছিলেন ৬৯ রান।

পারভেজ হোসেন ইমনই দুর্দশার সূচনাটা করেছিলেন। ১৩৬ রান। লক্ষ্যটা খুব বেশি বড় না। একটু রয়ে-সয়ে খেলে উইকেটে সেট হওয়া প্রয়োজন ছিল তার; কিন্তু প্রথম ওভারেই অযাচিতভাবে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ আউট হলেন। সবচেয়ে বড় কথা, এশিয়া কাপের আগে পাওয়ার হিটিং কোচের অধীনে অনেক বড় বড় শট খেলা যে অনুশীলন হয়েছিল, তার ছিটেফোটাও দেখা যায়নি আরব আমিরাতের চলমান এশিয়া কাপের কোনো ম্যাচেই।

তাওহিদ হৃদয় বরাবরের মতোই হতাশ করলেন। ১০ বল খেলে তিনি আইট হলেন মাত্র ৫ রান করে। একে তো বল নষ্ট করলেন, তারওপর আউট হলেন মাত্র ৫ রান করে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একটি ইনিংস ছাড়া পুরো এশিয়া কাপেই তিনি ব্যর্থ। শেখ মেহেদীকে চারে নামিয়ে কোনো লাভই হলো না। ১০ বলে ১১ রান করে বিদায় নেন তিনি। একটি ছক্কা মেরেছিলেন তিনি।

সবচেয়ে বেশি হতাশ করলেন নুরুল হাসান সোহান। এমনিতেই সুযোগ পান না। যেটুকু পান, কাজে লাগিয়ে নিজের অবস্থান পোক্ত করবেন, তা করেন না। ২১ বল খেলে ১৬ রান করলেন তিনি। ছক্কা মারতে গিয়ে যে বলে আউট হলেন, শট খেলার পর সোহান নিজেই সন্দিহান ছিলেন বলটা বাউন্ডারি অব্দি যাবে কি না।

শামীম পাটোয়ারীর সামনে সুযোগ ছিল ম্যাচ জিতিয়ে নায়ক হওয়ার। কিন্তু শাহিন শাহ আফ্রিাদির বলে ৩০ রান করে আউট হন তিনি। শামীমই সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। তানজিম সাকিব ১১ বলে করেন ১০ রান। তবে শেষ মুহূর্তে রিশাদ ২টি বাউন্ডারি ও ১টি ছক্কা এবং মোস্তাফিজ ১টি বাউন্ডারি মেরে ম্যাচ জমিয়ে দেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনো লাভ হয়নি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর———–

পাকিস্তান: ১৩৫/৮, ২০ ওভার (মোহাম্মদ হারিস ৩১, মোহাম্মদ নওয়াজ ২৫; তাসকিন ৩/২৮, রিশাদ ২/১৮)।

বাংলাদেশ: ১২৪/৯, ২০ ওভার (শামীম পাটোয়ারী ৩০, সাইফ ১৮, রিশাদ ১৬*; শাহিন আফ্রিদি ৩/১৭, হারিস ৩/৩৩)।

ফল: পাকিস্তান ১১ রানে জয়ী। ম্যাচ সেরা: শাহিন আফ্রিদি।

সানা/আপ্র/২৬/০৯/২০২৫