ঢাকা ০৬:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫

বর্ষায় বেড়ে যাওয়া সাইনাসের ব্যথায় করণীয়

  • আপডেট সময় : ০৯:০৩:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫
  • ১৪ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক: গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পেরিয়ে অফিস আসার কিছুক্ষণ পর থেকেই কি মাথাটা ভারী হয়ে আসছে? একই সঙ্গে কি নাক বন্ধ হয়ে ব্যথা শুরু হয়ে গেছে? কাজের চাপ, শব্দ, ঠাণ্ডা-গরমে অনেকের মাইগ্রেন সক্রিয় হয়ে ওঠে। কারো সাধঅরণ মাথাব্যথা শুরু হতে পারে। আবার যাদের সাইনাস ইনফেশনের ধাঁচ আছে তাদের সাইনোসাইটিস সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে।

অনেকেই সাইনোসাইটিসকে মাইগ্রেন ভেবে ভুল করেন। ব্যথা কমাতে ওষুধ খেলেও তখন ব্যথা কমতে চায়না। কারণ দুই ক্ষেত্রেই মাথাব্যথা করলেও দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন সমস্যা।

সাইনোসাইটিস বা সাইনাস ইনফেকশন হলো সাইনাস বা নাকের চারপাশের বায়ুকুঠুরিতে প্রদাহ বা সংক্রমণ। এটি সাধারণত ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, অ্যালার্জি বা ছত্রাকজনিত কারণে হতে পারে। তবে সাইনাস ইনফেকশন বা সাইনোসাইটিস সক্রিয় হলে কিছু ঘরোয়া উপায়েও আপনি তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। তবে এর আগে জানা দরকার সাইনোসাইটিসের ব্যথা শুরু হয়েছে কি না। তা হলো-

নাক বন্ধ বা নাক দিয়ে ঘন সর্দি বের হওয়া: সাইনোসাইটিস হলে নাক বন্ধ হয়ে যায় এবং ঘন মিউকাস তৈরি হয়। এটা ভাইরাল বা ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন ইঙ্গিত করে।

মাথাব্যথা ও মুখমণ্ডলে চাপ বা ভারী লাগা: বিশেষ করে কপাল, গাল, চোখের চারপাশে চাপ অনুভূত হয়। মাথা ঝাঁকালে ব্যথা আরো বাড়ে।

চোখ বা গালের নিচে ফুলে যাওয়া: সাইনাসে ইনফ্লেমেশন হলে মুখের কিছু অংশ ফুলে যেতে পারে।

গন্ধ ও স্বাদ কমে যাওয়া: নাক বন্ধ থাকলে গন্ধ নেওয়া এবং খাওয়ার স্বাদ ঠিকভাবে বোঝা যায় না।

শ্বাসনালি থেকে গলায় সর্দি গড়িয়ে পড়া: ঘন সর্দি নাক থেকে গলায় গড়িয়ে পড়ে। এতে গলা খুসখুস করতে পারে বা কাশি বাড়ে।

জ্বর ও অবসাদ: ব্যাকটেরিয়াল সাইনোসাইটিসে হালকা থেকে মাঝারি জ্বর ও শরীরে ক্লান্তি দেখা যায়। কানে চাপ অনুভব করা বা শুনতে হালকা সমস্যা হওয়া: সাইনাসের সংক্রমণ শ্রবণ শক্তির ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে।

মুখ ও দাঁতে ব্যথা: সাইনাস প্রেসারের কারণে উপরের পাটির দাঁতে ব্যথা বা চোয়ালের ব্যথা হতে পারে।আপনার মধ্যে যদি এই লক্ষণ গুলোর কয়েকটি একসঙ্গে উপস্থিত থাকে, তাহলে হয়তো আপনার সাইনাসের ব্যথা বা সাইনোসাইটিস সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এসব উপসর্গ থেকে তাৎক্ষণিক আরাম পাওয়ার উপায়গুলো হলো-

পর্যাপ্ত পানি পান করা: পানিশূন্যতা যেকোনো মাথাব্যথাকে অসহনীয় করে তোলে। তাছাড়া শরীর সুস্থ রাখতে পর্যাপ্ত পানি পানের বিকল্প নেই। তাই সাইনাসের ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে বেশি পরিমাণে তরল খাবার বা পানীয় পান করা জরুরি। তরল খাবার শ্লেষ্মা পাতলা করে।

