ঢাকা ০৬:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫

বাংলাদেশি পোশাকের দাম যুক্তরাষ্ট্র কমানোয় ক্ষতিগ্রস্ত মালিকরা

  • আপডেট সময় : ০৫:৫৪:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ১০২ বার পড়া হয়েছে

অর্থনৈতিক ডেস্ক: বাংলাদেশের পোশাকশিল্প বর্তমানে একটি চরম সংকটের মুখোমুখি। গ্যাস ও বিদ্যুতের ঘাটতি, দুর্বল ব্যাংকিং ব্যবস্থা, শ্রমিক অসন্তোষ এবং উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির ফলে দেশের পোশাক কারখানাগুলো বড় ধরনের সমস্যায় পড়েছে। মুনাফা প্রায় সীমাতে চলে এসেছে এবং এই পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীরা গুরুতর আর্থিক চাপের সম্মুখীন হচ্ছেন।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতা প্রতিষ্ঠানরা বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের দাম ৮ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দিয়েছে। ফলে অতীতে ভালো অবস্থানে থাকা অনেক কারখানা এখন সংকটকালীন পরিস্থিতির মুখোমুখি।

ব্যবসায়ীদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র হলো বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির প্রধান গন্তব্য; যেখানে বাংলাদেশ মোট পোশাক রপ্তানি আয়ের ২০ থেকে ২২ শতাংশ পায়। কিন্তু বর্তমানে এই মার্কেটে চ্যালেঞ্জের নিদর্শন স্পষ্ট। ;া এখাতের ব্যবসায়ীদের সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ দেখা দিয়েছে।
বিশ্ববাজারের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে তৈরি পাঁচ ধরনের পোশাকের দাম এখন ৩.৮ থেকে ৭.৭ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে। বিশেষ করে, ছেলেদের কটন ট্রাউজার, কটন শার্ট, এবং কটন নিট টি-শার্টের দাম উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। এই মূল্যহ্রাসের ফলে বাংলাদেশি পোশাকের রপ্তানি আয়ও কমে গেছে, গত বছর যেখানে ৬.৩৫ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি হয়েছে, সেখানে চলতি বছরে তা কমে ৬.১৪ বিলিয়ন ডলারে এসে দাঁড়িয়েছে।
ব্যবসায়ীদের মতে যতদিন না পোশাকের দাম বৃদ্ধি পাবে, ততদিন এই সংকট কাটানো সম্ভব হবে না। নতুন মজুরি কাঠামো বাস্তবায়ন এবং ৯ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট দেওয়ার কারণে অনেক কারখানা শ্রমিকদের বেতন দিতে সমস্যায় পড়ছে এবং কিছু কারখানা বন্ধ হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেছেন, ভিয়েতনামের পণ্য শুল্ক কাঠামো বাংলাদেশের তুলনায় অনেক কম, ফলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তারা ভালো সুবিধা পাচ্ছে। তিনি জানান, পোশাকের দাম কমানোর কারণে আমাদের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে; তা বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

ডেনিম এক্সপার্টস লিমিটেডের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল উল্লেখ করেছেন, পোশাকের দাম কমানোর ফলে শ্রমিকদের মজুরি কাঠামো বাস্তবায়ন করা এখন কঠিন হয়ে পড়েছে।
গত বছর সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে পোশাক শ্রমিকদের জন্য মজুরি ৮ হাজার থেকে ১২ হাজার ৫০০ টাকায় নির্ধারণ করা হয় এবং নভেম্বরে ৯ শতাংশ বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট ঘোষণা করা হয়েছে। তবে শ্রমিক সংগঠনগুলো দাবি করছে, বাংলাদেশের পোশাক শ্রমিকদের মজুরি প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় এখনো খুব কম।
সম্ভবত পরিস্থিতির উন্নতির জন্য সরকারের পক্ষ থেকে আরও সহায়ক পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজন। অন্যথায় নতুন মজুরি কাঠামো এবং ঘোষিত ইনক্রিমেন্ট কার্যকর করা কঠিন হয়ে পড়বে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ফ্যাসিস্ট সন্ত্রাসীদের দমনে শুরু হচ্ছে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ ফেইজ-২

