ঢাকা ১১:৩০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বাংলাদেশিদের আপাতত চিকিৎসা-আপৎকালীন ভারতীয় ভিসা

  • আপডেট সময় : ০৪:৪৩:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ৮৫ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক : বাংলাদেশের পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষপটে আপৎকালীন ও চিকিৎসার প্রয়োজন ছাড়া আপাতত বাংলাদেশি নাগরিকদের অন্য কোনো ভিসা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করবে দেশটি। গত রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সিদ্ধান্তের বিষয়টি জানিয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, আপাতত বাংলাদেশিদের চিকিৎসার এবং জরুরি প্রয়োজনে ভিসা দেওয়া হচ্ছে। যখন বাংলাদেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, তখন পূর্ণমাত্রায় কাজ শুরু হবে এবং ভিসা প্রদানও স্বাভাবিক হবে। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসা পরিষেবা বন্ধ করে দেয় ভারত। বাংলাদেশের অশান্ত পরিস্থিতিতে ভারতীয় দূতাবাসের বহু কর্মীকে ভারতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। পরে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে ভারতীয় ভিসা কেন্দ্রগুলো পুনরায় কাজ শুরু করে। তবে দিনের পর দিন অপেক্ষা করে ভিসা না পেয়ে ঢাকার ভারতীয় ভিসা প্রদান কেন্দ্রে বিক্ষোভও দেখান অনেকে। এর জেরে ফের ব্যাহত হয় কাজ। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের নাগরিকদের ভিসার আবেদনের ক্ষেত্রে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করলো ভারত।
এদিকে ভারতীয় দূতাবাস এবং ভিসা কেন্দ্রগুলোতে বাড়তি নিরাপত্তা দেওয়ার পর সেপ্টেম্বর থেকে আবার জরুরি ভিত্তিতে পরিষেবা দেওয়া শুরু হয়। ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্র জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ভিসা সেন্টার খুলছে ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, সিলেট এবং খুলনায়। তবে এখনই সকলে ভিসা পাবেন না। কেবলমাত্র যারা চিকিৎসার জন্য আসবেন, তাদেরই জরুরি ভিত্তিতে দেওয়া হবে অগ্রাধিকার। এক বিজ্ঞপ্তিতে ভারত জানিয়েছে, বাংলাদেশের পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক নয়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার ভিসা প্রদানের বিষয়টিও আগের মতো হয়ে যাবে। আপাতত শর্তসাপেক্ষে বাংলাদেশিদের ভিসা প্রদান করা হবে। সূত্র: আনন্দবাজার
২০ হাজার ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যান: এদিকে ২০ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি নাগরিকের পাসপোর্ট ফেরত দিয়েছে ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন। ভিসার দাবিতে বিক্ষোভ ও হুমকির জেরে হাইকমিশন এই পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, সর্বশেষ খবর অনুযায়ী-২০ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশির পাসপোর্ট ফেরত দেওয়া হয়েছে। ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন অভিমুখে বিক্ষোভ ও হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বেশ কয়েকটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, বর্তমানে শুধু সীমিত সংখ্যক জরুরি ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া করা হচ্ছে। অবশ্য এর মধ্যে কিছু ব্যতিক্রম ভিসা আবেদনও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যেমন-মেডিকেল ইমার্জেন্সি, স্টুডেন্ট ভিসা ও তৃতীয় দেশে ভ্রমণের জন্য প্রয়োজনীয় ডাবল-এনট্রি ভিসা। এর আগে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বিক্ষোভের জেরে ভিসা পরিষেবা স্থগিত করা হয়েছিল। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের এই ঘটনা দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়ে তোলে। টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, বাংলাদেশে ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্রগুলো একপ্রকার বন্ধই করে দেওয়া হয়েছে। এ কারণে হতাশাগ্রস্ত আবেদনকারীদের অনেকেই হাইকমিশনে ই-মেইল করছেন, এমনকি কিছু ই-মেইলে ভাঙচুরের হুমকিও রয়েছে। প্রতিবেদন অনুসারে, যেহেতু বাংলাদেশে কূটনৈতিক মিশনের ঘাটতি রয়েছে, তাই বাংলাদেশিরা প্রায়ই অন্য দেশের ভিসা পেতে ভারতের ওপর নির্ভর করেন। বিশেষ করে ইউরোপের দেশগুলোর। এছাড়া দুর্গাপূজা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে ভিসা আবেদনের হারও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারতীয় এই সংবাদমাধ্যম বলছে, উভয় দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার কারণে হাইকমিশন সতর্কতা অবলম্বন করছে। এছাড়া অস্থায়ী ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রেও অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছ। কারণ চিকিৎসার প্রয়োজন না হলেও অন্য উদ্দেশ্যে ভারতে মেডিকেল ভিসায় ভ্রমণের মতো ভিসার বেশ কিছু অপব্যবহারের ঘটনা সামনে এসেছে। এদিকে উভয় দেশের সরকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে বলেও ভারতীয় এই সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। ভারতে বিদেশি পর্যটক ও দর্শনার্থীদের ভ্রমণে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে বাংলাদেশ। শুধু ২০২৩ সালে প্রায় ১৬ লাখ বাংলাদেশি নাগরিকের ভিসা ইস্যু করেছিল ভারত, যার মধ্যে প্রায় সাড়ে চার লাখ ভিসা ইস্যু করা হয়েছিল চিকিৎসার উদ্দেশ্যে। তবে হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ৫ আগস্ট থেকে বাংলাদেশিদের ক্ষেত্রে ভারতীয় ভিসা প্রদান কঠোরভাবে সীমাবদ্ধ রয়েছে।

 

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বাংলাদেশিদের আপাতত চিকিৎসা-আপৎকালীন ভারতীয় ভিসা

আপডেট সময় : ০৪:৪৩:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রত্যাশা ডেস্ক : বাংলাদেশের পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষপটে আপৎকালীন ও চিকিৎসার প্রয়োজন ছাড়া আপাতত বাংলাদেশি নাগরিকদের অন্য কোনো ভিসা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করবে দেশটি। গত রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সিদ্ধান্তের বিষয়টি জানিয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, আপাতত বাংলাদেশিদের চিকিৎসার এবং জরুরি প্রয়োজনে ভিসা দেওয়া হচ্ছে। যখন বাংলাদেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, তখন পূর্ণমাত্রায় কাজ শুরু হবে এবং ভিসা প্রদানও স্বাভাবিক হবে। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসা পরিষেবা বন্ধ করে দেয় ভারত। বাংলাদেশের অশান্ত পরিস্থিতিতে ভারতীয় দূতাবাসের বহু কর্মীকে ভারতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। পরে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে ভারতীয় ভিসা কেন্দ্রগুলো পুনরায় কাজ শুরু করে। তবে দিনের পর দিন অপেক্ষা করে ভিসা না পেয়ে ঢাকার ভারতীয় ভিসা প্রদান কেন্দ্রে বিক্ষোভও দেখান অনেকে। এর জেরে ফের ব্যাহত হয় কাজ। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের নাগরিকদের ভিসার আবেদনের ক্ষেত্রে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করলো ভারত।
এদিকে ভারতীয় দূতাবাস এবং ভিসা কেন্দ্রগুলোতে বাড়তি নিরাপত্তা দেওয়ার পর সেপ্টেম্বর থেকে আবার জরুরি ভিত্তিতে পরিষেবা দেওয়া শুরু হয়। ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্র জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ভিসা সেন্টার খুলছে ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, সিলেট এবং খুলনায়। তবে এখনই সকলে ভিসা পাবেন না। কেবলমাত্র যারা চিকিৎসার জন্য আসবেন, তাদেরই জরুরি ভিত্তিতে দেওয়া হবে অগ্রাধিকার। এক বিজ্ঞপ্তিতে ভারত জানিয়েছে, বাংলাদেশের পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক নয়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার ভিসা প্রদানের বিষয়টিও আগের মতো হয়ে যাবে। আপাতত শর্তসাপেক্ষে বাংলাদেশিদের ভিসা প্রদান করা হবে। সূত্র: আনন্দবাজার
২০ হাজার ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যান: এদিকে ২০ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি নাগরিকের পাসপোর্ট ফেরত দিয়েছে ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন। ভিসার দাবিতে বিক্ষোভ ও হুমকির জেরে হাইকমিশন এই পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, সর্বশেষ খবর অনুযায়ী-২০ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশির পাসপোর্ট ফেরত দেওয়া হয়েছে। ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন অভিমুখে বিক্ষোভ ও হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বেশ কয়েকটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, বর্তমানে শুধু সীমিত সংখ্যক জরুরি ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া করা হচ্ছে। অবশ্য এর মধ্যে কিছু ব্যতিক্রম ভিসা আবেদনও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যেমন-মেডিকেল ইমার্জেন্সি, স্টুডেন্ট ভিসা ও তৃতীয় দেশে ভ্রমণের জন্য প্রয়োজনীয় ডাবল-এনট্রি ভিসা। এর আগে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বিক্ষোভের জেরে ভিসা পরিষেবা স্থগিত করা হয়েছিল। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের এই ঘটনা দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়ে তোলে। টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, বাংলাদেশে ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্রগুলো একপ্রকার বন্ধই করে দেওয়া হয়েছে। এ কারণে হতাশাগ্রস্ত আবেদনকারীদের অনেকেই হাইকমিশনে ই-মেইল করছেন, এমনকি কিছু ই-মেইলে ভাঙচুরের হুমকিও রয়েছে। প্রতিবেদন অনুসারে, যেহেতু বাংলাদেশে কূটনৈতিক মিশনের ঘাটতি রয়েছে, তাই বাংলাদেশিরা প্রায়ই অন্য দেশের ভিসা পেতে ভারতের ওপর নির্ভর করেন। বিশেষ করে ইউরোপের দেশগুলোর। এছাড়া দুর্গাপূজা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে ভিসা আবেদনের হারও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারতীয় এই সংবাদমাধ্যম বলছে, উভয় দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার কারণে হাইকমিশন সতর্কতা অবলম্বন করছে। এছাড়া অস্থায়ী ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রেও অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছ। কারণ চিকিৎসার প্রয়োজন না হলেও অন্য উদ্দেশ্যে ভারতে মেডিকেল ভিসায় ভ্রমণের মতো ভিসার বেশ কিছু অপব্যবহারের ঘটনা সামনে এসেছে। এদিকে উভয় দেশের সরকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে বলেও ভারতীয় এই সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। ভারতে বিদেশি পর্যটক ও দর্শনার্থীদের ভ্রমণে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে বাংলাদেশ। শুধু ২০২৩ সালে প্রায় ১৬ লাখ বাংলাদেশি নাগরিকের ভিসা ইস্যু করেছিল ভারত, যার মধ্যে প্রায় সাড়ে চার লাখ ভিসা ইস্যু করা হয়েছিল চিকিৎসার উদ্দেশ্যে। তবে হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ৫ আগস্ট থেকে বাংলাদেশিদের ক্ষেত্রে ভারতীয় ভিসা প্রদান কঠোরভাবে সীমাবদ্ধ রয়েছে।