প্রত্যাশা ডেস্ক: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ছয় রাজনৈতিক নেতার উপস্থিতি বিশ্বকে জানিয়ে দিয়েছে, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য প্রস্তুত। আজ তারা (ছয় নেতা) একসঙ্গে বসে বিশ্বকে বার্তা দিয়েছেন, আমরা গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য প্রস্তুত আছি।
গত শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টার জাতিসংঘ ভাষণের সময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবির, জামায়াতে ইসলামী নায়েবে আমীর সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, জামায়াত নেতা ড. নকিবুর রহমান, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন এবং এনসিপির প্রথম সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন।
শফিকুল আলম বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ হলো, সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন, জুলাই-আগস্টে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড ও ব্যাংক লুটের বিচার সম্পন্ন এবং নির্বাচন আয়োজন করা। প্রধান উপদেষ্টার ভাষণকে যুগান্তকারী আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, সংস্কার উদ্যোগগুলোর অনেকগুলো ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। প্রেস সচিব জানান, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য নির্বাচন আয়োজন করতে গিয়ে প্রধান উপদেষ্টা তিন প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতাদের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন ও অন্যান্য কর্মসূচিতে তার সঙ্গে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানান। তাদের উপস্থিতি বিশ্বকে এ বার্তা দিয়েছে যে, তারা ঐক্যবদ্ধ এবং একসঙ্গে নির্বাচনে যেতে প্রস্তুত। প্রেস সচিব বলেন, এটি শুধু দেশের জন্যই নয়, বরং গোটা বিশ্বের জন্যও একটি বড় বার্তা ছিল। বাংলাদেশ পুরোপুরি গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য প্রস্তুত। এটিই ছিল মূল বার্তা। সূত্র: বাসস
নেতানিয়াহুর বক্তব্যের সময় বাংলাদেশের উপস্থিতি নিয়ে গুজব: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ছবিতে দাবি করা হয়েছে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ভাষণের সময় বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং ছয় রাজনৈতিক প্রতিনিধি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের হলের ভেতরে বসেছিলেন। তবে যাচাই করে দেখা গেছে, এই দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা। শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং ফ্যাক্টস এ তথ্য জানায়।
প্রেস উইং জানায়, ‘ড. ইউনূস এবং তার প্রতিনিধি দলের বসে থাকা ছবিটি ইউএনজিএ’র ৮০তম অধিবেশনে তার (ড. ইউনূস) নিজের ভাষণ দেওয়ার কয়েক মুহূর্ত আগে তোলা হয়েছিল। এটি মূলত বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টার অফিসিয়াল অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা হয়েছিল।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সদর দফতরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনের সাধারণ বিতর্কে তার বক্তব্য দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন বলে প্রেস উইং ফ্যাক্টস উল্লেখ করে।
প্রেস উইং আরো জানায়, এদিকে, নেতানিয়াহু মঞ্চে ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য অনেক দেশের শতাধিক কূটনীতিক গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন এবং গণহত্যার প্রতিবাদে চেম্বার থেকে বেরিয়ে আসেন। এ সময় বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলও চেম্বার ত্যাগ করে। অন্য কথায়, নেতানিয়াহুর ভাষণের সময় তারা উপস্থিত ছিলেন না। এএফপি এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থার প্রকাশিত ছবিগুলো এটি নিশ্চিত করে- নেতানিয়াহুর ভাষণের সময় বাংলাদেশের নেমপ্লেটের আসনটি খালি ছিল।
প্রেস উইং জানায়, তাই প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এবং ছয় রাজনৈতিক প্রতিনিধির যে ছবি প্রচারিত হচ্ছে, তা নেতানিয়াহুর বক্তব্যের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্টে ছবিটির অপব্যবহার করে মিথ্যা দাবি করা হয়েছে যে, বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল ওয়াকআউট করেনি। যাচাইকৃত প্রমাণ থেকে জানা যায়, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের সময় তারা চেম্বারে উপস্থিত ছিলেন না।
সানা/আপ্র/২৭/০৯/২০২৫