ঢাকা ১১:৫১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫

বলাৎকারের ব্যথা সইতে না পেরে আল আমিনকে হত্যা, আদালতে স্বীকারোক্তি: পিবিআই

  • আপডেট সময় : ০৮:০৪:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫
  • ২৩ বার পড়া হয়েছে

গাজীপুর সংবাদদাতা : গাজীপুরের পান ও সিগারেট বিক্রেতা আল আমিনকে (৩৫) হত্যার আসামি মাইদ হোসেনকে (২২) গ্রেফতারসহ ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন করেছে গাজীপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই)। গতকাল বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সকালে গাজীপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পুলিশ সুপার (এসপি) আবুল কালাম আজাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে সোমবার (৭ এপ্রিল) সকাল সোয়া ১০টায় গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানাধীন চান্দনা (পূর্বপাড়া) মফিজ উদ্দিনের টিনশেড বাড়ির একটি কক্ষ থেকে চৌকির ওপর ভাসমান পান ও সিগারেট বিক্রেতা আল আমিনের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। আল আমিন শেরপুর সদর উপজেলার পাকুরিয়া (ফকিরপাড়া) গ্রামের আসাব আলী মীরের ছেলে। তিনি প্রায় পাঁচ বছর ধরে চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে পান ও সিগারেট বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতো।

গত ৭/৮ মাস ধরে চান্দনা (পূর্বপাড়া) মফিজ উদ্দিনের টিনশেড বাসা ভাড়া নিয়ে ব্যাচেলর জীবন যাপন করতেন। গ্রেফতার আসামি মাইদ হোসেন ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার লতিফপুর (খলিশাকুড়ি) গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে। তিনি কাজের সন্ধানে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তায় এলে ভুক্তভোগী আল আমিনের সঙ্গে পরিচয় হয়। তাকে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার শৈলাট গ্রামের বাচ্চু মিয়ার বাড়ি থেকে পুলিশ গ্রেফতার করে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গাজীপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক মাহবুবুর রহমান জানান, বাসার মালিকসহ স্থানীয় লোকজন ঘরের চৌকির ওপর আল আমিনের লাশ দেখে বাসন থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। লাশ উদ্ধারের সময় লাশের গলায় গামছা প্যাঁচানো ছিল ও লাশ ফুলে পচা দুর্গন্ধ বের হয়েছে।

অজ্ঞাত খুনিরা আল আমিনকে কৌশলে গামছা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ তার ভাড়া বাসার শয়ন কক্ষের চৌকির ওপর ফেলে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মা আকলিমা বেগম (৬৩) বাসন থানায় মামলা করেন। পরে বাসন থানা পুলিশ মামলাটি তদন্তকালে গাজীপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কাছে অধিগ্রহণ করেন। তিনি জানান, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার আসামি মাইদ হোসেন জানায়, গত ৩ এপ্রিল আল আমিনের সঙ্গে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তায় তার দেখা হয়। তখন আল আমিনের কাছে কাজ দেওয়া যাবে কি না জানতে চায়। চাকরি দেওয়ার কথা বলে তাকে আল আমিনের ভাড়া বাসায় নিয়ে যান। ওই বাসায় তারা একসঙ্গে একই বিছানায় ঘুমায়। পরদিন ভোর ৪টায় আল আমিন মাইদকে ধর্ষণ করে। ব্যথা সইতে না পেরে আল আমিনকে গলা টিপে ধরলে শ্বাসরোধে মারা যায়। পরে গলায় গামছা পেঁচিয়ে বিছানায় ফেলে রাখে ও তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নিয়ে চলে যায়। গাজীপুর পিবিআই এসপি আবুল কালাম আজাদ বলেন, এটি একটি নৃশংস হত্যাকাণ্ড। আল আমিন আসামি মাইদ হোসেনের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচারে লিপ্ত হলে তাকে গলা টিপে হত্যা করে। আসামি মাইদ হোসেন হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বলাৎকারের ব্যথা সইতে না পেরে আল আমিনকে হত্যা, আদালতে স্বীকারোক্তি: পিবিআই