মেনথল ভাপ নেওয়া: সাইনাস হলে নাক, চোখ ও মাথা প্রচণ্ড ব্যথা করে। নাক বন্ধ হয়ে যাওয়াসহ চোখ জ্বালা-পোড়া করে। এ সময় গরম ভাপ নিলে প্রশান্তি আসবে, ব্যথা কমবে। পুদিনা পাতা গরম পানিতে দিয়ে ভাপ নিতে পারেন। আবার বাজারে পানিতে গুলানোর মেনথল কিনতে পাওয়া যায়।

নাক পরিষ্কার করা: ভাপ নেওয়ার সাহায্যে নাক পরিষ্কার করতে পারেন। বন্ধ নাক পরিষ্কার করার জন্য কিছু ড্রপারও দোকানে কিনতে পাওয়া যায়। চিকিৎসকের পরামর্শে এমন কিছু ব্যবহার করতে পারেন। এতে নাক থেকে ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস সহজেই দূর হবে।

আপেল সাইডার ভিনেগার: আপেল সাইডার ভিনেগারের বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা আছে। কেউ কেউ সাইনাসের ব্যথাতেও উপকার পেয়েছেন। এজন্য কিছতা গরম পানিতে আপেল সাইডার ভিনেগার মিশিয়ে পান করুন। তবে মনে রাখবেন – এটি এসিডটিক একটি পানীয়। অতিরিক্ত পান করলে দাঁতের এনামেল ক্ষয় থেকে শুরু করে অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে।

গরম স্যুপ খাওয়া: ঠাণ্ডা লাগলে কিংবা মাথাব্যথা করলে এক বাটি গরম স্যুপ খেলে বেশ আরাম লাগে। আপনার পছন্দ অনুসারে যেকোনো স্যুপ খেতে পারেন। গলার ভেতরে স্যুপের উষ্ণতা কাশি কমাতে সাহায্য করবে। সেই সঙ্গে শরীরে পানির প্রয়োজন মেটাবে।

আদা-লেবু চা: পানিতে আদা ফুটিয়ে হালকা লিকারের চা বানিয়ে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস দিয়ে পান করুন। এটি সর্দি-কাশিতে দারুণ কার্যকর।

এসব ঘরোয়া উপায়ে আপনি সাইনোসাইটিসে তাৎক্ষণিক আরাম পেতে পারেন। তবে সমস্যা না কমলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

মিটফোর্ড হাসপাতাল ‘শাটডাউন’ ঘোষণা শিক্ষার্থীদের

বর্ষায় বেড়ে যাওয়া সাইনাসের ব্যথায় করণীয়

আপডেট সময় : ০৯:০৩:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পেরিয়ে অফিস আসার কিছুক্ষণ পর থেকেই কি মাথাটা ভারী হয়ে আসছে? একই সঙ্গে কি নাক বন্ধ হয়ে ব্যথা শুরু হয়ে গেছে? কাজের চাপ, শব্দ, ঠাণ্ডা-গরমে অনেকের মাইগ্রেন সক্রিয় হয়ে ওঠে। কারো সাধঅরণ মাথাব্যথা শুরু হতে পারে। আবার যাদের সাইনাস ইনফেশনের ধাঁচ আছে তাদের সাইনোসাইটিস সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে।

অনেকেই সাইনোসাইটিসকে মাইগ্রেন ভেবে ভুল করেন। ব্যথা কমাতে ওষুধ খেলেও তখন ব্যথা কমতে চায়না। কারণ দুই ক্ষেত্রেই মাথাব্যথা করলেও দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন সমস্যা।

সাইনোসাইটিস বা সাইনাস ইনফেকশন হলো সাইনাস বা নাকের চারপাশের বায়ুকুঠুরিতে প্রদাহ বা সংক্রমণ। এটি সাধারণত ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, অ্যালার্জি বা ছত্রাকজনিত কারণে হতে পারে। তবে সাইনাস ইনফেকশন বা সাইনোসাইটিস সক্রিয় হলে কিছু ঘরোয়া উপায়েও আপনি তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। তবে এর আগে জানা দরকার সাইনোসাইটিসের ব্যথা শুরু হয়েছে কি না। তা হলো-

নাক বন্ধ বা নাক দিয়ে ঘন সর্দি বের হওয়া: সাইনোসাইটিস হলে নাক বন্ধ হয়ে যায় এবং ঘন মিউকাস তৈরি হয়। এটা ভাইরাল বা ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন ইঙ্গিত করে।

মাথাব্যথা ও মুখমণ্ডলে চাপ বা ভারী লাগা: বিশেষ করে কপাল, গাল, চোখের চারপাশে চাপ অনুভূত হয়। মাথা ঝাঁকালে ব্যথা আরো বাড়ে।

