ঢাকা ০৬:৫৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বাংলাদেশের খেলনা শিল্প রপ্তানিতে নতুন সম্ভাবনা

  • আপডেট সময় : ০৪:৫৫:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৭ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের খেলনা শিল্পে রফতানির সম্ভাবনা বিপুল হলেও নীতিগত সহায়তা ও প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর ঘাটতির কারণে তা কাজে লাগানো যাচ্ছে না বলে মত দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ও ব্যবসায়ীরা। এ জন্য খেলনা শিল্পের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।

মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মতিঝিলে ডিসিসিআই অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‘রফতানি বহুমুখীকরণ: খেলনা উৎপাদন শিল্পে উদ্ভাবন এবং রফতানির সম্ভাবনা’ শীর্ষক ফোকাস গ্রুপের আলোচনায় এ মত উঠে আসে।

অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘বিশ্ব খেলনা বাজারের আকার ১০২.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ২০৩০ সালে ১৫০ বিলিয়ন ছাড়াবে। অথচ বাংলাদেশ এ খাতে রফতানি করছে মাত্র ৭৭ মিলিয়ন ডলার। নীতি সহায়তার অভাব, কাঁচামালে উচ্চ শুল্ক, বন্ড সুবিধার অনুপস্থিতি, অবকাঠামোর ঘাটতি এবং টেস্টিং সুবিধার সংকটের কারণে সম্ভাবনা কাজে লাগানো সম্ভব হচ্ছে না।’

সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন— জাতীয় রাজস্ব বোর্ড- এনবিআরের সদস্য (কাস্টমস: নীতি ও আইটি) মুহাম্মদ মুবিনুল কবীর এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনের ডেপুটি ডেভেলপমেন্ট ডিরেক্টর মার্টিন ডওসন।

এনবিআর সদস্য মুবিনুল কবীর বলেন, ‘তৈরি পোশাকের বাইরে সম্ভাবনাময় খাতগুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে।’ তিনি জানান, রাজস্ব বোর্ড নীতিমালা সহজ করা ও বন্ড সুবিধা প্রদানের বিষয়ে কাজ করছে।’ তবে তিনি উদ্যোক্তাদের শুধু প্রণোদনার দিকে না তাকিয়ে নিজেদের দক্ষতা ও উদ্ভাবনী সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন।

ব্রিটিশ হাইকমিশনের মার্টিন ডওসন বলেন, ‘বাংলাদেশে উৎপাদিত খেলনার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিবন্ধকতা দূর করা গেলে ব্রিটেনে এখাতের রফতানি বহুগুণে বাড়বে। ব্রিটিশ সরকার সম্প্রতি রুলস অব অরিজিন শর্ত সহজ করার উদ্যোগ নিয়েছে, যা বাংলাদেশি রফতানিকারকদের জন্য সহায়ক হবে।’

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ প্লাস্টিক গুডস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও জালালাবাদ পলিমারের এমডি শামীম আহমেদ। তিনি জানান, দেশে প্রায় ৫ হাজার প্লাস্টিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যার মধ্যে ২৫০টি খেলনা উৎপাদন করছে এবং এখাতে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ কর্মরত। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১৫.২৩ মিলিয়ন ডলার রফতানি থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৭ মিলিয়নে। তবে পণ্যের মান, ডিজাইন উদ্ভাবন ও অবকাঠামো উন্নয়নে পিছিয়ে থাকায় শিল্পটি এগোতে পারছে না।

নির্ধারিত আলোচনায় অংশ নেন— শিল্প মন্ত্রণালয়ের ড. অশোক কুমার রায়, ট্যারিফ কমিশনের জয়েন্ট চিফ মো. মামুন-উর রশিদ আসকারী, গোল্ডেন সন লিমিটেডের এমডি বেলাল আহমেদ, কাপকেক এক্সপোর্টার্স লিমিটেডের এমডি ইয়াসির ওবায়েদ, প্রেমিয়াফ্লেক্স প্লাস্টিকসের ডেপুটি ইডি আনিসুর রহমানসহ অনেকে। আলোচকরা খেলনা শিল্পের নীতিমালা প্রণয়ন, কাঁচামালে শুল্ক হ্রাস, গবেষণা কার্যক্রম জোরদার, মানবসম্পদ উন্নয়ন, মেধাস্বত্ব সুরক্ষা, এবং আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশাধিকার সহজীকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

অনুষ্ঠানে ডিসিসিআই’র ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি রাজিব এইচ চৌধুরী, সহ-সভাপতি মো. সালিম সোলায়মান ও পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এসি/আপ্র/২৩/০৯/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বাংলাদেশের খেলনা শিল্প রপ্তানিতে নতুন সম্ভাবনা

আপডেট সময় : ০৪:৫৫:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের খেলনা শিল্পে রফতানির সম্ভাবনা বিপুল হলেও নীতিগত সহায়তা ও প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর ঘাটতির কারণে তা কাজে লাগানো যাচ্ছে না বলে মত দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ও ব্যবসায়ীরা। এ জন্য খেলনা শিল্পের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।

মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মতিঝিলে ডিসিসিআই অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‘রফতানি বহুমুখীকরণ: খেলনা উৎপাদন শিল্পে উদ্ভাবন এবং রফতানির সম্ভাবনা’ শীর্ষক ফোকাস গ্রুপের আলোচনায় এ মত উঠে আসে।

অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘বিশ্ব খেলনা বাজারের আকার ১০২.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ২০৩০ সালে ১৫০ বিলিয়ন ছাড়াবে। অথচ বাংলাদেশ এ খাতে রফতানি করছে মাত্র ৭৭ মিলিয়ন ডলার। নীতি সহায়তার অভাব, কাঁচামালে উচ্চ শুল্ক, বন্ড সুবিধার অনুপস্থিতি, অবকাঠামোর ঘাটতি এবং টেস্টিং সুবিধার সংকটের কারণে সম্ভাবনা কাজে লাগানো সম্ভব হচ্ছে না।’

সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন— জাতীয় রাজস্ব বোর্ড- এনবিআরের সদস্য (কাস্টমস: নীতি ও আইটি) মুহাম্মদ মুবিনুল কবীর এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনের ডেপুটি ডেভেলপমেন্ট ডিরেক্টর মার্টিন ডওসন।

এনবিআর সদস্য মুবিনুল কবীর বলেন, ‘তৈরি পোশাকের বাইরে সম্ভাবনাময় খাতগুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে।’ তিনি জানান, রাজস্ব বোর্ড নীতিমালা সহজ করা ও বন্ড সুবিধা প্রদানের বিষয়ে কাজ করছে।’ তবে তিনি উদ্যোক্তাদের শুধু প্রণোদনার দিকে না তাকিয়ে নিজেদের দক্ষতা ও উদ্ভাবনী সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন।

ব্রিটিশ হাইকমিশনের মার্টিন ডওসন বলেন, ‘বাংলাদেশে উৎপাদিত খেলনার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিবন্ধকতা দূর করা গেলে ব্রিটেনে এখাতের রফতানি বহুগুণে বাড়বে। ব্রিটিশ সরকার সম্প্রতি রুলস অব অরিজিন শর্ত সহজ করার উদ্যোগ নিয়েছে, যা বাংলাদেশি রফতানিকারকদের জন্য সহায়ক হবে।’

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ প্লাস্টিক গুডস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও জালালাবাদ পলিমারের এমডি শামীম আহমেদ। তিনি জানান, দেশে প্রায় ৫ হাজার প্লাস্টিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যার মধ্যে ২৫০টি খেলনা উৎপাদন করছে এবং এখাতে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ কর্মরত। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১৫.২৩ মিলিয়ন ডলার রফতানি থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৭ মিলিয়নে। তবে পণ্যের মান, ডিজাইন উদ্ভাবন ও অবকাঠামো উন্নয়নে পিছিয়ে থাকায় শিল্পটি এগোতে পারছে না।

নির্ধারিত আলোচনায় অংশ নেন— শিল্প মন্ত্রণালয়ের ড. অশোক কুমার রায়, ট্যারিফ কমিশনের জয়েন্ট চিফ মো. মামুন-উর রশিদ আসকারী, গোল্ডেন সন লিমিটেডের এমডি বেলাল আহমেদ, কাপকেক এক্সপোর্টার্স লিমিটেডের এমডি ইয়াসির ওবায়েদ, প্রেমিয়াফ্লেক্স প্লাস্টিকসের ডেপুটি ইডি আনিসুর রহমানসহ অনেকে। আলোচকরা খেলনা শিল্পের নীতিমালা প্রণয়ন, কাঁচামালে শুল্ক হ্রাস, গবেষণা কার্যক্রম জোরদার, মানবসম্পদ উন্নয়ন, মেধাস্বত্ব সুরক্ষা, এবং আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশাধিকার সহজীকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

অনুষ্ঠানে ডিসিসিআই’র ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি রাজিব এইচ চৌধুরী, সহ-সভাপতি মো. সালিম সোলায়মান ও পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এসি/আপ্র/২৩/০৯/২০২৫