আপডেট সময় : ০৮:০৪:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫

গাজীপুর সংবাদদাতা : গাজীপুরের পান ও সিগারেট বিক্রেতা আল আমিনকে (৩৫) হত্যার আসামি মাইদ হোসেনকে (২২) গ্রেফতারসহ ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন করেছে গাজীপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই)। গতকাল বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সকালে গাজীপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পুলিশ সুপার (এসপি) আবুল কালাম আজাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে সোমবার (৭ এপ্রিল) সকাল সোয়া ১০টায় গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানাধীন চান্দনা (পূর্বপাড়া) মফিজ উদ্দিনের টিনশেড বাড়ির একটি কক্ষ থেকে চৌকির ওপর ভাসমান পান ও সিগারেট বিক্রেতা আল আমিনের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। আল আমিন শেরপুর সদর উপজেলার পাকুরিয়া (ফকিরপাড়া) গ্রামের আসাব আলী মীরের ছেলে। তিনি প্রায় পাঁচ বছর ধরে চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে পান ও সিগারেট বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতো।

গত ৭/৮ মাস ধরে চান্দনা (পূর্বপাড়া) মফিজ উদ্দিনের টিনশেড বাসা ভাড়া নিয়ে ব্যাচেলর জীবন যাপন করতেন। গ্রেফতার আসামি মাইদ হোসেন ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার লতিফপুর (খলিশাকুড়ি) গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে। তিনি কাজের সন্ধানে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তায় এলে ভুক্তভোগী আল আমিনের সঙ্গে পরিচয় হয়। তাকে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার শৈলাট গ্রামের বাচ্চু মিয়ার বাড়ি থেকে পুলিশ গ্রেফতার করে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গাজীপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক মাহবুবুর রহমান জানান, বাসার মালিকসহ স্থানীয় লোকজন ঘরের চৌকির ওপর আল আমিনের লাশ দেখে বাসন থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। লাশ উদ্ধারের সময় লাশের গলায় গামছা প্যাঁচানো ছিল ও লাশ ফুলে পচা দুর্গন্ধ বের হয়েছে।

অজ্ঞাত খুনিরা আল আমিনকে কৌশলে গামছা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ তার ভাড়া বাসার শয়ন কক্ষের চৌকির ওপর ফেলে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মা আকলিমা বেগম (৬৩) বাসন থানায় মামলা করেন। পরে বাসন থানা পুলিশ মামলাটি তদন্তকালে গাজীপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কাছে অধিগ্রহণ করেন। তিনি জানান, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার আসামি মাইদ হোসেন জানায়, গত ৩ এপ্রিল আল আমিনের সঙ্গে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তায় তার দেখা হয়। তখন আল আমিনের কাছে কাজ দেওয়া যাবে কি না জানতে চায়। চাকরি দেওয়ার কথা বলে তাকে আল আমিনের ভাড়া বাসায় নিয়ে যান। ওই বাসায় তারা একসঙ্গে একই বিছানায় ঘুমায়। পরদিন ভোর ৪টায় আল আমিন মাইদকে ধর্ষণ করে। ব্যথা সইতে না পেরে আল আমিনকে গলা টিপে ধরলে শ্বাসরোধে মারা যায়। পরে গলায় গামছা পেঁচিয়ে বিছানায় ফেলে রাখে ও তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নিয়ে চলে যায়। গাজীপুর পিবিআই এসপি আবুল কালাম আজাদ বলেন, এটি একটি নৃশংস হত্যাকাণ্ড। আল আমিন আসামি মাইদ হোসেনের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচারে লিপ্ত হলে তাকে গলা টিপে হত্যা করে। আসামি মাইদ হোসেন হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে।