ঢাকা ০৫:৫৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৬ অগাস্ট ২০২৫

বস্তির বাসিন্দাদের ফ্ল্যাটের প্রলোভনে মাসে নিতেন ৩০০ টাকা

  • আপডেট সময় : ০১:২৫:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • ৯১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর মিরপুরের শাহ আলী থানা এলাকায় ক্ষুদ্র ঋণদান সমিতির নামে অবৈধ ব্যাংকিং লেনদেনের সঙ্গে জড়িত তিন জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৪। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে কাওরান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে ব্যাটালিয়ান ৪-এর অধিনায়ক ডিআইডি মোজাম্মেল হক এ তথ্য জানান।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন-শিবপুর ক্ষুদ্র ঋণদান কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড নামে ভুয়া প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ফয়েজউল্লাহ (৫০) এবং দুই নারী সহযোগী আফরিন আক্তার (২৪) ও মোছা. তাসলিমা বেগম (৩৩)।
ডিআইডি মোজাম্মেল হক বলেন, ‘মিরপুর এলাকার কিছু ভুক্তভোগীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি রাত পর্যন্ত র‌্যাব-৪-এর একটি দল রাজধানীর শাহ আলীর মুক্তবাংলা শপিং কমপ্লেক্সে অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় প্রতারণার দায়ে “শিবপুর ক্ষুদ্র ঋণদান কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড”-এর সভাপতিসহ তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়।’
র‌্যাব জানায়, প্রতিষ্ঠানটি ‘শিবপুর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতি লিমিটেড’ হিসেবে রেজিস্টার্ডভুক্ত হলেও প্রতারণামূলকভাবে ‘শিবপুর ক্ষুদ্র ঋণদান কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড’ নামে প্রচার ও বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল।
২০ জন সদস্য অন্তর্ভুক্তির কথা উল্লেখ থাকলেও বর্তমানে ওই সমিতিতে ২৫০-৩০০ জন সদস্য রয়েছে বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়। প্রতিষ্ঠানের কোনও রক্ষিত জামানত নেই বলে তথ্য পাওয়া গেছে।
ভুয়া ‘শিবপুর ক্ষুদ্র ঋণদান কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড’ এর অফিস থেকে প্রতারণায় ব্যবহৃত বিভিন্ন সামগ্রী- যেমন: ভর্তি ফরম, ঋণ গ্রহীতার ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্র, ক্ষুদ্রঋণ গ্রহীতাদের জীবনবৃত্তান্ত, লিফলেট, সিল, বিভিন্ন নামের সঞ্চয় পাসবই, অব্যবহৃত পাস বই, দৈনিক কিস্তি ও ঋণ বিতরণের বিভিন্ন রেজিস্টার, ব্যাংকচেকসহ ব্যাংক স্ট্যাম্প, আইডি কার্ড, দৈনিক কিস্তি আদায়ের শিট, মাইসার ওয়েল ফেয়ার ফাউন্ডেশনের ঋণের আবেদনপত্র, মাইসার ওয়েল ফেয়ার ফাউন্ডেশনের সঞ্চয় ও ঋণ পাস বই, মাইসার ওয়েল ফেয়ার ফাউন্ডেশনের হিসাব খোলার আবেদন, মাইসার ওয়েল ফেয়ার ফাউন্ডেশনের অব্যবহৃত ডেবিট ভাউচার বই, মাইসার ওয়েল ফেয়ার ফাউন্ডেশন সঞ্চয় আদায় শিট, ফয়েজউল্লাহর নামে কমিউনিটি ভিলেজ ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির বিভিন্ন প্রকার সার্টিফিকেট, চেক বই, মনিটর, সিপিইউ উদ্ধার করা হয়।
সংগঠনটির প্রতারণার কৌশল :
সদস্য সংগ্রহ : মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের মাধ্যমে মিরপুরের বিভিন্ন বস্তি এলাকার প্রতিবন্ধী, ভিক্ষুক, সেলুনের কর্মচারী, ফুটপাতের দোকানদার, গৃহকর্মী ও নি¤œ আয়ের মানুষের ঋণের লোভ দেখিয়ে সঞ্চয়ের নামে ডিপিএস করতে উদ্বুদ্ধ করা হতো।