বাংলাদেশি পোশাকের দাম যুক্তরাষ্ট্র কমানোয় ক্ষতিগ্রস্ত মালিকরা

আপডেট সময় : ০৫:৫৪:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

অর্থনৈতিক ডেস্ক: বাংলাদেশের পোশাকশিল্প বর্তমানে একটি চরম সংকটের মুখোমুখি। গ্যাস ও বিদ্যুতের ঘাটতি, দুর্বল ব্যাংকিং ব্যবস্থা, শ্রমিক অসন্তোষ এবং উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির ফলে দেশের পোশাক কারখানাগুলো বড় ধরনের সমস্যায় পড়েছে। মুনাফা প্রায় সীমাতে চলে এসেছে এবং এই পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীরা গুরুতর আর্থিক চাপের সম্মুখীন হচ্ছেন।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতা প্রতিষ্ঠানরা বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের দাম ৮ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দিয়েছে। ফলে অতীতে ভালো অবস্থানে থাকা অনেক কারখানা এখন সংকটকালীন পরিস্থিতির মুখোমুখি।

ব্যবসায়ীদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র হলো বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির প্রধান গন্তব্য; যেখানে বাংলাদেশ মোট পোশাক রপ্তানি আয়ের ২০ থেকে ২২ শতাংশ পায়। কিন্তু বর্তমানে এই মার্কেটে চ্যালেঞ্জের নিদর্শন স্পষ্ট। ;া এখাতের ব্যবসায়ীদের সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ দেখা দিয়েছে।
বিশ্ববাজারের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে তৈরি পাঁচ ধরনের পোশাকের দাম এখন ৩.৮ থেকে ৭.৭ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে। বিশেষ করে, ছেলেদের কটন ট্রাউজার, কটন শার্ট, এবং কটন নিট টি-শার্টের দাম উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। এই মূল্যহ্রাসের ফলে বাংলাদেশি পোশাকের রপ্তানি আয়ও কমে গেছে, গত বছর যেখানে ৬.৩৫ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি হয়েছে, সেখানে চলতি বছরে তা কমে ৬.১৪ বিলিয়ন ডলারে এসে দাঁড়িয়েছে।
ব্যবসায়ীদের মতে যতদিন না পোশাকের দাম বৃদ্ধি পাবে, ততদিন এই সংকট কাটানো সম্ভব হবে না। নতুন মজুরি কাঠামো বাস্তবায়ন এবং ৯ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট দেওয়ার কারণে অনেক কারখানা শ্রমিকদের বেতন দিতে সমস্যায় পড়ছে এবং কিছু কারখানা বন্ধ হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেছেন, ভিয়েতনামের পণ্য শুল্ক কাঠামো বাংলাদেশের তুলনায় অনেক কম, ফলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তারা ভালো সুবিধা পাচ্ছে। তিনি জানান, পোশাকের দাম কমানোর কারণে আমাদের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে; তা বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

ডেনিম এক্সপার্টস লিমিটেডের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল উল্লেখ করেছেন, পোশাকের দাম কমানোর ফলে শ্রমিকদের মজুরি কাঠামো বাস্তবায়ন করা এখন কঠিন হয়ে পড়েছে।
গত বছর সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে পোশাক শ্রমিকদের জন্য মজুরি ৮ হাজার থেকে ১২ হাজার ৫০০ টাকায় নির্ধারণ করা হয় এবং নভেম্বরে ৯ শতাংশ বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট ঘোষণা করা হয়েছে। তবে শ্রমিক সংগঠনগুলো দাবি করছে, বাংলাদেশের পোশাক শ্রমিকদের মজুরি প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় এখনো খুব কম।
সম্ভবত পরিস্থিতির উন্নতির জন্য সরকারের পক্ষ থেকে আরও সহায়ক পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজন। অন্যথায় নতুন মজুরি কাঠামো এবং ঘোষিত ইনক্রিমেন্ট কার্যকর করা কঠিন হয়ে পড়বে।