চোখ বা গালের নিচে ফুলে যাওয়া: সাইনাসে ইনফ্লেমেশন হলে মুখের কিছু অংশ ফুলে যেতে পারে।

গন্ধ ও স্বাদ কমে যাওয়া: নাক বন্ধ থাকলে গন্ধ নেওয়া এবং খাওয়ার স্বাদ ঠিকভাবে বোঝা যায় না।

শ্বাসনালি থেকে গলায় সর্দি গড়িয়ে পড়া: ঘন সর্দি নাক থেকে গলায় গড়িয়ে পড়ে। এতে গলা খুসখুস করতে পারে বা কাশি বাড়ে।

জ্বর ও অবসাদ: ব্যাকটেরিয়াল সাইনোসাইটিসে হালকা থেকে মাঝারি জ্বর ও শরীরে ক্লান্তি দেখা যায়। কানে চাপ অনুভব করা বা শুনতে হালকা সমস্যা হওয়া: সাইনাসের সংক্রমণ শ্রবণ শক্তির ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে।

মুখ ও দাঁতে ব্যথা: সাইনাস প্রেসারের কারণে উপরের পাটির দাঁতে ব্যথা বা চোয়ালের ব্যথা হতে পারে।আপনার মধ্যে যদি এই লক্ষণ গুলোর কয়েকটি একসঙ্গে উপস্থিত থাকে, তাহলে হয়তো আপনার সাইনাসের ব্যথা বা সাইনোসাইটিস সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এসব উপসর্গ থেকে তাৎক্ষণিক আরাম পাওয়ার উপায়গুলো হলো-

পর্যাপ্ত পানি পান করা: পানিশূন্যতা যেকোনো মাথাব্যথাকে অসহনীয় করে তোলে। তাছাড়া শরীর সুস্থ রাখতে পর্যাপ্ত পানি পানের বিকল্প নেই। তাই সাইনাসের ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে বেশি পরিমাণে তরল খাবার বা পানীয় পান করা জরুরি। তরল খাবার শ্লেষ্মা পাতলা করে।

মেনথল ভাপ নেওয়া: সাইনাস হলে নাক, চোখ ও মাথা প্রচণ্ড ব্যথা করে। নাক বন্ধ হয়ে যাওয়াসহ চোখ জ্বালা-পোড়া করে। এ সময় গরম ভাপ নিলে প্রশান্তি আসবে, ব্যথা কমবে। পুদিনা পাতা গরম পানিতে দিয়ে ভাপ নিতে পারেন। আবার বাজারে পানিতে গুলানোর মেনথল কিনতে পাওয়া যায়।

নাক পরিষ্কার করা: ভাপ নেওয়ার সাহায্যে নাক পরিষ্কার করতে পারেন। বন্ধ নাক পরিষ্কার করার জন্য কিছু ড্রপারও দোকানে কিনতে পাওয়া যায়। চিকিৎসকের পরামর্শে এমন কিছু ব্যবহার করতে পারেন। এতে নাক থেকে ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস সহজেই দূর হবে।

আপেল সাইডার ভিনেগার: আপেল সাইডার ভিনেগারের বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা আছে। কেউ কেউ সাইনাসের ব্যথাতেও উপকার পেয়েছেন। এজন্য কিছতা গরম পানিতে আপেল সাইডার ভিনেগার মিশিয়ে পান করুন। তবে মনে রাখবেন – এটি এসিডটিক একটি পানীয়। অতিরিক্ত পান করলে দাঁতের এনামেল ক্ষয় থেকে শুরু করে অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে।

গরম স্যুপ খাওয়া: ঠাণ্ডা লাগলে কিংবা মাথাব্যথা করলে এক বাটি গরম স্যুপ খেলে বেশ আরাম লাগে। আপনার পছন্দ অনুসারে যেকোনো স্যুপ খেতে পারেন। গলার ভেতরে স্যুপের উষ্ণতা কাশি কমাতে সাহায্য করবে। সেই সঙ্গে শরীরে পানির প্রয়োজন মেটাবে।

আদা-লেবু চা: পানিতে আদা ফুটিয়ে হালকা লিকারের চা বানিয়ে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস দিয়ে পান করুন। এটি সর্দি-কাশিতে দারুণ কার্যকর।

এসব ঘরোয়া উপায়ে আপনি সাইনোসাইটিসে তাৎক্ষণিক আরাম পেতে পারেন। তবে সমস্যা না কমলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