ভুক্তভোগীদের প্রলুব্ধ করা ও সঞ্চয় সংগ্রহ : মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা ভুক্তভোগীদের প্রলুব্ধ করে ও বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে নানান কৌশলে অফিস কার্যালয়ে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করতো। প্রতিদিন আনুমানিক ২৫০ জন গ্রাহকের কাছ থেকে সঞ্চয় সংগ্রহ করা হতো।
বিভিন্ন ভুয়া প্রকল্প প্রচার : মানুষকে ভুল বুঝিয়ে ইসলামী শরিয়া অনুযায়ী বিভিন্ন প্রকল্প প্রচার করে যেমন-১. মুদারাবা ডিপোজিট স্কিম, ২. মুদারাবা কোটিপতি বিশেষ সঞ্চয়, ৩. মুদারাবা লাখপতি ডিপোজিট স্কিম, ৪. মুদারাবা মিলিওনিয়ার ডিপোজিট স্কিম, ৫. মুদারাবা পেনশন ডিপোজিট ইত্যাদির প্রলোভন দেখিয়ে নগদ অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হতো।
স্বল্প সময়ে ঋণদানের প্রলোভন : বিভিন্নভাবে অল্প সময়ে ঋণদানে নিশ্চয়তা দিয়ে সঞ্চয়, বিনিয়োগ, ডিপিএস করতে আগ্রহী করা হতো ভুক্তভোগীদের। বলা হতো ১০-১৫ দিন ঠিকমতো নির্দিষ্ট হারে সঞ্চয় দিলে তাদের ঋণ দেওয়া হবে। কিন্তু দু’একজনকে ঋণ দিলেও কেউ সঞ্চয় থেকে ঋণ পেতো না।
ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ : কোম্পানির কিছু সদস্য দৈনিক ভিত্তিতে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে সঞ্চয় বা ডিপিএসের টাকা সংগ্রহ করতো। বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখানো হতো। বলা হতো, সময় মতো সঞ্চয় বা ডিপিএসের টাকা পরিশোধ না করলে সঠিক সময়ে ঋণ দেওয়া হবে না বা মেয়াদ শেষে তারা মুনাফা কম পাবে এবং জরিমানাও করা হবে।
ফ্ল্যাট ও জমি দেওয়ার আশ্বাস : প্রতারণার আর একটি কৌশল হিসেবে ভুক্তভোগীদের বোঝানো হতো, দৈনিক মাত্র ২০০-৩০০ টাকা জমা করলে এক সময় ঢাকা শহরে তাদের একটি করে ফ্ল্যাট বা জমি দেওয়া হবে। গ্রেফতার ফয়েজের বাড়ি জেলা ভোলায়। তিনি ভোলার স্থানীয় একটি স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেছেন। পরে ১৯৯২ সালে ভোলা থেকে ঢাকায় এসে কনস্ট্রাকশনের কাজ শুরু করেন। ২০০৫ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তিনি কাফরুলের একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ফিল্ড অফিসার পদে চাকরি করেছেন। ২০২১ সালে নিজে ‘শিবপুর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতি লিমিটেড’ প্রতিষ্ঠা করেন এবং এই সমিতির নাম বেআইনিভাবে পরিবর্তন করে প্রতারণার উদ্দেশ্যে ‘শিবপুর ক্ষুদ্র ঋণদান কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড’ এর কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন। পাওয়া তথ্য অনুযায়ী এই কোম্পানির মোট সদস্য সংখ্যা ২৫০-৩০০ জন এবং প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত ৫ মাসে আনুমানিক ৫০ লাখের বেশি অর্থ আত্মসাৎ করেছে বলে অনুসন্ধানে জানা যায়।
সমিতির ব্যবস্থাপনা কমিটি : সমিতির সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ, সহ-সভাপতি তার বন্ধু সিরাজুল ইসলাম, সম্পাদক তার স্ত্রী রোকেয়া বেগম, যুগ্ম সম্পাদক শ্যালক আলাউদ্দিন, কোষাধ্যক্ষ ছেলে আরিফ হোসেন এবং সদস্য তার বন্ধু মো. জামিল হোসেন ওয়াদুদ। প্রতিষ্ঠানের ব্যাংকিং কার্যক্রম বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অনুমোদিত নয় এবং এনজিও হিসেবে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি আর্থিক লেনদেনের জন্য অনুমোদিত নয়। মাইসার ওয়েল ফেয়ার ফাউন্ডেশনের কোনও অনুমোদন নেই। কমিউনিটি ভিলেজ ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি নামক প্রতিষ্ঠানেরও অনুমোদন নেই। গ্রেফতার আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বস্তির বাসিন্দাদের ফ্ল্যাটের প্রলোভনে মাসে নিতেন ৩০০ টাকা

আপডেট সময় : ০১:২৫:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর মিরপুরের শাহ আলী থানা এলাকায় ক্ষুদ্র ঋণদান সমিতির নামে অবৈধ ব্যাংকিং লেনদেনের সঙ্গে জড়িত তিন জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৪। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে কাওরান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে ব্যাটালিয়ান ৪-এর অধিনায়ক ডিআইডি মোজাম্মেল হক এ তথ্য জানান।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন-শিবপুর ক্ষুদ্র ঋণদান কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড নামে ভুয়া প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ফয়েজউল্লাহ (৫০) এবং দুই নারী সহযোগী আফরিন আক্তার (২৪) ও মোছা. তাসলিমা বেগম (৩৩)।
ডিআইডি মোজাম্মেল হক বলেন, ‘মিরপুর এলাকার কিছু ভুক্তভোগীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি রাত পর্যন্ত র‌্যাব-৪-এর একটি দল রাজধানীর শাহ আলীর মুক্তবাংলা শপিং কমপ্লেক্সে অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় প্রতারণার দায়ে “শিবপুর ক্ষুদ্র ঋণদান কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড”-এর সভাপতিসহ তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়।’
র‌্যাব জানায়, প্রতিষ্ঠানটি ‘শিবপুর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতি লিমিটেড’ হিসেবে রেজিস্টার্ডভুক্ত হলেও প্রতারণামূলকভাবে ‘শিবপুর ক্ষুদ্র ঋণদান কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড’ নামে প্রচার ও বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল।
২০ জন সদস্য অন্তর্ভুক্তির কথা উল্লেখ থাকলেও বর্তমানে ওই সমিতিতে ২৫০-৩০০ জন সদস্য রয়েছে বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়। প্রতিষ্ঠানের কোনও রক্ষিত জামানত নেই বলে তথ্য পাওয়া গেছে।
ভুয়া ‘শিবপুর ক্ষুদ্র ঋণদান কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড’ এর অফিস থেকে প্রতারণায় ব্যবহৃত বিভিন্ন সামগ্রী- যেমন: ভর্তি ফরম, ঋণ গ্রহীতার ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্র, ক্ষুদ্রঋণ গ্রহীতাদের জীবনবৃত্তান্ত, লিফলেট, সিল, বিভিন্ন নামের সঞ্চয় পাসবই, অব্যবহৃত পাস বই, দৈনিক কিস্তি ও ঋণ বিতরণের বিভিন্ন রেজিস্টার, ব্যাংকচেকসহ ব্যাংক স্ট্যাম্প, আইডি কার্ড, দৈনিক কিস্তি আদায়ের শিট, মাইসার ওয়েল ফেয়ার ফাউন্ডেশনের ঋণের আবেদনপত্র, মাইসার ওয়েল ফেয়ার ফাউন্ডেশনের সঞ্চয় ও ঋণ পাস বই, মাইসার ওয়েল ফেয়ার ফাউন্ডেশনের হিসাব খোলার আবেদন, মাইসার ওয়েল ফেয়ার ফাউন্ডেশনের অব্যবহৃত ডেবিট ভাউচার বই, মাইসার ওয়েল ফেয়ার ফাউন্ডেশন সঞ্চয় আদায় শিট, ফয়েজউল্লাহর নামে কমিউনিটি ভিলেজ ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির বিভিন্ন প্রকার সার্টিফিকেট, চেক বই, মনিটর, সিপিইউ উদ্ধার করা হয়।
সংগঠনটির প্রতারণার কৌশল :
সদস্য সংগ্রহ : মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের মাধ্যমে মিরপুরের বিভিন্ন বস্তি এলাকার প্রতিবন্ধী, ভিক্ষুক, সেলুনের কর্মচারী, ফুটপাতের দোকানদার, গৃহকর্মী ও নি¤œ আয়ের মানুষের ঋণের লোভ দেখিয়ে সঞ্চয়ের নামে ডিপিএস করতে উদ্বুদ্ধ করা হতো।
ভুক্তভোগীদের প্রলুব্ধ করা ও সঞ্চয় সংগ্রহ : মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা ভুক্তভোগীদের প্রলুব্ধ করে ও বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে নানান কৌশলে অফিস কার্যালয়ে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করতো। প্রতিদিন আনুমানিক ২৫০ জন গ্রাহকের কাছ থেকে সঞ্চয় সংগ্রহ করা হতো।
বিভিন্ন ভুয়া প্রকল্প প্রচার : মানুষকে ভুল বুঝিয়ে ইসলামী শরিয়া অনুযায়ী বিভিন্ন প্রকল্প প্রচার করে যেমন-১. মুদারাবা ডিপোজিট স্কিম, ২. মুদারাবা কোটিপতি বিশেষ সঞ্চয়, ৩. মুদারাবা লাখপতি ডিপোজিট স্কিম, ৪. মুদারাবা মিলিওনিয়ার ডিপোজিট স্কিম, ৫. মুদারাবা পেনশন ডিপোজিট ইত্যাদির প্রলোভন দেখিয়ে নগদ অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হতো।
স্বল্প সময়ে ঋণদানের প্রলোভন : বিভিন্নভাবে অল্প সময়ে ঋণদানে নিশ্চয়তা দিয়ে সঞ্চয়, বিনিয়োগ, ডিপিএস করতে আগ্রহী করা হতো ভুক্তভোগীদের। বলা হতো ১০-১৫ দিন ঠিকমতো নির্দিষ্ট হারে সঞ্চয় দিলে তাদের ঋণ দেওয়া হবে। কিন্তু দু’একজনকে ঋণ দিলেও কেউ সঞ্চয় থেকে ঋণ পেতো না।
ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ : কোম্পানির কিছু সদস্য দৈনিক ভিত্তিতে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে সঞ্চয় বা ডিপিএসের টাকা সংগ্রহ করতো। বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখানো হতো। বলা হতো, সময় মতো সঞ্চয় বা ডিপিএসের টাকা পরিশোধ না করলে সঠিক সময়ে ঋণ দেওয়া হবে না বা মেয়াদ শেষে তারা মুনাফা কম পাবে এবং জরিমানাও করা হবে।
ফ্ল্যাট ও জমি দেওয়ার আশ্বাস : প্রতারণার আর একটি কৌশল হিসেবে ভুক্তভোগীদের বোঝানো হতো, দৈনিক মাত্র ২০০-৩০০ টাকা জমা করলে এক সময় ঢাকা শহরে তাদের একটি করে ফ্ল্যাট বা জমি দেওয়া হবে। গ্রেফতার ফয়েজের বাড়ি জেলা ভোলায়। তিনি ভোলার স্থানীয় একটি স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেছেন। পরে ১৯৯২ সালে ভোলা থেকে ঢাকায় এসে কনস্ট্রাকশনের কাজ শুরু করেন। ২০০৫ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তিনি কাফরুলের একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ফিল্ড অফিসার পদে চাকরি করেছেন। ২০২১ সালে নিজে ‘শিবপুর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতি লিমিটেড’ প্রতিষ্ঠা করেন এবং এই সমিতির নাম বেআইনিভাবে পরিবর্তন করে প্রতারণার উদ্দেশ্যে ‘শিবপুর ক্ষুদ্র ঋণদান কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড’ এর কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন। পাওয়া তথ্য অনুযায়ী এই কোম্পানির মোট সদস্য সংখ্যা ২৫০-৩০০ জন এবং প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত ৫ মাসে আনুমানিক ৫০ লাখের বেশি অর্থ আত্মসাৎ করেছে বলে অনুসন্ধানে জানা যায়।
সমিতির ব্যবস্থাপনা কমিটি : সমিতির সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ, সহ-সভাপতি তার বন্ধু সিরাজুল ইসলাম, সম্পাদক তার স্ত্রী রোকেয়া বেগম, যুগ্ম সম্পাদক শ্যালক আলাউদ্দিন, কোষাধ্যক্ষ ছেলে আরিফ হোসেন এবং সদস্য তার বন্ধু মো. জামিল হোসেন ওয়াদুদ। প্রতিষ্ঠানের ব্যাংকিং কার্যক্রম বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অনুমোদিত নয় এবং এনজিও হিসেবে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি আর্থিক লেনদেনের জন্য অনুমোদিত নয়। মাইসার ওয়েল ফেয়ার ফাউন্ডেশনের কোনও অনুমোদন নেই। কমিউনিটি ভিলেজ ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি নামক প্রতিষ্ঠানেরও অনুমোদন নেই। গ্রেফতার আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।